সবুজ অর্থনীতি ঘটাতে পারে বাংলাদেশের আরেক উন্নয়ন বিস্ময়

, যুক্তিতর্ক

ড. আতিউর রহমান | 2023-09-01 19:28:54

হালে পৃথিবীর নানা দেশ সবুজ অর্থনীতি কৌশলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনে গতানুগতিক অর্থনীতির প্রভাবশালী এক বিকল্প মডেল হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে এই সবুজ অর্থনীতি। কারণ সবুজ অর্থনীতি অসমতা দূর করে, দারিদ্র্য কমায় এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৃষ্ঠপোষকতা যোগায়। সম্পদের অভাব দূর করে। পরিবেশের বিস্তৃত ঝুঁকি কমায় এবং মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা করে। মানুষের কল্যাণ করে থাকে। আর টেকসই উন্নয়নের শক্তিশালী পাটাতন তৈরি করে। তাই সারা বিশ্বেরই মনোযোগ বাড়ছে সবুজ অর্থনীতি বিষয়ে। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ‘ইউএন এনভায়রনমেন্ট’-এর তথ্য মতে—অন্তর্ভূক্তিমূলক সবুজ অর্থায়ন এমন এক ব্যবস্থা যা পরিবেশের ঝুঁকি কমায়, জনকল্যাণ বাড়ায়, অভাব কমায় এবং সামাজিক সমতা গড়ে তোলে। ২০০৮ সালে জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা ‘গ্রিন ইকোনমি ইনিশিয়েটিভ (জিইআই)’ নামে শুরু করে সবুজ অর্থনীতি কর্মসূচি। যার উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশ-বান্ধব বিনিয়োগে সমর্থন জোরালো করা। বৈশ্বিক ঝুঁকি গবেষণায় দেশীয় পর্যায়ে সাহায্য বাড়ানো, সবুজ অর্থনীতি কর্মসূচি সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নীতি-নির্ধারকদের প্রভাবিত করা ছিল এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য।

সাধারণত একটি দেশের আর্থিক খাত সেদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। সুতরাং যথাযথ প্রস্তুতি ও আন্তরিকতা নিয়ে খাতটির কার্যক্রম চালানো হলে সবুজ অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে পারে বাংলাদেশের আরেক উন্নয়ন বিস্ময়। সবুজ অর্থায়ন ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, পরিবার থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের মধ্যে নানা রকম পরিষেবার বিন্যাস ঘটিয়ে বাস্তব অর্থনীতির সেবা দান করা। অর্থনীতিতে স্বল্প মেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতা জোরদার করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান হিসেবে সবুজ অর্থনীতি বিকাশে উদ্ভাবনমূলক অর্থায়ন কৌশল নির্মাণে আমি স্বদেশে ও বিদেশে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আর সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি কৌশলে টেকসই উন্নয়ন ধারণা নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। আর্থিক ও প্রকৃত খাতের ঐতিহাসিক যোগসূত্র এক নুতন মাত্রা পাচ্ছে। এর ফলে, অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বৈশ্বিক মানচিত্রের সীমানা স্পর্শ করার সুযোগ বাড়ছে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা আর্থিক ব্যবস্থায় নতুন চাহিদা তৈরি করছে। এই চাহিদা একসেট ট্রান্সমিশন চ্যানেলের মাধ্যমে আবর্তিত হচ্ছে। ব্যাপক মাত্রায় দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে স্পর্শকাতর এই চ্যানেল পরিবেশ ও সামাজিক ক্ষেত্রের মূলস্রোতে ঘুরে ফিরে আসছে। সঙ্গে রয়েছে নীতিমালা, নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতাপূর্ণ বাজারের নেতৃত্ব। মানুষ, প্রকৃতি ও অর্থনীতি এক সূতোয় গেঁথে যাচ্ছে এই নয়া ভাবনায়। আর এই নয়া ভাবনাই সবুজ অর্থনীতির পক্ষে জোরালো দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে? এক্ষেত্রে পাঁচটি দৃষ্টিভঙ্গির কথা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বলা যায়। প্রথমত মূলধন পুনর্সংস্থানের প্রচেষ্টাপূর্ণ আর্থিক ব্যবস্থার মাধ্যমে (যেমন নিয়ন্ত্রক ও প্রধান কারবারী) পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগের পক্ষে মূলধন যোগান দেয়া। যেমন, টেকসই লক্ষ্য নিয়ে নতুন করে এগিয়ে আসা বা একাজে নিয়োজিত উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠানকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। দ্বিতীয়ত সব ধরনের ব্যবসায়ী উদ্যোগের পরিবেশগত সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নির্ণয় করে এগিয়ে যাওয়া। আর্থিক সম্পদ এবং প্রতিষ্ঠানের পরিবেশের অবক্ষয় থেকে উদ্ভূত ঝুঁকি নিরসনে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। এজন্য আর্থিক নীতি কৌশল নির্ধারক রেগুলেশনের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে। ক্ষয়িষ্ণু পরিবেশ অর্থ-সম্পদ এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। এই ঝুঁকির পরিধি বুঝতে তাই উদ্যোক্তা, রেগুলেটর ও অন্যান্যদের মনোযোগী হতে হবে। তৈরি করতে হবে প্রয়োজনীয় আর্থিক নীতি-বিধান। বিপর্যয়ের ঝুঁকি থেকে উত্তরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। তৃতীয়ত পরিবেশগত, সামাজিক এবং সুশাসন সংশ্লিষ্টদের বিনিয়োগের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক বোঝানো ও স্বীকার করানোর কাজ করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। এসব কাজে বাঁধা বিপত্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত উপাদানসমূহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিবেচনায় আনা দরকার। এক্ষেত্রে আর্থিক খাতের রেগুলেটরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থত প্রতিবেদন এবং প্রকাশনা। টেকসই আর্থিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রাহক এবং নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে পারস্পরিক রিপোর্টিং বাড়ানো প্রয়োজন। ‘ডিসক্লোজার’ পর্যাপ্ত হলেই ভোক্তার পক্ষে সঠিকভাবে আর্থিক পণ্য নির্বাচন সহজতর হবে। বাস্তব অর্থনীতি এবং আর্থিক ব্যবস্থার মধ্যে কার্যকর সেতু হিসেবে কাজ করে এই রিপোর্টিং। এই রিপোর্টিং কাঙ্ক্ষিত তথ্যপ্রবাহের উন্নয়ন ঘটায়। সবশেষে যে বিষয়টি মোটেও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় তা হলো—গোটা অর্থ ব্যবস্থাকে টেকসই উপায়ে সাজানোর জন্য দরকার কৌশলগত পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা হতে পারে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী। এক্ষেত্রে পথ নির্দেশনার জন্য রোডম্যাপ থাকাও জরুরি। ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ অনেক দেশ এমন পথ-নক্সা এরই মধ্যে তৈরি করেছে। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সামাজিক, পরিবেশগত ও পরিচালনা ঝুঁকি বিষয়ে নীতিমালা চালু করেছে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসব ঝুঁকির পরিমাপ ও তার আলোকেই কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্যে যথেষ্ট রেগুলেটরি চাপ অব্যাহত রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

নিঃসন্দেহে সবুজ অর্থায়নের উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে ব্যাংক। এর প্রথম কারণ হলো, ব্যবসায়-উদ্যোগ পরিচালনার জন্য অর্থের যোগান দেয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে ব্যাংক তার গ্রাহকদের সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার, বাস্তবায়ন ও নীতি-কৌশল নিয়ে জোরালোভাবে প্রেরণা যোগাতে পারে এবং সেই প্রযুক্তির জন্য অর্থ যোগান দিতে পারে। সেই অর্থ ঠিকমতো কাজে লাগানো হচ্ছে কি না তার দেখভালও করতে পারে। এইভাবেই ব্যাংক এবং তার গ্রাহকদের মিথস্ক্রিয়ায় অর্জিত হতে পারে সবুজ প্রবৃদ্ধি। এসব কারণে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরাসারি জড়িত থাকতে পারে ব্যাংক। আর যেহেতু ব্যবসা ক্ষেত্রের যাবতীয় তথ্যসূত্র থাকে ব্যাংকের কাছে, তাই অতি ক্ষুদ্র পর্যায়েও কী হচ্ছে ব্যাংক তা অবহিত থাকে। সেজন্যে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভালো নীতি-উপদেশ দিতে পারে একমাত্র ব্যাংকের কর্মকর্তারাই। সবুজ প্রবৃদ্ধি সংক্রান্ত কাজে ব্যাংকের অপরাপর গ্রাহক কে কী করছেন এ বিষয়ে ব্যাংক তার গ্রাহকদের তথ্যসেবা দিয়ে অবহিত ও অনুপ্রাণিত করতে পারে। সবুজ উদ্যোগে অভিজ্ঞতালব্ধ তথ্য-জ্ঞান বিনিময়ের কাজও করতে পারে ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন কার্যকর করতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উন্নয়নমূলক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকের সক্ষমতা জোরদারে কাজ করতে পারে। যেমন পুনঃঅর্থায়ন সুযোগ সৃষ্টি করা। মানবিক চেতনার মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষেত্রকে সবুজ অর্থায়নে আগ্রহী করে তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক যথাযথ কাজ করছে কি না সেসব তথ্যের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি ব্যবস্থা কার্যকর করার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও সক্রিয় সবুজ ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের উদ্ভূত সমস্যা ও তথ্য সমূহের নীতিমালা তৈরির কাজ নিশ্চিত করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে পুঁজিবাজার ও বীমা বাজারও সবুজ অর্থায়নের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করতে পারে। উন্নত বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে পুঁজিবাজার ও বীমা বাজারের তথ্য প্রকাশ ও প্রণোদনা প্রদানে বড় মাপের সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক ইংল্যান্ড বীমা বাজারকে সবুজ করার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বীমা বাজারের মূলস্রোতে ঢুকে পড়েছে। আর সেই ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাতে ঐ দেশের বীমাখাত দিনে দিনে পারদর্শী হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশে সবুজ অর্থায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভূক্তির (বর্তমান সরকারের জোরালো সমর্থনের কারণে) ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উন্নয়নমূলক ভূমিকার কারণে সবুজ অর্থায়নে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে গৌরবময় আসনে স্থান করে নিয়েছে। এই অভিযাত্রাকে টেকসই করার স্বার্থেই বাংলাদেশ ব্যাংককে সদা সচেতন ও সক্রিয় থাকতে হবে। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল বিশ্ব আর্থিক মন্দার গোলমেলে পরিবেশের মধ্যেও বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি সবুজ অর্থায়ন সহায়ক রেগুলেটর হিসেবে দাঁড় করাবার। একই সঙ্গে জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা ইউনেপের টেকসই অর্থায়ন বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য হিসেবেও আমি বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সবুজ পণ্য উৎপাদনের পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি চালু করেছে। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়নে প্রায় দ্বিগুণ মূলধন (৪৭৮ মিলিয়ন টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯২০ মিলিয়ন টাকা) যোগান দিয়েছে। এই উদ্যোগের আওতায় সর্বোচ্চ পরিমাণে ঋণ গ্রহণকারী ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে—পরিবেশ বান্ধব ইটের ভাটা, নবায়নযোগ্য জ্বালানী শক্তি এবং তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এজন্যে পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নীতিমালার মাধ্যমে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড উৎপাদনের সাথে জড়িত উদ্যোক্তাদের অর্থযোগানে ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করে সেসব কাটিয়ে ওঠার জন্যে সবুজ অর্থায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্যে ঋণ প্রস্তাবনার শুরুতে উদ্যোক্তার পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির বিষয় খতিয়ে দেখার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি সবুজ বিনিয়োগ বা সবুজ অর্থায়নের উদ্যোগকে দৃঢ় সর্মথন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেমন নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদন (সৌরবিদ্যুৎ), জ্বালানী সাশ্রয়ী দক্ষতার অভিযোজন (যেমন-এলইডি বা লাইট ইমিটেটিং ডায়োড সংযোজন), কারখানায় ন্যূনতম বর্জ্য উৎপাদনের অনুশীলন, সূর্যের আলো বেশি করে ব্যবহার ইত্যাদি। সবুজ পুনঃঅর্থায়ন চালু রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গঠন করেছে ‘বিশেষ তহবিল’। বহিরাগত উন্নয়ন সহযোগীরাও এই তহবিলের অংশীদার (যেমন এডিবি ও বিশ্বব্যাংক)। এভাবে পুনঃঅর্থায়নের মাধ্যমে পরিচালিত সবুজ প্রকল্পগুলো হচ্ছে পারিবারিক সৌরবিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুতের ক্ষুদ্র কেন্দ্র স্থাপন, সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ ব্যবস্থার প্রবর্তন, সৌর বিদ্যুতের প্যানেল সংযোজন, জৈব জ্বালানী, বায়োগ্যাস ও ইটিপি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ইটভাটায় পরিবেশ দূষণকারী কাঠ ব্যবহার বা পরিবেশ বিধ্বংসী ইটপোড়ানোর পরিবর্তে জ্বালানী সাশ্রয়ী বিকল্প উপায়ে ইট পোড়ানো, জৈব সার উৎপাদন, ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, পুরনো প্লাস্টিক বোতল পুনর্ব্যবহার, সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি রিসাইক্লিং, লাইট ইমিটেটিং ডায়োড বা এলইডি বাতি, এলইডি মনিটর উৎপাদন এবং সবুজ গার্মেন্টস কারখানা ও বাড়ি নির্মাণের মতো নানামুখী অর্ধশতাধিক সবুজ পণ্যের বিনিয়োগের উদ্যোগ কার্যকর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকিং খাতকে কাগজবিহীন ও আধুনিক করে তোলার জন্য লেনদেন ও নজরদারি ব্যবস্থার ব্যাপক ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে যা চূড়ান্ত অর্থে একটি সবুজ উদ্যোগই। অর্থনীতির চাকাকে সবুজ করার জন্য দুশো কোটি টাকার রিভলভিং সবুজ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। যা দিয়ে প্রাথমিকভাবে রপ্তানি শিল্প যেমন, তৈরি পোশাক, চামড়া ইত্যাদিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালিত চৌকস পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে বিশ কোটি ডলার মূল্যের সবুজ রূপান্তর তহবিল। এটি আমাদের নিজস্ব রিজার্ভ থেকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তাছাড়া, বিশ্বব্যাংক এবং জাইকাও সবুজ উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থ যোগানে এগিয়ে এসেছে। এসব সবুজ অর্থায়ন কর্মসূচির যথার্থ বাস্তবায়ন করা গেলে নিশ্চয় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের জন্যে (যেমন, সবুজ টেক্সটাইল পণ্য, চামড়া) বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ নয়া সবুজ ব্র্যান্ডিংয়ের উৎসও হয়ে উঠতে পারবে। সবুজ অর্থায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপগুলো ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও স্বীকার করতে হবে আমাদের সামনে রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। যেমন, সীমিত সম্পদ, চাহিদার অপ্রতুলতা, দক্ষতার অভাব, উচ্চ ঝুঁকি গ্রহণ, অধিক ব্যয় ইত্যাদি। এছাড়াও বর্তমান পুঁজি বাজারের পরিবেশ এই সবুজ ব্যাংকিং এর অনুকূলে নেই। এক্ষেত্রেও সবুজ অর্থায়নের সূচনার কথা বিবেচনা করতে হবে। বিশেষ করে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে সবুজ করার জন্যে সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ করতে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে পারে পুঁজিবাজারের রেগুলেটর। রাজস্ব নীতিতে সে জন্যে যথেষ্ট সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আর্থিক খাতের ভূমিকা, নীতি-পলিসি তৈরির প্রেক্ষাপটসমূহ নজিরবিহীন মনোযোগ আকর্ষণ করেছে গোটা বিশ্বে। সুবজ অর্থায়ন বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের নীতি-নির্ধারকগণ বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করেছে। চীনের কথাই ধরা যাক। দেশটির অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে আরো এগিয়ে নিতে উচ্চাভিলাষী সবুজ অর্থায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সেদেশের সরকার। চীনের গৃহীত নানাবিধ উদ্ভাবনী উদ্যোগের সঙ্গে পুরোমাত্রায় কাজ করে যাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নেদারল্যান্ড সরকার ব্যাংক-বীমা খাতের পাশাপাশি দেশটির পেনশন শিল্পের টেকসই অর্থায়ন আলোচনা জাতীয় কৌশলের অন্তর্ভূক্ত করেছে। জলবায়ু ঝুঁকি সম্পর্কিত বিআইএস টাস্কফোর্সের কাজের জন্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নরকে প্রধান করে আর্থিক স্থিতিশীলতা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া আগেই জানিয়েছি, জলবায়ু পরিবর্তন ও সমন্বিত ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ঐ দেশের বীমাখাতের রূপান্তর ঘটিয়েছে। এভাবে উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো গ্রহণ করছে সবুজ অর্থায়ন কৌশল। কেনিয়ার কথা উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে। কেনিয়া এখন ডিজিটাল অর্থায়নে গোটা বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অবশ্য, বাংলাদেশও কম যায় না। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকি বিষয়টি মনে রেখে তারা উদ্ভাবনীমূলক সবুজ ডিজিটাল অর্থায়নের জন্য মোবাইল পেমেন্ট প্লাটফর্মে অ্যাপস যুক্ত করে সবুজ অর্থায়নের ধারণা সুকৌশলে কাজে লাগিয়েছে। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ করছে। ‘নেট মিটারিং’-এর মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। ব্যবহার করছে ব্লকচেইন, ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো আধুনিক ডিজিটাল সবুজ লেনদেন মাধ্যম। বিশ্বের প্রথম টেকসই অর্থায়ন রোড ম্যাপ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আর্থিক রেগুলেটরি অথরিটি। ব্রাজিলের প্রভাবশালী ‘ব্যাংকার এসোসিয়েশন’ সেদেশের ব্যাংকিং সম্প্রদায়কে সবুজ অর্থায়নে একীভূত করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। অথচ আমাদের দেশের ব্যাংকের মালিকরা সবুজের বদলে উল্টো কাজেই মনে হয় বেশি আগ্রহী।

সবুজ অর্থায়নে আমাদের বাংলাদেশের প্রচেষ্টা, উদ্যোগ, সফলতা এবং অর্জন সম্পর্কে আলোকপাত করার আগে একথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, আমাদের এখনো অনেকদূর পথচলা বাকি রয়েছে। বাংলাদেশে সবুজ অর্থায়ন একটি সূচনা মাত্র। গন্তব্য নয়। আর্থিক খাতের সবুজায়ন প্রক্রিয়া বাড়ানোর কাজে দেশের শীর্ষ নীতি-কৌশল প্রণেতাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিকরণ, নিরীক্ষায়ন ও বাস্তবায়নের পথে আমাদের আরো অনেক কিছুই করার আছে। সবুজ অর্থায়নের জন্য নিবেদিত একটি ‘উইং’ অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করতে পারে। সবুজ অর্থনীতির স্বার্থে মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের জন্যেই এমন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। যাদের কাজ হবে সবুজ অর্থায়নে উচ্চতর নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও ধারাবাহিকভাবে তার উন্নয়ন করা। দেশের বৃহৎ আর্থিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে সবুজ অর্থায়ন বাড়ানোর কাজে তারা নিবেদিত থাকবেন। তবে এ ধরনের যেকোনো প্রক্রিয়ায় বেসরকারি খাতকে তাদের স্থান ছেড়ে দিতে হবে। তাহলেই আমাদের চাহিদা তাড়িত সমস্যার চিহ্নিত সমাধান আমাদের হাতে চলে আসবে। সবুজ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে বেসরকারি খাতের অর্থ তহবিল, বন্ড মার্কেট ও পুঁজি বাজারের ‘লেভারেজ’ বা কর্মকাণ্ড বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রক হিসেবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেন্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা এক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের যথাযথ প্রণোদনা দিয়ে এগিয়ে নিতে পারে। যেমন, যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবুজ অর্থায়নে মনোযোগী হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ এবং যথাযথভাবে ‘ক্যামেলস রেটিং’-এর মাধ্যমে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শীর্ষ ১০ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবুজ ব্যাংকিংয়ের জন্য প্রতিবছর পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সবুজ অর্থায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ এবং সুনাম দুই-ই বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষিক্ষেত্রে, বিশেষ করে মশলা ফসল উৎপাদন ও গবাদি পশু পালনের ভর্তূকি ঋণের সহায়তা নিশ্চিত করে নয়া মডেল সৃষ্টি করেছে। মডেলটি সবুজ উদ্যোক্তাদের জন্যেও অনুসরণীয় হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক, সবুজ আর্থিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রবর্তন করেছে সিএসআর। বর্তমানে সিএসআর এর ১০ শতাংশ ব্যায়িত হচ্ছে সবুজ অর্থায়নের উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্যে এই তহবিল ব্যয় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই অনুপাত ২৫ শতাংশে উন্নীত করা দরকার। সামাজিক উদ্যোক্তারা এই তহবিল থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে। নয়া উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতা করে এই তহবিল থেকে সহযোগিতা নিচ্ছেন। সবুজ অর্থায়ন কাজে লাগিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নতুন উদ্ভাবনী ক্ষেত্রসমূহের এগিয়ে আসার আরো প্রেরণা জোগাতে হবে। পারিবারিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা থেকে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ কিনে ‘নেট মিটারিং’-এর মাধ্যমে অফগ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার মাধ্যমে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলার কাজ অনেকটাই সম্ভব করা যেতে পারে। আমাদের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে এ বিষয়ে উৎসাহী করার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে সবুজ উদ্ভাবনী কাজে সহযোগিতা করা হলে নিজেদের উৎপাদিত জ্বালানী ব্যবহারের পর অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বিক্রি করতে আগ্রহী হবেন আরো বেশি পরিবার। সেজন্যে প্রণোদনা প্যাকেজটি যথার্থ করার প্রয়োজন রয়েছে। শুনতে পাচ্ছি, সরকার এরই মধ্যে ‘নেট মিটারিং’ নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে করে রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রির সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যাবে। সত্যি সত্যি এটা হবে একটি স্মার্ট কার্যক্রম।

জলবায়ু ঝুঁকি ও টেকসই অর্থায়নের জন্যে নিবেদিত বৈশ্বিক অর্থের উৎস বাংলাদেশের হাতে এখনো পর্যন্ত যথেষ্ট নেই। থাকলে বাংলাদেশের এইসব প্রত্যাশা পুরণ করতে অনেকটাই সহায়ক হতো। এক্ষেত্রে উচ্চতম পর্যায়ের নীতিগত অঙ্গীকার প্রয়োজন। সংসদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে বিশ্বাসযোগ্য শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা নিয়ে এগিয়ে আসা সম্ভব হলে সবুজ বিদ্যুৎ তৈরি ও বিতরণে এক নয়া যুগের সূচনা আমরা নিশ্চয়ই করতে পারব।

বড়ই আশার কথা, ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড’ নামে আন্তর্জাতিক সবুজ জলবায়ু তহবিল, সম্প্রতি ইডকল (ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিডেট বা ইডকল) এবং পিকেএসএফ-কে বাংলাদেশী পরিচয়দানকারী কোম্পানি হিসেবে এনআইই (‘ন্যাশনাল ইমপ্লিমেন্টেশন এনটিটি’) স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশীয় এই প্রতিষ্ঠান এখন থেকে ওই তহবিলের অর্থ সহায়তা পাবে। সেই অর্থ তারা উদ্যোক্তাদের কাছে সহজলভ্য করবে। সত্যিকার অর্থেই এটি আমাদের সবুজ অর্থায়নের একটি শুভ যাত্রা বৈকি। তাই সবুজ অর্থায়নে আমাদের আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার, আর্থিক নিয়ন্ত্রক বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে কৌশলগত ভূমিকা রাখতে সক্ষম। সেজন্যে সামাজিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। নীতি নির্ধারকদেরও মনকে আরো সবুজ করতে হবে। ব্যক্তিখাত, সামাজিক উদ্যোক্তা ও স্থানীয় সরকার মিলেমিশেও সবুজ অর্থনীতি প্রচলনে উল্লেখ করার মতো ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। একটি উদাহরণ দিই। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. আইভিকে এক অনুষ্ঠানে অনুরোধ করেছিলাম তাঁর করপোরেশনের অধীনে বাড়িগুলোর ছাদে বাগান করার জন্যে মালিকদের উৎসাহী করতে কিছুটা নগর কর ছাড় ও সামাজিক উদ্যোক্তাদের কাজ করার সুযোগ করে দেবার। তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন। তাঁর প্রধান নির্বাহীও যথেষ্ট উৎসাহ দেখাচ্ছেন। ছাদ বাগানে জৈব সার ব্যবহৃত হচ্ছে। সূর্যের আলো বেশি করে ব্যবহার, সাশ্রয়ী বাতি, সবুজ বিদ্যুত ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে তিনি উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। একজন সাবেক ব্যাংকার সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এসব কাজ করছেন। আমার ধারণা সমাজ ও স্থানীয় সরকার সচেষ্ট হলে নারায়ণগঞ্জ এক সবুজ নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। আমরা বিআইডিএস ভবনের ছাদে, উত্তরা রাজুক স্কুল ও কলেজের ছাদে অনুরূপ সবুজ ছাদ বাগান গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস এসব উদ্যোগ এখনো চালু রয়েছে। সবাই মিলেই আমাদের সবুজ অর্থনীতির পক্ষে কাজ করে যেতে হবে। সবুজ অর্থনীতিই আগামীর অর্থনীতি।

ড. আতিউর রহমান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

এ সম্পর্কিত আরও খবর