সবুজ প্রকৃতি আর সমুদ্র মিলে একাকার ‘সোনার দ্বীপ’

, ফিচার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,বরগুনা | 2023-11-23 16:33:10

চারদিকে জলরাশির মেলা, চরে দলবেঁধে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি খেলা! অন্যদিকে পাখির কলকাকলি আর সাগরের গর্জন, সাথে বাতাসের তালে দোল খাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট টেংরাগিরি। এই বেলাভূমিরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ সোনার দ্বীপ।

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য নিয়ে জেগে ওঠা বরগুনার তালতলী উপজেলার এই নয়নাভিরাম প্রকৃতির চরটির নাম- সোনার দ্বীপ। দৃষ্টিনন্দন দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, বহুকালের পুরনো বিস্তীর্ণ ম্যানগ্রোভ বন, দলবেঁধে চলাচল করা বন্যপ্রাণীর বন্ধনী ও রঙ-বেরঙের পাখ-পাখালিদের ঘর-বাড়ি এবং এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার মুহূর্তটা কোনো পর্যটকের পক্ষে ভুলে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রকৃতি প্রেমের এমন লোভে পড়ে গেলে এই স্বর্গে যেতে মন চাইবে বারবার। যা যেকেনো মানুষকে মুগ্ধতা করে, আর এই মুগ্ধতার সুবাস ছড়িয়েই দিন দিন ভ্রমণ বিলাসীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে এই দ্বীপটি। কিন্তু যোগাযোগ ও রাত্রিযাপন এর জন্য উন্নত ব্যবস্থা থাকলে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।


জানা যায়, এই উপজেলায় পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। আর এখানেই নতুন পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠেছে সোনার দ্বীপ। নতুনভাবে গড়ে উঠা এই সোনার দ্বীপ দর্শনার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা বাইজিদ খাঁন বলেন, আমরা প্রতি বছর শীত মৌসুমের শুরুতে বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঘুরতে বের হই, তাই ভাবলাম নতুন কোন যায়গায় যাওয়া যায়!  অনেকের কাছে শুনেছি বরগুনাতে দেখার মত অনেক কিছু আছে। তাই চলে আসছি বরগুনা তালতলীর "সোনার দ্বীপে"। এখানে এসে মুগ্ধ হয়েছি। 

পিরোজপুর থেকে আসা ইমন চৌধুরী বলেন, চাকরির সুবাদে বরগুনা এসেছি তাই আমরা পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। "সোনার দ্বীপে" এসে আমার খুব ভালো লাগল। প্রাণ-প্রকৃতির অবাধ বিচরণ এখানে।

পটুয়াখালী থেকে আসা আসাদুজ্জামান মিরাজ বলেন, এখানে ঘুরতে এসে খুব ভালো লাগলো। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না এবং এই দ্বীপে আসতে হলে ডিঙ্গি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু যোগাযোগ ও রাত্রিযাপন জন্য সুব্যবস্থা থাকলে জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।


সোনার দ্বীপে যাওয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা:

ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে তালতলীর উদ্দেশ্যে বিকেলে বাস ছেড়ে আসে। ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। তাছাড়া ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন বিকেল ৫ টায় এবং ৬ টায় জেলা শহর বরগুনায় লঞ্চ ছেড়ে আসে। ভাড়া ডেক ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১৩০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ২৫০০ টাকা।

রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা: সোনার দ্বীপে বা তার আশেপাশে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই দিনে গিয়ে আবার দিনেই ফিরে আসা ভালো। কিন্তু তালতলী বাজারে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। যদি থাকার পরিকল্পনা থাকে, অবশ্যই ১০ কিলোমিটার দূরে তালতলী শহরে এসে থাকতে হবে।

তালতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, দর্শনার্থীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সোনার দ্বীপের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এগুলো বাস্তবায়িত হলে অচিরেই সোনার দ্বীপ দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর