সত্যজিৎ রায়ের দুই’শ বছরের পৈতৃক বৈশাখী মেলা বন্ধ, হতাশ ব্যবসায়ীরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন

দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্কার বিজয়ী কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ির ঐতিহ্যের বৈশাখী মেলা প্রায় দুই শত বছরের পুরোনো। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এ মেলাটি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে উপজেলা প্রশাসন অনুমতি দেয়নি ৷

এ কারণে দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এই খবরে এলাকাবাসীসহ দূর থেকে আগত পর্যটকদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে৷ কেননা এই মেলার জন্য একবছর ধরে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কবি সাহিত্যিকরা দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকেন।

বুধবার (৮ মে) থেকে মেলাটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেলা না হওয়ায় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন সংস্কৃতি কর্মী ও সাহিত্যিকরা৷ দ্রুত সময়ে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অচলাবস্থা নিরসন করে মেলা আয়োজনের দাবি জানান তারা৷

জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ শিশুসাহিত্যিক হরি কিশোর রায়চৌধুরী শ্রীশ্রী কালভৈরব পূজা উপলক্ষে বৈশাখের শেষ বুধবার এ মেলার প্রচলন করেছিলেন। এই রায় চৌধুরী বাড়িতেই ১৮৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। রায় চৌধুরী বাড়ির প্রায় চার একর ভূমিসহ আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে এ মেলা বসে। মেলায় রকমারি পণ্যের কয়েক শ স্টল বসে। বাউলগান ও কবিতা পাঠের আসরও হয়। এতে দেশের প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিকরা অংশ নেন। এছাড়াও থাকে বিনোদনের নানা আয়োজনও।


স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কটিয়াদীর মসুয়া ইউনিয়নে রায় বাড়ির মাঠে প্রতিবছর মেলা হয়ে আসছে। এবছর মেলার নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব নিতে নজর পড়ে একটি পক্ষের। ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের একটি অংশের কোন্দল দেখা দেয়৷ এতে বিভক্তির শুরু৷ মেলা কমিটিতে নিজের পছন্দের কিছু লোককে যুক্ত করতে চেষ্টা চালান স্থানীয় মো. রুবেল হোসেন৷ তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু নিজের ইচ্ছার প্রতিফলন না হওয়ায় মেলাটি বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেন তিনি৷ যদিও তিনি এটি অস্বীকার করেছেন।

মেলার অনুমতি না দেয়ার জন্য রুবেল কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরসহ বিভিন্ন দফতরে একটি লিখিত আবেদন করেন।

আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন, মেলার ওই দিন পার্শ্ববর্তী উপজেলা পাকুন্দিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলার পোড়াবাড়ী মেলায় কিশোর গ্যাং দৌরাত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করার কারণে মারামারি ঘটনা থেকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই মেলাতেও তা হতে পারে বলে তিনি কারণ উল্লেখ করেন৷

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এবারও সেই তারিখ অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে হরেক রকম পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা এসে মেলার অনুমতি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ৷ অনেকের কাছে ফিরে যাওয়ার ভাড়ার টাকাও নেই৷

মেলাতে নরসিংদী জেলা থেকে আসা কসমেটিক ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ৫ বছর ধরে এই মেলাতে এসে ব্যবসা করি। এবারও এসেছিলাম। মেলার অনুমতি না থাকায় মনডা খারাপ হইয়া গেল। যাওয়ার টাকা নেই।  খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।’

কটিয়াদী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি মেরাজ রাহীম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মেলা হচ্ছে না এটি আমাদের জন্য হতাশার৷ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত। এটি কটিয়াদী তথা কিশোরগঞ্জের জন্য ঐতিহাসিক স্থান। মেলা যেন কখনো বন্ধ না হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই এটা হোক, এই দাবি জানাচ্ছি৷’


স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহ জালাল সাজু জানান, মেলা নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি জেলা প্রসাশক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আমরা মেলার অনুমতির জন্য গেলে উপজেলা প্রশাসন মেলার অনুমতি দেয়নি।

মেলা বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়া মো. রুবেল হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় মেলা বন্ধের পক্ষে আমি ছিলাম। এটা সত্য। কিন্তু মেলা নিয়ে আমার কোনো স্বার্থ বা আগ্রহ ছিল, এটি সঠিক নয়৷ এবং বনিবনা না হওয়া এ কথাও সঠিক নয়৷’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে বার্তা২৪.কমকে বলেন, মেলার দিন বুধবার পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল। আগামী ২১ মে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাচন থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক বিবেচনা করে বৈশাখী মেলার অনুমতি দেয়নি।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরে দেবেন কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবস্থার উন্নতি হলে পরে অনুমতির বিষয়টি বিবেচনা হতে পারে৷

   

রাজধানীজুড়ে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, অসহনীয় যানজট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এতে নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে তীব্র ভোগান্তিতে। শহরের মূল সড়কসহ অলিগলিতে তৈরি হয়েছে অসহনীয় যানজট।

সোমবার (২০ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, ডেমরায় পুলিশের সঙ্গে অটোচালকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জুরাইনে রাস্তা অবরোধ ও মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বেড়িবাঁধে রিকশা চালকরা বিক্ষোভ করছে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিয়েছেন রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ ও চালকরা।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘোষণার পর মিরপুর, লালবাগ, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক, ব্যাটারি খুলে নেওয়া, ডাম্পিং ও চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের হয়রানির এবং মিরপুর এলাকায় আন্দোলনরত রিকশা শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিকল্প ব্যবস্থা না করে মন্ত্রী, বিআরটিএ ও মেয়রদের এই অযৌক্তিক, গণবিরোধী, ও লাখ লাখ মানুষকে কর্মহীন করে বেকারের মিছিল দীর্ঘ করার অগণতান্ত্রিক ও তুঘলকি সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান। অন্যথায় এই লাখ লাখ কর্মহীন ও বেকার চালকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রাজপথে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন। একইসাথে সংগ্রাম পরিষদ থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত ও কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিটসহ সংগ্রাম পরিষদ ঘোষিত ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি জালাল আহমেদ। সঞ্চালনা করেন অর্থ সম্পাদক রোখসানা আফরোজ আশা। আরও বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, রাহাত আহমেদ, এস এম কাদির, ঢাকা মহানগর এর যুগ্ম সম্পাদক দাউদ আলী মামুন, সদস্য সেকান্দার আলী, আবদুস সালামসহ অনেকে।

;

ভাওয়াল রিসোর্টসহ ৭ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩ কোটি টাকা জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরে পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকার অভিযোগে ভাওয়াল রিসোর্ট, হোটেল এক্সসহ সাত প্রতিষ্ঠানকে দুই কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগের দায়ে ভাওয়াল রিসোর্টকে জরিমানা করা হয়েছে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা। এসময় ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড়পত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত সকল ধরণের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

সোমবার (২০ মে) সকালে বার্তা২৪.কম এর প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া।

এর আগে গত ১৪ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং এর পক্ষ থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক পরিবেশ দূষণের সরেজমিন তথ্য পাওয়ার পর সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নয়ন মিয়া বার্তা২৪ কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শালবনের জমি দখলসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছিল ভাওয়াল রিসোর্ট, হোটেল এক্সসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন ছাড়পত্র ছিল না। বিষয়টি নজরে এলে, পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং একটি কমিটি গঠন করে। পরে কমিটির সদস্যরা গত কয়েক দিনে গাজীপুরে সাতটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এবং নানা অনিয়মের সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে গাজীপুরের সাতটি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের গত ১৪মে তলব করা হয়।

এসময় গাজীপুর সদর উপজেলার নলজানি এলাকার ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা সেন্টারকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বনের জমিতে অবস্থিত হোটেল এক্সকে ১০ লাখ টাকা, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবনীপুর এলাকা ইউনাইটেড শক্তি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, শিরিরচালা এলাকার কোয়ালিটি ইন্টিগ্রেটেড এগ্রো লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, একই এলাকার মেঘনা অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, ভবানীপুর এলাকার সোয়ান নিট কম্পোজিট লিমিটেডকে ১২ লাখ টাকা, একই এলাকার হলিকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, পরিবেশ দূষণ, ছাড়পত্র না থাকায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সকলকার্যকর বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

;

ডাকাতি করতে গিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ডাকাতিকালে মূল্যবান জিনিসপত্র না পাওয়ায় কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আব্দুল্লাহ (২৪), তার সহযোগী মতিন (৩৫), চাঁন মিয়া (২৮) ও আয়নাল (২৫)। গতকাল রোববার রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব ১১ অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় ভুক্তভোগীর মোবাইলসহ ১টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান, ১টি শাবল, ১টি দা, ২টি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, এই চক্রটি একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। তারা দিনের বেলায় বিভিন্ন পেশায় থেকে নির্দিষ্ট বাড়ি রেকি করেন। পরে সুযোগ বুঝে ঐ সকল বাড়িতে ডাকাতি করত। গত দুই বছর ধরে এই চক্রটি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ডাকাতি করে আসছিল। তারা কোন মূল্যবান জিনিসপত্র না পেলে ধর্ষণ-খুনসহ বাসাবাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করতেন।

সোমবার (২০ মে) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এসব তথ্য জানান।


তিনি বলেন, গত ১৫ মে রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় ডাকাতি কার্যক্রমকালে কোন মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। ওই ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় মামলা করলে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ওই গণধর্ষণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন।

র‍্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ। এই চক্রে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লার নের্তৃত্বে তারা গত ২ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল বলে জানা যায়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা গত ১৫ মে রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বাড়িতে যায়। সেসময় গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ ও গ্রেফতারকৃত মতিন ঘরের জানালা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিকটিম ও তার মায়ের ঘুম ভেঙ্গে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার করলে গ্রেফতারকৃতরা তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের দরজা খুলে দিলে গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও গ্রেফতারকৃত আয়নালসহ অন্যান্য সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের মা সহ ঘরে উপস্থিত সকলের হাত,পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের ভিতর মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ক্ষোভে ভিকটিমকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় তাদের বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের মুখ ওড়না দিয়ে পেচিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ভিকটিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় গ্রেফতারকৃতরা এই ঘটনা সম্পর্কে কাউকে জানালে ভিকটিম ও তার পরিবারকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন।


র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ এই ডাকাত চক্রের মূলহোতা। সে পূর্বে একটি স্পিনিং মিলে চাকুরির সময় থেকে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ডাকাত চক্রটি গড়ে তুলে। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের ভুলতা-গাউসিয়া এলাকার বাসের হেলপার ও রিক্সা চালাত।

গ্রেফতারকৃত মতিন গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর অন্যতম সহযোগী। সে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে সিএনজি চালাত। সিএনজি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহকে প্রদান করতো। এছাড়াও সে তার সিএনজি দিয়ে ডাকাতির পূর্বে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেত এবং ডাকাতি শেষে চক্রের সদস্যদের সুবিধাজনক স্থানে দ্রুত পৌঁছে দিত। তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও আয়নাল ডাকাত চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে যথাক্রমে বাস ও সিএনজি চালাত। তারা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর নের্তৃত্বে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতো। গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে এবং এসকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আয়নাল এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া গ্রেফতারকৃ চারজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব।

;

খিলগাঁওয়ে অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধে তীব্র যানজট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করেছেন অটোরিকশা চালকরা। তারা খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচের দুইটি রাস্তাই বন্ধ করে দেয়। এতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। 

সোমবার (২০ মে) অটোরিকশা বন্ধ হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন অটোরিকশাচালকরা।

অবরোধের শুরুতে পুলিশ আন্দোলনরত রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনওভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আন্দোলনরত রিকশাচালকদের লাঠি চার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।


খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে, খিলগাঁও ফ্লাইওভারে এখনও তীব্র যানজট।

;