ছাদখোলা বাসে মেরিন ড্রাইভে সৌন্দর্য অবলোকন করার সুযোগ

, ফিচার

আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার  | 2023-11-13 19:36:09

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের অপরূপ জলরাশি এখন দেখা যাবে ছাদখোলা বাস থেকে। এতে মনোহর বাসে চড়ে মনোরম দৃশ্যের সাথে নিজেকে ফ্রেমবন্দী করার সুযোগ হয়ত মিস করতে চাইবেননা অনেকেই।

সোমবার(১৩ নভেম্বর) দুপুরে দেখা মিললো ফুল ও রঙিন কাপড়ে সাজানো দুটি ছাদখোলা বাসের। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের দিকে উৎফুল্ল মেজাজে চলছে তারা।

চারপাশ থেকে স্থানীয়রা এবং পর্যটকরা সে দৃশ্যকেই ধারণ করছেন নিজ নিজ মুঠোফোনে। এমন নান্দনিক বাসকে ঘিরে পর্যটকদের উৎসাহ উদ্দীপনা কক্সবাজারে এর আগে কখনও দেখা যায়নি।

ছাদখোলা বাসে একপাশে সমুদ্র আরেক পাশে পাহাড়ের মিতালি দেখতে দেখতে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ (দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার) ঘোরা যাবে মেরিন ড্রাইভে। মূলত কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট বাস চালু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ১১ নভেম্বর ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে পর্যটন শিল্পে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুদ রানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মেরিন ড্রাইভের জন্য চারটি ছাদখোলা বাস সার্ভিস চালু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। যার মধ্যে দুটি ইতিমধ্যে চলে এসেছে বাকি দু'টি কিছুদিন পর যুক্ত হবে। এছাড়া আরও তিনটি বাস নিয়ে আসা হবে যেটি আইকনিক রেলস্টেশন থেকে পর্যটকদের নিয়ে এসে ঘুরিয়ে সেবা প্রদান করবে। সবগুলো বাসের ভাড়া হবে সাশ্রয়ী মূল্যে।’

ছাদখোলা দ্বিতল বাসের একটাতে ৫৯ আসন অপরটাতে ৭৫ টি আসন রয়েছে। বিআরটিসির সাথে চুক্তিভিত্তিক এই ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এই ট্যুরিস্ট বাস গুলো লাবনী পয়েন্টের বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রের সামনে থেকে সকাল ৮ থেকে দুই ঘন্টা পরপর মেরিন ড্রাইভ দিয়ে পাটুয়ার টেক পর্যন্ত যাবে। এ বাস লাবনী থেকে শুরু করে দরিয়ানগর, সালসা বীচ, রেজুখাল, ইনানী বীচ ও পাটুয়ার টেক বীচসহ ৫ টি পয়েন্টে দাঁড়াবে। দিনে ৪ বার লাবনী থেকে পাটুয়ার টেক পর্যন্ত এ ট্যুরিস্ট বাস যাতে চলাচল করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। 

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নিঃসন্দেহে এটি কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নতুন সংযোজন এই সার্ভিস। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে। এই ট্যুরিস্ট বাসগুলো বিদেশে দেখা যায়। এটা এখন চালু হচ্ছে কক্সবাজারে। এর মাধ্যমে যদি সার্ভিসটি পরিপূর্ণভাবে চালু হয় তাহলে কক্সবাজারের পর্যটন খাত অনেক এগিয়ে যাবে এবং সমৃদ্ধ হবে"।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বার্তা২৪.কম-কে বলেন," কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের নতুন সংযোজন দুইতলা বিশিষ্ট ট্যুরিস্ট বাসে করে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারবে মেরিন ড্রাইভে এবং অবলোকন করতে পারবে কক্সবাজারের সৌন্দর্য। এর মাধ্যমে আরও এগিয়ে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। পাশাপাশি কক্সবাজারের দিকে পর্যটকরা আকৃষ্ট হয়ে ঘুরতে আসলে ঘুরবে অর্থনীতির চাকাও"।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে মেরিম ড্রাইভ সড়কে গাড়ি দুটি নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এ সময় ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিটিসিএল এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতায় বাস চলাচল স্বাভাবিকভাবে করতে পারবে কিনা সেটি সমীক্ষা করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই সার্ভিস চালুর আশা জেলা প্রশাসনের।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর