রমজানে ছয় ঘণ্টার বেশি কাজ করালেই শাস্তি

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক | 2023-08-24 20:37:58

কাতার পারস্য উপসাগরের একটি দেশ। উত্তপ্ত ও শুষ্ক মরু এলাকা হওয়ায় দেশটির বেশিরভাগ লোক শহরে, বিশেষত রাজধানী দোহায় বসবাস করেন। দেশটিতে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুদ রয়েছে। এই প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে দেশটির অর্থনীতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

কাতারের আমির হলেন একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান। সৌদি আরব ও ওমানের পর কাতার অন্যতম রক্ষণশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত। কাতারের নাগরিক সুযোগ-সুবিধার মান খুবই উন্নত। আরবি ভাষা কাতারের সরকারি ভাষা। আন্তর্জাতিক কাজকর্মে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

সেই কাতারে রমজান শুরু হওয়ার আগে আইন করে বলা হয়েছে, রমজান মাসে ছয় ঘণ্টার বেশি কাজ করালেই শাস্তি পেতে হবে।

অর্থাৎ পবিত্র রমজান মাসে কাতারের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রতি কার্যদিবসে সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুটা পর্যন্ত কাজের জন্য পাঁচ ঘন্টা সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বেসরকারি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কর্মীদের দিয়ে রমজান মাসে ছয় ঘন্টার বেশি কাজ না করায়, সে বিষয়ে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে কাতারের প্রশাসনিক উন্নয়ন ও শ্রম এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এক বিবৃতিতে বলা হয়, যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পবিত্র রমজান মাসে কর্মী বা শ্রমিকদের দিয়ে ছয় ঘন্টার বেশি কাজ করাবে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা চাইলে এর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন। কাতার শ্রম মন্ত্রণালয়ের হটলাইন নাম্বার, ইমেইল অথবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা যাবে। কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশ অমান্য করলে কর্মীরা যেন অভিযোগ জানাতে দেরি না করেন, সে ব্যাপারেও তাগিদ দিয়েছে কাতার শ্রম মন্ত্রণালয়। কারণ, এটি কাতারের শ্রম আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

নিয়ম না মেনে যেসব প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের দিয়ে ৬ ঘণ্টার বেশি কাজ করাবে তাদের কঠোর শাস্তি ও জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কর্মীদের অধিকার লঙ্ঘনের যে কোনো বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্মী অভিযোগ করলে অভিযোগকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

শুধু কর্মঘণ্টা কমিয়ে শ্রমিকদের সুবিধা নয়, রমজান মাসে অন্য সব আরব দেশের মতো কাতারেও প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ করে যে সব শ্রমিক নির্মাণসহ খোলা জায়গায় কাজ করেন তাদের প্রতি। রমজানে কাতার চ্যারিটি ও ধনবান কাতার শেখরা প্রায় প্রতিটা মসজিদের পাশে বিশাল আকারের অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করে থাকেন- এই অস্থায়ী তাঁবুকে আরবিতে খেমা বলা হয়। এসব তাঁবুতে প্রতিদিন বিনামূল্যে ইফতার খাওয়ানো হয়। সেখানে যে কেউ গিয়ে ইফতারে শামিল হতে পারেন। কখনও কখনও তাঁবু ছেড়ে মসজিদের আঙিনাতেও চলে আসে রোজাদারদের ভিড়। এক একটি তাঁবুতে ৭০০ থেকে হাজারও ছাড়িয়ে যায় রোজাদারদের সংখ্যা।

চলতি রমজানে কাতারের নাগরিকদের প্রায় ১৫ ঘণ্টা সময় রোজা রাখতে হচ্ছে। কাতারের ইফতারের আয়োজন করা হয় মূলত আরব রীতিতে। ফলে ইফতারে পরিবেশন করা হয় খেজুর, পানি, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফলের জুস। এর সঙ্গে দেওয়া হয় কখনও বিরিয়ানি, আবার কখনও আরবি মাজবুজ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর