সাংবাদিক শুনলে ব্যস্ততা বাড়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর

, ক্যাম্পাস

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-03-12 14:46:44

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বিভিন্ন অবকাঠামোগত অনিয়ম, নির্মাণ ত্রুটি বা বাস্তবায়ন যে কোন ধরনের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যস্ততার অজুহাতে সাংবাদিককে এড়িয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী (চিফ ইঞ্জিনিয়ার) মোমেনুল এহসান।

২০২২ সালে প্রধান প্রকৌশলী অবসরে যাওয়ার পর থেকে এ পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। 

প্রকৌশল দপ্তর বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। সকল অবকাঠামো, কেনাকাটা, টেন্ডার, কাজের মান যাচাই সহ সার্বিক বিষয়গুলো এই বিভাগের অধিনেই হয়ে থাকে। এসব কাজে বিভিন্ন সময় অনিয়ম, দুর্নীতি, তদারকির অভাব, নিম্ন মানের কাজ, কাজ অসম্পূর্ণ রেখে টাকা ছাড় সহ বিভিন্ন রকম অভিযোগ উঠলেও এসব বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না। বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সংবাদের জন্য মন্তব্য নিতে তার রুমে গেলেও বেশির ভাগ সময় তাকে পাওয়া যায় না, আবার থাকলেও ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যায়। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন না, করলেও পরে যোগাযোগ করতে বলেন।

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কর্মরত সকল সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই প্রকৌশলী। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানের দায়িত্বের পাশাপাশি পরিবহন পুলের দায়িত্ব পালন করেন তিনি, সেখানেও একই অভিযোগ। কিছুদিন আগে দপ্তরটির বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে তার সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মন্তব্য নিতে ব্যর্থ হয় শেকৃবির আমার সংবাদ পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি।

সাংবাদিক কোন যন্ত্রপাতি ছাড়াই ভেটেরিনারির ৫ কোটির হাসপাতালে শুধু গার্ডের বিষয়ে জানতে চেয়েও কোন মন্তব্য পায়নি দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি, নষ্ট লাইটের বিষয়ে ৩দিন রুম ও মুঠোফোনে যোগাযোগের পর ৪র্থ দিন মন্তব্য পেয়েছি বলে জানান প্রতিদিনের বাংলাদেশের ক্যাপাস প্রতিনিধি, সময় দিয়েও দেখা না করে অন্যদিক দিয়ে চলে যায় প্রধান প্রকৌশলী বলে জানান দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি, একই ধরনের বিড়াম্বনার কথা বলেন সমকাল সহ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।

জানা যায়, ২০২২ সালের ফেব্রয়ারিতে মেয়াদ শেষ হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আজিজুর রহমানের। এরপর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এই প্রকৌশলীকে। তিনি একজন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির নির্বাহী প্রকৌশলীর (বিদ্যুৎ) দায়িত্বে ছিলেন।

প্রধান প্রকৌশলীর মেয়াদ শেষের পর দুইবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও এখনো চূড়ান্ত নিয়োগ দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। বর্তমানে এই বিভাগে দায়িত্বে থাকা ১০ জন প্রকৌশলীর মধ্যে ৫ জনই ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর মত গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন একজন ডিপ্লোমা ডিগ্রির ব্যক্তি থাকার বিষয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধমে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি, প্রধান প্রকৌশলীর পদে একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী দায়িত্বে থাকায় কমেছে কর্মদক্ষতা, বাড়ছে নিম্নমানের কাজ।  

এসব অভিযোগের বিষয়ে গত মঙ্গলবার প্রধান প্রকৌশলের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো। পরে কবে, কাল নাকি পরশু ? এমন প্রশ্ন করলে তিনি ফোন দিবেন বলে জানান, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আর কথা বলেন নি।

প্রধান প্রকৌশলীর এমন আচারণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, এরকম তো হওয়ার কথা না আমি বিষয়টা দেখবো, এখানে তো তথ্য গোপনের কিছু নেই আর খুব দ্রুত চীফ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ সম্পন্ন হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর