পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগেই ব্যবসা কমেছে রানারের

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 09:05:14

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগেই মুনাফা কমেছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের। কোম্পানিটির ২০১৮-২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেনের আমলে যত কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, তার বেশিরভাগ কোম্পানি তালিকাভুক্তির পরপরই মুনাফা কমেছে। আর রানার অটোমোবাইল কোম্পানির তালিকাভুক্তির আগেই মুনাফা কমেছে। ফলে এটা স্পষ্ট যে, কোম্পানিটিও ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রসপেক্টাস তৈরি করে বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। নতুন করে এসব কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করবেন, তারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ডিএসই’র তথ্য মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ২০১৮ থেকে মার্চ ২০১৯) কর বাদে কোম্পানির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। তাতে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ দশমিক ১২ টাকা। অথচ আইপিওর আগে কোম্পানিটি ইপিএস দেখিয়েছে ৩ দশমিক ৫৮ টাকা।

শুধু তাই নয়, কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক অর্থাৎ ২০১৯ সালের জানুয়ারি- মার্চ পর্যন্ত সময়ে কর বাদে মুনাফা হয়েছে মাত্র ৭ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তাতে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে শূন্য দশমিক ৬৭ টাকা। আইপিওতে আসার আগেই কোম্পানির ইপিএস দেখিয়েছে শূন্য দশমিক ৭৭ টাকা। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ৬৬ দশমিক ২৪ টাকা।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২১ মে) দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। এন ক্যাটাগরিতে ট্রেডিং কোড ইংরেজিতে 'Runnerauto'। কোম্পানির কোড নম্বর হবে- ১৩২৪৬।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) ডিএসই’র বোর্ড সভায় বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানিটি গত বছরের ১০ জুলাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৫০তম সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রানার ইলেক্ট্রনিক বিডিং সম্পাদনের মাধ্যমে (প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের) প্রান্ত-সীমা (কাট অফ প্রাইস) নির্ধারণ করে। তারপর সাবক্রিবশনসহ তালিকাভুক্তির সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এরই প্রেক্ষিতে কোম্পানিটিতে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এ টাকায় গবেষণা ও উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের ব্যয় বাবদ খরচ করবে।

৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) তিন টাকা ৩১ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। একই বছরে কোম্পানির সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন পরবর্তী শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ৫৫ টাকা ৭০ পয়সা। আর পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া এনএভি ৪১ টাকা ৯৪ পয়সা।

আর কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর রেজিস্ট্রার টু দি ইস্যু হিসেবে কাজ করছে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

এ সম্পর্কিত আরও খবর