দুইটি পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েও বেঁচে যান সুতোমু!

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 02:31:31

হিরোশিমা ও নাগাসাকি পারমাণবিক হামলার ৭৩ তম বার্ষিকী আজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক হামলা চালায়। ভয়াবহ ওই হামলায় লাখ লাখ মানুষ মারা গেলেও ব্যতিক্রম ছিলেন সুতোমু ইয়ামাগুচি। জাপানের সরকারের তথ্য অনুসারে সুতোমু একমাত্র হিবাকুশা ‘অ্যাটমিক বম্ব সারভাইভার’, যিনি দুটি পারমাণবিক হামলার পরেও বেঁচে ছিলেন। ২০০৯ সালে তাকে হিবাকুশা ‘স্ট্যাটাস’ দেওয়া হয়।

জানা যায়, ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট অফিসের কাজে হিরোশিমায় গিয়েছিলেন মিৎসুবিশির নাভাল ইঞ্জিনিয়ার সুতোমু ইয়ামাগুচি। কয়েক মুহূর্ত পরেই, চোখ-ধাঁধানো আলো। কান ফাটানো বিকট শব্দ। এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় হামলায়। বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা আরো প্রায় আড়াই গুণ। কিন্তু বেঁচে যান বছর ২৯ বছরের সুতোমু।

জ্ঞান হারানোর আগে সুতোমু দেখেছিলেন, তাঁর শরীরের বেশ খানিকটা পোড়া, বাঁ কানে কিছু শুনতে পাচ্ছেন না। ওই রাতটা কোনও মতে কাটিয়ে, পর দিন মৃতদেহের স্তূপ পেরিয়ে ট্রেন ধরে বাড়ি পৌঁছান তিনি।

৯ আগস্ট সকালে সুতোমু হেড-অফিসে যান। সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। অফিসের বস-সহকর্মীদের কাছে ভয়াবহ ঘটনার কথা বলছিলেন। হঠাৎ নাগাসাকির আকাশেও সেই এক ভয়াবহ আলো! সেই কান-ফাটানো শব্দ। ফের জখম হলেন সুতোমু। ৭০ হাজার মানুষ সেদিনের হামলায় মারা গেলেও বেঁচে যার তিনি। তার পরিবারও প্রাণে রক্ষা পায়।

বিশ্বযুদ্ধের পরের তিন বছরে তার দুই মেয়ে হয়েছিল। ১৯১৬ সালের ১৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন সুতোমু। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৯৩ বছর বয়সে ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগে বিখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরনের সঙ্গে সুতোমুর কথা হয়। সুতোমুকে নিয়ে ছবি বানাতে চেয়েছিলেন জেমস।

‘টোয়াইস বম্বড, টোয়াইস সার্ভাইভ্‌ড’-নামে একটা তথ্যচিত্র হয় তাকে নিয়ে। নীরব চরিত্রের এই মানুষটি ‘অ্যান্ড দ্য রিভার ফ্লোজ অ্যাজ আ র‌্যাফ্ট অব কর্পসেস’ নামে কবিতার বই লিখেছেন।

২০০৬ সালে জাতিসংঘে দেখানো হয়েছিল সিনেমাটি, হুইলচেয়ারে-বসা সুতোমু সেদিন বলেছিলেন পারমাণবিক বোমা নিশ্চিহ্ন করণের কথা। এই বোমার ভয়াবহতা তুলে ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে চিঠিও দিয়েছিলেন সুতোমু।

এ সম্পর্কিত আরও খবর