অনিয়ম-দুর্নীতিতে লোকসান বাড়ছে, ডুবছে ফিনিক্স ফাইন্যান্স



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
অনিয়ম-দুর্নীতিতে লোকসান বাড়ছে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের

অনিয়ম-দুর্নীতিতে লোকসান বাড়ছে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের

  • Font increase
  • Font Decrease

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি চলছে। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। এই ঋণের অর্ধেকের  বেশিই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে সংস্থান ও মূলধন ঘাটতি। সম্পদের গুণগত মান দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় পুঞ্জীভূত লোকসান দিন দিন বাড়ছে। ফিনিক্স ফাইন্যান্সের প্রতি ব্যপক আস্থার সংকট থাকায় নতুন করে আমানতও পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। তীব্র তারল্য সংকটে পড়তে হচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে। অবস্থা এমন পর্যায়ে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমার হার (এসএলআর) সংরক্ষণে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি দিন দিন প্রতিষ্ঠানটির লোকসান বেড়েই চলছে। এজন্য গত কয়েকবছর ধরে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশও দিচ্ছে না কোম্পানিটির। সার্বিক আর্থিক অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের এমন দুর্দশার চিত্র উঠে এসেছে।

ব্যাংক বহির্ভূত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির এমন দুর্দশার জন্য অযোগ্য নেতৃত্বকে দায়ী করছে খাতসংশ্লিষ্টরা। অযোগ্য নেতৃত্বের ফলে প্রতিষ্ঠানটি গত কয়েক বছর ধরে লোকসানে রয়েছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের দেয়া তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের পর ফিনিক্স ফাইন্যান্স শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। ২০২০ সালে আয় করেও লভ্যাংশ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে, যা ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে। সর্বশেষ চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকেও প্রায় ১৬০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের বর্তমান দুরবস্থার জন্য  ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম ইন্তেখাব আলমের অযোগ্য নেতৃত্বই দায়ী। কারণ শীর্ষ পদটিতে ২০০৮ সাল থেকে টানা ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। গত দুই বছর টানা লোকসানে থাকলেও তাকে প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ কর্তৃক এমডি হিসেবে আরও এক মেয়াদে রাখার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। আর এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস করে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনাপত্তির জন্য পাঠানোও হয়েছিল। তবে এ দফায় তার মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনাপত্তি দিতে রাজি হয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ক্রমাগত লোকসানের অন্যতম কারণ হচ্ছে নামে-বেনামে ঋণ দেয়া। কোম্পানিটি বিভিন্ন সময় ঋণ দিলেও সেটি পরে খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। আর এভাবে চলতে থাকলে একসময় নতুন মূলধন জোগান ছাড়া প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আর্থিক খাতের যত অনিয়ম বাংলাদেশ ব্যাংক পেয়েছে, তার বেশির ভাগের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করে জামানতবিহীন কিংবা ভুয়া জামানতের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার তথ্য মিলেছে। অনেক ক্ষেত্রে জামানত নিলেও তা অতিমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুয়া গ্যারান্টির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে ঋণ আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। আর এ তালিকার প্রথম দিকেই আছে ফিনিক্স ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশদ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ফিনিক্স ফাইন্যান্সের আর্থিক দুরবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্প্রতিক এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাই ব্যতীত ও ডিউ ডিলিজেন্সের (ঋণ নিয়মাচার) ব্যত্যয় ঘটিয়ে পর্যাপ্ত জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণ করায় সময়মতো ফেরত পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। আবার ঋণ আদায়ে যথাযথ তদারকির অভাবও রয়েছে। ফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ, যা ইতোমধ্যেই উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ক্রমশ অবনতি হচ্ছে।

এসব বিষয়ে জানার জন্য ফিনিক্স  ফাইন্যান্সের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ সায়েদুজ্জামানকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, তারল্য সমস্যা, সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণে ব্যর্থতা, সংস্থান ঘাটতি, ঘাটতি সংস্থান সংরক্ষণের ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ, গ্রাহকদের আমানতের টাকা মেয়াদপূর্তিতে ফেরত না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর ফিনিক্স ফাইন্যান্সসহ ছয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বৈঠকে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের বর্তমান আর্থিক অবস্থার জন্য করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রভাবকে দায়ী করে প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, দ্বিতীয় দফায় কোভিড ১৯-এর প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন আর্থিক সমস্যায় পতিত হয়। ফিনিক্স ফাইন্যান্সের প্রায় ৪০ শতাংশ ঋণ মামলায় আটকে থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বৈঠকে আরও জানান, ব্যবস্থাপনা পর্ষদ খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও কিছু ঋণ পুনঃতফসিলের পরিকল্পনা করেছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মূলধন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা ওই সময় পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাটির মোট বিতরণ করা ঋণের মাত্র ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৬০৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর চলতি বছরের মার্চে তা আরও বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৯৬৭ কোটি টাকা বা ৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা তখনই উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, যাচাই-বাছাই, ডিউ ডিলিজেন্স এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩-এর ১৪ ধারার নির্দেশনার ব্যত্যয়ে ঘটিয়ে পর্যাপ্ত জামানত দ্বারা আচ্ছাদিতকরণ ব্যতিরেকে ঋণ বিতরণ করা এবং ঋণ আদায়ে তদারকির অভাবের কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত মার্চ পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর আরও দুই প্রান্তিকের খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪৪ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি। আর সর্বশেষ সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের হিসাবে খেলাপি ঋণ দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। খেলাপি ঋণের হার উঠেছে প্রায় ৫৭ শতাংশ।

খেলাপি ঋণ বাড়ার পাশাপাশি ফিনিক্স ফাইন্যান্সের প্রভিশন ঘাটতিও বাড়ছে। এ ঘাটতিপূরণে গত কয়েক বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টানা ডেফারেল সুবিধাও নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তারপরও প্রতি প্রান্তিকে সংস্থান ঘাটতি থাকছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির সংস্থান ঘাটতি ছিল ৮৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের মূলধন উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা থাকলেও গত বছর শেষে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৯১ কোটি টাকা। বর্তমানে এই ঘাটতি শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানের মূলধন পর্যাপ্ততার হার ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ থাকলেও গত বছর শেষে তা হ্রাস পেয়ে ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশে নেমেছে। এক্ষেত্রেও পতনের ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে প্রতিষ্ঠানের সম্পদের গুণগত মান হ্রাস ও ক্রমাগত লোকসান বৃদ্ধির কারণে মূলধন ঘাটতি আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়াও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না লোকসানে থাকা ফিনিক্স ফাইন্যান্স। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচকে ক্রমাবনতিসহ ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রমে বিবিধ অনিয়মের কারণে আস্থা সংকটে পড়ে তীব্র তারল্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে ফিনিক্স ফাইন্যান্স। অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, আমানতকারীদের অর্থ মেয়াদপূর্তিতে ফেরত প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত প্রদান না করা সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা চরম অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সংকটের পরিচায়ক।

ক্রমাগত লোকসান বাড়তে থাকা ফিনিক্স ফাইন্যান্স সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে। গ্রাহকদের টাকার সুরক্ষায় বর্তমানে মেয়াদি আমানত গ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বি-সাপ্তাহিক ভিত্তিতে গড়ে দৈনিক ১ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে সিআরআর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সংরক্ষণ করতে হয়। তবে যে কোনো দিনই এ সংরক্ষণের পরিমাণ ১ শতাংশের কম হবে না। অপরদিকে মেয়াদি আমানত গ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএলআর হিসেবে ৫ শতাংশ এবং আমানত গ্রহণ করে না এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএলআর হিসেবে ২ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়।

জানা গেছে, সব আর্থিক সূচকে অবনতি ও প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণে ক্যামেলস রেটিংয়েও হতাশা বিরাজ করছে। ২০১৮ সালে ক্যামেলস রেটিং ‘সন্তোষজনক’ মান পেলেও সর্বশেষ ২০২১ সালে তা ‘মোটামুটি’ মানে নেমে গেছে। আগের দুই বছর এই রেটিংয়ের মান ছিল ‘ফেয়ার বা ভালো’। ক্যামেলস রেটিং হচ্ছে ব্যাংকগুলোর পারফরমেন্সের একটি নির্দেশক। সাধারণত ব্যাংকের মূলধনের অবস্থা, আয়-ব্যয়, ব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয় এতে প্রতিফলিত হয়।

   

ফের বাড়ল সোনার দাম, প্রতি ভরি ১১৯৫৪৪ টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে ফের বেড়েছে সোনার দাম। এবার এক হাজার ৮৪ টাকা বাড়িয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম বাড়ায়, সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দর সোমবার (২০ মে) থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, হল-মার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১০৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮০৩ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৮০ হাজার ৮৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত শনিবার (১৮ মে) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৮০ হাজার ১৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এনিয়ে এ বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ২৪ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ১৩ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১১ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।

;

বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, ১৭ দিনে এলো ১৩৬ কোটি ডলার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে আবার রেমিট্যান্স প্রবাহে ‍সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। আর গত এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ১১৪ কোটি ৫৮ লাখ, ১০৯ কোটি ৩১ লাখ , ১২১ কোটি ৭২ লাখ ও ১২২ কোটি ৬ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসেবে চলতি মাসে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মাসে ২০০ কোটি ডলার ছুঁতে পারে দেশের প্রবাসী আয়। মূলত আসন্ন কোরবানিকে ঘিরে বাড়ছে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা।

এদিকে মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৪২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২০ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

এদিকে গত এপ্রিল মাসে দেশে এসেছে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মার্চে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর গত জানুয়ারি মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

;

‘সমস্যা আমাদের মতো করেই সমাধান করতে হবে’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প ও সহজলভ্য উৎস আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সমস্যা আমাদের মতো করেই সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রোববার (১৯ মে) বিদ্যুৎ ভবনে ইনোভেশন শোকেসিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে ইনোভেশন শোকেসিং-২০২৪ আয়োজন করা হয়। এতে বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন দফতর, সংস্থা হতে ২৪টি ইনোভশন উদ্যোগ প্রদর্শন করা হয়।

ভার্চয়ালি যুক্ত হয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশকে সামনে রেখে পরিকল্পনা ও কার্যক্রম গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। নতুন নতুন উদ্ভাবনকে আমরা প্রণোদনা দিচ্ছি।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট (এআই) এখনই অনেক সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে। এআই-এর ব্যবহার বাড়িয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টিতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় তত হবে। একই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যও নিশ্চিত হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ২০৪১ সালের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে নিজস্ব প্রযুক্তির উদ্ভাবন বা ব্যবহৃত প্রযুক্তির নিজস্ব ভার্সন সৃজন করতে হবে।

ইনোভেশন শোকেসিং ২০২৪-এ আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস তৈরিকরণ-এ প্রথম স্থান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বেজড ‘স্মার্ট কাস্টমার এসিস্ট্যান্ট- চ্যাটবট” ২য় স্থান, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) জিআইএস বেসড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থপনার আউটেজ ডিজিটালি মনিটরিং এবং লোড ম্যানেজমেন্ট-এ ২য়, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) আন্ডারগ্রাউড ক্যাবল টেস্ট ভ্যান, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি) অটোমেটিক ইমার্জেন্সী রেসপন্স টেস্ট অব এসটি ইমার্জেন্সী লুব অয়েল পাম্প থ্রো ডিসিএস ইন্ট্রিগেশন এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল) চার্জ এয়ারকুলার এন্ড চার্জ এয়ার রিসিভার ড্রেইন লাইন মডিফিকেশন ফর প্লান্ট আউটেজ রিডাকশন তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান ইনোভেশন কর্মকর্তা নিরোদ চন্দ্র মন্ডেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবির। স্রেডার চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা, পিডিবি’র চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, বিআরইবি’র চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্ত্তী, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সহ দফতর ও সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

প্রতি সপ্তাহে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত সেভিংস খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সব শ্রেণির জনগোষ্ঠিকে আরো সহজ, ঝামেলাহীন সেভিংস-সেবা গ্রহণের সুযোগ করে দিতে এবং তাদের মাঝে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে এবার বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হলো দুটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বল্পমেয়াদী ‘সাপ্তাহিক সেভিংস’। প্রথমবারের মতো দেশে সাপ্তাহিক এই ডিজিটাল সেভিংস সেবা চালু হলো বিকাশ অ্যাপে, যেখানে গ্রাহকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ২৫০ থেকে শুরু করে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সাপ্তাহিক কিস্তিতে সেভিংস করতে পারছেন। সেভিংস করা যাচ্ছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক-এ।

নতুন এই সাপ্তাহিক সেভিংস সেবা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। স্বল্প আয় এবং দৈনিক মজুরি ভিত্তিক পেশাজীবীদের অল্প অল্প করে অর্থ জমানোর সুযোগ করে দিবে, যা তাদের ভবিষ্যত নিরাপত্তা, কৃষি-ব্যবসায় বিনিয়োগ, শিক্ষা, চিকিৎসা বা অন্য যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে কাজে আসবে।

সাপ্তাহিক সেভিংস-এর পরিমাণ এবং মেয়াদ:

এই সেবার আওতায় বিকাশ গ্রাহকরা সাপ্তাহিক ২৫০, ৫০০, ১০০০, ২০০০, এবং ‌৫০০০ টাকা কিস্তিতে ৬ মাস অথবা ১২ মাস মেয়াদে আইডিএলসি, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংক-এ সেভিংস খুলতে পারছেন। বিকাশ অ্যাপেই ব্যাংকগুলোর দেয়া তুলনামূলক মুনাফার হারের তথ্য বিবেচনা করে দিনে-রাতে যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে মাত্র কয়েক মিনিটেই সেভিংস খোলার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রাহক।

বিকাশ অ্যাপে সেভিংস করার পদ্ধতি:

নতুন সেভিংস খুলতে বিকাশ অ্যাপের হোমস্ক্রিন থেকে ‘সেভিংস’ আইকনে ট্যাপ করে ‘নতুন সেভিংস খুলুন’-এ ট্যাপ করতে হবে। সেভিংস এর ধরন থেকে ‘সাধারণ সেভিংস’ বেছে নিয়ে সেভিংসটি কেনো খুলতে চান সেটি বাছাই করতে হবে। এরপর, সেভিংস-এর মেয়াদ ৬ মাস বা ১২ মাস, জমার ধরন (সাপ্তাহিক) এবং প্রতি মাসে যে পরিমাণ টাকা জমাতে ইচ্ছুক ২৫০, ৫০০, ১০০০, ২০০০, বা ৫০০০ নির্বাচন করতে হবে।

পরের ধাপে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকের তালিকা থেকে পছন্দ অনুযায়ী আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক বা ঢাকা ব্যাংক নির্বাচন করতে হবে। এরপর সেভিংস-এর নমিনি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। তারপর সেভিংস-এর বিস্তরিত দেখে এবং নিয়ম ও শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে, বুঝে সম্মতি দিতে হবে। সবশেষে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নাম্বার দিয়ে স্ক্রিনের নিচের অংশ ট্যাপ করে ধরে রাখলেই সেভিংস-এর আবেদন সম্পন্ন হবে। প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে বিকাশ ও ব্যাংক থেকে চলে আসবে নিশ্চিতকরণ মেসেজ। বিকাশ অ্যাপ থেকে একাধিক সেভিংস খুলতে পারবেন যেকোনো গ্রাহক।

বিকাশ অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় ব্যালেন্স থাকা সাপেক্ষে নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেভিংস-এর টাকা কেটে নেয়া হবে। সেভিংস-এর মেয়াদপূর্ণ হয়ে যাবার পর বিকাশ অ্যাপেই মুনাফাসহ মূল টাকা পেয়ে যাবেন গ্রাহক যা কোনো খরচ ছাড়াই ক্যাশ আউট করতে পারবেন যেকোনো বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট বা নির্দিষ্ট ব্যাংকের এটিএম থেকে। এদিকে, জরুরি প্রয়োজনে মেয়াদপূর্তীর আগেই সেভিংস সেবা বন্ধ করতে চাইলে গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ থেকেই তা করতে পারবেন।

সাপ্তাহিক সেভিংস প্রসঙ্গে বিকাশ-এর চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, “ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে মাসে বা সপ্তাহে টাকা জমানো বেশ কঠিন। এদিকে দৈনিক বা সপ্তাহ ভিত্তিতে আয় করা মানুষদের জন্য নিয়মিত বিরতিতে ব্যাংকে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব। তাই ব্যস্ত জীবনে সকল পেশার মানুষের জন্য আর্থিক লেনদেনে স্বস্তি এনে দিতেই বিকাশ তার অ্যাপে দুটি নতুন ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক সেভিংস সেবা যুক্ত করেছে। সঞ্চয়ের অভ্যাস ব্যক্তি এবং সমাজের আর্থিক নিরাপত্তাকে যেমন নিশ্চিত করবে তেমনি দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করবে বলে আমরা মনে করি।”

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিকাশ অ্যাপে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাসিক সঞ্চয় সেবা চালু হয়। এই সেবার জনপ্রিয়তার কারনে স্বল্প সময়ের মধ্যে চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০ লাখ সেভিংস গ্রহণ করেছেন বিকাশ গ্রাহকরা, যাদের এক-তৃতীয়ংশই নারী। বর্তমানে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক-এর পাশাপাশি ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক সিটি ব্যাংকের মাসিক ‘সিটি ইসলামিক’ সেভিংস সেবা গ্রহণ করছেন গ্রাহকরা।

সেভিংস সেবা নিয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে– https://www.bkash.com/products-services/savings।

;