গাজা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে মিশর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার ধারাবাহিক চেষ্টার অংশ হিসেবে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে উত্তর-পূর্ব সিনাইয়ে প্রায় ৪০টি ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান পাঠিয়েছে মিশর। দুটি মিশরীয় নিরাপত্তা সূত্রে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ-এর চারপাশে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সম্প্রসারণের আগে ওই ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয় বলে জানা গেছে। কারণ, সেখানকার বেশিরভাগ বাসিন্দা নিরাপত্তা চেয়েছিল।

তাদের আশঙ্কা, ফিলিস্তিনিদের জোর করে গাজা থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।

ওই আশঙ্কার কারণ, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মিশর সীমান্ত সংলগ্ন রাফাহ-তে হামলা চালিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার সেনাবাহিনীকে বাস্তুচ্যুত লোকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা সীমান্তে কংক্রিটের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছে মিশর, যার উচ্চতা ছয় মিটার এবং এর উপর দিকে কাঁটাতার রয়েছে।

নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, এ ছাড়াও সীমান্ত চৌকিতে নজরদারি বাড়িয়েছে কায়রো।

সিনাই ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস দ্বারা রয়টার্সের সঙ্গে শেয়ার করা ছবিগুলোতে গত ডিসেম্বরে মিশরের নির্মিত নতুন প্রাচীর দেখতে পাওয়া গেছে।

গত জানুয়ারী এবং ডিসেম্বরের স্যাটেলাইট চিত্রগুলোতে রাফাহ-এর নিকটবর্তী ১৩ কিলোমিটার সীমান্ত বরাবর কিছু নতুন নির্মাণ এবং এর উত্তর প্রান্তে সমুদ্রের ধারে একটি প্রাচীরের সম্প্রসারণ দেখা গেছে।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি মিশরীয় এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

উত্তর সিনাইয়ে নিরাপত্তা সম্প্রসারণের পর নতুন পদক্ষেপগুলো এসেছে যখন মিশরের সামরিক বাহিনী এক দশক আগে ক্রমবর্ধমান ইসলামপন্থী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে তার দখলকে সুসংহত করেছে।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে মিশর বলেছিল, তারা টানেলগুলো ধ্বংস করেছে, যার মাধ্যমে গাজায় চোরাচালান বিকাশ লাভ করেছিল।

   

রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক প্রকাশ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশ্বনেতাদের শোকবার্তা ও উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) ইরানের বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা সহমর্মিতা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়া, ভারত, জর্ডান, কাতার, কুয়েত, ইয়েমেন, সৌদি আরব এবং ভেনিজুয়েলা সবাই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে তারা ইরানের পাশে আছে।

দুর্ঘটনার আগে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ইরান-আজারবাইজান সীমান্তের দুটি বাঁধ উদ্বোধনের জন্য রাইসির সঙ্গে ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বন্ধুত্বপূর্ণ বিদায় জানানোর পর ইরানের শীর্ষ প্রতিনিধিদলকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টারের ক্র্যাশ-ল্যান্ডিংয়ের খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গীদের জন্য প্রার্থনা করছি। আজারবাইজান এ ঘটনায় যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

আর্মেনীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে শোক প্রকাশ করে জানায়, রাষ্ট্রপতি রাইসি এবং মন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি। উদ্ধার অভিযান চলাকালীন সময় ইরানের ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আর্মেনিয়া প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ইরানের প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাদের দলের অন্যান্য সদস্যদের জড়িত বিমানের ঘটনার রিপোর্টগুলো অনুসরণ করছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এ ঘটনায় সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে সব রকমের অগ্রগতি অনুসরণ করছেন। প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার কর্মীদের জন্য অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য ইরানে একটি দল প্রেরণের ঘোষণা দেয় তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং সংসদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক পৃথক বার্তায় প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার সফরসঙ্গীদের সঙ্গে হওয়া দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা রাইসির জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং এ কঠিন সময়ে ইরানি জাতির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে এক বার্তায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এ দুঃসময়ে ইরানি জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।’

এ ঘটনায় আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানায়, তারা ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং তার সহগামী দল সম্পর্কে প্রতিবেদনগুলো অনুসরণ করছে।

ইরাকের প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফ রশিদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তিনি বাগদাদে ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনও করেছেন এবং ইরাকি সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদলের জন্য সহমর্মিতা জানিয়েছেন।

পৃথকভাবে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া' আল সুদানী ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পাশাপাশি অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রেসিডেন্ট রাইসির নিখোঁজ হেলিকপ্টার খুঁজে পেতে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা সরবরাহের নির্দেশ দেন।

ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নেচিরভান বারজানি এবং প্রধানমন্ত্রী মাসরুর বারজানি পৃথক বার্তা জারি করে বলেন, তারা ইরানি জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছেন।

সৌদি আরবও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের দুর্ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তেহরানের সঙ্গে কায়রোর সংহতির ওপর জোর দিয়েছে।

লেবাননের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ বিয়োগান্তক ঘটনায় ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে- ইরানের প্রেসিডেন্ট ও তার প্রতিনিধিদলকে বহনকারী একটি কপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার খবরটি তারা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে অনুসরণ করছে।

ওমানের সরকারি বার্তা সংস্থা এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে তেহরানকে যেকোনও সাহায্য দিতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি এক বার্তায় বলেন, আমি তেহরানের ক্রাইসিস ইউনিট ও দূতাবাসের মাধ্যমে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার এবং তার সঙ্গে আসা প্রতিনিধি দলের খবর অনুসরণ করছি। তাজানি আরও বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া ম্যালোনিকে ইরানের রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাদের সহকারী প্রতিনিধিদলকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির হার্ড ল্যান্ডিং ঘটনার অগ্রগতি অনুসরণ করছেন।

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন, ইসলামিক জিহাদ এবং হামাস ইরানের প্রেসিডেন্টের কপ্টার বিধ্বস্তের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে পৃথক বিবৃতি জারি করেছে।

হামাস ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার পাশাপাশি ইরানের জনগণ ও সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জানায়, তারা উদ্বেগের সঙ্গে এ ঘটনার বিষয়ে অগ্রগতি অনুসরণ করছে।

ইসলামিক জিহাদও ইরানি জাতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিরোধ আন্দোলনের কথা বলে।

পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব ফিলিস্তিন এক বার্তায় জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার খবরকে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে অনুসরণ করছে তারা।

;

রাইসির হেলিকপ্টারের করুণ পরিণতির ভিডিও প্রকাশ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহন করা দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারটির  করুণ পরিণতির দৃশ্য ড্রোন ফুটেজে উঠে এসেছে।

এরই মধ্যে এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যম এক্সে শেয়ার করেছে ইরানি রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইরনা।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পাহাড়ের ওপর রাইসির হেলিকপ্টারটি পড়ে আছে। বিধ্বস্ত হয়ে সেটি পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুধু দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারের পেছনের দিকটা অবশিষ্ট রয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার চেষ্টার পর দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হন উদ্ধার দলের সদস্যরা। এরপরই ড্রোন থেকে ধারণ করা একটি ভিডিওতে রাইসির হেলিকপ্টারের করুণ পরিণতির দৃশ্য উঠে আসে।

সোমবার (২০ মে) দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলে। এরপর দেশটির বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, ওই হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন। তারা কেউই আর বেঁচে নেই বলে জানায় ইরান প্রসাশন।

এর আগে, রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।

বলা হচ্ছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন তারা। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।

;

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, ফাইল ছবি, সৌজন্যে- IRNA

ছবি: সংগৃহীত, ফাইল ছবি, সৌজন্যে- IRNA

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় হেলিপকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্যদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) কয়েক ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়ে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বরাত দিয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এ খবর জানায়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআবদুল্লাহিয়ান এবং অন্য কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি শনাক্ত করেছেন উদ্ধারকারীরা। তবে এ হেলিকপ্টারের যাত্রীদের জীবিত থাকার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান পীর হোসেইন কোলিভান্দ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, সোমবার সূর্য ওঠার পর উদ্ধারকারীরা প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে হেলিকপ্টারটি দেখতে পান। তবে এর বেশি কিছু তিনি জানাতে পারেননি। তাৎক্ষণিকভাবে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কোনো কারণও জানা যায়নি।

এর আগে রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

এরপর ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন। এরপর সোমবার সকালে একটি ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপরই উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী শহর জোলফার কাছে বিমানটি বিধস্ত হয়। তবে পরে বলা হয়, এটি উজি গ্রামের কাছে আরও পূর্ব দিকে।

রাইসির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআবদুল্লাহিয়ান, ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নরসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও দেহরক্ষীরা ছিলেন।

সোমবার সকালে, তুর্কি কর্তৃপক্ষ একটি ড্রোন ফুটেজ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, জঙ্গলে আগুন দেখা গেছে। আর এটি ‘হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ বলে সন্দেহ করছে’।

ফুটেজে দেখা যায়, আজারবাইজান-ইরান সীমান্তের প্রায় ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) দক্ষিণে একটি খাড়া পাহাড়ের পাশে আগুন জ্বলছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীরা কয়েকটি হেলিকপ্টারে করে ফিরছিলেন কিন্তু খারাপ আবহাওয়া ও কুয়াশার কারণে একটি হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।’

দুর্ঘটনার পর দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছিলেন, যাই হোক না কেন ইরান সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, খামেনির সম্মতিক্রমে ভাইস ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেবেন। ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জানায়, রাইসির অনুপস্থিতিতে দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার এরই মধ্যে দেশটির কর্মকর্তা ও বিদেশি সরকারের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন।

৬৩ বছর বয়েসি কট্টরপন্থী রাইসি এর আগে দেশের বিচার বিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাকে খামেনির একজন অনুসারী হিসেবে দেখা হয়। কিছু বিশ্লেষক মনে করতেন, খামেনির মৃত্যু বা অবসর গ্রহণের পরে ৮৫ বছর বয়েসি এ নেতার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন রাইসি।

রোববার ভোরে আজারবাইজান সীমান্তে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন রাইসি। আরাস নদীর উপর দুই দেশের নির্মিত তৃতীয় বাঁধ এটি। ২০২৩ সালে তেহরানে আজারবাইজান দূতাবাসে বন্দুক হামলা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে আজারবাইজানের কূটনৈতিক সম্পর্কসহ দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও এই সফর অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাকে ইরানের শিয়া মতাদর্শের অনুসারীরা এই অঞ্চলে তাদের প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে।

ইরানের ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাইসি জয়ী হন, যে ভোটে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছিল। ১৯৮৮ সালে রক্তক্ষয়ী ইরান-ইরাক যুদ্ধ শেষে হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দির মৃত্যুদণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রাইসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

;

জরুরি বৈঠক ডেকেছে ইরানের মন্ত্রিসভা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর ইরানের মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠক ডেকেছে।

ইরানের বার্তাসংস্থা ইরনা ইন্টারন্যাশন্যালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি শহীদ হয়েছেন।

ইরানের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও একই খবর দিয়েছে। ইরানের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রাইসিকে বহনকারী বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। 

ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন রাইসি। একটি জরুরি ফোনকলে তখন হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর আসে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের কেউ ওই ফোন করেছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নিয়েছে ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। পাহাড়-পর্বতে ঘেরা দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছিল।

অবশেষে ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসি ও তার সাথে থাকা সবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইরান প্রসাশন।

;