নারীরা না থাকলে সিভিলাইজেশন হতো না: জবি উপাচার্য

, ক্যাম্পাস

জবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা | 2024-03-11 19:56:11

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, ‘হিস্ট্রি কেবল পুরুষরা ক্রিয়েট করেনি। হিস্ট্রি ক্রিয়েট করেছে নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবে। নারীরা না থাকলে সিভিলাইজেশন হতো না। কিন্তু বিভিন্ন বইয়ে উল্লেখ আছে হিস্ট্রি ইজ ক্রিয়েটেড বাই ম্যান; যার মাধ্যমে নারীদের অবদানকে পরিকল্পিতভাবে চাপা দেয়া হয়েছে।’

সোমবার (১১ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি’ ভাস্কর্য চত্বরে সকাল ১১ টায় এ অনুষ্ঠিত শুরু হয়।

উপাচার্য বলেন, নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘গিভ মি এন এডুকেটেড মাদার, আই উইল গিভ ইউ এন এডুকেটেড নেশন।’ কিন্তু আমরা এই আর্গুমেন্ট মানি না। কারণ, এই ধারণা অনুযায়ী নারীরা শুধু মা হবে, বউ হবে, বোন হবে, মেয়ে হবে। এর বাইরেও যে নারীরা মানুষ সেটা মানা হয় না।

তিনি আরও বলেন, আমাকে যদি আরেকবার জন্ম নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে আমি নারী হয়েই জন্মাবো। বায়োলজিক্যাল পুরুষ এক রকম, নারী এক রকম। তার মানে এই নয় যে, আপনি নারীকে নির্যাতন করবেন, নারীকে বঞ্চিত করবেন, তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন। এটা হতে পারে না।

জিডিপিতে নারীর অবদান উল্লেখ করে উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম বলেন, বর্তমান জিডিপিতে নারীর অবদান ২০ শতাংশ। কিন্তু নারী গৃহে যে কাজ করে কাপড় ধোয়া, আয়রন করা, রান্না করা, চা বানানো, শ্বশুর-শাশুড়ির দেখাশোনা করা এগুলোকে যদি স্যাটেলাইট কাউন্টিংয়ে আনা হয় তবে জিডিপিতে তার পরিমাণ হবে ৪৮ শতাংশ।

বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম জাহান মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বলেন, এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য অনুযায়ী নারীতে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রগতি ত্বরান্বিত হবে। নারীতে বিনিয়োগযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-নারীর সমতা, সক্ষমতা ও সুযোগের গুরুত্ব দেয়া। পৃথিবীতে একমাত্র নারীতে বিনিয়োগ কখনও বিফলে যায় না। আবার শুধু নারীতে বিনিয়োগ করলেই হবে না, পুরুষও বিনিয়োগ করতে হবে। আর এভাবেই বিনিয়োগের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য প্রদান করেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান।

আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উক্ত অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ঝুমুর আহমেদ এবং শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন। এছাড়াও অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমাজকর্ম বিভাগের ড. বুশরা জামান ও সংগীত বিভাগের মাহমুদুল হাসান।

অনুষ্ঠানের ২য় পর্যায়ে সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক প্রতিনিধি এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর