বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে: সালমান এফ রহমান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

রোববার (১৯ মে) সন্ধ্যায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

২০০১ এর নির্বাচনেও ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছে উল্লেখ করে সাল্মান এফ রহমান বলেন, গত নির্বাচনেও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছে। আগামীতেও আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, যেভাবে নৃশংসভাবে ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে, তারপরও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ফিরে এসেছেন। ১৯৮৬ সাল থেকে বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে বলিষ্ঠ হাতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। যে দেশের মানুষ তার সব কেড়ে নিয়েছে সে দেশের মানুষের জন্যই তিনি এখনও করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় আমি থাকলে এই দেশে কখনও ফিরে আসতাম না। আমাদের ভাগ্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে আমরা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই তিনি এদেশে ফিরে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার ম্যাজিকের জন্যই আজ বাংলাদেশ এই অবস্থানে এসেছে।

বাংলাদেশে দুইটি চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আমেরিকা আর চীনের জৈব যুদ্ধ- এই দুইটার একটার সাথেও বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও আমরা ভুক্তভোগী। অন্যদিকে প্রযুক্তি নিয়েও একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সামনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আসতে যাচ্ছে। এটার সঠিক ব্যবহার করাও একটা চ্যালেঞ্জ। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে সকলকে অ্যাডভান্স নিতে হবে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দেশের সবাই আওয়ামী লীগ করে না। কেউ বিএনপি করে, আবার কেউ অন্যান্য দল করে। আরেকটা পক্ষ আছে যারা কোনো দলই করে না। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে নিরপেক্ষদের মন জয় করতে হবে।

মনে হচ্ছে সামনের নির্বাচন অনেক দূরে, কিন্তু না চোখের পলকে সময় শেষ হয়ে যাবে। সময়ের মধ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান সালমান এফ রহমান।

এছাড়াও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ্যাড. কামরুল ইসলাম, আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, ঢাকা-১৯ এর সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

   

সমর্থন না করলেও জামায়াতের কৌশল বিজ্ঞানসম্মত: ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করেন না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তবে তাদের রাজনীতির যে কৌশল ও প্রক্রিয়া তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। যা অনেকটাই কমিউনিস্ট পার্টির মতো।

রোববার (২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শুধু স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করতে চাই। শুধু স্লোগানের রাজনীতি করলে হবে না, জেনেশুনে রাজনীতি করতে হবে। আমি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু জামায়াতের রাজনীতির যে কৌশল ও প্রক্রিয়া তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। তা অনেকটাই কমিউনিস্ট পার্টির মতো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের (জামায়াতের) যে ছাত্রশিবির আছে, তাদের লেখাপড়া করতে হয়। তারা নিজেরা বই প্রকাশ করে, পত্রিকা প্রকাশ করে। তার মানে জ্ঞানের চর্চা ছাড়া আপনি কখনো সফল হতে পারবেন না।

সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ এখন কোথায়- এ প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি বেনজীরের হদিস না জানেন তাহলে কি এটাকে রাষ্ট্র বলা যায়?

লুটেরা সরকারকে ঠেকাতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব টিকে থাকবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে যাদের রক্ষা করার কথা সেই সাবেক পুলিশপ্রধান ও সেনাপ্রধানের নামে লুটপাটের খবর বেরোচ্ছে। শুধু তারাই না, সরকারের লোকেরা সর্বত্র লুটপাট চালাচ্ছে। আর সেই লুটের টাকা বিদেশে পাচার করছে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ঋণের কবলে পড়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুরো রাষ্ট্র এখন ঋণের ফাঁদে জর্জরিত। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো অনেক মেগা প্রকল্প আছে, যেগুলো ঋণ নিয়ে করা হলেও কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আজকে সরকার নির্বাচন কমিশনকে শেষ করে দিয়েছে। শুধু নির্বাচন কমিশন না, পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকেই শেষ করে দিয়েছে। মানুষ আজকে ভোট দিতে চায় না। কমিশনের প্রতি তাদের আস্থা নেই। কারণ, মানুষ জানে তাদের ভোট কাউন্টই হবে না।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম ও সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

;

বেনজীর ইস্যুতে সাংবাদিকদের সৎ সাহস নিয়ে প্রশ্ন কাদেরের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

পদে থাকা অবস্থায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ না হওয়ায় সাংবাদিকদের সৎ সাহস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার (২ জুন) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বেনজীর র‍্যাবের ডিজি, আইজি ও আইজিপি থাকা অবস্থায়ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাহলে সরকার এখন কেন সে দায় নিবে না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের উলটো সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, আপনি কোন টিভিতে কাজ করেন? বেনজীর কখনো দুর্নীতি করেছে আপনি বলতে পেরেছেন? মিডিয়ায় কে বলেছে? সবশেষে বলেছে কালেরকণ্ঠ। আপনারা কেউ বলেননি। আপনারা এটা নিয়ে, মিডিয়ায় যদি বলতে পারতেন যে এই এই দুর্নীতি করছেন, অমুক। সে সাহসটা আপনারাও তো দেখাতে পারেননি। এখন সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। আপনি কি করে বলেন সরকার জেনেও এটা গোপন করেছে? হাউ ইউ কনক্লোড দিস। আপনি পারেন না এটা। আমি একটা কথায় বলেছি, সরকার এখানে কারো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবার পর ইম্পিউনিটি দিয়েছে কি না, সেটা হলো বড় কথা।

সরকার বেনজীরকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে তুলে দিয়েছে মির্জা ফখরুলের এমন অভিযগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি কি দেখেছেন কে তুলে দিয়েছে? ফখরুলের অভিযোগ, সে তো সব দিকে ব্যর্থতার দগদগে খত। সে ব্যর্থ নেতা। সে ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করলো, নির্বাচনেও ব্যর্থ, আন্দোলনেও ব্যর্থ। নিজের দলের লোক সংসদে পাঠায় কিন্তু নিজে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। সে কি বললো, না বললো বাস্তবতা বিবর্জিত। সরকার তুলে দিয়েছে, আমি মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চায়, সরকারের কারা তাকে তুলে দিয়েছে। কোন অথরিটি তাকে তুলে দিয়েছেন বলুন। অন্ধকারে ঢিল ছুড়লে হবে না।

তদন্ত চলা অবস্থায় বেনজীর যে দেশের বাহিরে চলে গেলেন এটা কি অস্বাভাবিক না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, না, এখন তিনি না থাকলে কি বিচার হবে না। এখন তারেক রহমান বাইরে আছে বলে কি ট্যাক্সিফিকেশন মামলা হয়নি, রায় হয়নি? এক সময় না এক সময় তাকে আসতে হবে। বেনজীর যদি মামলায় দুর্নীতিবাজ সাব্যস্ত হয়, দেশে তাকে আসতেই হবে। এখানে সরকার কোন আপস করবে না।

দুদকের প্রাথমিক তদন্তে বিপুল অর্থসম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তা উঠে আসছে, সরকার কি তাকে দোষী মনে করছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার তো দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনি। এখানে সরকারের অবশ্যই সমর্থন আছে।

বেনজীর পদে থাকা অবস্থায় বিপুল দুর্নীতির সাথে যে জড়িত তা সরকারের না জানাটা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা কী না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ব্যর্থতা থাকলে সে ব্যর্থতারও বিচার হবে।

অন্য আরেক প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই বিষয়টা দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, গ্রেফতার, মামলা সব কছু একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। যেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন একশনে আছে সরকার কেন আগ বাড়িয়ে কোন ব্যবস্থা নিবে? আমাদের দেশে দুর্নীতির যত মামলা হয়েছে, ওয়ান ইলেভেন থেকে দেখুন, তদন্ত করে মামলা যখন হয় তখন একটা স্টেপ আসে জেলে পাঠানোর। তারপর জেলে পাঠালে মামলা চলতে থাকে। মামলার রায়ে সে যদি দুর্নীতিবাজ সাব্যস্ত হয় তাহলে অবশ্যই তাকে আমি দুর্নীতিবাজ বলবো।

তিনি আরও বলেন, এই দেশে ৭৫ পরবর্তীকালে কোন শাসক, সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনা সরকার সে সৎ সাহস দেখিয়েছে।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে ফখরুল সাহেবরা বড় বড় কথা বলেন, বিএনপি আমলে কি একটা দুর্নীতির মামলায় নিজেদের দলের লোক ধরেছেন? কেউ শাস্তি পেয়েছেন সেটা হচ্ছে বড় কথা। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারেন, সে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের মনোভাবটা কি দেখতে হবে। সরকার বিচার করতে চায় কি না সেটা হলো বড় প্রশ্ন।

;

বেনজীর বিদেশে থাকলেও দোষী হলে দেশে আসতে হবে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদেশে থাকলেও সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিচার চলবে, দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নাই যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে না। এটা কোথাও হয় না এটা কেউ দাবি করতে পারবে না।

রোববার (২ জুন) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদেশে যাক আর যেখানেই থাকুক, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। তাই বিচার হবেই, একদিন না একদিন বেনজীরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এ বিষয়ে সরকার কোন ছাড় দিবে না।’

বেনজীর ইস্যুতে কারো কোনো ব্যর্থতা থাকলে, গাফিলতি থাকলে সেটিরও বিচার হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোন প্রকার দুর্নীতি করেন বা প্রশ্রয় দেন, এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। তিনি একজন সৎ রাজনীতিবিদ এটা বিশ্বব্যাপী সমাধৃত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং সৎ জীবন যাপন করেন।

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, এ দেশে দুর্নীতি বিএনপির আমল থেকে শুরু হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলেই নেতাকর্মীরা দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ পথে টাকা উপার্জনে মেতে উঠে। দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য, বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানের দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিলো।

তারেক রহমান অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করতেন। যার মধ্য দিয়ে তিনি বাইরে অঢেল সম্পত্তির মালিক। আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এখন লন্ডনে বসে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।

;

‘ইউএস স্যাংশন না দিলে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার নিদর্শন দেখিনি’



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আমলাতন্ত্রের আধিপত্যের যে দ্বন্ধ তা নিরসনে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রশ্নগুলো সমাধান জরুরি বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এসব প্রশ্ন জিইয়ে রেখে আমলাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন হবে বলেও মত তাঁর।

বাংলাদেশের সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক পদক্ষেপের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকেও অন্যতম কারণ মনে করেন এই তরুণ রাজনীতিক। তিনি বলেন, ‘ইউএস স্যাংশন না দিলে সরকার আভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারতো বা করতো এমনটার কোন নিদর্শন আমরা দেখিনি।’

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অবঃ) আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎপরতা ও সম্পত্তি জব্দ করা নিয়ে বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম

বার্তা২৪.কম: সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদকে নিয়ে চলমান বিতর্ককে রাজনীতিবিদ হিসাবে কিভাবে দেখছেন?

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: কিছুটা বিতর্কিত নির্বাচন হওয়ার কারণে যারা দেশ চালাচ্ছেন, তারা অনেক ক্ষেত্রেই আমলাতন্ত্র-পুলিশতন্ত্রের কাছে কিছুটা সমঝোতার ভিত্তিতে দেশ চালাচ্ছেন। এই সমঝোতার একটি ভিত্তি হচ্ছে বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন করা, সরকারকে টিকিয়ে রাখা এবং এর বিনিময়ে হয়ত কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অন্যায়ের ক্ষেত্রে এক ধরণের প্রশ্রয় পেয়ে থাকবেন। যে কারণে অনেকেই ভেবেছিল তারা আইনের উর্ধ্বে, দায়বদ্ধতার উর্ধ্বে; ভেবেছিল তাদের কোনই সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে না এবং একটা পর্যায়ে দুর্নীতি নীতিতে পরিণত হয়েছিল। কোন সিদ্ধান্ত না থাকার কারণে অনেকে বল্গাহীন ভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করেছেন। সেটা হ্রাস করার জন্য আজিজ-বেনজীরের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের উদাহরণগুলো খারাপ না। কিন্তু সার্বিক দুর্নীতির চিত্র দেখলে আসলে... বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনায় এই সমস্যার সমাধান আদৌ সম্ভব নয়। প্রথমতঃ সৎ, নির্ভীক রাজনীতিবিদদের ক্ষমতায়িত করতে হবে। রাজনীতির অধীনে আমলাতন্ত্রকে আনতে হবে। কারণ রাজনীতিবিদরা জনগণের প্রতিনিধি। তাদের মাধ্যমেই জনস্বার্থ-সুশাসন সুরক্ষিত হবে-এটাই গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড। তবে এখানে অবশ্যই একটি ডিভাইডিং লাইন করতে হবে। কোন জায়গাগুলোতে আমলাতন্ত্র এককভাবে কাজ করবেন, কোন জায়গায় রাজনীতিবিদরা এককভাবে কাজ করবেন এবং কোন জায়গায় যৌথভাবে কাজ করবেন-সেটা চিহ্নিত করতে হবে। এবং সংসদকে যদি প্রাণবন্ত করা যায়, সংসদে যদি প্রশ্নোত্তর, ৭১-বিধি, পয়েন্ট অব অর্ডার-সবকিছুর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীদের দায়বদ্ধ করা যায়-তখন যোগ্য মন্ত্রী তাঁর মন্ত্রণালয়কে দায়বদ্ধ করতে পারবেন ও সুশাসনও নিশ্চিত হবে। 

বার্তা২৪.কম: অনেক সংসদ সদস্যগণ সংসদে দেওয়া বক্তৃতাতেও আমলাতন্ত্র নিয়ে তাদের অসহায়ত্বের কথা বলেছেন। এই অচলায়তন থেকে বেরিয়ে আসাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন?

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: আমি মনেকরি, আমলাতন্ত্রের মধ্যেও কিছু অসাধারণ দেশপ্রেমিক, সৎ ও যোগ্য-দক্ষ কর্মকর্তা আছেন; যাঁরা হয়ত সুযোগ পেলে সেই সততার ভিত্তিতেই আমলাতন্ত্রকে সাজাবেন, সৎভাবে কাজ করবেন। এখন দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রশ্নগুলো যদি সমাধান হয়ে যায়-তখন আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা; আমলাতন্ত্রের এই সমস্যা সমাধান করা কোন কঠিন কাজ হবে না। কিন্তু বৃহত্তর প্রশ্নগুলো জিইয়ে রেখে আমলাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন হয়ে যাবে।

বার্তা২৪.কম: দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপকে অনেকে ‘আইওয়াশ’ হিসাবে বর্ণনা করছেন। আপনি কিভাবে দেখেন...

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: ব্যাপরটা হচ্ছে-এই বিষয়গুলো নিয়ে মিডিয়া সরব ছিল সব সময়ই। দুইজনই খুব ক্ষমতাধর এবং দুটি মহান বাহিনীর প্রধান হিসাবে কাজ করেছেন। তাদের ব্যাপারে কথা বলতে গেলেও আমাদের খুব সাবধানে কথা বলতে হবে; যাতে বাহিনীগুলোর মর্যাদা যাবে কোনভাবেই হানি না হয়। এটি অস্বীকার করা যাবে না যে যুক্তরাষ্ট্র সম্পৃক্ত হয়ে স্যাংশন দেওয়ার কারণেই ব্যাপারটি একটি পর্যায়ে আসছে। ইউএস স্যাংশন না দিলে সরকার অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারতো বা করতো এমনটার কোন নিদর্শন আমরা দেখিনি। এখানে ঘোড়া গাড়ি চালাবে নাকি গাড়ি ঘোড়া চালাবে সেটাই বড় প্রশ্ন। ২০১৪ সালের পর দেখতে পাচ্ছি, গাড়ি ঘোড়াকে চালাচ্ছে। পলিটিক্যাল সরকারকে ব্যুরোক্রেসি চালাচ্ছে, অথচ হওয়ার কথা ছিল ব্যুরোক্রেসিকে সরকার চালাবে। আমরা শুনেছি, একসময় রাজনীতিবিদরা দুর্নীতি করতো, আমলাতন্ত্র বাধা দিত, সাইন করতো না। এটা নিয়ে টানাপোড়েন হতো। সৎ আমলাদের সঙ্গে এ নিয়ে প্রায়ই দ্বন্ধ লেগে যেত। এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে কোন কোন জায়গায় আমলাতন্ত্র-রাজনীতিবিদ একসঙ্গে দুর্নীতি করছেন। কোন ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্র দুর্নীতি করলেও রাজনীতিবিদরা সেটা নিয়ে কথা বলার সাহস দেখাতে পারছে না। এটা তো অবশ্যই রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূল ভিত্তিতে কুঠারাঘাত। যাঁরা ব্যুরোক্রেসির লোকজন তারা ট্রেইন্ট-প্রফেশনাল। আইনকানুন, নীতি-অডিট, ফাইন্যান্সিয়াল রুলস-এগুলো তারা খুব ভালো জানেন। রাজনীতিবিদরা ভুল করলেও তারা সতর্ক করবে। তারা কারেক্ট করবে, এটাই স্ট্রাকচারাললি হওয়ার কথা ছিল। এটা যখন উল্টো হয়ে যাচ্ছে, তখন ব্যাপারটির রক্ষাকবচ থাকছে না।

বার্তা২৪.কম: দায়িত্বরত অবস্থায় থেকে এত বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে যান, তখন দুদক এর মতো রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোর ভূমিকাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন...

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: দুদকের ক্ষেত্রেও মনে হচ্ছে যে, দুদক অনেক সময় স্বপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ কম নিচ্ছে। রিপোর্ট ও স্যাংশন হওয়ার পর, প্রচুর ম্যাস আউট ক্রাই হওয়ার পর-তখন তারা কোন ক্ষেত্র স্টেপ নিচ্ছে। আর একটা বিষয় হচ্ছে যে, যদি কোন ব্যক্তি মনে করে যে, আমি সরকারের অত্যন্ত আস্থাভাজন, সরকার আমার ওপর নির্ভরশীল এবং এই সরকার সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবে- তখন তাঁর মধ্যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার আধিপত্য করার প্রবণতা সৃষ্টি হয়। আমলাতন্ত্র পরিবর্তন হতে পারে, সরকারি দল পরিবর্তন হতে পারে-এটা হচ্ছে মূল ভিত্তি -দায়বদ্ধতার। যারা সারাজীবন থেকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি মনে করে তখনই আসলে দুর্নীতিটা বল্গাহীন হয়ে যায়।

বার্তা২৪.কম: এই বল্গাহীন দুর্নীতি যারা করছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এক্ষেত্রে কি ভূমিকা রাখতে পারছে?

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: দেখুন আমার সঙ্গে এই বিষয়টিতে অনেকেই একমত হবেন না হয়ত, কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিএনপি যদি ২০১৪ সালে ভোটে আসতো, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ভোটে আসতো তাহলে সংসদে বিরোধী দলের একটা রিপ্রেজেন্টশন থাকতো। বিএনপির এমপিরা সংসদীয় কমিটিতে থাকতেন, টকশোতে যেতেন-কথা বলতেন। মন্ত্রীদের প্রশ্ন করতেন, এবং এর মাধ্যমে একটা দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হতো। রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার নাই, অনুপস্থিত; এজন্য বল্গাহীন এই দুর্নীতির সুযোগ পাচ্ছে। দায়বদ্ধতাহীন ও জবাবদিহিতাহীন একটা ব্যবস্থার মধ্যে দেশটা চলে গেছে। এজন্য সরকারি দল অবশ্যই দায়ী, তবে বার বার নির্বাচন বয়কট করে সরকারকে সেই সুযোগটাও করে দিচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি। প্রতিদ্বন্ধিতা সৃষ্টি করা একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব, আমি যদি মাঠ ছেড়ে চলে যাই, এবং একপক্ষ যদি এক তরফা গোল দিতে থাকে তাহলে এটা তো পলিটিক্যাল মডেল হতে পারে না।

বার্তা২৪.কম: এই অচলায়তন ভাঙতে আপনার দল কি ভূমিকা রাখছে? 

শামীম হায়দার পাটোয়ারী: জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমূখী দল এবং সব সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেই পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে, একবার ছাড়া। জাতীয় পার্টি নির্বাচন করে সংসদে ধারণা অনুযায়ী অনেক আসন পেলে, আমরা দায়বদ্ধতার স্বাক্ষরটা আরও ভালো করে রাখতে পারতাম। কিন্তু গুটিকয়েক এমপি নির্বাচিত হওয়ার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই জাতীয় পার্টি তার আশানুরূপ ভূমিকা সংসদে রাখতে পারছে না। সে কারণে আমরা কিছুটা সংকটে আছি। তবে আমার বিশ্বাস এই সংকট কেটে যাবে। জাতীয় পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আবার অনেকগুলো আসন পাবে এবং সংসদে-সংসদের বাইরে সর্বত্র জাতীয় পার্টি স্পষ্ট অবস্থান দেখাবে।

;