কুষ্টিয়ায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় ৩ জনের আমৃত্যু দণ্ড

, আইন-আদালত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-29 22:16:04

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মুক্তিপণ আদায়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুলসহ তিন জনকে হত্যার অভিযোগে ৩ জনকে আমৃত্যু ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণা শেষে পুলিশের পাহারায় আসামিদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম রেজা (পলাতক), ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দ্দারের ছেলে মানিক জোয়ার্দ্দার (পলাতক), দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের মৃত নুরু বিশ্বাসের ছেলে হোসেল রানা।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া মশান গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে ইদ্রিস ওরফে মোটা জসিম (পলাতক), খন্দকার রবিউল ইসলামের ছেলে খন্দকার তৈমুল ইসলাম বিপুল (পলাতক), নুর বিশ্বাসের ছেলে ফারুক চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়া রেলগেট চৌড়হাস এলাকার খন্দকার মোছাদ্দেক হোসেন মন্টুর ছেলে উল্লাস খন্দকার, উদিবাড়ী আমিরুল ইসলামের ছেলে মনির (পলাতক), পূর্ব মজমপুরের মৃত আব্দুল খালেক চৌধুরীর ছেলে বিপুল চৌধুরী, দৌলতপুর উপজেলার পচা ভিটা গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান মোল্লা। একইসাথে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল ঢাকা মহানগরের মিরপুর এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের মাকেটিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় সুমী নামে এক মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আসামিরা ২০০৯ সালে ২৩ অক্টোবর বিকালে জাহাঙ্গীরকে প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামে আটকিয়ে রাখে। পরে জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যদেরকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা পেয়ে ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে আসামিরা জাহাঙ্গীর হোসন মুকুলকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে চরশালিমপুর হিসনা নদীর পাড়ে পুঁতে রাখে।

এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানায় জাহাঙ্গীর হোসন মুকুলের বড় ভাই ইলিয়াস কবির বকুল বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা তদন্তকালে ঘটনাস্থল থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল ও শালিমপুর কবরস্থান থেকে আরও ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। তাদেরকে একইভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে আসামিরা।

তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২১ সালের ৩১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন। এছাড়াও দুই আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত। উপরোক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আরও দু’টি হত্যা মামলা আছে বলেও জানান আদালত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর