ঝালকাঠির সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন

লাইসেন্সবিহীন চালক, ওভারলোডিং, অবকাঠামোর ত্রুটিই দায়ী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঝালকাঠি
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির গাবখান টোলপ্লাজায় ট্রাকচাপায় ১৪ জন নিহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে চালকদের লাইসেন্স ও ট্রাকের ফিটনেস না থাকা, ওভারটেকিং করা, সড়কে অবৈধ যান, সড়কের অবকাঠামোয় ত্রুটি, ট্রাকে ওভারলোড, অতিরিক্ত গতি এবং গতিরোধের জন্য নির্দেশনা না-থাকা দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৭ এপ্রিল ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্ট বোঝাই একটিড ট্রাক সামনে থাকা একটি মিনি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার এবং ৩টি ইজিবাইককে চাপা দেওয়ায় ১৪ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৭ জন। এ দুর্ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। ঈদযাত্রার আলোচিত এ দুর্ঘটনার কারণ জানাতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুটি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গাবখান সেতুসংলগ্ন দুর্ঘটনার জন্য ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরোজকে প্রধান করে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিতুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঝালকাঠি জোনের সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) মো. মাহবুবুর রহমান ও বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হককে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিষয়ে কথা হলে তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েটের এআরআই’র সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক বলেন, অনেক সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত করেছি। কিছু বিষয় ছাড়া সড়কের অবকাঠামো ত্রুটি চিহ্নিত করা হয় না। এ ছাড়া দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমেই চালককে দোষারোপ করি। কিন্তু সড়কের অবকাঠামো ত্রুটির বিষয়টি সামনে আনেন না কেউ।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনা কমাতে হলে শুধু সড়কের উন্নয়ন করলেই হবে না; অবকাঠামোগত ত্রুটিও দূর করতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান কারণ হিসেবে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ওভারলোড এবং অতিরিক্ত গতি দায়ী করা হয়েছে। ট্রাকটির ধারণ ক্ষমতা ১৫ টন হলেও সিমেন্টের পরিমাণ ছিল ২০ টন।

সড়কটিতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৫০ কিলোমিটার হলেও ট্রাকটি ৬৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলছিল। এ ছাড়া ট্রাকচালকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। তিনি ছিলেন বদলি ড্রাইভার। মূল চালক ঈদের ছুটিতে ছিলেন।

সাধারণত বদলি চালকদের দ্রুততম সময়ে ট্রিপ শেষ করার তাগিদ থাকে। সে কারণে এ দুর্ঘটনায় চালকের গাফিলতিও রয়েছে। অন্যদিকে, যেকোনো টোলপ্লাজা ও সড়ক জংশনের ৫শ মিটার আগেই গতি কমানোর নির্দেশনা থাকে। ‘সামনে টোলপ্লাজা, গতি কমান’ এ ধরনের সাইনবোর্ড থাকে।

কিন্তু গাবখান সেতুর ১শ ৩০ ফুট আগে সেই নির্দেশনা ছিল। সে নির্দেশিকাও (সাইনবোর্ড) চোখে পড়ার মতো নয়। টোলপ্লাজায় গতি নিয়ন্ত্রণে ‘রাম্বল স্ট্রিপস’ থাকার কথা থাকলেও সেখানে তা ছিল না। কাজেই এত অল্প দূরত্বের সাইনবোর্ড দেখে চালক গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি আর সেতু থেকে নামার পর স্বভাবতই গাড়ির গতি বেশি থাকে, যার ফলেই ঘটে এ দুর্ঘটনা।

ড. আরমানা আরো বলেন, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের সড়কে কিছুটা দূরত্ব পরপর ভয়াবহ বাঁক রয়েছে। গাবখান ব্রিজটিও স্পাইরাল কার্ভের মতো। সেতু থেকে নামার পরে সড়কের দুই পাশে ১২ ফুট করে গভীর খাদ রয়েছে। নিয়মানুযায়ী সেখানে প্রতিবন্ধক থাকার কথা থাকলেও এর দেখা মেলেনি।

সড়কের দুই পাশে ১০ মিটার ট্রাভার্সাল ক্লিয়ারিং জোন থাকার কথা। কোনো গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে তা সড়কের পাশে থেকে সেই ক্লিয়ারিং জোনে চলে যাবে। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে এলে আবার মূল সড়কে এসে চলবে। ঝালকাঠির ওই সড়কের পাশে ক্লিয়ারিং জোন দূরে থাক, সেখানে গড়ে উঠেছে নানা অবকাঠামো।

গাবখানে যে অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার খুব কাছে ছিল চায়ের দোকান। ট্রাক আরেকটু এগিয়ে গেলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারতো। এ ছাড়া নিয়মানুযায়ী, সড়কের প্রশস্ত অংশে টোলপ্লাজা হওয়ার কথা। কিন্তু সড়কের সরু অংশে টোলপ্লাজা করা হয়েছে। এটিও ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি সেতু এলাকায় মূল সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি সংযোগ সড়ক ছিল।

এ ছাড়া ঝালকাঠির সড়কে থ্রি-হুইলার, নছিমন-করিমন, অটোরিকশাসহ নানা অবৈধ যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। এসব বাহনের চালকেরা হুট করেই আঞ্চলিক মহাসড়কে চলে আসেন। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এসব যানবাহনে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে বেশি প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

ঝালকাঠির দুর্ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেছে।

এতে সড়কের যেসব অংশে দুইপাশে গভীর খাদ রয়েছে, সেখানে ভরাট করা; আঞ্চলিক সড়কগুলোর দুইপাশে ট্রাভার্সাল ক্লিয়ারিং জোন তৈরি করা করা; পাশাপাশি যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্রাংশ (স্পিড ওয়ার্নিং ডিভাইস) বসাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ ছাড়া সিমেন্টবোঝাই ট্রাকে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত সিমেন্ট পরিবহনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। ওই সুপারিশমালায় সড়কে থ্রি-হুইলার বা অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচলকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এগুলো চলাচল বন্ধের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ড. আরমানা সাবিহা হক বলেন, গাবখান সেতু এলাকায় মাল্টি ডিসিপ্লিনারি প্রবলেম ছিল। এখানে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের পাশাপাশি বিআরটিএ, হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জনবল সংকট রয়েছে, কিন্তু যে জনবল রয়েছে, তাদের দক্ষতাও কম। সড়ক আইন কার্যকরের বিষয়টি পুলিশের ওপরও বর্তায়। গাবখানে হাইওয়ে পুলিশের কাছে স্পিড রাডার গান ছিল না।

জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম জানান, দুঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো সংশ্লষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

 

   

চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীতে আড়াইশ' গ্রাম হেরোইনসহ আটকের পর ডবলমুরিং থানায় করা মাদক মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। তবে এই মামলায় মো. মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে খালাস দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন- আবদুল মালেক ও আবুল হোসেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, নগরের ডবলমুরিং থানার কদমতলী বাস স্টেশনে একটি দোকানের সামনে থেকে ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল রাতে ৪ জন আসামিকে ২৫০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব-৭। এ ঘটনায় র‍্যাব-৭ এর তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানভীর আহমেদ ৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এর মধ্যে মো. নয়ন নামের এক আসামি মারা যান। ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল ৩ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, পাঁচজনের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি আবদুল মালেক ও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. মনির হোসেনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ের সময় আসামি আবুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, পরে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আব্দুল মালেক পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন।

;

ডিএনসির নতুন ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ডিএনসির নতুন ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান

ডিএনসির নতুন ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি)'র নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে তিনি গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। মোস্তাফিজুর রহমানকে নতুন দায়িত্ব দেওয়ার আগে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো। পদোন্নতির পর তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

জানা গেছে, মোস্তাফিজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে মাস্টার অব স্ট্রেট্যাজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ সালে নবম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন কাজ করেছেন। জেলা প্রশাসক হিসেবে ভোলা ও নোয়াখালী জেলায় কাজ করেছেন। মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ছিলেন। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন। গতবছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হন।

;

সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে বদলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে বদলি

সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে বদলি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)'র সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুইজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই বদলি করা হয়।

বদলিকৃত কর্মকর্তারা হলেন- মুহাম্মদ ওসমান গণি ও শহীদুল ইসলাম।

আদেশে বলা হয়, ডিএমপিতে কর্মরত মুহাম্মদ ওসমান গণিকে ডিএমপি সদর দপ্তরে যুুগ্ম কমিশনারের (পিওএম) দপ্তরে কোয়ার্টার মাস্টার (পিওএম) হিসেবে এবং শহীদুল ইসলামকে ডিএমপি লজিস্টিক বিভাগে ডি স্টোর অ্যান্ড কমন সার্ভিসে বদলি করা হলো। শিগগির এই আদেশ কার্যকর হবে।

;

‘আগামী ৬ মাস আর সমুদ্রে যাবো না, পরিবারকে সময় দিব’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
‘আগামী ৬ মাস আর সমুদ্রে যাবো না, পরিবারকে সময় দিব’

‘আগামী ৬ মাস আর সমুদ্রে যাবো না, পরিবারকে সময় দিব’

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৩ দিন পর বাড়ি ফিরেছেন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নওগাঁর এ এস এম সাইদুজ্জামান।

বুধবার (১৫ মে) দুপুরের দিকে নিজ গ্রামে ফিরেছেন এতে খুশির বাঁধ ভেঙেছে পরিবারের মাঝে। সাইদুজ্জামান’র বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার পলিটেকনিক অ্যাভিনিউ এর দুবলহাটি রোডে পাশে।

বুধবার বিকেলে সাইদুজ্জামানের নিজ বাড়িতে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আগামী ৬মাস আর সমুদ্রে যাবো না, পরিবারের সাথে আপন সময়গুলো কাটাতে চাই৷ পরে হয়তো আবার সমুদ্রে ব্যাক করবো।’

সাইদুজ্জামান বলেন, মোজাম্বিকের মাপুতো থেকে কয়লার কার্গো নিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম দুবাইয়ের এয়ারপোর্টে। আমরা ওখানে সোমালিয়া জোন থেকে অনেক নিরাপদ স্থান দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাদের এরিয়া থেকে প্রায় সাড়ে চারশো নটিক্যাল মাইল, যেটা মাইলের হিসেবে প্রায় ৫৫০ মাইল এর কাছাকাছি হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ দুর্ভাগ্যবশত গত মার্চের ১২ তারিখে ছোট বোর্ড এর মতন যেটা তাদের ডাকাতি করে আনা। হঠাৎ করেই সেখান থেকে এসে আমাদের জাহাজে অ্যাটাক করে। আমরা যেহেতু সেইফ জোনে ছিলাম, সেক্ষেত্রে আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে তারা আক্রমণ চালাবে। তারা  আমাদেরকে থামানোর জন্য গুলি ছুড়াছুড়ি করছিলো। জাহাজে উঠে আমাদের একজন নাবিককে তারা জিম্মি করে ফেলে। আমাদের নিয়ম- যে কেউ যদি জিম্মি হয় তাহলে আমাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আমরা তখন গোপন কক্ষে ছিলাম। তখন তাদের কমান্ডে আসা ছাড়া কিছু করার ছিল না। তারা আমাদের আশেপাশে প্রায় ৬০/৬৫ জনের মত থাকতো কিন্তু যখন আমাদেরকে ডাকাতরা ছেড়ে দেয়, তখন ৬৬ জনকে গুনেছিলাম।

জানতে চাইলে সাইদুজ্জামান বলেন, আমরা বন্দি অবস্থায় যতোই মনোবল ধরে রেখেছিলাম। এমনও ঘটনা আছে, যেখান থেকে নাবিকরা আর ফিরে আসতে পারে নাই। এমন ও রেকর্ড আছে, বাংলাদেশের কিছু ছেলে অন্য একটা বিদেশি কোম্পানিতে ছিল, তারা প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ বছর জাহাজে থাকার পরে তাদের জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। আবার তাদেরকে সাগরে ফেলে দিয়েছিল, তারা সাঁতার কেটেও পালিয়ে এসেছিল। আমরা এখন থেকে যে আসতে পেরেছি বা মুক্তি হতে পেরেছি, এজন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করি। বাংলাদেশের সকলে আমাদের জন্য দোয়া করেছেন, রোজার মাস ছিল, এজন্য আল্লাহ আপনাদের দোয়া শুনেছেন, আমাদের দোয়া শুনেছেন। আমরা ফিরে আসতে পেরেছি। দেশে আসার পরে যখন দেখলাম সত্যিই বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, তখন আমরা আরও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছি। পরিবারের কাছে যখন ফিরে এসেছি, সেটার আনন্দের ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। যেখানে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, সেখানে একটা কিছু মিসিং হবে সেখান থেকে ফিরে এসে সবাই খুশি।

সাইদুজ্জামান’র স্ত্রী মাননা তাহরীন বলেন, সবার প্রথমে সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জানাই ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি এতোই খুশি যে, ভাষায় প্রকাশ করার মত না। গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে- চট্টগ্রামে একটা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে তাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। আজকে সকালে রাজশাহী এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম, আমার স্বামীকে রিসিভ করার জন্য। আমি তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছি, সেও আমার জন্য ফুল এনেছে। এরপর বাসায় এলাম। তাকে ফিরে পেয়ে আমি অনেক খুশি।

;