২২ মার্চ- বিশ্ব পানি দিবস

, ফিচার

ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-03-22 12:31:33

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের শরীরের শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ থাকে পানি। পানি ছাড়া একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষও সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারেন। পানি এমন এক উপাদান যা ছাড়া জীবন অচল। খাওয়া, রান্না, গোসল, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা সহ জীবনের সব কাজেই পানির ব্যবহার সর্বোচ্চ। এমনকি পৃথিবীতে থাকা সকল জীবের চলমান জীবনধারায় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত এই উপাদান। হাইড্রোজেন দ্বিঅণু ‍এবং অক্সিজেনের অণুর মধ্যে তৈরি হওয়া সমযোজী বন্ধনের সহজ যৌগ হলেও, পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে পানি। আমাদের জীবনে পানির প্রয়োজনীয় পানির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতেই পালন করা হয় বিশ্ব পানি দিবস।

পানি অপচয়

প্রতিবছর ২২ মার্চ বিশ্বব্যাপী পানি দিবস উদযাপন করা হয়। সূত্রপাত হয় ১৯৯২ সালে সুদূর ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে। পরিবেশ এবং উন্নয়ন সম্মেলনে পানি দিবসের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এজেন্ডা ২১-এর সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় এবং তার পরের বছরই বাস্তবায়ন করা হয়। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ সভা করে ২২ মার্চকে পানি দিবস হিসেবে নির্বাচন করে এবং পালনের ঘোষণা দেয়। ২০০৩ সাল থেকে পানি দিবস পালন করার জন্য জাতিসংঘ থেকে থিম, মটো, বার্তা এবং প্রধান সংস্থা নির্বাচন করা হয়। এর মাধ্যমে জনসাধারণকে পানি ব্যবহার এবং সংরক্ষণে উৎসাহিত এবং সচেতন করা হয়।  

পানি দূষণ

পানির গুরুত্ব আমাদের জীবনে কত বেশি তা অনেকেই অনুধাবন করেন না। তারা ভাবেন পৃথিবতে অফুরন্ত পানি রয়েছে। সমগ্র পৃথিবীর শতকরা ৭১ ভাগই পানি। বাকি ২৯ ভাগ স্থল বা মাটি। কিন্তু মানুষ না বুঝে পানির অব্যবহার করে। এই কারণে যাদের প্রয়োজন তারা পানি পায়না। বিশেষ করে রুক্ষ অঞ্চলের মানুষদের প্রায়ই পানির অভাবে ভুগতে দেখা যায়। বিশুদ্ধ পানির সন্ধানে মানুষ পাড়ি দেয় মাইলের পর মাইল। অন্যদিকে অনেকেই দিনের পর দিন বিপুল হারে পানি নষ্ট করে। কেউ কেউ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পানি অপচয় করে। সবচেয়ে দুঃখ জনক হলো, আমাদের অবহেলার কারণে নিজেদের স্বার্থরক্ষায় আমরা প্রতিদিন প্রচুর পানি দূষিত করে ফেলছি। 

খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানি

মানুষের জীবনের গুরুত্বপুর্ণ অংশ পানি। খাদ্য আমাদের মৌলিক চাহিদার শীর্ষে থাকে। আর পানি খাওয়া বেঁচে থাকায় অনিবার্য। পানি ছাড়া পুরো পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে।

বায়ু, অক্সিজেন, মাটি, পানি হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার মূল ভিত্তি। যেকোনো গ্রহ আমাদের বেঁচে থাকার যোগ্য কিনা-তা বিবেচনা করা হয় এইসব উপাদানের অনুপাতের মাধ্যমে। এর মধ্যে অন্যতম পানি। পৃথিবীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পানি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বে বসবাসকারী প্রানী পানির অভাব সমস্যায় ভোগে। ভালোভাবে বলতে গেলে পানির অভাব নেই, তবে বিশুদ্ধ পানির অনেক অভাব।

সমুদ্রের পানি

পৃথিবীর অধিকাংশ অংশ পানি, কারণ পৃথিবী সৃষ্টিকালে প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে ভূপৃ্ষ্ঠ পানিতে ভরে যায়। তখন সৃষ্টি হয় মহাসমুদ্রের। যেসব উচু অঞ্চল ডুবে যায়নি সেগুলোই বর্তমানে স্থলজ পানির বাসস্থান। পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশ জুড়ে সমুদ্র থাকলেও, সমুদ্রের পানি লবণাক্ত হওয়ায় তা খাওয়ার অযোগ্য।  এমনকি দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রেও এই পানি ব্যবহার করার সুযোগ নেই। তাই এত বেশি পানির অভাব দেখা যায়। কারণ দিন দিন মানুষ এবং তাদের প্রয়োজন বাড়ছে। অন্যদিকে পানির উৎস সীমিত। তাদের ব্যবহারেও পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয় না। একটি দিনও পানি ছাড়া কল্পনা করা অসম্ভব। তাই পানি এবং পানির উৎস রক্ষা করার ব্যপারে সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ।    

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর