চবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নজিরবিহীন সংঘর্ষ, আহত ৩০

, ক্যাম্পাস

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-02-17 02:16:37

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুইটি উপগ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে। দিনভর উত্তপ্ত পরিবেশ থেকে বিকালের দিকে রূপ ন্যায় সংঘর্ষে। বিবাদমান উপগ্রুপ দুইটি হলো শাহ জালাল হলের সিক্সটি নাইন এবং শাহ আমানত ও শহীদ আব্দুর রব হলের সিএফসি।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শাহ জালাল হল ও শাহ আমানত হলের মধ্যবর্তী স্থানে শুরু হয় এ সংঘর্ষ।

এসময় উভয় পক্ষকে নিজ নিজ হলের সামনে অবস্থান করে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও পরস্পরের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। সিএফসির কর্মীরা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও সিক্সটি নাইন পক্ষের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ধারণা করা যায়। তবে এদের মধ্যে ১২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছে বলে মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে। এদের মধ্য থেকে চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএফসি পক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, সিক্সটি নাইনে কোন নেতা নেই। তাদের কেউ কাউকে মানে না। আজ আমাদের কর্মীরা জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার ঝামেলা শুরু হয়েছে।

সংঘর্ষের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন পক্ষের নেতা ও সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাঈদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, গতকালকে স্টেশনে একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের একটা ছেলের সাথে ওদের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একজনের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। সেই থেকে শুরু হয় সংঘর্ষ। আমরা গত কালকে রাতেই সমাধানের লক্ষ্যে আমাদের ছেলেরা হলের ভিতরে ঢুকে যাই। কিন্তু সিএফসি আমাদের ছেলেদের বারবার বিভিন্নভাবে উস্কানি দিচ্ছে এবং রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে ঢিল মারে। পরে আমার ছোট ভাইয়েরা ওদের এ ধরনের কাজ প্রতিহত করেছে।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয়গুলো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি আমাদের অভিভাবক সাদ্দাম-ইনান ভাই আমাদের কমিটি দিয়ে দেন তাহলে গ্রুপ- উপ গ্রুপ থাকলেও জবাবদিহিতার একটা জায়গা থাকে। কিন্তু জবাবদিহিতার জায়গাটা না থাকার জন্য তুচ্ছ বিষয়গুলো বড় হয়ে যাচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম শিকদার বলেন, আমরা সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে উভয়পক্ষকে হলে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এর পরপরেই অপর একটি অংশ এসে যোগ দিলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রাত আটটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল বডির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।

প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, শুরু থেকেই আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এতটাই অসহনশীল যে তারা আমাদের কোনো কথাই শুনতে চায় না। তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর