জুরাছড়িতে ভূমি দখলের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

, ক্যাম্পাস

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-01-15 17:41:14

রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়িতে সেটেলার বাঙালিরা জুম্মদের ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা ও সেনা কর্তৃক জুম্মদের শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম মহানগর শাখা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন হয়।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অন্বেষ চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চবি শাখার সভাপতি নরেশ চাকমা এবং সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি, চবি শাখার সদস্য সুমন চাকমা।

অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের সভাপতি প্রত্যয় নাফাক, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক সুদীপ্ত চাকমা, পিসিপি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হ্লামিউ মারমা ও তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উকিং সাই মারমা।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, "পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশনকে যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ভূমি বেদখল হচ্ছে, যার দায় রাষ্ট্রকে নিতে হবে। পাহাড়ি মানুষ তাদের অধিকারের স্বার্থে ও তাদের জীবনের নিরাপত্তার তাগিদে আন্দোলন-সংগ্রামে আরও কঠোর হতে হবে।"

প্রত্যয় নাফাক বলেন, "নির্যাতিত ও নিপীড়িত জনগণের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন তার বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যার প্রতিরূপ আশির দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের সৃষ্ট সংগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসকগোষ্ঠী একটি ট্যুরিস্ট হাব হিসেবে চিহ্নিত করে শোষণ করতে চায়। আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশের সকল প্রগতিশীল মহল ও ছাত্রসমাজকে আদিবাসীদের সাথে থাকার আহ্বান জানাই।"

স্বাগত বক্তব্যে সুমন চাকমা বলেন, "বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের জাতিগত নির্মূলীকরণের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তি অনুসারে সকল অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করার কথা থাকলেও চুক্তির ২৬ বছরে এসেও তার বাস্তবায়ন নেই। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবি জানাই।"

সভাপতির বক্তব্যে নরেশ চাকমা বলেন, "গত ১৩ জানুয়ারি তারিখে জুরাছড়িতে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এক জুম্ম'র জমি বেদখলের প্রচেষ্টা চালায় সেটেলার বাঙালিরা। এর প্রতিবাদ জানালে কমপক্ষে ৫ জন জুম্মকে সেনাক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে তাদের শারীরিক নির্যাতন করা হয় এবং নানাধরণের হুমকিও দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, পাহাড়ে সামরিকায়ণ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নের পথে নানামুখী বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় চুক্তি অনুযায়ী অতিদ্রুত অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারপূর্বক বাঙালি সেটেলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনক পুনর্বাসন করতে হবে এবং ভূমি কমিশনকে যথাযথ কার্যকর করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর