প্রত্যাশায়, ভালোবাসায় বার্তা২৪

বিবিধ, যুক্তিতর্ক

রফিকুল ইসলাম মন্টু | 2023-08-27 15:06:39

যার কাছে ভালোবাসা আছে, তার কাছেই থেকে যায় প্রত্যাশা। একদিকে জমতে থাকে ভালোবাসা, অন্যদিকে বাড়তে থাকে প্রত্যাশা। মাত্র এক বছরে বার্তা২৪ পাঠক-দর্শক মহলে যে সাড়া ফেলেছে, তাতে এর প্রতি অনেকেরই অদৃশ্য এক ভালোবাসা জন্মেছে। সে কারণেই বেড়ে গেছে প্রত্যাশা। 

একটি সংবাদ মাধ্যমের পাঠকের কাছে মোটামুটি পরিচিত হতেই অনেক সময় লেগে যায়। কিন্তু এত অল্প সময়ে অদৃশ্য এক ম্যাজিকের ছোঁয়ায় বার্তা২৪ চলে গেছে অনেক দূরে। পেয়েছে পাঠক-দর্শকের গ্রহণযোগ্যতা।

পরিকল্পনা, ব্যতিক্রমী ধারণা আর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই একটি সংবাদ মাধ্যম চলার পথ সুগম করতে পারে। এগিয়ে যেতে পারে অনেক দূর। এজন্য যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি- সেটা হচ্ছে নেতৃত্ব। ক্যাপ্টেনের দক্ষতায় নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে জাহাজ। ঝড়-ঝাপটা এলে কিংবা শত্রুর আক্রমণের আভাস এলে ক্যাপ্টেনই পারেন সবাইকে বিপদমুক্ত রাখতে। ঠিক সেভাবেই বার্তা২৪-এ আছেন একজন কাণ্ডারি। তিনি অনলাইন সংবাদপত্রের জনক আলমগীর হোসেন, আমাদের সবার প্রিয় আলমগীর ভাই। এই উপাধি তিনি কাজ দিয়েই অর্জন করেছেন। কাগজের সংবাদ মাধ্যমের যুগেও দাপটের সঙ্গে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের জন্ম দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই বার্তা২৪-এর যাত্রা শুরু। তাহলে জনকের হাতে প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যম এগোবে না, কোনটি এগোবে?

তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘিরে নতুন সব ধারণার সূচনা এবং তা বাস্তবায়নে আলমগীর হোসেন সবার থেকে অগ্রণী। সৃজনশীল ধীশক্তি ও নতুন ভাবনা তাকে এগিয়ে রাখে। এছাড়া দীর্ঘদিন শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে রিপোর্টারের দায়িত্বসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও তাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে আমি বলব, শুধু অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের জনক নন, গণমাধ্যমে নতুন নতুন ধারণার জনকও তিনি। আমি নিজেই এর একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। এই যে আমি উপকূল নিয়ে নিবিড়ভাবে ব্যতিক্রমী ধারার সাংবাদিকতা করছি, উপকূল সাংবাদিকতা বাংলাদেশে একটি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে, এর অন্যতম শক্তিদাতা আলমগীর ভাই। আমি হয়তো ধারণাটি নিয়ে গিয়েছিলাম, আলমগীর ভাই এটি গ্রহণ না করলেও পারতেন। আমার ধারণা আছে, মাঠে কাজের শক্তি আছে; কিন্তু কাজের প্ল্যাটফরম কোথায় পাবো? অনেকের সঙ্গে যোগাযোগের পর অবশেষে আমি গিয়েছিলাম আলমগীর হোসেনের কাছে। তখন তিনি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের এডিটর-ইন-চিফ। প্রস্তাব পাওয়ার পর এক দু’বার আলোচনা। তারপর কাজ শুরু। বিভাগের নাম রাখা হয় ‘উপকূল থেকে উপকূল’। ওই সংবাদ মাধ্যমে বিভাগটি এখনও চালু আছে। উপকূল নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের কোন সংবাদ মাধ্যমে যে পৃথক বিভাগ চালু হতে পারে, সেটা দেখিয়েছেন আলমগীর হোসেন। এই বিভাগটি চালুর ফলে প্রান্তিকের বহু পাঠক যুক্ত হয়েছেন কেন্দ্রীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে। তৈরি হয়েছে বৃহৎ পাঠকগোষ্ঠী।

বার্তা২৪.কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন

 

কাজের জন্য স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ যেমন প্রয়োজন, তেমনি দরকার অন্যান্য সহযোগিতা। আলমগীর ভাইয়ের বিবেচনায় সবই আছে। উপকূল নিয়ে কাজে সর্বাধিক স্বাধীনতা পেয়েছি। নিজের মত পরিকল্পনা করে কাজ করেছি। মাস শেষে ঢাকায় এসে আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে উপকূলের গল্প শেয়ার করেছি। নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছি। আবার ছুটে গেছি মাঠে। সে এক ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা। সেই আলমগীর ভাই যখন বার্তা২৪ নিয়ে নামলেন, তখন অনেকেরই ধারণা ছিল, এই সংবাদ মাধ্যম সাড়া ফেলবে। ফেলেছেও। সবার ধারণা সত্যি করে দিয়ে মাত্র এক বছর বয়সী এই অনলাইন মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল পৌঁছেছে বহু মানুষের কাছে। ভিন্নধারা, ভিন্নমাত্রা সংযুক্ত হওয়ার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আর সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বার্তা২৪-এর এক ঝাঁক তরুণ কর্মীর নিরলস চেষ্টা। কর্মী চিনতে, কর্মী বাছাইয়ে, কর্মীর ভেতর থেকে কাজ বের করতে, আলমগীর ভাইয়ের তুলনা নেই। তাঁর টিমের কর্মীরা সেটা ভালোই জানেন। শুধু স্বাধীনতা নয়, কীভাবে একজন কর্মী আনন্দময় পরিবেশে কাজ কতে পারেন, কাজটাকে কীভাবে নিজের কাজ হিসেবে নেয়, সে পরিবেশটুকু নিশ্চিত করেন আলমগীর ভাই। আর এরই প্রভাব পড়ে সংবাদ মাধ্যমের পাঠকপ্রিয়তায়, বিশ্বাসযোগ্যতায়।

লেখার শুরুর দিকে ‘পাঠক-দর্শক’ শব্দ দু’টি ব্যবহার করেছি। বার্তা২৪ আসলে শুধু পাঠকের জন্য নয়, এটা পাঠক-দর্শকের জন্য। কারণ এটা শুধু পাঠকরা পড়েন না, দর্শকরাও দেখতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে বার্তা২৪-এ। তথ্যসমৃদ্ধ সব প্রতিবেদনের পাশাপাশি এই ব্যতিক্রমর্ধী সংবাদ মাধ্যমে রাখা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া সেকশন। প্রতিদিন রিপোর্টের পাশাপাশি এখানে প্রকাশিত হয় ভিডিও স্টোরি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসে সেসব প্রতিবেদন। দেশের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম থেকে বার্তা২৪.কমকে আলাদা করতে হলে এটা হচ্ছে নতুন সংযোজন। অন্যান্য অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ভিডিও বিভাগটি থাকলেও নিয়মিত কনটেন্ট দেখা যায় না। ভিডিও স্টোরি থাকার কারণে পাঠক-দর্শক অতি সহজেই বিষয়টি দেখে নিতে পারেন। নিঃসন্দেহে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মধ্যদিয়ে বার্তা২৪ আরও বিকশিত হবে।

নগরের সব তথ্যের পাশাপাশি প্রান্তিকের খবরে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বার্তা২৪-এর। এর বিভাগগুলোর দিকে একবার চোখ রাখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। চলমান সব খবরের পাশাপাশি রয়েছে বিশেষ বিশেষ বিভাগ। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিনোদন, আন্তর্জাতিক, ইসলাম, লাইফস্টাইল, যুক্তিতর্ক- কী নেই এ সংবাদ মাধ্যমে। সব শ্রেণীর পাঠককে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বার্তা২৪। সে কারণেই অল্প সময়ে জন্মেছে পাঠক-দর্শকের ভালোবাসা। পাঠক-দর্শকের প্রত্যাশায়, ভালোবাসায় সাফল্যের চূড়ায় উঠুক বার্তা২৪।

রফিকুল ইসলাম মন্টু: উপকূল-সন্ধানী সাংবাদিক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর