গৃহবধূ ও শিশু হত্যার দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন

, আইন-আদালত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ | 2023-08-30 01:56:23

সিরাজগঞ্জে গৃহবধূ ও শিশু সন্তানকে হত্যার দায়ে পৃথক আদালতে সাবেক প্রেমিক ও পিতাসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক এরফান উল্লাহ এ দণ্ডাদেশ ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, রাজগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁতি গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন, বেলকুচি উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে মনিরুল ইসলাম ও নাটোরের ক্ষিরপোতা গ্রামের হাসান তালুকদারের ছেলে মাসুদ। এদের মধ্যে মনিরুল উপস্থিত থাকলেও সাদ্দাম ও মাসুদ পলাতক রয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রায়গঞ্জের ব্রাহ্মণগাতি গ্রামের হাসান তালুকদারের প্রথমপক্ষের ছেলে মাসুদ ওরফে নূরনবী ও দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ভিকটিম শিউলি। মাসুদকে সঠিকভাবে লালন-পালন না করায় বাবা ও সৎ বোনের ওপর তার ক্ষোভ ছিল। অপরদিকে শিউলিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল তার প্রেমিক সাদ্দাম। এ অবস্থায় সাদ্দাম হোসেন ও মাসুদ দুজনেই ক্ষোভের বসে শিউলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১০ সালের ২০ নভেম্বর শিউলি বাবার বাড়িতে বেড়াতে এলে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর বিল থেকে পুলিশ শিউলির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় হাসান তালুকদার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন আসামি মাসুদ ওরফে নূরনবী ও সাদ্দাম। আসামিরা অনুপস্থিত থাকায় তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্টেট ডিফেন্সর ল’ইয়ার গোলাম হায়দার। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক আজ এ রায় দেন।

অপরদিকে, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামের সাহিদা খাতুন প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শিশু সন্তানসহ গোপালপুর গ্রামের মনিরুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই মনিরুল ক্ষুব্ধ ছিলে শাহিদার প্রথম পক্ষের ৭ বছরের শিশু সন্তান শাহাদৎ হোসেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৯ মে বিকেলে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে শিশু শাহাদৎকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন মনিরুল। ছয়দিন পর শাহজাদপুর উপজেলার করতোয়া নদীর চরে অর্ধগলিত অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শাহিদা খাতুন বাদী হয়ে মনিরুলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামির উপস্থিতিতে আজ এ রায় ঘোষণা করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর