পণ্য সাপ্লাই চেইনের গলা টিপে ধরেছে হুতিরা, বিকল্প রুটের সন্ধানে বিশ্ব



মানসুরা চামেলী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
পণ্য সাপ্লাই চেইনের গলা টিপে ধরেছে হুতিরা, বিকল্প রুটের সন্ধানে বিশ্ব

পণ্য সাপ্লাই চেইনের গলা টিপে ধরেছে হুতিরা, বিকল্প রুটের সন্ধানে বিশ্ব

  • Font increase
  • Font Decrease

বিপুলাকায় একটি জাহাজের উপর দিয়ে চক্কর খাচ্ছে একটি ক্ষুদ্র হেলিকপ্টার। ভয়ে গতিপরিবর্তনের চেষ্টা করছে জাহাজটি। এমন একটি দৃশ্য এখন অনেকেরই জানা। ওটা ছিলো লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজটিতে হুতি সন্ত্রাসীদের আক্রমণ। বিপুল সমুদ্রে একা একটি জাহাজ এই সন্ত্রাসীদের কাছে কতটা বিপন্ন তা ভেসে উঠেছে এ দৃশ্যে।

আর তাই হুতি সন্ত্রাসীদের আক্রমণের ভয়ে এখন আর লোহিত সাগর ব্যবহার করতে চাইছে না বিশ্বের পণ্যবাহী জাহাজ সংস্থাগুলো। যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় একশ’র বেশি কার্গো জাহাজ ও ট্রাঙ্কার লোহিত সাগরে হুতিদের আক্রমণ এড়িয়ে আফ্রিকার দক্ষিণে তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে নিয়েছে। তবে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় আকারের জাহাজগুলো সরানো কতটা সহজসাধ্য?

গত ১৭ জানুয়ারি মার্কিন জাহাজ জেনকো পিকার্ডি লোহিত সাগর হয়ে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সময় হুতিদের আক্রমণের শিকার হয়। এরপরেই বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেন ‘লোহিত সাগর’ বাণিজ্যিক চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।


এর আগেও গত নভেম্বরে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বাব আল-মান্দাবের প্রণালী দিয়ে যাওয়ার সময় একটি পণ্যবাহী জাহাজকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

বাব আল মান্দাব প্রণালী ২০ মাইলের একটি প্রশস্ত প্রণালী। যা আরব উপদ্বীপের ইয়েমেনকে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকা বিভক্ত করে। অভিযোগ রয়েছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরাইলি পণ্যবাহি জাহাজগুলোকেই টার্গেট করতে শুরু করে হুতিরা। জাহাজ ছিনতাই করতে তারা ভারী অস্ত্রসহ মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করছে। এমন অবস্থায় সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন জাহাজের নাবিকরা। আক্রমণের মুখে জাহাজের গতি পরিবর্তন অসম্ভব। সুতারাং বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি হতে হচ্ছে তাদের।

এমভি জেনকো পিকার্ডির কথাই ধরা যাক। এডেন উপসাগরে মার্কিন মালিকানাধীন পতাকাবাহী জাহাজটি হুতিদের ড্রোন হামলার শিকার হয়। জাহাজটি তখন ফসফেট শিলা বহন করছিল। ফলে জাহাজ নিয়ে সটকে পড়া অসম্ভব ছিলো ফলে ওই সময় ২২ জন নাবিক আটকা পড়েন। পরে অবশ্য তাদের উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ভয়টা থেকেই যায়।

গ্লোবাল মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ লয়েড'স লিস্ট ইন্টেলিজেন্সের প্রধান বিশ্লেষক মিশেল উইজ বকম্যান বলেছেন, চলতি সপ্তাহে ভয়ে ভয়ে প্রায় ৩০০ টির বেশি পণ্যবাহী জাহাজ লোহিত সাগর পাড়ি দিয়েছে। ৩০০ জাহাজের প্রত্যেকটিতে ১৫ থেকে ২৫ জনের মতো লোক ছিল। তাদের কাছে লোহিত সাগর পাড়ি দেওয়াটা এক প্রকারের যুদ্ধক্ষেত্র বলা যায়।’

পরিসংখ্যান মতে, প্রতি বছর লোহিত সাগর দিয়ে বিশ্বের ১২ শতাংশ বাণিজ্য হয়। যার আর্থিক মূল্য ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অধিকাংশ শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ দুটোই বেড়ে গেছে। তার চেয়ে বড় কথা জাহাজগুলোর গতি পরিবর্তন অনেকাংশেই কষ্টসাধ্য।

শত শত বিশালাকৃতির কনটেইনার জাহাজ, এর মধ্যে কোনো কোনোটি ৩০০ ফুটেরও বেশি লম্বা। জাহাজগুলো এখন লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল হয়ে এশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার পরিবর্তে আফ্রিকা মহাদেশের দীর্ঘ পথ বেছে নিচ্ছে। বিশালাকৃতির জাহাজগুলোর দিক পরিবর্তন করতে লাগছে বাড়তি লজিস্টিক সাপোর্ট পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়।

এদিকে খরার কারণে পানামা খাল হয়ে পণ্য পরিবহন বেশ আগে থেকেই কমে গেছে। তারপর উপর ইউক্রেন যুদ্ধ কৃষ্ণসাগর হয়ে পণ্য পরিবহণ কম হয়। সব কিছু মিলে বলা যায় এখন বিশ্বব্যাপী পণ্য সাপ্লাই চেইনের গলা টিপে ধরেছে হুতিরা। ভয়ঙ্কর আর্থিক মন্দা ও পরিবেশগত বিপর্যয় এড়াতে এই মুহূর্তে একটি বিকল্প রুট খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।


গত বছরের নভেম্বরে হুতিরা তাদের ছিনতাই করা একটি জাহাজের ভিডিও প্রকাশ করে। সেবার রাশিয়ার একটি তেল ট্যাঙ্কার অল্পের জন্য হামলা থেকে রক্ষা পায়।

যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী তাদের জাহাজগুলোকে রক্ষা করতে হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে। তবে লোহিত সাগরের এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নাবিকদের জীবনের জন্য হুমকি তৈরি করেছে। আর পণ্য সঙ্কটতো রয়েছেই।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বীমা প্রিমিয়ামের পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এই জাহাজগুলোর বহন করা পণ্যের মূল্য কয়েক লাখ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

এ অবস্থায় শিপিং কোম্পানিগুলো তাদের জাহাজ অন্য রুট হয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে এতে প্রতিটি জাহাজকে ৩ হাজার ৫০০ নটিক্যাল মাইল অতিরিক্ত পথ ঘুরে যেতে হয়। এতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন বেশি। সেই সঙ্গে বাড়তি জ্বালানি খরচ হয় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের। বাড়তি সময় ও ব্যয় সত্ত্বেও জাহাজ কোম্পানিগুলো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হাইজ্যাকের হাত থেকে বাঁচতে বিকল্প পথ ব্যবহার করছে।

লোহিত সাগর এড়িয়ে অতিরিক্ত সময় ও ব্যয় নিয়ে পণ্য পরিবহন করার ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। সেই সঙ্গে পণ্যের দাম বাড়বে এবং খাদ্য ঘাটতিও দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন গ্লোবাল মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ লয়েড'স লিস্ট ইন্টেলিজেন্সের প্রধান বিশ্লেষক মিশেল উইজ বকম্যান।

একটি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তাদের মন্তব্যের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে হুতিরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ অ্যানা নাগুর্নি বলেন, পানামা খাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ইতিমধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য ও সরবরাহে ঘাটতি দেখা গেছে। চীনের অনেক জাহাজ পানামা খাল দিয়ে চলাচল না করে সুয়েজ খাল ব্যবহার শুরু করেছিল। এখন একটা বিপর্যয়ের দিকে বিষয়টি যাচ্ছে।

সি ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, লোহিত সাগর থেকে জাহাজগুলো সরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপের দীর্ঘ ট্রানজিট ব্যবহার করতে হচ্ছে। পণ্য সাপ্লাই চেনে যার প্রভাব এরই মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ের প্রভাবকেও ছাড়িয়ে গেছে।

তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে পণ্য পরিবহনে যেমন বিকল্প পথ ব্যবহার করা হয়েছিল। তেমনি হুতিদের হামলার কারণে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হবে। যদিও এটি ব্যয়বহুল এবং এর বোঝা ভোক্তাদের বইতে হবে। কিন্তু বিকল্প রুট ছাড়া আর কোন পথ নেই।

এদিকে, লোহিত সাগর দিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর রুট পরিবর্তনের কারণে সামুদ্রিক পরিবেশে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা। তারা বলেন, পানির নিচে বসবাসকারী প্রাণী ও মাছের জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। জাহাজগুলোর বিকল্প পথ ব্যবহারের ফলে হাজার মাইল বেশি চলতে হবে, এত অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হবে, কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হবে। কার্বন নির্গমন ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন লক্ষ্যের অর্ধেক হলে, ২০৫০ সালে সালে নেট-শূন্য কার্বন নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জাহাজগুলোর রুট পরিবর্তনের ফলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না- বলেন ব্যাংকিং এবং আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজি’র পরিবহন অর্থনীতিবিদ রিকো লুমান।

যদিও এটা পরিষ্কার যে, বিশ্ব বাণিজ্যের উপর হুতিদের হামলা সরবরাহ চেইনকে ধ্বংস করবে না। তবে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে একটা বড় প্রভাব পড়বে। এতে অর্থনৈতিক সংকটও তৈরি হবে।

সূত্র: বিবিসি

   

আফগানিস্তানে স্পেনের ৩ পর্যটকসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আফগানিস্তানে স্পেনের ৩ পর্যটকসহ এক আফগান নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা।

এছাড়া গুলিতে স্পেনের ৪ পর্যটক ও ৩ আফগান নাগরিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনার দায় কেউ স্বীকার করেননি।

শনিবার (১৮ মে) তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ এ খবর জানায়।

খবরে বলা হয়, তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল মতিন জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্য আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীদের গুলিতে তিনজন বিদেশি পর্যটক নিহত হয়েছেন। এছাড়া এসময় একজন আফগান নাগরিকও নিহত হন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তালেবান এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে হত্যার শিকার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ঘটনার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

;

চীনের ২৬ কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উইঘুর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফের চীনের ২৬টি টেক্সটাইল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ওয়্যারহাউজ ফ্যাসিলিটি থেকে আর চীনের তুলা আমদানি করবে না দেশটি।

এর আগে চীনের টেলিকম সরঞ্জাম ও বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার টেক্সটাইল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল দেশটি।

বার্তাসংস্থা  রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে হোয়াইট হাউস এসব কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের উইঘুর সংখ্যালঘুদের দিয়ে জোর করে পণ্য তৈরি করায় চীন। ওই সব পণ্য নিজেদের সরবরাহ চেইন থেকে সরাতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদেন বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্টে এবার চীনের ২৬টি কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এসব কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

এর আগেও ওয়াশিংটন বলেছে, চীনা কর্তৃপক্ষ জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য শ্রম শিবির স্থাপন করেছে। তবে বেইজিং বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করবে। চীনের উন্নয়নের গতি রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের এটি একটি কৌশলমাত্র।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্ট পাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত ৬৫টি চীনা প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।

;

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ যেসব অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মে মাসের শেষের দিকে পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়ার অধিদপ্তর ‘মৌসম ভবন’। ওমান এ ঝড়ের নাম রেখেছে ‘রেমাল’ যার অর্থ বালি।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টির ফলে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২২ মে নাগাদ আরব সাগর এবং ২৩ মে নাগাদ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। কারণ নিম্নচাপের শক্তি বৃদ্ধির জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে, তার মধ্যে বেশ অনেক শর্তই অনুকূল রয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য যেমন সাগরের পানির তলার তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হয়। কমপক্ষে ৫০ মিটার গভীরতা অবধি এই তাপমাত্রা থাকতে হয়। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে একেবারে এই ধরনের তাপমাত্রাই রয়েছে। সাগরের পানির তাপমাত্রা ৩০-৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি রয়েছে। এই গরম পানিকেই ঘূর্ণিঝড়ের ‘চালিকাশক্তি’ বলে মনে করা হয়। দফায় দফায় নিম্নচাপের শক্তিবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ মের পর থেকে তা গভীর নিম্নচাপের আকার নেবে।

ঘূর্ণিঝড়টির পরিণতি কী হবে?

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে, যা ২৪ মের পরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। পরে সেটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, যা এগিয়ে যেতে পারে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে।

কলকাতার আলীপুর আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, আপাতত কোনো লক্ষণ তৈরি হয়নি। ফলে এই মুহূর্তে একেবারেই হলফ করে বলা যাবে না যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে। আগে লক্ষণ তৈরি হোক বঙ্গোপসাগরে, তারপরই বোঝা যাবে যে আদৌও সেটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে কিনা।

পশ্চিমবঙ্গে ও বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়টির কেমন প্রভাব পড়বে? 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও উত্তরসংলগ্ন আন্দামান সাগরে যদি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে এগিয়ে যায়, তাহলে সেটির সম্ভাব্য গন্তব্য হবে মায়ানমার এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ। তবে পশ্চিমবঙ্গের ওপর ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এর আগে, গত ১৪ মে মৌসম ভবন জানিয়েছিল বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’, যা মে মাসের শেষের দিকে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে এই আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জানান, ২০ থেকে ২৭ মের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

এদিকে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হতে পারে। তবে কোথায়, কত গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে- তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনুমান করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে কোথাও এটি আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উপকূল এলাকায়। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত।

মে মাস মানেই যেন ঘূর্ণিঝড়ের মাস। দেড় দশক আগে ২০০৯ সালের ১৫ মে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে ‘আইলা’। এরপর ২০১৯ সালে তাণ্ডব চালায় ‘ফণী’। এ ছাড়া ২০২০ সালের ১৩ মে আছড়ে পড়ে ঘূণিঝড় ‘আম্ফান’। আর ২০২১ সালের ২৬ মে ‘ইয়াস’ আঘাত হানে।

;

ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে হিজবুল্লাহ: গ্যালান্ত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত ৭ মাস ধরে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতের জেরে ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত।

শনিবার (১৮ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার রাজধানী জেরুজালেমে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতের জেরে যে আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই এবং আমরা এটা বুঝতে পারি; কিন্তু যে গত কয়েক মাসে যত সন্ত্রাসীকে আমরা হত্যা করতে পেরেছি, সেই সাফল্যও তুচ্ছ নয়।’

ওই বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বরাবরই বলে আসছি যে আমাদের সব সময় যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এতদিন পর্যন্ত কেউ একে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। ৭ অক্টোবরের পর সবাই বুঝতে পেরেছে যে আমরা কতখানি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। তবে আমরা কখনও পিছু হটব না। সন্ত্রাসীদের প্রতিটি হামলার জবাব আমরা দেবো।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। হিজবুল্লাহর এসব হামলার জবাবে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ও লেবাননের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকবার বিমান ও গোলা হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। এসব হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ শতাধিক হিজবুল্লাহ যোদ্ধা।

;