শীতের চেয়েও কষ্ট বেশি ক্ষুধার

, ফিচার

আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার | 2024-01-16 17:06:44

সারা দেশের মতো সমুদ্রনগরী কক্সবাজারেও গত কয়েকদিন ধরে নামছে ঘন কুয়াশা। বইছে হিমেল হাওয়া। জেঁকে বসেছে শীত। সন্ধ্যা থেকে পরদিন আধাবেলা পর্যন্ত থাকছে তীব্র শীতের দাপট। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে; টিপ-টিপ!

হাড় কাঁপানো শীতে শুধু জনজীবন বিপর্যস্তই নয়, কমে গেছে কাজও। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। শীতের কষ্টের চেয়েও পেটের ক্ষুধার কষ্ট বেশি হয়ে দেখা দিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য।

বাইরে কনকনে শীত, তবু পেটের তাগিদে কাজে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা,পত্রিকার হকার,পরিচ্ছন্নকর্মী, রিকশাচালকসহ দিনমজুরদের যেন শীতের নিয়ে ভাবার উপায় নাই। শীতের তীব্র কাঁপুনি উপেক্ষা করে প্রতিদিন তারা বেরিয়ে পড়ছেন নিজ-নিজ কাজে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরবেলা শহরের ‘মানুষ বিক্রির হাট’ নামে পরিচিত গুনগাছতলা মোড়ে গিয়ে দেখা মেলে বেশ ক'জন শ্রমিকের। মাঘের এই তীব্র শীতেও তারা তাদের কাজের সরঞ্জাম নিয়ে জড়ো হয়েছেন।


এমনই একজন শ্রমিক মানিক মিয়া জানান, শীতের তীব্রতায় কাজ কমে গেছে অনেক। আগে ভোরবেলাতেই কাজে যেতে পারলেও এখন সেই উপায় নেই। পেট চালানোর চিন্তায় ভোর হতেই ছুটে আসেন এই হাটে।

শীত নিবারণে কারো কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাননি জানিয়ে তিনি জানান, তারা প্রায় ১৭০-১৮০ জন দিনমজুর এখানে থাকলেও এখনো প্রশাসন বা ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের শীতের কম্বল কিংবা সোয়েটার দিয়ে সাহায্য করা হয়নি।

আরেকজন দিনমজুর মো. আরজু বলেন, বেশি শীত। তাও পেটের জ্বালায় বের হতে হচ্ছে, কী করব। পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কারো কাছ থেকে কোন সহযোগিতাও পাইনি।

বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কক্সবাজার জেলার জন্য ৩৯০০০ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব কম্বল উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করে দিয়েছে। যদি আবারও বরাদ্দ আসে তাহলে যারা পায়নি তাদের মাঝেও পৌঁছে দেওয়া হবে।

আবহাওয়া দফতর বলছে, আরও কিছুদিন থাকবে এই শৈত্যপ্রবাহ, সেইসাথে হতে পারে বৃষ্টিও। এমন বিরূপ পরিস্থিতিতেও কাজের আকালে এই সময়ে তাই সরকারের কাছে সাহায্য প্রত্যাশী খেটে খাওয়া এ মানুষেরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর