বুরকিনা ফাসোতে গির্জায় সন্ত্রাসী হামলা, ১৫ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তর্জাতিক
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে একটি ক্যাথলিক গির্জায় উপাসনার সময় সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার মালির সীমান্তের ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে দেশটির সাহেল অঞ্চলে অবস্থিত এসসাকানে গ্রামের গির্জায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গির্জাটিতে উপাসনার জন্য ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা জড়ো হয়েছিলেন।
ডোরি শহরের ডায়োসিসের বিশপ মনসিগনর লরেন্ট ডাবিরের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী হামলায় ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১২ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং হাসপাতালে মারা যান আরও ৩ জন। এছাড়াও দুজন আহত হয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই বেদনাদায়ক পরিস্থিতিতে, যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মুক্তি, আহতদের নিরাময় এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সান্ত্বনার জন্য প্রার্থনা করতে আমরা আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, বুর্কিনা ফাসো গত এক দশক ধরে আল-কায়েদা এবং দায়েশ/আইএসআইএস সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী সাহেল অঞ্চলের বিশাল অংশ দখল করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এছাড়া গত তিন বছরে দেশটির গির্জাগুলোকে বারবারই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং বহু উপাসককে হত্যা করা হয়েছে।
ইরানের ঘন জঙ্গলবেষ্টিত যে পাহাড়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ সফরসঙ্গীরা হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে নিহত হয়েছেন, সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ৫০ জন বিশেষজ্ঞকে পাঠাবে রাশিয়া। ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এজন্য দুটো বিমান প্রস্তত আছে বলে জানিয়েছে ইরানের বার্তাসংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (ইরনা)। সোমবার সকালে থেকে তারা তাদের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করবে।
সোমবার (২০ মে) ইরনার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত কাশেম জালিলি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, রোববার সরকারি ছুটি থাকলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাত ১০টায় ইরানের প্রতিনিধি দলকে ক্রেমলিনে ডেকে পাঠান। এসময় পুতিন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সফরের বিস্তারিত জানতে চান।
বিস্তারিত জেনে তিনি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন যে কোনো দরকারে রাশিয়া ইরানের পাশে থাকবে।
পুতিন জালিলিকে বলেন, দুর্গম পাহাড়ে অনুসন্ধানে ৫০ জন বিশেষজ্ঞকে দুটো প্লেনে করে ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে। যেখানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, সে এলাকা জুড়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাবে তারা।
পুতিনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান সের্গেই সৈগু, চিফ জয়েন্ট স্টাফ অব দ্য আর্ডমড ফোর্সেস ভ্যালেরি জেরাসিমভ, বেসামরিক বিমান চলাচল এবং জরুরি উদ্ধার তৎপরতা প্রধান আলেক্সান্দার কোরেনকভসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু: এ পর্যন্ত আমরা যা জানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তর্জাতিক
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার পূর্ব আজারবাইজান থেকে ফেরার পথে বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসিকে ঘিরে দুশ্চিন্তার ডালপালা বাড়ছে। প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্য জানার পরই ঘটনাস্থলে কমান্ডো বাহিনী ও উদ্ধারকারীদের পাঠানো হয়।
জানা যায়, রোববার একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ইরানি প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের তারবিজে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এই সময় তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারবিজে ফেরার পথেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
পরবর্তীতে হেলিকপ্টারটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে ২০টি উদ্ধারকারী দল, আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রোন পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনা সম্পর্কে ধীরে ধীরে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তবে সর্বশেষ যা যা জানা গেছে তা বিস্তারিত এখানে আলোচনা করা হলো-
কী ঘটেছে?
ইরানের প্রেসিডেন্টে ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর সর্বপ্রথম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম সেই খবর প্রচার করে।
সেখানকার স্থানীয় গণমাধ্যম মেহের নিউজ ওয়েবসাইটের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে রাইসি গাড়িতে করে তাবরিজ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তিনি নিরাপদে আছেন।
পরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিখোঁজ হেলিকপ্টারটি রাইসি ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বহন করছিল বলে নিশ্চিত করার পর খবরটি সরিয়ে ফেলা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি 'হার্ড ল্যান্ডিং'-এর শিকার হয়েছে। এখানে হার্ড ল্যান্ডিং বলতে প্রতিকূল আবহাওয়া, পাইলটের ত্রুটি বা যান্ত্রিক সমস্যার কারণে বিমানের দ্রুত অবতরণ করাকে বুঝনো হয়েছে।
কারা ছিলেন হেলিকপ্টারে?
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান, ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি এবং পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির প্রতিনিধি আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে হাশেম ইব্রাহিম রাইসির সফরসঙ্গী ছিলেন।
হেলিকপ্টারটি কোথায় বিধ্বস্ত হয়েছে?
হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল, হেলিকপ্টারটি আজারবাইজান সীমান্তবর্তী জোলফা শহরের কাছে বিধ্বস্ত হলেও পরে উজি গ্রামের কাছে হেলিকপ্টারটি আরও পূর্ব দিকে গিয়ে পড়ে।
তিনটি হেলিকপ্টারই কি নিখোঁজ হয়ে গেছে?
না, প্রেসিডেন্টের গাড়িবহরের তিনটি হেলিকপ্টারের মধ্যে দুটি নিরাপদে তাবরিজ শহরে ফিরে এসেছে। ওই দুই হেলিকপ্টারে ইরানের জ্বালানিমন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ান এবং গৃহায়ন ও পরিবহনমন্ত্রী মেহেরদাদ বাজরপাশ ছিলেন। তারা নিরাপদে তাবরিজ শহরে ফিরে এসেছেন।
উদ্ধার তৎপরতায় কি সমস্যা হয়েছে? কেন যাত্রীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না?
উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, দশজন উদ্ধারকর্মী ছাড়াও বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রোন তল্লাশি অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছে। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সব প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও ব্যাপক কুয়াশার জন্য অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিধ্বস্তের এলাকাটি একটি 'বনাঞ্চল' হওয়ায় সেখানে যাতায়াত কঠিন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইরনা।
উদ্ধার কার্যক্রমের সর্বশেষ পরিস্থিতি কী? কারা সাহায্য করছেন?
কর্দমাক্ত অঞ্চল, ঘন কুয়াশা এবং রাতের অন্ধকার উদ্ধারকারী দলগুলোকে দুর্ঘটনাস্থলটি শনাক্তকরণে বাঁধাগ্রস্ত করেছে। দুর্ঘটনা কবলিত স্থান চিহ্নিত করতে ইউরোপীয় কমিশনের কোপার্নিকাস স্যাটেলাইট ম্যাপিং সিস্টেম সক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জ্যানেজ লেনারসিক। এছাড়াও প্রতিবেশি দেশ ইরাক তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য সংস্থাকে তল্লাশি অভিযানে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে।
ইরানের সাধারণ মানুষের অনুভূতি কেমন? কী বলছেন তারা?
প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার নিখোঁজ হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাইসির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইরানি জনগোষ্ঠীকে প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাইসির ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলা হয়, ‘আমরা দেশবাসীকে রাষ্ট্রপতি ও তার সঙ্গীদের সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানাই।’ ইরানের মাশহাদ শহরে লোকজন জড়ো হয়ে ইবরাহিম রাইসির জন্য প্রার্থনা করছেন। তারা রাইসি ও তার সফর সঙ্গীদের সুস্থভাবে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না তা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারে কি কোনো সমস্যা ছিল?
রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের কী ধরনের হেলিকপ্টার বহন করছিল সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেটা সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার বা রেড ক্রিসেন্ট বিমান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানে বেশ কিছু হেলিকপ্টার থাকলেও এর বেশিরভাগই ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আগের। নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ইরানের খুচরা যন্ত্রাংশ কিনতে সমস্যা হচ্ছে, যার ফলে এসব হেলিকপ্টারের রক্ষণাবেক্ষণ সরকারের পক্ষে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণেই মূলত দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা ইরনা নিউজ জানিয়েছে, সেখানকার স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, তারা প্রচণ্ড জোরে কিছু আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। সর্বশেষ উদ্ধারকারী দল বিরূপ আবহাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। সেখানে কারও ‘বেঁচে থাকার বা জীবিত থাকার কোনও চিহ্ন’ নেই। হেলিকপ্টারটিকে থাকা প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ সব যাত্রীকে শহীদ বলে নিশ্চিত করেছে ইরান।
প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর ইরানের দায়িত্বে কে থাকবে?
প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার (৬৯) ক্ষমতায় আসবেন। ইরানের আইন অনুযায়ী ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি মৃত বা অক্ষম বলে নিশ্চিত হওয়ার পরে এর জন্য সুপ্রিম লিডারের অনুমোদন প্রয়োজন। এরপর অনধিক ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
রাইসির হেলিকপ্টার নির্মাণকারী হিসেবে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তর্জাতিক
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি যে হেলিকপ্টারটিতে যাত্রা করেছিলেন সেটির মডেল ছিল বেল ২১২, যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। রাইসিকে বহনকারী এ হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর।
সোমবার (২০ মে) বিবিসি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটির কী হয়েছিল। কেনই বা হঠাৎ এমন দুর্ঘটনা। এসব আলোচনায় এসেছে হেলিকপ্টারটির নির্মাণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রও।
ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে ।
সোমবার (২০ মে) আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি বেল ২১২ মডেলের ছিল যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এই হেলিকপ্টারটি মাঝারি আকারের যেখানে ১৫টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে পাইলটের জন্য একটি আসন এবং যাত্রীদের জন্য বাকি ১৪টি।
আজারবাইজান সীমান্তবর্তী ইরানের একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বহনকারী হেলিকপ্টারটি রোববার ফারজাকান এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে হেলিকপ্টারে থাকা সবাই মারা যান।
সোমবার (২০ মে) সকালে তার মারা যাওয়ার খবর সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়।
সফরসঙ্গী হিসেবে ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালিক রহমাটি, তাবরিজের শুক্রবারের প্রার্থনার নেতা হোজ্জাতুলেসলাম আল হাশেম এবং আরো কয়েকজন।
তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইব্রাহিম রাইসিকে (৬৩) মনে করা হতো, দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন।
ইব্রাহিম রাইসি ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর মাশহাদের নোগান জেলায় একটি যাজক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রাইসির বয়স যখন ৫ বছর তখন তার বাবা সৈয়দ হাজী মারা যান। রাইসি জাভাদিয়াহ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর ইসলামী সেমিনারি হাওজায় পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি কওম সেমিনারিতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদি স্কুলে ভর্তি হন।
তিনি মোতাহারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেট আইনে ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়। তবে এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
১৯৮১ সালে ইব্রাহিম রাইসি কারাজের প্রসিকিউটর নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি হামাদানের প্রসিকিউটরও নিযুক্ত হন এবং একইসঙ্গে উভয় পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৫ সালে তেহরানের ডেপুটি প্রসিকিউটর নিযুক্ত হলে রাজধানীতে চলে আসেন রাইসি। ১৯৮৮ সালের প্রথম দিকে তিনি রুহুল্লাহ খোমেনির ঘনিষ্ঠতা লাভ করেন। সেইসঙ্গে লোরেস্তান, সেমনান এবং কেরমানশাহের মতো কিছু প্রদেশে আইনি সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ বিধান (বিচার বিভাগ থেকে স্বাধীন) পান।