গিজার গ্রেট পিরামিড স্ফিংস : মিশরের রহস্যময় স্থাপনা

, ফিচার

ফিচার ডেস্ক,বার্তা২৪.কম | 2023-11-03 16:09:42

মিশরীয় পিরামিড, একমাত্র স্থাপনা হিসেবে ৪৫০০ বছর ধরে আমাদের মাঝে বিস্ময় তৈরি করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ‘দ্য গ্রেট পিরামিড অফ গিজা’ বলা হয় ফারাও খুফুর নির্মিত পিরামিডকে, যেটি প্রায় ১৪৭ মিটার উঁচু। গিজার এই স্থানে পরবর্তীতে আরও দুইটি পিরামিড নির্মিত হয়েছিল। গিজার গ্রেট পিরামিডের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট পিরামিডটি নির্মাণ করেছিলেন খুফুর ছেলে ফারাও গাফরে এবং সবচেয়ে ছোট পিরামিডটি নির্মাণ করেছিলেন গাফরের ছেলে মেনকউরে। এই তিনটি পিরামিডকে একত্রে বলা হয় ‘গিজার গ্রেট পিরামিড কমপ্লেক্স’।

একজন মহিলার মুখ এবং একটি সিংহের দেহের আদলে তৈরি গিজার গ্রেট স্ফিংস হাজার হাজার বছর ধরে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মুগ্ধ করেছে এবং রহস্যময় করেছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

এটা আসলে কার চেহারা ? এটা কার প্রতিনিধিত্ব করে কিংবা কার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল? ইতিহাসবিদরা এই জনপ্রিয় প্রশ্নগুলোর সম্মুখীন হয়েছেন বার বার।

কিন্তু আরেকটি বিতর্কিত রহস্য আছে - প্রকৃতি কি এর সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছিল? মিশরীয়দের কাছে আসার আগে প্রাথমিক শক্তি কি পৌরাণিক প্রাণীর মতো কোন শিলা গঠনকে ক্ষয় করেছিল?

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের একটি দল এটি বের করার চেষ্টা করছে।
এনওয়াইইউ-এর একজন সহযোগী অধ্যাপক লেইফ রিস্ট্রফ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন, আমাদের অনুসন্ধানগুলো একটি সম্ভাব্য অরিজিন স্টোরি (সত্য কাহিনী) প্রস্তাব করে কীভাবে স্ফিংসের মতো গঠনগুলো ক্ষয় থেকে আসতে পারে।

আমাদের ল্যাব পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, আশ্চর্যজনকভাবে স্ফিংসের মতো আকারগুলো আসলে দ্রুত প্রবাহের দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত পদার্থ থেকে আসতে পারে।

গবেষণাটি মরুভূমিতে বাতাস-প্রবাহিত ধূলিকণা এবং বালি থেকে পাওয়া অস্বাভাবিক শিলা গঠনের প্রতিলিপি তৈরির উপর কেন্দ্রীভূত ছিল, যা ইয়ারডাং নামে পরিচিত।

রিস্ট্রফের দল এই সম্ভাবনাটি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এটা জানা যায় যে গ্রেট স্ফিংস মূলত এই ইয়ার্ডাংগুলোর মধ্যে একটি ছিল যা পরবর্তীতে মানুষের দ্বারা বিস্তারিত ছিল।
এটা করার জন্য তারা নরম কাদামাটির ঢিবি নিয়েছিল। যার ভিতরে এম্বেড করা শক্ত, কম ক্ষয়যোগ্য উপাদান ছিল। এটি উত্তর-পূর্ব মিশরের ভূখণ্ডের অনুকরণ করে, যেখানে গ্রেট স্ফিঙ্কস বসে।

তারপরে তারা এই গঠনগুলোকে পানির একটি দ্রুত প্রবাহিত স্রোত দিয়ে ধুয়ে দেয় যা বাতাসের প্রতিলিপি তৈরি করে । এরপর তারা সেটি খোদাই করে এবং নতুন আকার দেয়। অবশেষে স্ফিংসের মতো গঠনে পৌঁছে।

কাঠামোটির শক্ত বা আরও প্রতিরোধী উপাদানটি সিংহের মাথা হয়ে ওঠে এবং আরও অনেক বৈশিষ্ট্য যেমন একটি আন্ডারকাট ‘ঘাড়’, সামনে মাটিতে বিছানো ‘পাঞ্জা’ এবং খিলানযুক্ত ‘পিছন’ বিকাশ লাভ করে।

রিস্ট্রফ পর্যবেক্ষণ করে বলেন, আমাদের ফলাফলগুলো ক্ষয় থেকে কীভাবে স্ফিংসের মতো গঠন হতে পারে তার জন্য একটি সহজ উত্স তত্ত্ব প্রদান করে। এই যে ইয়ার্ডাংগুলো বিদ্যমান রয়েছে যেগুলো উপবিষ্ট বা শুয়ে থাকা প্রাণীর মতো দেখায় আসলে এটাই আমাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর