গ্রামের বাজারে দেখা মিলল বিলুপ্ত গুলগুলা পিঠা

, ফিচার

রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) | 2023-10-26 20:42:21

এক সময় ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গ্রামাঞ্চলের চায়ের দোকান কিংবা সড়কের পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানে দেদারসে বিক্রি হতো গুলগুলা পিঠা। কিন্ত নগর সংস্কৃতির চাপে এই গ্রামের অনেক পিঠার মতো গুলগুলা পিঠাও এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে।

তবে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধূরুয়া বাজারে নুরুল ইসলামের দোকানে দেখা মিলল বিলুপ্ত এই গুলগুলা পিঠার।

দোকানের সামনে রাখা চুলোয় আগুন জ্বালিয়ে কড়াইয়ের গরম ডুবো তেলে আটার সাথে অন্যান্য উপকরণের মিশ্রণ গোল গোল করে ফেলে গুলগুলা পিঠা তৈরি করছেন এই দোকানি। প্রতি পিস পিঠার দাম মাত্র পাঁচ টাকা।

আমিনুল ইসলামের বাড়ি রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধূরুয়া গ্রামে। ধূরুয়া বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে সিঙ্গারা, পুরি, পেঁয়াজি তৈরির পাশাপাশি গুলগুলা পিঠাও তৈরি করেন তিনি।

গুলগুলা তৈরি করতে কুসুম গরম পানিতে আটা, চিনি, লবন, বেকিং সোডা, জিরা, মৌরির মিশ্রণ মিশিয়ে আধাঘণ্টা রাখতে হয়। এরপর কড়াইয়ের তেল গরম করে গোল করে আটার মিশ্রণ গোল গোল করে ফেলতে হবে। 

প্রতিদিন সন্ধ্যায় গুলাগুলা পিঠা তৈরি করেন দোকানি নুরুল ইসলাম

প্রতিদিন সন্ধ্যায় গুলাগুলা পিঠা তৈরি করেন দোকানি নুরুল ইসলাম। গরম গরম এই পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় করেন দোকানে। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় গ্রামের মানুষের কাছে এই পিঠা বেশ জনপ্রিয়। 

গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, গুলগুলা পিঠা নরম তুলতুলে। এই পিঠার উপরিভাগ মচমচে, ভেতরটা নরম। খেতে মজাদার এবং দামও কম। রেসিপি জানা থাকলে বাসাবাড়িতেও খুব সহজেই এই পিঠা তৈরি করা যায়।

পিঠা খেতে আসা ওবায়দুর রহমান বলেন, নগর সংস্কৃতির চাপে গ্রামাঞ্চলের অনেক পিঠার মতোই গুলগুলা পিঠা হারিয়ে যাচ্ছে। স্কুলে পড়াকালীন গ্রামের বাজারে গুলগুলা পিঠা ১ টাকা/ ৫০ পয়সা দিয়ে কিনে খেয়েছি। এখন পাঁচ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে আকারে একটু ছোট।

এই পিঠার উপরিভাগ মচমচে, ভেতরটা নরম

স্থানীয় বাসিন্দা হাতেম খান বলেন, গুলগুলা পিঠা গ্রামের বাজারের সড়কের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয় বলে অনেকেই খেতে চান না। তাই ভালো মানের আটা, চিনি, তেল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে বাড়িতেও এই পিঠা তৈরি করে খাওয়া যায়।

দোকানি নুরুল ইসলাম বলেন, গুলাগুলা পিঠাকে অনেকে গুলগুলি পিঠা বলে। ১৫ বছর ধরে এই পিঠা বিক্রি করছি। গ্রামের শিশুদের কাছে এই পিঠা ভীষণ প্রিয়। অনেকেই দোকানে এই পিঠা খেয়ে বাড়িতেও নিয়ে যান । প্রতিদিন দুইশত পিসের বেশি গুলগুলা পিঠা বিক্রি হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর