চোখের সামনে থেকেও অচেনা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ও শেষ শহীদের সমাধিসৌধ



খন্দকার আসিফুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

যানবাহনের যানজট আর মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত মৌচাক মোড়ের ঠিক মধ্যভাগে চোখে পড়বে সাদা টাইলসের মোড়ানো একটি স্তম্ভ। এই মোড় দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। কিন্তু ৯০ ভাগ মানুষই জানেন না এই স্তম্ভটি আসলে কিসের এবং কেন! স্তম্ভটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ ফারুক ইকবাল এবং শেষ শহীদ তসলিম উদ্দিনের সমাধিস্থল।

দুই শহীদের সমাধিস্থলের তিন পাশ দিয়ে চলাচল করা সাধারণ মানুষেরও বা কি দোষ। খুব কাছে গিয়ে না দেখলে সাধারণ চোখে স্থানটি দেখে বুঝারও উপায় নেই এখানেই শুয়ে আছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম এবং শেষ শহীদ। সমাধিসৌধের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা আবর্জনা আর মোটরসাইকেল পার্কিং দেখে মনে হবে যেন এটি একটি অবহেলিত সাধারণ নির্মাণ।

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ, পাকিস্তানের পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে ছাত্র-জনতার মিছিল নিয়ে ঢাকার রামপুরায় অবস্থান করছিলেন আবুজর গিফারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা ফারুক ইকবাল। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। শহীদ হন ফারুক ইকবাল। সেসময় মৌচাক মোড়ে সমাহিত করা হয় তাকে।

ফারুক ইকবালের পাশেই সমাহিত করা হয় মুক্তিযুদ্ধের শেষ শহীদ কিশোর তসলিম উদ্দিনকে। সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ১৭ই ডিসেম্বর ঘাতকদের হাতে নিহত হন।

মুক্তিযুদ্ধের ৩৭ বছর পর ২০০৮ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন শহিদদের সমাধিস্থলে নির্মাণ করেন সমাধিসৌধ। তবে সমাধিসৌধটি দেখভালের দায়িত্ব কাউকে না দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সেটি পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়।

এই দুই বীর শহিদের স্মৃতি এবং তাদের সমাধিসৌধের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয় শহীদ ফারুক ইকবালের বড় ভাই এএনএম জুলফিকার হারুন ও শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিকের সাথে।

শহীদ ফারুকের বড় ভাই জুলফিকার হারুন বার্তা২৪-এর সাথে আলাপকালে ভাইয়ের সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ফারুক যেদিন শহীদ হয় পল্টন ময়দানে সেদিন ছাত্রলীগের মিটিংয়ে বঙ্গবন্ধুর আসার কথা ছিল। সেই মিটিং অরগানাইজ করার জন্যই সে নাস্তা না করেই সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আবুজর গিফারী কলেজের সামনে থেকে ফারুক যখন মিছিল নিয়ে রামপুরার দিকে রওনা হয় তখন আমি সেখানেই ছিলাম। আমি বাসায় চলে আসলাম। একটু পর একজন এসে বলল রামপুরায় একজনকে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করেছে। এই কথা আম্মা শুনে বলে উঠল ‘আল্লাহ জানেন কোন মায়ের বুক জানি খালি হল’। আমি বাসা থেকে বের হয়েই দেখি একটা ছেলে ফারুকের পায়ের জুতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি দেখেই বুঝে ফেললাম ঘটনা কি! এটাই ছিল ফারুককে আমার শেষ দেখা। এভাবেই ভাই ফারুকের শহীদ হওয়ার ঘটনা বলছিলেন হারুন। এবং জানান সেদিন ফারুকের জানাজায় ছাত্রনেতা বীরবিক্রম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আ স ম আব্দুর রব, নূরে আলম সিদ্দিকী, আব্দুল কুদ্দুস মাখনসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে জুলফিকার হারুন বলেন, পরিবার থেকে আমরা কখনও আবেদন করিনি তালিকায় নাম তোলার জন্য। এরশাদ সরকারের আমলে একবার একটা ফরম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আব্বা আবেদন করতে দেননি। আব্বার একটাই কথা ‘আমার ছেলে শহীদ হইছে, এটাই সম্মানের। এর বিনিময়ে সরকার থেকে আমরা কোনো সুবিধা নেব না। এরপর আর আবেদন করা হয়নি। সরকার থেকেও আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। শুধুমাত্র ৩ মার্চ এলেই সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে, একটু আলোচনা সভা করে সবাই আবার ভুলে যায়। তবে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদকে তুলে ধরার জন্য সরকার যদি কোনও ব্যবস্থা নিতো তাহলে সবাই তার ব্যপারে জানতে পারতো।

৩ মার্চ যখন শহীদ ফারুক ইকবালের মরদেহ বাড়িতে আনা হয় তখন কফিনের সামনে পেছনে হাজার হাজার মুক্তিকামি মানুষের মিছিল। কে জানতো বাড়ির উঠানে তখন অবস্থান করছিল দেশ প্রেমিক আরেক শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ তসলিম উদ্দিন- ঠিক এভাবেই নিজের ভাইয়ের গল্পটা শুরু করলেন জাহাঙ্গীর হাসান মানিক।

শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিক বলেন, হাজার হাজার জনতা যখন স্লোগান দিতে দিতে ফারুক ভাইয়ের (শহীদ ফারুক ইকবাল) মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলো এই দৃশ্য দেখেই আমার ১৩ বছরের ভাই মাকে বলে ‘দেখ মা, ফারুক ভাই কত ভাগ্যবান! হাজার হাজার জনতা তাঁর মরদেহ নিয়ে মিছিল করছে! তাঁর মৃত্যু নতুন ইতিহাসের সূচনা করছে!’ মা ধমক দেয়, "চুপ কর! কী সব অলুক্ষণে কথা কস!" মায়ের ধমকে ভাই তখন চুপসে যায়।

২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরে শুরু হয় পাকবাহিনীর বর্বরতা, শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। সে রাতে ঢাকার যে আগুন তসলিম দেখেছে, সেই আগুনই তসলিমের মধ্যে জন্ম নেয় আগ্নেয়গি। মা-বাবা লক্ষ করলো কেমন জানি চুপচাপ হয়ে গেল সে। আগের মত তার মধ্যে চঞ্চলতা নেই, আবার কারো সঙ্গে ঠিক মত কথাও বলেনা। জানতে চাইলেও ভাই মা-বাবাকে কিছু বলেনি। এভাবে চলতে থাকার মধ্যে মার্চ কিংবা এপ্রিলে হঠাৎ একদিন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তসলিমকে। বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর কয়েকদিন পরই জানা যায়, তৎকালীন আমাদের এলাকারই আলাউদ্দিন সুইট- এর ম্যানেজার আজিম খোকন, বাচ্চ্‌ ও তসলিমকে যুদ্ধে পাঠাতে সহযোগিতা করে।

১৩ বছরের তসলিম যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করছে। সে বাসায় না থাকায় এদিকে শহরের রাজাকারদের সন্দেহ তসলিম মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে। তাই ক'দিন পরপরই বাসায় পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে এসে আব্বাকে খুব বিরক্ত করতো। ৮ বার আব্বাকে আর্মিরা তুলেও নিয়ে গেছিল। তসলিমের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় আমাদের বাসা জ্বালিয়েও দিয়েছিল। আমাদের অন্যত্র গিয়ে থাকতে হয়েছে এই পাকিস্তানিদের অত্যাচারে।

রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হয়। তসলিমরা জয়ী হয়। একটি নতুন সকাল ১৬ ডিসেম্বর। দেশ আজ স্বাধীন। জনতার বিজয়ের উল্লাসের সাথে পৃথিবীর সব খুশি যেন বাবার মধ্যে। বাবার অপেক্ষা শেষ হয় ১৭ ডিসেম্বর। মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করতে এলাকার মানুষ বিজয় স্লোগান দিচ্ছে। একে একে তসলিমদের দলের প্রধান মোশাররফসহ আরও অনেকেই ফিরে এসেছে। কিন্তু তসলিম আর ফিরল না।

যে ফারুক ভাইয়ের মরদেহ দেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তসলিম, মৌচাক মোড়ে সে ফারুক ভাইয়ের কবরের পাশেই তাকে কবর দেওয়া হয়- বলেই চোখের পানি মুছলেন শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিক।

এভাবেই ঢাকার মৌচাক মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম এবং শেষ শহিদের সমাধিস্থল পাশাপাশি।

তবে ফারুক-তসলিমের সমাধিসৌধের বর্তমান অবস্থা দেখে কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই দুই শহীদের দুই ভাই জানান, যদি সরকার থেকে সমাধিসৌধের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে দুই পরিবার থেকেই যতটুকু সম্ভব করা হবে। অন্তত সমাধিসৌধের স্থানটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সেখানে বড় করে দুই শহীদের নামফলক লাগাবেন। যাতে মানুষ দূর থেকেই দেখতে পারে এবং ফারুক-তসলিম সম্পর্কে জানতে পারে।

   

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;

বান্টি গ্রাম: উড়ছে রং-বেরঙের কাপড়



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই বান্টি গ্রাম। বাটিকের গ্রাম বলেই এর পরিচিতি। এখানে ঘরে ঘরে বাটিক-ব্লকের কাজ চলে। গ্রামজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কারখানা। এই গ্রামে দিনরাত কাজ করেন হাজারো শ্রমিক। এই কাজে তাদের সংসার চলে। বান্টি গ্রামের কর্মময় জীবন চিত্র তুলে এনেছেন বার্তা২৪.কম এর ফটো এডিটর নূর এ আলম। 

বান্টি গ্রামে থ্রিপিস, ওড়না, সালোয়ার, কামিজ, বিছানার চাদর ও বালিশের কাভারে বাটিকের কাজ করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


 

দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসব কিনতে আসেন। তাদের হাত ধরেই এসব কাপড় চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে


কাপড় রং করার আগে প্রতিটি কারখানায় গরম পানিতে রং প্রস্তুত করা হয়/ছবি: নূর এ আলম

 

কাপড়ের রং পাকা করতে সেদ্ধ করা হচ্ছে।/ছবি: নূর এ আলম


কয়েক ধাপে চলে কাপড়ে বাটিকের করার কাজ/ছবি: নূর এ আলম


রং মেশানোর প্রক্রিয়াটা ঠিক আছে কিনা হাত দিয়ে দেখছেন একজন/ছবি: নূর এ আলম


গ্রামে কাপড়ে রঙ মেশানোর কাজ ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে/ছবি: নূর এ আলম


বাটিকের গ্রামের অনেক বাড়িতে বসানো হয়েছে লুম মেশিন। এই মেশিন দিয়ে নানান ধরনের নকশা করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


লুম মেশিনে চলছে কাপড় বুননের কাপড়/ছবি: নূর এ আলম


কাপড়ে রঙ করা শেষে শুকাতে দেওয়ার আগে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয়/ছবি: নূর এ আলম


রং করা কাপড় শুকাতে দিচ্ছেন এক নারী শ্রমিক/ছবি: নূর এ আলম


বান্টি গ্রামের নারী পুরুষ সবাই ব্লক বাটিক ও প্রিন্টের সঙ্গে জড়িত/ছবি: নূর এ আলম

রং করা কাপড় ছাদে ও মাঠে শুকাতে দেওয়া হয়/ছবি: নূর এ আলম


কড়া রোদে শুকানোর পর তা কারখানায় নিয়ে আসেন শ্রমিকরা।/ছবি: নূর এ আলম


প্রচন্ড তাপদাহে বাটিকের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। /ছবি: নূর এ আলম


;