ফুলের স্বর্গ রাজ্য পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি

, ফিচার

এস এল টি তুহিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল | 2024-01-23 22:20:41

 

ফুল সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক। ফুল কে না ভালোবাসে। আর সেই ফুলের চাদরে সন্ধ্যা নদীর তীর ঘেঁষে দক্ষিণাঞ্চলের সব চেয়ে বড় ফুল ও ফলের চারার বাজার এখন সর্গ রাজ্যে পরিণত।

 

ফুল সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক 

রং-বেরঙের ফুলে ফুলে সুশোভিত পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির অলঙ্কারকাঠি গ্রাম। চোখ ধাঁধিয়ে দেয় নানা জাতের ফুল। আর এটা এখন শুধু অলঙ্কারকাঠীর অলংকার নয়, সারা দেশের অলঙ্কারে রূপ নিয়েছে। দেখে মনে হবে যেন ফুলের রাজ্যে পরিণত পড়েছে এই গ্রামটি। সারি সারি হলুদ, টকটকে লাল, কমলা ও সাদা রং-বেরঙয়ের ফুলে ফুলে ভরে গেছে স্বরূপকাঠীর নার্সারিগুলো। যার আনন্দ অন্য কিছুর সঙ্গে মেলা ভার। 

রং-বেরঙের ফুলে সুশোভিত জমি 

নয়নাভিরাম এ ফুল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার মন মাতানো সুবাস দেহমন জুড়িয়ে দেয়। শীতের মৌসুমে ফুলের চাদরে ঢাকা পড়েছে গ্রামটি। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ফুল ও ছোট ছোট ফুল চারার সমারোহ। উপজেলার আকলম, কুনিয়ারী, সুলতানপুর, পানাউল্লাপুর, সংগীতকাঠি ও আরামকাঠিসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে নানা প্রজাতির ফুলের চাষ হয়। অন্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভের আশায় বাড়ছে ফুলের চাষ ও ফুলচাষি। গ্রামের পর গ্রাম ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের আবাদ। তবে এই অলংকারকাঠীর নার্সারিগুলো টিকিয়ে রাখতে হলে আশেপাশের ইটের ভাটাগুলো সরিয়ে অন্যত্র নিতে হবে। না হলে পরিবেশ নষ্টের কারণে নার্সারির অনেক বড় ক্ষতি হবে বলে মনে করেন ফুল উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল। 

মন মাতানো সুবাস জুড়িয়ে দেয় মন 

বরিশাল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে বরিশাল-বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠি সড়কের পাশেই সন্ধ্যা নদীর তীর জুড়ে অলংকারকাঠি গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চোখ ধাঁধানো এই ফুলের নার্সারিগুলো। এই অঞ্চল জুড়ে প্রায় ৩০০টির মত নার্সারি গড়ে উঠেছে। এসব নার্সারিগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ফুল এবং ফল গাছের চারা পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছের চারার কলম উৎপাদন করে আসছেন নার্সারি ব্যবসায়ীরা। প্রায় দুই হাজারের মতো নারী-পুরুষ জীবিকার পথ খুঁজে পেয়েছেন এখানে। পুরুষের প্রতিদিন পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা এবং নারীদের ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া নার্সারিগুলোতে মাসব্যাপীও কাজ করেন অনেক কর্মচারী। 

ভালোবাসা দিবস এবং বসন্ত উৎসবকে ঘিরে বাড়ছে গোলাপের চাষ 

সরেজমিনে দেখা যায়, অলংকারকাঠী ব্রিজ থেকে উত্তর শর্ষিনা পর্যন্ত সড়কের দুইধারে সন্ধ্যা নদীর কোল ঘেঁষে নানান জাতের ফুল ও ফুল গাছের বিভিন্ন নামের নার্সারি। জমে ওঠেছে ফুলের চারা বেচা-কেনা। এ অঞ্চলের তিনটি গ্রাম নিয়ে এ ফুলের বাণিজ্য গড়ে উঠলেও অলংকারকাঠী নামেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমীদেরও উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। সামনে (১৪ ফ্রেব্রুয়ারী) ভালোবাসা দিবস এবং বসন্ত উৎসবকে ঘিরে নার্সারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। আগাম ফুল সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 

নার্সারীর জন্য হুমকি ইটভাটা, দাবি ব্যবসায়ীদের

নার্সারি ম্যানেজার মো. সজিব জানান, এ সকল নার্সারি থেকে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকার ফুলের চারা ও নানা প্রজাতির গাছ-গাছালির চারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। এ অঞ্চলের শত শত মানুষ তার নিজের, সরকারি বাঁ ঠিকাদারি কাজে সরবরাহের জন্য চারা ও কলম কিনে নেন এখন থেকে। তবে শীত মৌসুমে শুধুই ফুলের চারা কলম ফুল বেচা-কেনা চলে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর