ইরানে হিজাব খোলার অপরাধে এক নারীর কারাদণ্ড

, আন্তর্জাতিক

সেন্ট্রাল ডেস্ক ৩ | 2023-07-09 21:58:26

জনসমক্ষে হিজাব খুলে উড়িয়ে দেয়ার অপরাধে ইরানে এক নারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত৷ রায়ের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তেহরানে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেক নারী৷ ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস৷ কিন্তু ইরানে এবারে নারী দিবসে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। হিজাব বন্ধ এবং দণ্ডপ্রাপ্ত নারীর মুক্তির দাবিতে রাজধানী তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন তারা৷ জনসমক্ষে হিজাব খুলে উড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে বুধবার ৩৪ বছরের এক নারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ তবে যে নারীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি৷ ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নার্গিস হুসেইনি, যাকে এ বছরের শুরুতে তেহরানে আটক করা হয়েছিল৷ বিচার চলাকালীন তিনি তার কৃতকর্মের জন্য কোনোরকম অনুশোচনা প্রকাশ করেননি বলে জানিয়েছেন এক আইনজীবী৷ বরং বিচারককে তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে জোর করে হিজাব পরানো ঠিক নয়৷ তেহরানের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্বাস জাফর দোলাতাবাদী বলেছেন, ‘‘দেশের আইনে যা বলা আছে, তা মেনেই এ রায় দেয়া হয়েছে৷'' ইরানের আইন অনুযায়ী, নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক৷ আইনে স্পষ্ট বলা আছে, মেয়েদের চুল ঢাকতে হবে এবং শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে রাখতে হবে৷ প্রতিবাদ শুরু হয়েছে এর বিরুদ্ধেই৷ গত কয়েক মাস ধরে ইরানের নারীরা তাই নতুন আন্দোলন শুরু করেছেন৷ প্রকাশ্যে হিজাব খুলে প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন তারা৷ শুধু তাই নয়, তাদের সেই প্রতিবাদ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আপলোডও করে দিচ্ছেন৷ ডিসেম্বর থেকে ইরানি নারীদের এই আন্দোলন চরম রূপ ধারণ করেছে৷ জনসমক্ষে নারীরা তাদের হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ কেউ কেউ সেটা লাঠিতে উড়িয়ে ব্যানার বানিয়েছেন৷ আন্দোলনকারী অন্তত ৩০ জন নারীকে এ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে৷ ইরান সরকারের সমীক্ষা অনুযায়ী, গত এক দশক আগে সে দেশের নারীরা হিজাবের পক্ষে ছিলেন৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদেরও মত বদলেছে৷ ইরানের বেশিরভাগ নারী আর হিজাবের আড়ালে থাকতে চান না৷ তাদের বক্তব্য, হিজাব পরা বা না-পরা একেবারেই ব্যক্তিগত পছন্দ৷ প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও কিছুদিন আগে বলেছিলেন, জনগণের মতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় তার সরকার৷ কিন্তু তার কথা এবং সরকারের আচরণের মধ্যে খুব একটা মিল পাওয়া যাচ্ছে না৷ আন্দোলনের সূত্রপাত গত বছর৷ ইরানের বিখ্যাত সাংবাদিক মিসাহ আলিনেজাদ প্রথম ‘হ্যাশট্যাগ হোয়াইটওয়েডনেসডেজ’ আন্দোলন চালু করেন৷ নিজের হিজাব খুলে লাঠির গোড়ায় বেঁধে সেটি উড়িয়েছিলেন তিনি৷ পুরো ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ এখনো তিনি জেলে৷

এ সম্পর্কিত আরও খবর