বেপরোয়া মাটি-বালু ব্যবসায়ী চক্র, অভিযানেও থামছে না তারা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ ড্রেজিং বসিয়ে মাটি ব্যবসায়ী চক্র। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হলেও আবার সবকিছু ম্যানেজ করে পুনরায় মাটি কাটা শুরু করে মাটি খেকোর দল।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, সামান্য জরিমানা করে চক্রকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
জানা যায়, উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন ব্রিজের ডানপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী হতে বালু তোলা হচ্ছে। নদীতে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত দেদারছে মাটি তুলছেন মাটি খেকোরা। এ নিয়ে জমির মালিকরা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে তোয়াক্কা করছেন না। তাদের নানাভাবে ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।
মরা পদ্মায় ইসমাইল হোসেন ও মনোয়ার হোসেন মনা দাবি করেন, তারা জমির মালিকদের সাথে সমন্বয় করেই মাটি তুলছেন। তবে প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই। একইভাবে দেবগ্রাম পিয়ার আলীর মোড়ে লাল্টু, দৌলতদিয়া ক্যানালঘাটে কাদের ফকির, জিয়া, শহীদসহ বিভিন্ন স্থানে নদী ও পুকুর খনন করে মাটি ব্যবসায়ীরা ড্রেজার ও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি-বালি তুলছেন। উত্তোলিত বালি-মাটি বিভিন্ন ইটভাটা ও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা-৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্য সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, অবৈধ বালু, মাটি ব্যবসায়িদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারি বা বেসরকারি কোনো কাজের জন্যই কাউকে নদী হতে মাটি-বালি উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইতিপূর্বে এ ধরনের দুটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। ভেকু ও ড্রাম ট্রাকের চালককে জরিমানা করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাছাড়া আমাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।