বাংলাদেশের বিজয়ে ইসলামের প্রভাব



মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী, অতিথি লেখক, ইসলাম
বাংলাদেশের পতাকা

বাংলাদেশের পতাকা

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশস্ত রাজপথ নির্মাণে ইসলামের প্রভাব প্রকটভাবে কাজ করেছে। এ অঞ্চলে ইসলামের আগমনের সূচনা হয় ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে হুদায়বিয়ার সন্ধির পর থেকেই। তবে আরব বণিকদের দ্বারা এ অঞ্চলে ইসলামের খবর ইতিপূর্বেই এসে যায়। সেসব বণিকের বাণিজ্য নৌ-জাহাজ সুদূর চীন-সুমাত্রা অঞ্চল পর্যন্ত যাতায়াত করত বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ছুঁয়ে। সেসব জাহাজে দূরপ্রাচ্যে ইসলাম প্রচার করতে যেসব সাহাবায়ে কেরাম যেতেন তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর এলাকায় সফর বিরতি দিয়ে এখানকার মানুষের সামনে ইসলামের সুমহান বাণী তুলে ধরতেন। তবে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের সূচনা হয় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালের (৬৩৪-৬৪৪ খ্রি.) মধ্যভাগে।

ইতিহাসের নানা বাঁক পেরিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এজন্য পাড়ি দিতে হয় অনেক প্রতিকূল পথ, সহ্য করতে হয় কষ্ট, বিলাতে হয় স্বাধীনতাকামীদের রক্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি কোনো ইতিহাসজ্ঞ ব্যক্তিরাই অজানা নয়। ১৯৭০ সালে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে তার মেনিফেস্টোতে কোরআন-সুন্নাহর বিরোধী কোনো আইন পালন না করার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে।

নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবেই ঘোষণা করেছিল, ‘৬-দফা বা আমাদের অর্থনৈতিক কর্মসূচি ইসলামকে বিপন্ন করে তুলেছে বলে যে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে, সেই মিথ্যা প্রচারণা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি শেষবারের মতো আহ্বান জানাচ্ছি। অঞ্চলে অঞ্চলে এবং মানুষে মানুষে সুবিচারের নিশ্চয়তা প্রত্যাশী কোনো কিছুই ইসলামের পরিপন্থী হতে পারে না। আমরা এই শাসনতান্ত্রিক নীতির প্রতি অবিচল ওয়াদাবদ্ধ যে, কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত ইসলামি নীতির পরিপন্থি কোনো আইনই এ দেশে পাস হতে বা চাপিয়ে দেওয়া যেতে পারে না।’ -বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও নির্বাচিত দলিল, নুহ-উল-আলম লেনিন সম্পাদিত, সময় প্রকাশন, ২০১৫, পৃ. ২৬৫

১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে বেতার ও টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু একটি ভাষণ দেন। সেই ভাষণে ‘লেবেলসর্বস্ব ইসলাম নয়’ অংশে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, আমরা ইসলামে বিশ্বাসী নই। এ কথার জবাবে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য-লেবেলসর্বস্ব ইসলামে আমরা বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী, ইনসাফের ইসলামে। আমাদের ইসলাম হজরত রাসুলে কারিম (সা.)-এর ইসলাম, যে ইসলাম জগৎবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র। ইসলামের প্রবক্তা সেজে পাকিস্তানের মাটিতে বারবার যারা অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ, লাঞ্চনার পৃষ্ঠপোষকতা করে এসেছেন; আমাদের সংগ্রাম সেই মোনাফেকদের বিরুদ্ধে। যে দেশের শতকরা ৯৫ জন মুসলমান, সে দেশে ইসলামবিরোধী আইন পাসের ভাবনা ভাবতে পারেন তারাই, ইসলামকে যারা ব্যবহার করেন দুনিয়াটা শায়েস্তা করার জন্য।’ -বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, নভেল পাবলিকেশন, ঢাকা, ১৯৮৮, পৃ.২১

তাছাড়া আমরা লক্ষ করি, সব আন্দোলনেই ইসলামের প্রভাব সক্রিয় ছিল। যেমন-মওলানা ভাসানীর ১৯৫৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলনে পাকিস্তানকে বিদায় জানিয়ে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলা, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘ইনশাআল্লাহ’ বলা, ৯ মার্চ পল্টন ময়দানে মওলানা ভাসানীর ‘লাকুম দীনুকুম ওলিয়াদীন’ বলা, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধকালে প্রবাস থেকে গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন ইশতিহার ও নির্দেশাবলিতে ‘আল্লাহ আমাদের সহায়’, ‘নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব’ প্রভৃতি লেখার মাধ্যমে ইসলামের বৈপ্লবিক চেতনার প্রকাশ ঘটে।

১৯৭১ সালে ১৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার মাত্র চার দিন পর প্রবাসী সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশাবলি পত্র দেওয়া হয়। এই নির্দেশাবলি পত্রের শীর্ষেই লেখা হয় ‘আল্লাহু আকবার’ তারপর স্বাধীনতার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করে বলা হয়- ‘বাঙালির অপরাধ তারা অবিচারের অবসান চেয়েছে, বাঙালির অপরাধ তারা তাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান-সন্ততিদের জন্য অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে, বাঙালির অপরাধ আল্লাহর সৃষ্ট পৃথিবীতে আল্লাহর নির্দেশ মতো সম্মানের সঙ্গে শান্তিতে সুখে বাস করতে চেয়েছে। বাঙালির অপরাধ মহান স্রষ্টার নির্দেশ মতো অন্যায়, অবিচার, শোষণ, নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে এক সুন্দর ও সুখী সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবার সংকল্প ঘোষণা করেছে।

আমাদের সহায় পরম করুণাময় সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাহায্য। মনে রাখবেন, আপনার এ সংগ্রাম ন্যায়ের সংগ্রাম, সত্যের সংগ্রাম। পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার দুশমন বাঙালি মুসলমান নারী-পুরুষ, বালক-বালিকা কাউকে হত্যা করতে, বাড়ি-ঘর লুট করতে, আগুন জ্বালিয়ে দিতে এতটুকু দ্বিধা করেনি। মসজিদের মিনারে আজান প্রদানকারী মুয়াজ্জেন, মসজিদ গৃহে নামাজরত মুসল্লি, দরগাহ-মাজারে আশ্রয়প্রার্থী হানাদারদের গুলি থেকে বাঁচেনি। .... এ সংগ্রাম আমাদের বাঁচার সংগ্রাম। সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখে ন্যায়ের সংগ্রামে অটল থাকুন। স্মরণ করুন! আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘অতীতের চাইতে ভবিষ্যৎ নিশ্চয়ই সুখকর।’ বিশ্বাস রাখুন ‘আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় নিকটবর্তী।’ -বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, তথ্য মন্ত্রণালয়, ১৯৮২, তৃতীয় খণ্ড, পৃ. ১৯-২২

উপরোক্ত নির্দেশাবলিটি ছিল সাধারণ জনগণের উদ্দেশে প্রবাসী সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম নির্দেশনামা। নির্দেশনামাটির শীর্ষে লেখা ছিল- ‘আল্লাহু আকবার’ এবং শেষ হয়েছিল এই বলে- ‘আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় নিকটবর্তী।’ এ নির্দেশনামা বিশ্লেষণ করলে ইসলামের প্রতি, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাসের বিষয়টিই স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও চেতনা বলে স্বীকৃত হয়।

এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকেও প্রতিদিন পবিত্র কোরআন মাজিদ ব্যাখ্যা করে সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা সংগ্রামে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করা হতো। এসব পরিপ্রেক্ষিতই বলে দেয় তিন লাখ মসজিদের এদেশ তার স্বাধীনসত্তা মূলত লাভ করেছে ইসলামের সুমহান আদর্শের প্রভাবে।

   

১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৬৪৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনসের ৩২টি ফ্লাইটে করে তারা সৌদি আরবে গেছেন।

হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত পোর্টাল।

পোর্টালের তথ্যমতে, ৩২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

১১ হাজার ১৬৭ হজযাত্রী ভিসার অপেক্ষায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের ভিসার জন্য আবেদনের শেষ হয়েছে ১১ মে (শনিবার)। তবে এখনও ১১ হাজার ১৬৭ জনের ভিসা হয়নি। সৌদি সরকার যদি সময় না বাড়ায় তবে এসব হজযাত্রীদের চলতি বছর হজে যাওয়া অনিশ্চয়তায় পড়বে।

হজ অফিসের সর্বশেষ তথ্য বলছে, রোববার (১২ মে) দুপুর পর্যন্ত মোট ভিসা পেয়েছেন ৭২ হাজার ১৩৮ জন। ২৫৯ জনের ভিসা প্রিন্টের অপেক্ষায় রয়েছে। সে হিসেবে এখনও ভিসা পাননি ১১ হাজার ১৬৭ জন।

জানা গেছে, যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা পায়নি, তাদের জন্য নতুন করে ভিসার আবেদন করা হয়েছে। এখনও ভিসা অনলাইন সিস্টেম চালু আছে। বাকিদের ভিসা দুয়েক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।

ভিসার জন্য আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, সময় বাড়ানো হবে কি না তা রোববার বা সোমবারই জানা যাবে। তবে হজ ভিসা সিস্টেম চালু আছে এবং ভিসা ইস্যু চলমান আছে।

এদিকে তৃতীয় দফায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, হজযাত্রীদের ভিসা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব হজযাত্রীর ভিসা হওয়ার বিষয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সৌদি সরকারের উমরা ও হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, ভিসা আবেদনের সময় বাড়বে।

মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, বেশিরভাগ হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করতে যায়। এজেন্সিগুলো বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা সৌদিতে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তা মন্ত্রণালয়ের ওপর এসে বর্তায়।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর তা ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তারপরও প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়।

১১ মের মধ্যে ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে না পারলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে বলে আগেই সতর্ক করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারপরও ভিসা আবেদনের সময় বাড়াতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও হজ এজেন্সিগুলো সৌদি আরবের মক্কা মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে গাফিলতি করেছে। কম রেটে বাড়ি ভাড়া করার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে।

এছাড়া এজেন্সিগুলোর বাড়ি ভাড়ার জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধি মোনাজ্জেমদের ভিসা আটকে দেয় সৌদি সরকার। সেই ভিসার জট খুলতে দেরি হওয়ায় অনেক ইচ্ছা থাকার পরও বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। এতে হজযাত্রীদের ভিসা আবেদন করতে পারেনি এজেন্সিগুলো। কারণ হজ ভিসা আবেদনের পূবশর্ত হলো, সৌদিতে হজযাত্রীর বিপরীতে বাড়ি বাড়ার চুক্তি থাকতে হবে। বাড়ি ভাড়া না করলে ভিসার জন্য আবেদন করা যায় না।

এদিকে হজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট ৯ মে শুরু হয়। ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

অমুসলিমরাও হালাল খাদ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা, ছবি: সংগৃহীত

এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে বড় সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। তবে সেজন্য খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের প্রতিটি ধাপে কমপ্লায়েন্স ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে, বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের বাজারে নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে ইকো-সিস্টেম উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রোববার (১২ মে) এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি সভায় এ বিষয় উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ইউসুফ। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইর পরিচালক মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মানবস্বাস্থ্যের জন্য হালাল খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি অনুধাবন করে মুসলিমদের পাশাপাশি সারা বিশ্বে অমুসলিমরাও হালাল খাদ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু দেশ হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। এই বাজারে বাংলাদেশেরও অপার সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্যসহ হালাল শিল্পের উন্নয়নে দেশে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হওয়া জরুরি বলেন জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই দুটি প্রতিষ্ঠান দেশে বর্তমানে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান করছে। সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া সহজ করা, গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে হালাল সনদ প্রদানের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলার ওপর জোর দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। এ সময় হালাল শিল্পের উন্নয়নে কমিটির সদস্যদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ লিখিত আকারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এফবিসিসিআই সেসব পরামর্শ বিশ্লেষণ করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে উপস্থাপন ও তা বাস্তবায়নে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, হালাল ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সবার আগে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে নিরাপদ এবং গুণগত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারসহ এই খাতের বড় অংশীজনদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময় বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে হালাল সার্টিফিকেট প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজ করাসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং হালাল শিল্পের জন্য নীতি সুবিধা আহ্বান করেন কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি হালাল শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলা, অর্থায়ন সুবিধা, গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার গুরুত্ব তুলে ধরেন তারা।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, মো. নিয়াজ আলী চিশতি, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রমুখ।

;

৭৯ বছর পর জুমার নামাজ হলো যে মসজিদে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কারিয়া মসজিদে ৭৯ বছর পর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো, ছবি: সংগৃহীত

কারিয়া মসজিদে ৭৯ বছর পর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৭৯ বছর পর পবিত্র জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক কারিয়া মসজিদে। গত শুক্রবার (১৯ মে) মসজিদটিতে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে অসংখ্য মুসল্লি অংশ নেন। এর আগে ৬ মে পুনঃনির্মাণের পর মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।

২০২০ সালের আগস্টে দীর্ঘ দিন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক মসজিদটিকে পুরনো রূপে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন এরদোগান। এরপর শুরু হয় এর পুনঃনির্মাণের কাজ। অবশেষে চার বছর পর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় ফের এটি মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হলো।

চতুর্থ শতাব্দীর শুরুর দিকে কারিয়া স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয় একটি চার্চ হিসেবে। পরে উসমানিয়া শাসক সুলতান দ্বিতীয় বায়জিদের শাসনামলে প্রধান উজির আতিক আলি পাশার নির্দেশে এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।

এরপর চার শতাব্দীরও অধিক সময় এটি মসজিদ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু উসমানিয়া খেলাফত বিলুপ্তির পর আয়া সোফিয়ার মতো এটিকেও ১৯৪৮ সালে জাদুঘর বানিয়ে ফেলে তৎকালীন ইসলামবিরোধী তুর্কি সরকার।

দীর্ঘ দিন পর গত শুক্রবার মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করতে পেরে বেশ উল্লসিত মুসল্লিরা। এদিন তারা তাকবির ধ্বনিতে মসজিদ ও এর প্রাঙ্গণ আন্দোলিত করে তোলেন। মসজিদের অভ্যন্তর, সামনের চত্বর ও আশপাশের সড়কগুলোও মুসল্লিদের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে।

শুধু এই মসজিদ নয়, ক্ষমতায় আসার পর থেকে এরদোগান বন্ধ থাকা ও জাদুঘরে রূপান্তর করা অনেক মসজিদ পুনরায় চালু করেন। এর মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম। এরদোগানের উপস্থিতিতে সেখানে ৮৬ বছর পর নামাজ শুরু হয়।

পুরনো মসজিদ উদ্ধার ছাড়া তিন বেশ কিছু নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন। তুরস্কের তাশামালিজা মসজিদ এর অন্যতম। আয়তনগত দিক বিবেচনায় এশীয় ও ইউরোপ অঞ্চলে এটিকে বলা হচ্ছে- সর্ববৃহৎ মসজিদ। বিগত প্রায় এক শতাব্দীতে আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর এটিই তুরস্ক নির্মিত সর্ববৃহৎ মসজিদ।

;