টানা ৫ দফায় কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও কমেছে সোনার দাম। এ দফায় ভরিতে ৩১৫ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এ নিয়ে টানা ৫ দফায় সোনার দাম কমানো হয়েছে মোট ৬ হাজার ৮১২ টাকা।

রোববার (২৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানিয়েছে, এদিন বিকেল ৪টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯২ হাজার ১৪৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ভরিতে ৬২৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭ হাজার ৭৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯২ হাজার ৪০২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৬ হাজার ৮৪২ টাকা।

এ নিয়ে গত ১১ দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ৮ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। যার মধ্যে ৬ বার দাম কমানো হয়েছে, আর বাড়ানো হয়েছে ২ বার। সবশেষ ৫ সমন্বয়েই হ্রাস পেয়েছে সোনার দাম।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসে দেশের বাজারে ১৫ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৭ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ৮ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।

   

মাইজিপি অ্যাপেই খোলা যাচ্ছে 'বিকাশ' অ্যাকাউন্ট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামীণফোন গ্রাহকেরা এখন মাইজিপি অ্যাপ থেকে সহজেই ও নির্বিঘ্নে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ জন্য দেশের স্মার্ট কানেক্টিভিটি প্রোভাইডার গ্রামীণফোন পার্টনারশিপ করেছে, দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’-এর সঙ্গে।

সোমবার (১৩ মে) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো কমিউনিকেশনস ডিভিশনের পিআর অ্যান্ড মিডিয়া রিলেশনস, কর্পোরেট কমিউনিকেশনসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. সেজানুর রহমানের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, সহজেই অ্যাকাউন্ট খোলার এ সুবিধা গ্রাহককে আরো সক্ষমতা ও নির্বিঘ্নে সেবা গ্রহণের অভিজ্ঞতা দেবে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এধরনের একটি সেবা নিয়ে আসার মাধ্যমে ‘গ্রামীণফোন’ ও ‘বিকাশ’ নিজ নিজ খাতে তাদের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার প্রমাণ রাখলো।

সেজানুর রহমান জানান, মাইজিপি অ্যাপের ‘সার্ভিস’ সেকশনে এখন থেকে ‘বিকাশ রেজিস্ট্রেশন’ পেজ নামে একটি ডেডিকেটেড আইকন থাকবে, যেখানে গ্রাহকেরা মাত্র এক ক্লিকেই ‘বিকাশ’-এর গ্রাহক নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।

কিছু ভেরিফিকেশন ও সম্মতিদানের পর গ্রাহকের জন্য ‘বিকাশ’ নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে ই-কেওয়াইসি (ইলেকট্রনিক নো ইওর কাস্টমার) প্রক্রিয়াটি পূরণ করতে হবে। এভাবেই সহজ ও ঝামেলামুক্ত এই পদ্ধতিতে গ্রাহক মুহূর্তেই ‘বিকাশ’-এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

প্রাথমিকভাবে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা এই সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

মাইজিপি অ্যাপ থেকে ‘বিকাশ’ অ্যাকাউন্ট খুললে বোনাস পাওয়া যাবে উল্লেখ করে তিনি জানান, মাইজিপি অ্যাপে ‘বিকাশ’ অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে নতুন গ্রাহকরা ১শ ২৫ টাকা পর্যন্ত বোনাস পাবেন। এই প্রণোদনা গ্রাহকদের ‘বিকাশ’ প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন ফিচার ও সেবা ব্যবহারে আরো উৎসাহিত করবে।

এই পার্টনারশিপ নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, গ্রামীণফোনের সব উদ্যোগের কেন্দ্রে থাকেন গ্রাহকেরা। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান ও উদ্ভাবনী সেবা নিয়ে আসার চেষ্টা করি, যা তাদের সক্ষমতা, সুবিধা ও অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করছে।

তিনি বলেন, ‘বিকাশ’-এর সঙ্গে আমাদের এই যৌথ যাত্রা এই গ্রাহক-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন যা, আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ডিজিটাল সক্ষমতার আরো প্রসার ঘটাবে।

একই অনুভূতি প্রকাশ করে ‘বিকাশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, ‘বিকাশ’-এর শুরু থেকেই এর ডিএনএ-তে রয়েছে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা।

গ্রামীণফোন ও বিকাশ-এর এই যৌথ উদ্ভাবনী উদ্যোগ বিভিন্ন আর্থিক সেবার ব্যবহার বাড়িয়ে ডিজিটাল ইকোসিস্টেমকে আরো সমৃদ্ধ করবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্যাশলেস অভিযাত্রায় এই সক্ষমতা গ্রাহকের জন্য আরো সুযোগ এনে দেবে।

;

ইউনিয়ন ব্যাংক ও মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ার’র মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এবং মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ার’র মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সম্প্রতি ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

এই চুক্তির আওতায় ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কার্ডধারী গ্রাহকগণ মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ার থেকে হেলথকেয়ার সার্ভিস এর উপর সর্বেচ্চ ৫০% পর্যন্ত ছাড় ভোগ করবেন।

ব্যাংক পিএলসি. এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর উপস্থিতিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং বিভাগের প্রধান শাহরিয়ার রউফ এবং মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল আর দেশমুখ।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

;

ডাক বিভাগকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিল নগদ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি করেছে। ২০২৩ সালের আয় থেকে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৮ টাকার রাজস্ব ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে নগদ।

বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ ডাক বিভাগের প্রাপ্য রাজস্বের চেক হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তরুণ কান্তি সিকদার। এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং নগদ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলমসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নগদ লিমিটেড ও ডাক বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, নগদের সেবা থেকে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ রাজস্ব পায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, বাকি ৪৯ শতাংশ রাজস্ব পায় নগদ লিমিটেড। এর আগে ২০২০ সালে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা, ২০২১ সালে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকা এবং ২০২২ সালে ৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা রাজস্ব ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে নগদ লিমিটেড।

অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা হিসেবে নগদের ভূয়সী প্রশংসা করেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি মনে করেন, এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের কারণে দেশ ডিজিটালাইজেশন থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অনেকটাই অগ্রগামী হচ্ছে। এ ছাড়া খুব দ্রুতই যাত্রা শুরু করতে যাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক দেশকে ক্যাশলেস সোসাইটিতে পরিণত করার দিকে এগিয়ে নেবে।

চেক হস্তান্তর শেষে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমরা সবসময়ই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে থাকি। আমরা ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। সে জন্য চুক্তি অনুযায়ী ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি করি আমরা। আশা করি, আমাদের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ আরও দীর্ঘায়িত হবে এবং আরও অনেক দুয়ার উন্মোচন হবে।’

২০১৯ সালের মার্চে যাত্রার পর থেকেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে নগদ। পিছিয়ে পড়া মানুষকে অর্থনৈতিক অন্তৰ্ভুক্তিতে এনে দেশের ডিজিটাল আর্থিক খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন দেশের অন্যতম শীর্ষ এই মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সাড়ে ৯ কোটির ওপরে। প্রতিষ্ঠানটি এখন গড়ে দৈনিক এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা লেনদেন করে থাকে।

নগদ দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য স্মার্ট ফোনের জন্য ই-কেওয়াইসি ও বাটন ফোনের জন্য *১৬৭# সেবা উদ্ভাবন করে। পাশাপাশি সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জসহ অত্যাধুনিক সব সেবার মধ্য দিয়ে আর্থিক খাতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে নগদ। এর পাশাপাশি নগদ অত্যাধুনিক সাইবার নিরাপত্তার মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য ও অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা উপবৃত্তি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা তহবিল, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বিভিন্ন সহায়তা ও ভাতার টাকা অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নগদ। সবমিলিয়ে ২৭টি মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিতরণের দায়িত্ব পালন করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

;

সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে একদিনের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত মার্চে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৪২০ কোটি ডলার।

গত বৃহস্পতিবার টাকার অবমূল্যায়নের আগে ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার থেকে ১১৮ টাকা হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৪৯ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।

এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার বাড়ায় বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। সুদের টাকা যোগ করলে মোট অঙ্ক দাঁড়ায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে তা দেশীয় মুদ্রায় রূপান্তর করে উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। ঋণ ফেরত দেওয়ার সময় স্থানীয় মুদ্রাকে বৈদেশিক মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়। ওই সময়ে বাজারে প্রচলিত ডলারের দামে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে হয়। এ কারণে ডলারের দাম বাড়লে বৈদেশিক ঋণ টাকার হিসাবে বেড়ে যায়।

এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার বাড়লে ঋণের অঙ্কও বাড়ে। কারণ, ঋণ পরিশোধের সময় প্রচলিত বিনিময় হার ও সুদহারে ঋণ পরিশোধের শর্ত থাকে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি থাকলে ঋণের ঝুঁকি আরও বেশি বাড়ে। বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি। এ কারণে ঋণ পরিশোধের চাপও বেশি। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী রয়েছে।

একই সঙ্গে ডলারের দামও বাড়ছে। বর্তমানে নিট রিজার্ভ ১৮৪৮ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে তা বেড়ে সর্বোচ্চ গ্রস রিজার্ভ ৪৬০৮ কোটি ডলারে উঠেছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। ওই সময়ে ডলারের দাম ছিল ১০৩ টাকা। ঋণের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৬৪ কোটি ডলার। ওই সময়ে ডলারের দাম ছিল ১১০ টাকা। এতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে ঋণ বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার। গত মার্চে তা আরও বেড়ে ঋণ স্থিতি দাঁড়ায় ১০ হাজার ৭২ কোটি ডলারে। ফলে গত ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ৪২০ কোটি ডলার। গত ডিসেম্বর থেকে বুধবার পর্যন্ত ডলারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১১০ টাকা। এ হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৪৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

গত বৃহস্পতিবার থেকে ডলারের দাম বেড়ে ১১৮ টাকা হয়। এতে একদিনের ব্যবধানে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।

এদিকে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। করোনার আগে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার রেটে (লাইবর) ডলারে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার ছিল দেড় থেকে ২ শতাংশ। এর সঙ্গে আড়াই থেকে ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদ নির্ধারিত হতো। এ হিসাবে সুদের হার পড়ত ৪ থেকে ৫ শতাংশ।

বর্তমানে লাইবর রেট বেড়ে ডলারে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সি রেট (সোফর) ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশে উঠেছে। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ করলে সুদের হার দাঁড়ায় ডলারে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ । তিন শতাংশ যোগ করলে সুদের হার আরও বেশি পড়ে। ফলে ঋণের সুদের হার বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে ঋণের স্তিতি বাড়ছে।

এছাড়া ঋণ পরিশোধ মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানোর ফলে বাড়তি সুদের পাশাপাশি দণ্ড সুদও দিতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে এর বিপরীতে দণ্ড সুদসহ চড়া সুদ দিতে হয়।

গত বছর স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছিল ৯৩ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ১০ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। চলতি বছরে পরিশোধ করতে হবে ১১৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আরও ৬৩ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। সাময়িক হিসাবে ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ৬৯৩০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে ৭৪৩৪ কোটি টাকা। বেশি পরিশোধ করতে হবে ৫০৪ কোটি টাকা।

করোনার সময় থেকে ব্যবসায়িক মন্দার কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। ফলে ঋণের অঙ্কও বেড়েছে। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধ বাড়লেও ঋণের স্থিতি গত বছরের মার্চে কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়ে গেছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণ ছিল ৭ হাজার ২২১ কোটি ডলার। গত মার্চে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৯৮১ কোটি ডলার। বেড়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণের পরিমাণ ৮৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৮৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এ খাতে ঋণ বাড়ছে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

সরকারি খাতের বেশির ভাগ ঋণই দীর্ঘমেয়াদি। যে কারণে এগুলো দীর্ঘ সময় নিয়ে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এতে ঝুঁকির মাত্রা কম। কিন্তু বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি। এগুলো ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। সুদহারও বেশি। যে কারণে এগুলোতে ঝুঁকি বেশি। এসব ঋণই বেশি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেশি মাত্রায় পরিশোধও হচ্ছে।

বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২৪৩১ কোটি ডলার। গত মার্চে তা কমে দাঁড়ায় ২০৯৫ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ঋণ কমেছে ৩৩৬ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণ কমেছে ৩৬ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে কমেছে ৩৯ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ঋণ কমার মাত্রা বেড়েছে ২ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ঋণের মধ্যে আমদানি খাতের ঋণই বেশি। এর মধ্যে ট্রেড ক্রেডিট ও বৈদেশিক এলসির দায় বাড়ছে। যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

অন্যান্য খাতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঋণ ছিল ১১৪২ কোটি ডলার। গত মার্চে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১৭৮ কোটি ডলার। ঋণ বেড়েছে ৩৬ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৩৯৬০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে বেড়েছে ৪২৪৯ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নজনিত কারণে ঋণ বেড়েছে ২৮৮ কোটি টাকা।

;