৩০ বছর পর সরে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল

, ফিচার

ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-11-25 13:18:56

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতিতে ঘটছে নানা পরিবর্তন। পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকার বরফ যেমন গলছে, তেমনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বরফখন্ড (হিমশৈল) ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর সমুদ্রের তলদেশে সরে যাচ্ছে ‘এ২৩এ‘ নামে বিশ্বের সবচেয়ে বরফখণ্ডটি।

‘এ২৩এ’ পৃথিবীর বৃহত্তম আইসবার্গ। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকা উপকূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে ওয়েডল সাগরের তলে গিয়ে এটি আটকে থাকে। মূলত বরফের বিরাট এক দ্বীপের আকার ধারণ করে এটি, যার আকার লন্ডন শহরের দ্বিগুণ। প্রায় ৪০০০ বর্গ কিলোমিটার (১৫০০ বর্গ মাইল) এর বিস্তৃতি। শুধু এর দৈর্ঘ্যই আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু নয়। এর পুরুত্ব ৪০০ মি (১৩১২ফুট), যা বিস্ময় হওয়ার মতো। ৪০ বছর পর বরফখণ্ডটি কেন সরে যেতে শুরু করেছে কেন- এই প্রশ্ন বিজ্ঞানীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।  

২০২০ সালে এই আইসবার্গের প্রথম নড়াচড়া লক্ষ্য করা যায়। কিন্ত গতবছর অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করে, এখন এটি অ্যান্টার্কটিকাা সীমার বাইরে চলে যেতে শুরু করেছে।

ডা. এন্ড্রিউ ফ্লেমিং বলেছেন, তিনি তার দুই সহকর্মীর সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করেছেন।  হয়তো সমুদ্র তলের এই ধাপে তাপমাত্রা পরিবর্তন হওয়ায় বরফ গলে সরে যেতে শুরু করেছে।  সম্ভবত, এর সময় ফূরিয়ে এসেছে। বরফখণ্ড যত বড়ই হোক না কেন, এক সময় এটি গলতে শুরু করবেই। বিজ্ঞানীরা এ২৩এ’র প্রতি নজর রাখবে।

এটি যদি ধীরে ধীরে দক্ষিণ জর্জিয়ায় গিয়ে ঠেকে, তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করবে। কয়েক লক্ষ প্রজননকারী সীলমাছ, পেঙ্গুইন, আরও সামুদ্রিক পাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করবে। এছাড়াও,  জীবের চলাচলের পথ ও খাবারের ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

তবে বরফ খণ্ড শুধু ক্ষতিসাধন করে এই ধারণাও ভুল। যেমন টাইটানিকের ধ্বংসের ক্ষেত্রে হয়েছিল। পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ ভুমিকা ও গুরুত্ব প্রকাশ পাচ্ছে বরফখণ্ড।

ডা.ক্যাথেরিন ওয়াকার বলেছেন, অ্যান্টার্কটিকায় থাকাকালে তলদেশে হিমায়িত শিলাখণ্ডের সাথে এগুলো সংযুক্ত থাকে। তাই এই বরফ খণ্ড গলার পর তারা পরিবেশে খনিজ উপাদান ছড়িয়ে দেয়। নিউট্রিয়েন্ট ও ক্ষুদ্রজীবের প্রকৃত উৎস এগুলো। যা সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখে। এছাড়া বিভিন্ন জীববৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের সূত্রপাত এই আইসবার্গের ফলে হয়।      

সূত্র: বিবিসি

এ সম্পর্কিত আরও খবর