পরিবহনে চাঁদাবাজি, মূলহোতাসহ আটক ১৫: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পরিবহনে চাঁদাবাজি, মূলহোতাসহ আটক ১৫: র‌্যাব

পরিবহনে চাঁদাবাজি, মূলহোতাসহ আটক ১৫: র‌্যাব

  • Font increase
  • Font Decrease

 

আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহনে অবৈধভাবে চাঁদাবাজিকালে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ফজলে রাব্বিসহ ১৫ জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কুতুবখালীর কাজলা ব্রিজ ও যাত্রাবাড়ী মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।

রোববার (২৮ এপ্রিল) র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটককৃত ব্যক্তিদের নাম- ফজলে রাব্বি (২৫), মোঃ রাজ (২৩), সাব্বির আহম্মেদ (১৯), মোঃ ফয়সাল (২১), মোঃ সানোয়ার হোসেন অন্তর (২৫), তাজুল ইসলাম তাজ (১৯), মোঃ রাকিব (১৯), আরিফ আহম্মেদ (১৯), মোঃ আশাবুদ্দিন (৩৩), মোঃ শাহিন (১৯), মোঃ শাওন (১৯), মোঃ মেহেদী হাসান (১৯), মোঃ বেলাল (৪০), গোলাম রাব্বি (আসিফ) (২০), জাহিদুল ইসলাম সাব্বির (১৯)।

সোহেল জানান, গতকাল শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন কুতুবখালী, কাজলা ব্রিজ ও যাত্রাবাড়ী মোড় এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ফজলে রাব্বিসহ ১৫ জন পরিবহন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করে।

এসময় তাদের কাছ থেকে আদায়কৃত নগদ ৭ হাজার টাকা চাঁদা এবং ৪টি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আটককৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভার ও হেলপারদের সাথে অশোভন আচনের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিল বলেও জানান তিনি।

আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা রুজু করতঃ সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

   

এসএসসি পরিক্ষা: নীলফামারীর এক বিদ্যালয়ে পাশ করেনি কেউ!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর ডিমলায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাশ করেনি কোন শিক্ষার্থী। এতে সমালোচনার ঝড় বইছে উপজেলা জুড়ে।

রোববার (১২ মে) সকালে এসএসসি পরিক্ষা ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে কোন শিক্ষার্থী পাশ না করার তালিকায় এ বিদ্যালয়ের নাম পাওয়া যায়৷

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরিক্ষায় দুইজন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এতে অংশগ্রহণ করা দুইজন শিক্ষার্থীর কেউই পাশ করতে পারেনি। তবে এ বিদ্যালয়ে পাঠ দানের জন্য ১২ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন৷

এবিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, এ বিদ্যালয়ে এবার কেউ পাশ করতে পারেনি। এতে আমাদের এলাকার নাম খারাপ হচ্ছে। এখানে শিক্ষকরা তো প্রত্যেকদিন আসে ঠিকমত ক্লাস নেয় কিনা সেটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেখা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালের প্রধান শিক্ষক আক্তার হাবিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ডিমলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, এ বিদ্যালয়ে কেউ পাশ করতে পারেনি বিষয়টি দুঃখজনক। এখানে শিক্ষার্থী এত কম আর কেউ পাশ করতে পারেনি কেন বিষয়টি দেখা হবে।

;

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এসব কারণে শুধু বাংলাদেশের সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নয়, আশেপাশের দেশেও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক বিস্তারজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

রোববার (১২ মে) কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আগে তিনি এসব কথা বলেন।

রাখাইনে সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দেরি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন 'উই এনগেইজ উইথ দ্য গভর্নমেন্ট', আমরা মিয়ানমারের সরকারের সাথেই আলাপ-আলোচনা করছি। সেখানে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দেরি হচ্ছে সেটিও সঠিক। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে মিয়ানমারে সবসময়েই গোলযোগ ছিলো।

গত ৭০-৮০ বছরের ইতিহাস দেখুন, মিয়ানমার কখনোই গণ্ডগোলমুক্ত ছিলো না, কিন্তু সেই কারণে মিয়ানমার থেকে যে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করা হয়েছে, যারা মিয়ানমারের নাগরিক, শতশত বছর ধরে সেখানে আছে, তাদেরকে ফেরত নিয়ে না যাওয়ার কোনো অজুহাত হতে পারে না' যুক্তি তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে এবং অন্যান্য দেশের সাথেও নিয়মিতভাবে আমরা আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি, যাতে করে নিজেদের নাগরিকদের পূর্ণ অধিকারসহ ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর কার্যত চাপ প্রয়োগ করা হয়।

পরিতাপের সুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, মিয়ানমার সবসময় বলে তারা ফেরত নেবে, কিন্তু আজ পর্যন্ত গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত নেয়নি। উপরন্তু আমাদের ওপর নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে ইতোমধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি'র প্রায় পাঁচশত সদস্য ও তাদের সেনাবাহিনীর সদস্য পালিয়ে আমাদের দেশে এসেছে।

তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদের ফেরত পাঠিয়েছি কিন্তু নতুনভাবে আরও ১৩৮ জন এখন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, তার মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও দু'জন মেজরও আছে।

;

মানিকছড়ি মং রাজবাড়িতে



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুর। বার্তা২৪.কম

রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুর। বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) থেকে ফিরে: শুক্রবার (১০ মে) সকাল। তীব্র গরম উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম শহর থেকে উত্তরের পাহাড়মুখী পথে যানবাহনের উল্লেখযোগ্য ভিড়। গ্রীষ্মের দাবদাহ এড়িয়ে কিছুটা শীতল পরশের জন্য সবাই ছুটছেন অরণ্যঘেরা পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে।

শহরের উত্তর পয়েন্ট অক্সিজেন মোড় পেরিয়ে হাটহাজারি উপজেলা সদরের তিন মাথা। ডান দিকের পূর্বমুখী পথ চলেছে রাঙামাটির দিকে। আমরা চলেছি উত্তর দিকে। উত্তরের পথ ফটিকছড়ি উপজেলা হয়ে পার্বত্য পথে মানিকছড়ি ছুঁয়ে যাবে জালিয়াপাড়া। জালিয়াপাড়া থেকে সোজা উত্তরে খাগড়াছড়ি সদর। ডানের পূর্বমুখী পথ দীঘিনালা/মহালছড়ি আর বামে পশ্চিম দিকে রামগড় হয়ে বারৈয়ারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে।

আপাতত আমাদের গন্তব্য মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি। গাড়ি ফটিকছড়ি ছাড়িয়ে যেতেই ঘন বন-বনানীতে ছাওয়া পাহাড়ের শুরু। রাস্তাও পাকদণ্ডি পেরিয়ে ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে। মানিকছড়ি সদর থেকে সামনেই আমতল। বায়ের পথ হাসপাতালের সামনে দিয়ে বাজারে। বাজারের পাশে সুবিশাল রাজবাড়ি।

রাজবাড়িতে খেলায় মগ্ন দর্শনার্থী পরিবারের শিশুরা। বার্তা২৪.কম

রাজকুমার সুই চিং প্রু নিজেই অভ্যর্থনা জানালেন সদর ফটকে। প্রাচীর ঘেরা বাড়ির ভেতরে বসত ঘর। অফিস। প্রার্থনাস্থল। স্থানে স্থানে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি ছোট ছোট বসার জায়গা। সোফা সেট। চেয়ার সাজানো। আশেপাশে কয়েকটি দোলনা। সবগুলো স্থাপনাতেই নান্দনিক চিত্রকলার সংযোজন পুরো পরিবেশকেই শৈল্পিক আবহ দিয়েছে। রাজকুমারের দুইকন্যা ডালিয়া ও ডিম্পেল আদিবাসী মোটিফে মনের মতো করে সাজিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের মং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী পুরনো রাজবাড়িকে।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন তিন জেলায় বিভক্ত। উত্তরে খাগড়াছড়ি। মাঝখানে রাঙামাটি। দক্ষিণে বান্দরবান।  ১৭৬০ সালে মুঘলদের কাছ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায় চট্টগ্রাম এলাকা  সমেত পার্বত্য জনপদের কর্তৃত্ব। ১৮৬০ সালে পার্বত্য অঞ্চলকে জেলা চট্টগ্রাম থেকে প্রশাসনিকভাবে  পৃথক করা হয়। পাহাড়ি এলাকাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাম দিয়ে সদর দপ্তর চন্দ্রঘোনায় স্থাপন করা হয়। ১৮৬৮ সালে চন্দ্রঘোনা থেকে রাঙামাটিতে জেলা সদর দপ্তর স্থানান্তর করা হয়। ১৯০০ সালে পার্বত্য অঞ্চলকে চাকমা, বোমাং ও মং সার্কেলে বিভক্ত করা হয় এবং প্রতিটি সার্কেলের চিফ নিযুক্ত করা হয়। বর্তমানে রাঙামাটি জেলার বৃহত্তর অংশ ও খাগড়াছড়ি জেলার কিছু অংশ নিয়ে চাকমা সার্কেল, খাগড়াছড়ি জেলার বৃহত্তর অংশ নিয়ে মং সার্কেল এবং বান্দরবান জেলার বৃহত্তর অংশ ও রাঙামাটি জেলার কিছু অংশ নিয়ে বোমাং সার্কেল ।

মং সার্কেল  বর্তমান বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি বংশগত চিফডোমগুলোর মধ্যে একটি।  মং চিফডমের সদস্যরা মারমা বংশোদ্ভূত এবং ফালানস নামে পরিচিত। মং সার্কেলের বেশিরভাগ বাসিন্দা ষোড়শ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে ম্রাক ইউ ( মায়ানমারের আধুনিক আরাকান রাজ্য বর্তমানে যার নাম দেওয়া হয়েছে রাখাইন রাজ্য ) থেকে অভিবাসনের সময় উত্তর-পশ্চিমে বসতি স্থাপন করেছিলেন, অন্য মারমা চিফডোমের বাসিন্দা যারা দক্ষিণ এর বোমাং সার্কেল বসতি স্থাপন করেছিল, তারা রাগ্রাইসা হিসাবে পরিচিত।

রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুর আমাদের সুদৃশ্য অফিসকক্ষে বসালেন। বংশের অতীত ইতিহাসের পাশাপাশি জানালেন বর্তমান পরিস্থিতির নানা কথা। আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলাম মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়িদের অবদান সম্পর্কে জানতে। কারণ, অন্য দুই রাজা, বিশেষত চাকমারাজ পাকিস্তানের সমর্থন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা এবং শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশ পরিত্যাগ করে চলে গেলেও একমাত্র মং রাজা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে।

সস্ত্রীক মং রাজকুমার। বার্তা২৪.কম

মং সার্কেল রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর ১৯৭১ সালের বৈপ্লবিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আন্দোলনকে আন্তরিকভাবে অনুধাবণ করেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। বর্তমান রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুরের মাতামহ হলেন মং সার্কেল রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর। রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুর ১৯৭১ সালে রামগড় দিয়ে ভারতের সাব্রুমে তাঁদের বংশের লোকজনের চলে যাওয়া ও যুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। মং সার্কেলভুক্ত বাসিন্দাদের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে রাজপরিবারের অবদান ঐতিহাসিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ।

রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুর বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আমরা মনে-প্রাণে ধারণ করি এবং সর্বদাই লালন-পালন করি। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা মং সার্কেল রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর ফাউন্ডেশন গঠন করে সমাজকল্যাণমূলক কাজ করছি। পাশের কর্নেল বাগান এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে এই ফাউন্ডেশনের সূচনা ঘটে। ২০১০ সাল থেকে পুরোদমে কাজ করছে ফাউন্ডেশন।‘

মং সার্কেল রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর ফাউন্ডেশন শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানবসেবায় অধিক মনোযোগী। পার্বত্য ঐতিহ্য সংরক্ষণেও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মং গোষ্ঠীর ভাষা, সঙ্গীত, শিল্প ও সাহিত্যের গৌরবময় উপাদান যাতে হারিয়ে না যায় এবং আরো বিকাশ লাভ করে, সেটাই তাদের আকাঙ্ক্ষা।

আলাপের পর আমরা ঘুরে দেখি রাজবাড়ির বিভিন্ন অংশ। একস্থানে চলছিল পাহাড়ি ও বাঙালি শিশু-কিশোরদের গান শেখানো মিলিত আয়োজন। আরেক দিকে চিত্রাঙ্কন ক্লাস। বাড়ির বিভিন্ন  খোলা স্থানে ঝুলন্ত দোলনায় খেলা করছিল দর্শনার্থী পরিবারের শিশুরা। পাহাড়ের মাথায় বড় পরিসরের জায়গা নিয়ে সাজানো-গোছানো রাজবাড়ি যেন নগন যন্ত্রনা, কোলাহল ও দূষণের বাইরের একখণ্ড সবুজ মরুদ্যান।

কিছুক্ষণ পর আমাদের সঙ্গে এসে যোগ দেন রাজকুমার সুই চিং প্রু বাহাদুরের পত্নী। তিনিও ধর্মকর্ম  এবং সমাজসেবায় ব্রতী। তাদের আপ্যায়ন ও আন্তরিকতা ছিল মনে রাখার মতো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত এই রাজপরিবার বৃহত্তর পার্বত্য জনপদে বাতিঘর স্বরূপ। শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের প্রত্যয়ে কাজ করছে মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি।

রাজবাড়ি থেকে বের হয়ে বাইরের শান্ত হাটবাজারের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে মোটেও টের পাওয়া যায় না যে, কয়েক মাস আগেই পাহাড়ের আরেক প্রান্তের বান্দরবানে কুকি-চিন গোষ্ঠীর সশস্ত্র হামলায় সাধারণ জনজীবন তটস্থ হয়েছিল। সেখানে এখনো ভীতির আবহ বিরাজমান। কিন্তু এদিকের অবস্থা একেবারেই বিপরীত। উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্পষ্ট ছাপ বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের উত্তরাংশে। মানিকছড়ির কাছেই রামগড়ে চালু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর। তুলনায় পাহাড়ের দক্ষিণাংশ, বিশেষত মিয়ানমার সীমানা সংলগ্ন বান্দরবান অপেক্ষাকৃত উতপ্ত। একদা শান্তিবাহিনীর আমলে যে উত্তরাঞ্চল ছিল সন্ত্রাস কবলিত, তা এখন শান্ত ও উন্নয়নমুখী। আর তখন যে দক্ষিণাঞ্চল ছিল শান্ত, সেটা বরং চাপা উত্তেজনায় টগবগ করছে।

শান্তিচুক্তির আওতায় উন্নয়ন, সম্প্রীতি ও শান্তির পথে চলমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বর্তমানে ভূরাজনৈতিক ও অভ্যন্তরণী কিছু কারণে আবার সমস্যার মুখোমুথি হচ্ছে।  রাজনৈতিক ও সামাজিক উদ্যোগে এসব সমস্যা কাটিয়ে শান্তির সুবাতাস ও উন্নয়নের মসৃণ ধারা চালু হলে বদলে যাবে সমগ্র পাহাড়ের চেহারা। অন্ধকার ও পিছিয়ে থাকা পাহাড় পরিণত হবে দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ভ্যানগার্ডে।     

;

আবারও দেশসেরা নরসিংদীর এনকেএম হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সফলতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে নরসিংদীর এনকেএম হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস। রোববার (১২ মে) এসএসসি পরিক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উল্লাসের মাধ্যমে সাফল্য উদযাপন করেছেন। ধারাবাহিক এই সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা ও নাসিমা মোল্লা।

ঢাকা বোর্ডে এবারো স্কুলটি সবাইকে চমকে দিয়েছে। সারাদেশের মধ্যে এবারো স্কুলটি ১ম স্থান অধিকার করেছে বলে জানা যায়। এই অর্জনের সংবাদে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

কঠোর শৃঙ্খলা, শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান, নিয়মিত পরীক্ষাসহ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে তদারকি করার কারণেই মফস্বলের এই বিদ্যালয়টি বোর্ডের মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে বলে মনে করছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা।

এনকেএম হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাসসহ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতিবছরই বোর্ডে স্থান করে নিয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৯৪ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। বাকি এক জন ৪.৯৪ পেয়েছে। এ বছর বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছিল।

;