বাতিল হচ্ছে চেক পয়েন্ট সিস্টেমসের বন্ড লাইসেন্স

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 03:04:38

চেক পয়েন্ট সিস্টেমসকে ২৪ জুনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। সঠিক জবাব দিতে ব্যত্যয় হলে বন্ডেড সুবিধার অপব্যবহার করে ৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকার কর ফাঁকির দায়ে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বন্ডেড সুবিধায় আমদানিকৃত কোম্পানির কাঁচামাল কম পাওয়া এবং খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি করে ৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকার কর ফাঁকি দেওয়ার কারণ জানতে ২৯ এপ্রিল প্রথম দফায় তাদের শোকজ করা হয়। কোম্পানিকে ৯ মের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তার জবাব দেয়নি। বরং ২৯মে কারণ দর্শানোর জবাব দিতে ২ মাস সময় দেওয়ার জন্য আবেদন করে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট বরাবর।

তারা জানায়, ঈদ উপলক্ষে কোম্পানির কর্মকর্তাদের আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। এরপর কোম্পানিকে চলতি বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত শুনানির জন্য সময় দেয়া হয়। চেক পয়েন্ট সিস্টেমস কর্তৃপক্ষ এদিন উপস্থিত হয়ে সঠিক জবাব দিতে না পারলে জরিমানার পাশাপাশি লাইসেন্স বাতিল করবে।

আরও পড়ুন: চেক পয়েন্ট সিস্টেমসের ৪০ কোটি কর ফাঁকি

নাম না প্রকাশের শর্তে এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কোম্পানি কর্তৃপক্ষ যদি দণ্ড ও জরিমানা দিয়ে দেয়, নতি স্বীকার করে তবে লাইসেন্স বাতিল নাও হতে পারে।'

চলতি বছরের ৭ এপ্রিল কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ৪০ কোটি টাকার কর ফাঁকির মামলা করে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা। কোম্পানিটি নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে অবস্থিত।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার মো. আল আমিন। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তিনি বলেন, ‘আমদানিকৃত পণ্য অবৈধ অপসারণপূর্বক চোরাই পথে খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাসহ দাবিনামা জারি করা হয়েছে।’

কমিশনার আল আমিন বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২ মার্চ ঢাকা কাস্টমসের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজিউর রহমান মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রিভেন্টিভ দল প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।'

এ সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিগণের উপস্থিতিতে বন্ডেড ওয়্যারহাউজের কাঁচামালের মজুদ যাচাই করেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির বন্ড রেজিস্টার, আমদানি-রফতানি তথ্য আড়াআড়ি যাচাই করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামালের মধ্যে সিগনালিং এপারেটাস ২ হাজার ৯৩ লাখ ৬৭৭ কেজি, পেপার ও পেপার বোর্ড ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮ কেজি, থার্মাল ট্রান্সফার রিবন ১১ হাজার ৫৩৯ কেজি, স্ট্রিং ১ হাজার ৭২৫ কেজি, সেলফ এডহেসিভ পেপার ১৩ হাজার ১৫৭ কেজি, প্রিন্টিং ইনক ৪২ হাজার ৮৫ কেজি এবং রিবন ৫ হাজার ১৬৭ কেজি মজুদ কম পাওয়া যায়। ফলে কাঁচামাল-পণ্য অবৈধভাবে অপসারণপূর্বক খোলাবাজারে বিক্রি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার বলেন, ‘পণ্যের মোট শুল্কায়ন মূল্য ৯৮ কোটি ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮১১ টাকা এবং ফাঁকিকৃতশুল্ক করের পরিমাণ ৪০ কোটি ২৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৪২ টাকা। ফাঁকিকৃত শুল্ক কর আদায় ও দণ্ডমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে এ দফতর থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গত ৮ মে দাবিনামা সম্বলিত কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়েছে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর