কেন টিকতে পারছে না প্রাইভেট এয়ারলাইন্স?



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে ভারতের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইন্ডিগো। আজ তাদের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ৩৫৪টি। ভারত প্রায় দেড়শ কোটির জনসংখ্যার দেশ, ওখানকার মার্কেটও বড়। তাই তাদের সঙ্গে তুলনাটা ন্যায্য নাও মনে হতে পারে। আমাদের চেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ ও ছোট মার্কেট ভিয়েতনামের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ভিয়েতজেট প্রতিষ্ঠার মাত্র ১৬ বছরে এখন ৭৭টি উড়োজাহাজের বহর তৈরি করেছে।

এবার বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে সবচেয়ে বৃহৎ বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২৪টি। আর যদি দেশের বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সের দিকে তাকাই তাহলে মিলবে ধারাবাহিক ব্যর্থতার চিত্র।

১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম বেসরকারি এয়ারলাইন্স অ্যারো বেঙ্গল। যদিও তারা ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পায় দুই বছর আগে। ফ্লাইট চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। একে একে এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, রয়েল বেঙ্গল এবং বেস্ট এয়ার যাত্রা শুরু করে। সবগুলো এয়ারলাইন্সই বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে সবাই অর্থ সংকটকে উল্লেখ করেন। দেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ১৩টি প্রাইভেট এয়ারলাইন্স অনুমোদন পায়। এর মধ্যে দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ চালু হয় ২০০৭ সালে। খুব দ্রুততার সাথে একের পর এক উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করে বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট চালু করে সাড়া ফেলেছিল তারা। এরপর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিও হয় এটি। তবে শেষ পর্যন্ত সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে রিজেন্ট এয়ার, ২০১৩ সালে নভোএয়ার ও ২০১৪ সালে ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরু করে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত টিকে আছে নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা ও ২০২২ সালে চালু হওয়া এয়ার অ্যাস্ট্রা।

যাত্রী বাড়ছে

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, ২০২৩ সালে দেশের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার করেছেন, এক কোটি ৭৪ লাখ যাত্রী। যাদের বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী। অন্যদিকে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল এক কোটি। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮৫ লাখ। আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আকাশপথের যাত্রী সংখ্যা হবে দ্বিগুণ।

এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক প্রতিবেদন বলছে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই রুটেই ২০২২-২৩ অর্থবছরে আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বেড়েছে ৩২ শতাংশ।

সবগুলো পরিসংখ্যানই বলছে, আকাশপথে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। তারপরেও কেন দেশের বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলো টিকে থাকতে পারছে না। তা অনুসন্ধানে নেমে পাওয়া গেছে নানা কারণ।

কেন প্রতিযোগিতায় টিকছে না

বিশেষজ্ঞদের মতে, আকাশপথে যাত্রী বাড়ায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো এই চাহিদা পূরণে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে পারতো। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার অভাবে তা হয়নি। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস। এয়ারলাইন্সগুলো বিমানবন্দরে খুচরা যন্ত্রাংশ রাখতে না পারার কারণে ফ্লাইট সূচিও ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হয়।

এয়ারলাইন্সগুলোর অভিযোগ, বিমানের নির্দিষ্ট ওয়্যারহাউজ সুবিধা ছাড়াও হ্যাঙ্গারও রয়েছে। যে কারণে সার্ভিসিং ও খুচরা যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো পিছিয়ে পড়ছে। সেই সাথে নিয়ন্ত্রণমূলক ত্রুটি, অত্যধিক পরিমাণে শুল্ক, জেট ফুয়েলের উচ্চ মূল্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিচ্ছে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে দেওয়া অযৌক্তিক পৃষ্ঠপোষকতাও এর পেছনে দায়ি।

সারচার্জ বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে একটি আতঙ্ক। দীর্ঘ এই সময়ে যেসব এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়েছে এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল সারচার্জ। তাছাড়া জেট ফুয়েলের উচ্চমূল্য, অযৌক্তিক হার ট্যাক্স, বিশেষ করে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেনারেটর, বিভিন্ন ধরনের এলসিডি প্যানেল, ককপিটে ব্যবহৃত কম্পিউটার ডিসপ্লেসহ বহু যন্ত্রাংশ অত্যন্ত উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়। এসব যন্ত্রাংশের জন্য ১৫ থেকে ১৫০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়।

অনেক ব্যবসায়ী অন্য ব্যবসায়ের মতো মনে করে এই খাতে বিনিয়োগ করে। কিন্তু এয়ারলাইন্স ব্যবসা কিছুটা জটিল। শুরুতে একটি বা দুটি উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। পরবর্তীতে যখন সি চেকের সময় আসে তখন যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন হয় তা সময়মতো করতে পারে না মালিকপক্ষ। তখন উড়োজাহাজ বসিয়ে রেখে লোকসান গুনতে হয়। সেই সাথে যাত্রীরা ওই এয়ারলাইন্সের প্রতি আস্থা হারাতে থাকে।

কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলোতে দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে, তা অস্বীকার না করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। সরকার ও বেবিচকের সহযোগিতারও অভাব রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়ার নজির রয়েছে। তাছাড়া শুরুর দিকে অনেক এয়ারলাইন্সকে পার্কিং চার্জ, অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ মওকুফ করা হয় যাতে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এয়ারলাইন্স ব্যবসা সহজ নয়। অনেকেই ভাবেন এটি লাভজনক ব্যবসা। সঠিক উড়োজাহাজ নির্বাচন, রুট প্ল্যানিং লাগবে। সেই সাথে দক্ষ ব্যবস্থাপনা।

তাছাড়া শুরুতে হয়তো একটি উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করে, পরবর্তীতে এই উড়োজাহাজ যখন মেজর চেকে যায়, তখন বড় অঙ্কের টাকা প্রয়োজন হয়। ওই সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বিনিয়োগে ব্যর্থ হন।

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটে পার্কিং এবং বিমান চলাচল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন চার্জ অনেক। বিভিন্ন কারণে এসব চার্জ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা না গেলে এয়ারলাইন্সগুলোকে ইন্টারেস্টসহ সেই অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

   

দেশের সব বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের সব বিভাগেই ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবুও সারা দেশে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের কিছু কিছু জায়গায় ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনার ঈশ্বরদীতে রোববার (১২ মে) দেশের সর্বোচ্চ ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এদিন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস বলছে, সারা দেশে সোমবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। এ ছাড়া এদিন রাত ও পরদিন বুধবার (১৫ মে) দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।

বর্ধিত ৫ দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ সময়ের শেষ দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

;

সাতক্ষীরায় আমে আমে সয়লাব, বাজার সিন্ডিকেটের দখলে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, গোলাপখাসসহ বিভিন্ন জাতের আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। আমে আমে সয়লাব বাজার। যেদিকে তাকায় সেদিকে আম আর আম। ভৌগোলিক অবস্থার কারণে আগে ভাগে বাজারে আসে সাতক্ষীরার আম। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হলেও সঠিক দাম পাচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। এদিকে অনেকেই বাজারে আম নিয়ে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিক্রি হচ্ছে না বলে। সঠিক দাম ও ক্রেতা না থাকায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা।

সোমবার (১৩ মে) সাতক্ষীরা বড়বাজারে গেলে দেখা যায়, আমের বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে দরকষাকষি করছে অনেকেই। গোবিন্দভোগ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা মণ, গোপালভোগ ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। তবে অনেকেই বলছেন আমের সাইজ অনুযায়ী দামদর করা হচ্ছে। যাদের আমের সাইজ অনেক ভালো তাদের দরও বেশি হচ্ছে। আবার অনেকেই অভিযোগ করে বলছেন বাজার সিন্ডিকেটের জন্য আমের সঠিক মূল্য পাচ্ছি না এবং তাদের কারণে বাইরের কোনো ব্যবসায়ী বাজারে ঢুকতে পারছে না। যার কারণে আমের সঠিক মূল্যও আমাদের দিচ্ছে না।

আম বিক্রি করতে আসা মহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, এবার ১০ লক্ষ টাকার বাগান কিনেছি। আশা করছি আগের বারের তুলনায় এবার অনেক লাভবান হতে পারবো। কারণ এবার আমের ফলন অনেক ভালো। যার কারণে গাছে প্রায় দেড় হাজার মণ আম হবে বলে তিনি আশাবাদী।


আম বিক্রি করতে আসা সামাদ সদ্দার বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ফলন কম হওয়ায় দাম ভালো পাচ্ছি তবে ক্রেতা নেই। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে ক্রেতা সংকট। তাদের কারণে বাজারে বাইরে থেকে ক্রেতা ঢুকতে পারছে না।

ফলন কম হওয়ার কারণে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর প্রচুর গরম পড়েছে যার কারণে আম গাছ থেকে ঝড়ে গেছে। মুকুল আসা থেতে শুরু করে আম পাড়া পর্যন্ত এবার খুব গরম ছিল যার কারণে ফলন এবার অনেকটাই কম।

আম বিক্রি করতে আসা জাকির আক্ষেপ করে বলেন, সকাল ৬টায় আম নিয়ে আসছি বাজারে তবে এখনও কেউ দাম করেনি। বাজারে সিন্ডিকেট ঢুকে গেছে কিন্তু দেখার কেউ নেই। আমের সাইজ ভালো, আমও ভালো কিন্তু কেনার মানুষ নেই। এই কষ্ট করে ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে এসেছি এখন যদি ফিরে নিয়ে যেতে হয় তাহলে আবার বাড়তি খরচ। আমার মতো অনেক আমচাষি ফিরে যাচ্ছে আম বিক্রি না হওয়ার কারণে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এদিকে একটু খেয়াল রাখবেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৮ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮২৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগরের ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি রয়েছেন। সবমিলে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কয়েকটি জাতের আম দিয়ে ৯ তারিখ থেকে সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ হবে। মনে রাখতে হবে গাছের সব আম একসাথে পাকে না। সুতরাং আমের রং আসার আগে না পাড়ার অনুরোধ জানান তিনি।

;

চালককে গলা কেটে হত্যা, ইজিবাইক ছিনতাই



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে সাফিয়ার রহমান (৫৫) নামে এক চালককে গলা কেটে ইজিবাইক নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

রোববার (১২ মে) রাত ১২টার দিকে নীলফামারী পৌর শহরের কুখাপাড়া তিস্তা সেচ ক্যানেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সাফিয়ার রহমান নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই ময়দানের পাড়া এলাকার মৃত. আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীবেশে ইজিবাইকে ওঠেন দুর্বৃত্তরা। এরপর জনশুন্য রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ইজিবাইকটি ছিনতাইয়ের জন্য চেষ্টা করেন তারা। এ সময় চালক সাফিয়ার তাদের বাধা দেয়। বাধা দেওয়ায় তাকে পাশের একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে তার ইজিবাইকটি নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তার গোঙানির শব্দে আশেপাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অ্যাম্বুলেন্স যোগে রংপুর যাওয়ার পথিমধ্যে রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে মারা যান তিনি।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, চালককে গলা কেটে ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স যোগে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

;

চামড়া সংরক্ষণে ঢাকার বাইরে হবে অস্থায়ী শেড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোরবানির ঈদের সময় চামড়ার দর পতন ও পাচার রোধে ঢাকার বাইরে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে অস্থায়ীভাবে ‘শেড’ নির্মাণ করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেবে শিল্প মন্ত্রণালয়।

মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রবিবার (১২ মে) ‘চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স’ এর সপ্তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ কাজ তদারকি করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন- বিসিক। স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ ও পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী সংরক্ষণাগর নির্মাণ করতে জেলা প্রশাসকদের ডিও (আধা সরকারি পত্র) লেটার দেওয়া হবে।

সভা শেষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সাংবাদিকদের বলেন, ‘চামড়া শিল্প খাতে সংরক্ষণ সুবিধা বাড়াতে হবে, যাতে চামড়া নষ্ট না হয়। চামড়া ব্যবসায়ী/পাইকাররা যাতে পুঁজির সমস্যায় না পড়েন ও সহজ শর্তে ঋণ পান, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

প্রতি বছর শুধু সংরক্ষণের অভাবে কোটি টাকার কাঁচা চামড়া নষ্ট হয়। এই সুযোগে ঈদের সময়ে ট্যানারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দর কমিয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অস্থায়ীভাবে চামড়া সংরক্ষণ হলে ঢাকায় সরবরাহ একসঙ্গে বাড়বে না। ট্যানারি ও আড়ৎদারদেরও অর্থ সংকট হবে না বলে মনে করছে টাস্কফোর্স।

কয়েক বছর কোরবানীর সময়ে কাঁচা চামড়ার দর পতনের পর গত বছর চামড়ার দর নিয়ে অসন্তোষ ছিল না ক্রেতা ও বিক্রেতা পর্যায়ে।

গতবছর কোরবানির ঈদে রাজধানীতে কাঁচা চামড়ার সবচেয়ে বড় আড়ত পোস্তায় চামড়ার দর খুচরা পর্যায়ে উঠেছিল প্রতিটি ১০৫০ টাকায়, আগের বছরে সেই আকৃতির চামড়ার দর ছিল ৮০০ টাকা। খুচরা পর্যায় আড়তদারদের হাতবদল হয়ে পোস্তার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ট্যানারিতে বিক্রি হয় চামড়া।

গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীদের জন্য ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার, আগের বছর দাম ছিল ৪৭ থেকে ৫২ টাকা।

এছাড়া ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারিত ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, আগের বছর যা ৪০ থেকে ৪৪ টাকা ছিল।

এছাড়া সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া আগের মত গতবারও প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার।

আগামী কোরবানির ঈদে সারা দেশে বিক্রির জন্য এক কোটি ৩০ লাখ পশু সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এই সংখ্যা ছিল এক কোটি ২৫ লাখ, যার মধ্যে বিভিন্ন হাটে ১৯ লাখ পশু অবিক্রিত অবস্থায় ফেরত যায়।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয় চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে যাবে। অর্থাভাব যেন না হয়, এজন্য তাদের সহযোগিতা দরকার, আমরা তা করে যাবে।’

কোরবানির ঈদে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগের অবস্থা আর নেই। এক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে জানিয়ে নুরুল মজিদ বলেন, ‘চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসিক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নীতিগত সহযোগিতাসহ এসব করণীয় বাস্তবায়নে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।’

সভার সূচিতে কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞাপন, স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ এবং পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী সংরক্ষণাগার নির্মাণ, কোরবানির পশুর চামড়ার পাচার রোধ ও চামড়া সংগ্রহের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মত বিষয়গুলো ছিল।

চামড়া নিয়ে সোশাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে যেন কোনো গুজব না ছড়ায়, বিদেশ থেকে অবৈধপথে পশু যাতে দেশে না আসে, সেসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয় সভায়।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছি। সিইটিপি পুরোপুরো ঠিক হলে আমাদের অনেক প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চামড়া রপ্তানিতে দর পাওয়া যবে। অনেক প্রতিষ্ঠানই ইতোমধ্যে অন্যান্য সব কমপ্লায়েন্স অর্জন করতে পেরেছে।’

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কোরবানির চামড়া সংরক্ষণে এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করবে বিসিক। অতীতের মত এবারও কোরবানি ঈদের পরের সাত দিন রাজধানীর বাইরের চামড়া ঢাকায় প্রবেশ করবে না।

হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের অব্যবহৃত জায়গায় ভবন নির্মাণ করতে দ্রুত নকশা অনুমোদন দিতে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষকে (রাজউক) নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা সভায় অংশ নেন।

;