২০১৭ সালের আলোচিত ডিস ব্যবসায়ী সোহেল প্রধান হত্যা মামলায় ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১২ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন, কামাল মোল্লা, জামাল মোল্লা, বিল্লাল মোল্লা, হারুন মোল্লা, মহসিন মোল্লা, আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম সাত জন সম্পর্কে ভাই। তাদের প্রত্যেককে আরও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। অপর ৬ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ফারুক, রুবেল, জাকির হোসেন, ইমাম হোসেন, মোশারফ হোসেন মোহন, বিল্লাল খান, আনিছুর রহমান, আলী আকবর, নূরুজ্জামান, ওয়ায়েছ কুরুনী, রানা মোল্লা ও আ. গাফ্ফারকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
ভিকটিম সোহেল প্রধান মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের ডিস লাইনের সংযোগ দেওয়ার কাজ করতেন।
২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯ টার দিকে গ্রাম্য দলাদলির জের ধরে আসামিরা সোহেলকে ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে অপহরণ করেন। তাকে টেংগারচর কামাল মোল্লার বাড়ির সামনে নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতের ভিতর মারাত্মক জখম করেন। সোহেল মরে গেছে ভেবে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার জন্য সিএনজি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে টহল পুলিশের গাড়ি দেখে আসামিরা তড়িঘড়ি করে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যান।
টহল পুলিশ সোহেলকে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন ডাক্তারের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোহেলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পথে ভিকটিম তাদের আসামিদের নাম ও ঘটনা বলেন। পরে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোহেল।
ওই ঘটনায় সোহেলের মা সুফিয়া বেগম ৭ মে গজারিয়া থানায় মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
রায় ঘোষণার আগে মামলার ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।