ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন পুলিশ কনস্টেবল আব্দুস সামাদ। তিনি বর্তমানে বগুড়া সদর ট্রাফিকে কর্মরত রয়েছেন। এই চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর হোমিও চিকিৎসক হবেন এই ইচ্ছা থেকেই এস এস সি পরীক্ষা দেন তিনি।
তিনি ২০২৪ সালে নাটোর জেলার মহরকয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়েছেন।
৩৭ বছরের চাকরি জীবনে কর্মস্থলের বাস্তবতা, কঠোর পরিশ্রম, শত অপ্রাপ্তির মধ্যেও অদম্য ইচ্ছা শক্তির মধ্য দিয়ে লেখাপড়া করে এসএসসি পাশ করায় জেলা পুলিশ তাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।
পুলিশ কনস্টেবল আব্দুস সামাদ জানান, ১৯৬৮ সালে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮৭ সালে ৮ম শ্রেণি পাস করে বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে এইচএসসি পাশ করে ঢাকায় একটি বেসরকারি চাকরি করেন। ছোট ছেলে পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করে।
আব্দুস সামাদ বলেন, তার পরিবারে দুইজন হোমিও চিকিৎসক রয়েছেন। চাকরির ফাঁকে তিনি নিজেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার বই পড়াশোনা করেন দীর্ঘদিন ধরে। অবসর জীবনে সময় কাটানোর চিন্তা ভাবনা থেকে তিনি হোমিও চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন দীর্ঘদিন ধরে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কোর্সে ভর্তি হতে যে শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন তা ছিল না তার। একারণে ২০২২ সালে তিনি নাটোর মহরকয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পর তিনি এখন ডিএইচএমএস কোর্সে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অবসরে যাওয়ার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে চান আব্দুস সামাদ।
তিনি আরও বলেন, এ বয়সে লেখাপড়া করার জন্য আমার পরিবার ও পুলিশ বিভাগ উৎসাহ দেয়ার পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে। ফলাফল প্রকাশের পর আমার পরিবার যেমন খুশি হয়েছে তেমনি জেলা পুলিশও অভিনন্দন জানিয়েছে, দিয়েছেন সংবর্ধনা।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি বিজয়ী জীবন যুদ্ধে পিছিয়ে পড়াদের অনন্য অনুপ্রেরনা ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আব্দুস সামাদ। যা জেলা পুলিশের জন্য আনন্দের উৎস।