রবীন্দ্র-কবিতার ব্যবহার ‘চুরি’ না ‘অনুপ্রেরণা’? জানালেন কবির বকুল

সুরতাল, বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 21:59:50

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতা ‘হঠাৎ দেখা’ থেকে লাইন নিয়ে নিজের গানে ব্যবহার করেছেন কবির বকুল। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে জনপ্রিয় এই গীতিকারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনাও।

পরীমণি অভিনীত 'বিশ্বসুন্দরী' ছবিতে ইমরান-কনার গাওয়া গান 'তুই কি আমার হবি রে' গানের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার ‘রাতের সব তারা আছে দিনের আলোর গভীরে’ থেকে ‘আলো’ শব্দটি বাদ দিয়ে বাকিটুকু হুবহু ব্যবহৃত।

কিন্তু রবীন্দ্র-কবিতার ব্যবহার ‘চুরি’ না ‘অনুপ্রেরণা’ অবশেষে সেটি নিয়ে মুখ খুললেন কবির বকুল। এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্তর আলোচনা করলেন এই গীতিকার।

নির্মলেন্দু গুণের ‘আমি কি ডরাই সখি, ভালোবাসা ভিখারি, বিরহে?’ সহ কয়েকটি কবিতার লাইন তুলে ধরে কবির বকুলের বক্তব্য- “অমর লেখা থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নেওয়াই যায়... আধুনিক কবিতা বা গীতিকবিতায় ক্লাসিক বা ধ্রুপদী রচনা থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করা একটা স্বীকৃত রীতি।”

কবি বিষ্ণু দে রবীন্দ্রনাথের কবিতা কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন নিজের কবিতায়, সে প্রসঙ্গে কবির বকুল একটি উদাহরণ তুলে ধরেছেন- রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘এতদিন পরে প্রভাতে এসেছ/ কী জানি কী ভাবি মনে/ ঝড় হয়ে গেছে কাল রজনীতে/ রজনীগন্ধাবনে’ মাথায় রেখে বিষ্ণু দে লিখেছিলেন, ‘কাল রজনীতে ঝড় হয়ে গেছে রজনীগন্ধা-বনে/ বৈশাখী মেঘ মেদুর হয়েছে সুদূর গগনকোণে…’। সব শেষে কবির বকুল বলেছেন, “রাতের সব তারা আছে দিনের আলোর গভীরে’ এটি যে রবীন্দ্রনাথের লাইন, তা-ও কি বলে দিতে হবে?"

বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ডের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী ক’দিন আগে এই গান রচনাকে ‘জোচ্চুরি’ বললেও বর্তমানে পূর্ব-মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “সম্পূর্ণ বিশ্বে এখনও ব্রিটিশ কপিরাইট আইনটিকে সবাই মেনে চলার চেষ্টা করেন। সেই আইনের ৩১ নম্বর সেকশনে আমি এই বিতর্কের একটা সুরাহা পেলাম। অধ্যায়টির নাম ইনসিডেন্টাল ইনক্লুশন। ঘটনাক্রমে কোনও একটা কিছু কোথাও মিলে যায়, তবে সেটা কপিরাইট লঙ্ঘন হবে না। যদি না তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হয়। কবির বকুল নিশ্চয়ই রবীন্দ্রনাথের মানহানির জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাজটি করেননি। এটি ওই কবিতা বা লাইনের প্রতি অতি-মুগ্ধতা থেকেই হয়েছে বলে আমি মনে করি। কপিরাইটের ভাষায় এটিকে আমরা বলি ‘ফেয়ার ইউজ।”

প্রসঙ্গত, 'তুই কি আমার হবি রে' গানটির ইউটিউব শ্রোতার সংখ্যা তিন কোটি ছুঁই-ছুঁই। গানটির জন্য কেবল গীতকার নন, গায়ক, গায়িকা, সুরকারও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে চলেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর