পিটার বিকসেলের গল্প

স্মৃতিধর মানুষ



অনুবাদ: মিলু হাসান
অলঙ্করণ: কাজী যুবাইর মাহমুদ

অলঙ্করণ: কাজী যুবাইর মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

আমি একজনকে জানতাম যার সব ট্রেনের সময়সূচি মুখস্থ ছিল, তাকে একটিমাত্র জিনিস চরম আনন্দ দিত তা হচ্ছে ট্রেন। তার সময়টুকু সে রেলস্টেশনে কাটাত আর ট্রেন আসতে ও ছেড়ে যেতে দেখত। বগিগুলোর দিকে, ইঞ্জিনের শক্তির দিকে, বড়-বড় চাকাগুলোর দিকে অবাক হয়ে একনজরে তাকিয়ে থাকত আর টিকেট চেকারদের দিকে, স্টেশনের কর্মচারীদের দিকে—যারা চলতি ট্রেনে হুট করে লাফ দিয়ে উঠে যেতে পারে তাদের দিকেও বিস্ময় চোখে তাকিয়ে থাকত।

প্রত্যেকটা ট্রেন তার চিরচেনা, জানত ট্রেনটি কোথা থেকে আসছে, কোথায় যাবে আর কখন কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, সেখান থেকে ট্রেনটি আবার কখন ছাড়বে আর সেই ট্রেন কখন এসে পৌঁছবে।

সে বগিগুলোর নাম্বার জানত, জানত কবে কোন ট্রেন চলে, তাতে খাবার বগি আছে কিনা, ট্রেন অন্য যাত্রীদের তুলতে কোন কোন স্টেশনে থামবে আর কোন কোন স্টেশনে থামবে না। সে জানত কোন কোন ট্রেনে ডাক বিভাগের বগিগুলো থাকে, মিডলটন, এ্যাবারগাভেনি, ওটন-আন্ডার-এজ্ কিংবা ওরকম কোথাও যেতে চাইলে আপনার কত টাকা দামের টিকেট লাগবে।

সে কখনো সুরাখানায় যেত না, যেত না সিনেমা দেখতে। কোথাও বেড়াতে যেত না, তার ছিল না কোনো বাইসাইকেল, রেডিও, টেলিভিশন। দৈনিক পত্রিকা বা কোনো বইও কখনো পড়ত না, আর যদি কখনো তার কাছে চিঠি আসত সে হয়তো তাও পড়ে দেখত না।

এসবের জন্য তার সময় কোথায়—যেহেতু সারাদিনই সে স্টেশনে কাটাত, আর যখন ট্রেনের সময়সূচি বদলাত, মে আর অক্টোবরে, তখন হয়তো তাকে কয়েক সপ্তাহের জন্য স্টেশনে দেখা যেত না৷

ওই সময়টাতে সে বাসায় টেবিলে বসে বসে নতুন সময়সূচির আগাপাছতলা মুখস্থ করে নিত, অদল-বদলগুলোর নোট নিত আর সব জেনেশুনে তার মন খুশিতে ভরে উঠত।

এরকমও হতো—কেউ তাকে ট্রেন ছাড়ার সময় জিজ্ঞেস করল, তখনই তার সমস্ত চেহারা নুরানি আলোর মতো ঝলমল করে উঠত, আর সে সওয়াল করত লোকটি কোথায় যেতে চায়। তবে যে তাকে ওরকম প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে, তার ট্রেন মিস হবে নিশ্চিত, কারণ সওয়ালকারীকে সে সহজে যেতে দিত না। শুধু যে সে ট্রেনের সময়সূচি বলে ক্ষান্ত হবে ব্যাপার এরকমও না। সবিস্তারে জানাত, কটা কামরা আছে, কোন কোন স্টেশনে গিয়ে এ ট্রেন থেকে নেমে অন্য আরো ট্রেন ধরা যাবে, সমস্ত ট্রেনের সময়সূচি; সুন্দর করে বুঝিয়ে বলত। এ ট্রেনে করে কিভাবে প্যারিস অব্দি যাওয়া যায়, কোথায় ট্রেন বদলাতে হবে আর কখন গিয়ে পৌঁছবে আর সে একটুও বুঝতে চাইত না যে এসব জানতে লোকজন আগ্রহী কিনা। কিন্তু কেউ যখন তার সব জ্ঞান জাহির করার আগেই তার থেকে মুখ ঘুরিয়ে হাঁটা দিত তখন সে তাদের চরম গালিগালাজ করত আর চেঁচিয়ে বলত—ট্রেন সম্পর্কে তুমি কতটা জানো।

সে নিজে কিন্তু কখনো ট্রেনে চড়েনি। ট্রেনে চড়ার কোনো মানেই হয় না, সে বলত, ট্রেন কখন পৌঁছবে আর ছাড়বে তা তো সে আগেভাগেই জানে।

সে বলত, শুধু তারাই ট্রেনে চড়ে যাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল। যদি তাদের প্রখর স্মৃতিশক্তি থাকত তারা আমার মতো ট্রেন কখন কোথায় পৌঁছবে তার সময়সূচি মনে রাখত। তাহলেই এ সময়টা জানার জন্য অযথা ট্রেনে চড়ার কোনো দরকারই হতো না। আমি তাকে একবার বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম এই বলে যে, কিন্তু এমন লোকও আছে যারা ভ্রমণ উপভোগ করে, ট্রেনে ঘুরতে তাদের ভালো লাগে, জানালা দিয়ে আশেপাশের দৃশ্য দেখতে, অন্য কোনো ট্রেন যাওয়ার দৃশ্য—এসব দেখতে পছন্দ করে।

এ কথা শুনে সে রাগান্বিত হলো, সে ভেবেছিল আমি বুঝি তার সাথে মশকরা করেছি। সে বলল, এ কথা তো তুমি মিয়া ট্রেনের সময়সূচিতেই পড়তে পারো, তুমি জানো যে তুমি মার্লো, মিডেনহেড হয়ে যাবে, টয়ফর্ড, টাইলহার্স্ট, প্যাঙবর্জ তোমার পথে পড়বে। আমি বলেছিলাম, হয়তো লোকেদের ট্রেনে চড়তে হয় এ দরকারে যে, তাদের কোথাও যেতে হয়। সে বলেছিল, এ কথা মোটেও সত্য না। প্রায় প্রত্যেকেই তাড়াতাড়ি বা দেরিতে হলেও ফিরে আসে যেখান থেকে তারা রওনা করেছিল। এরকমও লোক আছে যারা রোজ সকালে ট্রেনে বের হয় আর সন্ধ্যাবেলা আগের জায়গায় ফিরে আসে—এটাই প্রমাণ করে তাদের স্মৃতিশক্তি কত বাজে। আর এ কথা বলে সে স্টেশনের লোকদের উদ্দেশ্যে যা মুখে আসে তা-ই বলতে শুরু করল। সবাইকে উদ্দেশ্য করে সে চেঁচিয়ে বলেছিল, আপনারা সব বোকা, আপনাদের একটা কিচ্ছুও মনে থাকে না। চেঁচিয়ে সে আরো বলছিল, আপনারা প্যাঙবর্জ পেরিয়ে যাবেন আর সে ভেবেছিল এতেই বুঝি সকলের ট্রেনে চড়ার স্বাদ মিটে যাবে। চেঁচিয়ে বলছিল, আপনারা দুনিয়ার সেরা বোকা, আপনারা গতকালও ট্রেনে চড়ছিলেন। আর যখন লোকে তার কথা শুনে হাসাহাসি করছিল, সে লোকদের টানাটানি করে ট্রেনের কামরা থেকে নামানোর চেষ্টা করছিল, কাকুতি-মিনতি করে বলছিল, তারা যেন আর ট্রেনে না চড়ে।

সে জোরে জোরে চেঁচিয়ে বলছিল, আমি সব বুঝিয়ে বলছি। আপনারা দুইটা সাতাইশে প্যাঙবর্জ পার হবেন, আমি জানি আপনারা পার হবেন, আপনারা দেইখেন। আপনারা হুদাই টাকা-পয়সা অপচয় করছেন, রাস্তায় ঢালছেন, অথচ সময়সূচিই যেখানে আপনাদের সব জানান দিচ্ছে।

তখন সে লোকজনদের মারধর করতে শুরু করে দিল, আর বলছিল, যদি আপনারা আমার কথা না শোনেন আপনাদের পিটায়ে শিখাইতে হবে।

স্টেশন মাস্টারের করার কিছুই ছিল না, তাকে বলেছিল, যদি সে ভদ্র-নম্র ব্যবহার না করে তাহলে তাকে আর স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এ কথা শোনার পর সে আঁতকে উঠল, কারণ স্টেশন ছাড়া সে বাঁচবে কী করে, তাই সে একটা টুঁ শব্দও করল না। সারাদিন চুপচাপ বেঞ্চিতে বসে রইল, ট্রেন আসতে আর ছেড়ে যেতে দেখল। কেবল মাঝে-মাঝে নিজেকে নিজে ফিসফিস করে শোনাল কয়েকটা নাম্বার, লোকজনের দিকে একনজরে তাকিয়ে থাকল, যাদেরকে সে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না।

সত্যি বলতে এখানেই গল্পটা শেষ হওয়ার কথা।

বহু বছর পর স্টেশনে একটা তথ্য কেন্দ্র খোলা হলো। ইউনিফর্ম পরা এক কর্মচারী বসে থাকে কাউন্টারের পেছনে আর সে ট্রেনসংক্রান্ত সমস্ত সওয়ালের জবাব জিজ্ঞেস করা মাত্র দিয়ে দেয়। ব্যাপারটা ট্রেনসংক্রান্ত স্মৃতিধর লোকটার কিছুতেই বিশ্বাস হলো না, সে রোজ নতুন তথ্যকেন্দ্রে যেত আর জিজ্ঞেস করত খুব জটিল জটিল প্রশ্ন—কর্মচারীর এলেম পরীক্ষা করার জন্য। সে সওয়াল করত, গ্রীষ্মের রবিবারে গ্লাসো থেকে চারটা চব্বিশে যে ট্রেন আসে সেটির ইঞ্জিনের মডেল কী? কর্মচারী একটা বই খুলে দেখে তাকে তা বলে দিত। সে সওয়াল করত, ধরেন আমি ৬টা ৫৯ মিনিটে ট্রেনে উঠলে কখন মস্কো পৌঁছব? আর কর্মচারী তাও বলে দিত। তারপর স্মৃতিধর লোকটি বাসায় ফিরে এলো, তার সময়সূচির চার্টগুলি পুড়িয়ে ফেলল আর যা-কিছু সে জানত সব ভুলে গেল। পরের দিন সে কর্মচারীকে সওয়াল করল, স্টেশনের সিঁড়ির ধাপ কয়টা? কর্মচারী বলল, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তারপর সে স্টেশনের সিঁড়ির ধাপগুলো গুনতে গেল, বারবার গুনে সংখ্যাটা সে স্মৃতিতে গেঁথে রাখল, এখন আর তার স্মৃতিতে ট্রেনের সময়সূচির কোনো হদিশ নেই।

এরপর আর কোনোদিন তাকে স্টেশনে দেখা যায়নি। সে এখন শহরের বাড়ি বাড়ি যায়, সিঁড়ির ধাপগুলো গুনে রাখে আর মুখস্থ করে নেয়। এখন সে এমন সব সংখ্যা জানে যা তামাম দুনিয়ার কোনো বই-পুস্তক-কিতাবে লেখা নেই।

কিন্তু যখন সে শহরের সব সিঁড়িধাপগুলোর সংখ্যা জেনে গেল তখন সে স্টেশনে এলো, একটা টিকেট খরিদ করল। তারপর জীবনে প্রথমবারের মতো সে ট্রেনে চড়ল যাতে সে অন্য শহরে গিয়ে সিঁড়ির ধাপগুলো গুনতে পারে। তারপর আবার অন্য একটা শহরে—এরকম করে সে তামাম দুনিয়ার সমস্ত সিঁড়ির ধাপগুলোর সংখ্যা জেনে নিতে পারে, এটা এরকম কিছু যা কেউই জানে না, কোনো কর্মচারীর হেডম নেই কোনো বই খুলে তা বলে দেয়।

   

রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ কবি-সাহিত্যিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার’ ২০২২ ও ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন কবি ও সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের জ্যৈষ্ঠ সদস্য কবি আসাদ মান্নান।

তিনি জানান, ২০২২ সালে কবিতায় পুরস্কার পেয়েছেন- শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক ও রিশাদ হুদা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে মালিক মো. রাজ্জাক। এছাড়া প্রবন্ধে বিলু কবীর, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, অনুবাদে ইউসুফ রেজা এবং কথাসাহিত্য জুলফিয়া ইসলাম।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, কবি খুরশীদ আনোয়ারকে।

কবি আসাদ মান্নান জানান, ২০২৩ সালে কবিতায় মিনার মনসুর ও মারুফুল ইসলাম পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রবন্ধে আসাদুল্লাহ, কথাসাহিত্যে জয়শ্রী দাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে নাজমা বেগম নাজু, শিশুসাহিত্য আমীরুল ইসলাম এবং অনুবাদে মেক্সিকো প্রবাসী আনিসুজ্জামান।

আগামী ১৯ মে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। পুরস্কার ঘোষণা কমিটির প্রধান ছিলেন কবি শ্যামসুন্দর শিকদার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।

;

ঢাকার মিলনায়তনেই আটকে ফেলা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে! 



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে তাদের জন্মজয়ন্তীর জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রথা কি তবে লুপ্ত হতে চলেছে? দীর্ঘসময় ধরে মহাসমারোহে কয়েকদিন ধরে এসব জন্মজয়ন্তী আয়োজনের রেওয়াজ থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণ দেখিয়ে সেই মাত্রায় আর হচ্ছে না রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর মহাআয়োজন। ঢাকার বাইরে উন্মূক্ত স্থানের বদলে রাজধানীতেই সীমিত পরিসরে মিলনায়তনে আটকে ফেলা হচ্ছে এসব আয়োজনের পরিধিকে। 

বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই দুই পুরোধা পুরুষের জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘিরে বিশাল আয়োজনে তাদের পরিধিবহুল সৃষ্টিকর্ম ও যাপিত জীবনের আখ্যান তুলে ধরা হতো। রাজধানীর বাইরে জেলা পর্যায়ে কবিদের স্মৃতিধন্য স্থানসমূহে এই আয়োজনকে ঘিরে দীর্ঘসময় ধরে চলতো সাজ সাজ রব। যোগ দিতেন সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু নানা অজুহাতে পর্যায়ক্রমে রাজধানী ঢাকাতেই যেমন আটকে যাচ্ছে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় আয়োজন, তেমনি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণও কমে এসেছে। 

জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এবারও কোন ভিন্নতা থাকছে না জানিয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় পর্যায়ের আয়োজনগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পালিত হয়। আর মৃত্যুবার্ষিকীগুলো নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। যেমন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট যেহেতু কবির নামে প্রতিষ্ঠিত, তাই নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ইনস্টিটিউটই আয়োজন করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর যেভাবে উদযাপিত হয় এবারও সেভাবেই আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২৫ মে (২০২৪) বেলা ৪টায় জাতীয় জাদুঘরে শুরু হবে। রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানগুলো কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে অনুষ্ঠিত হত। এই বারও হবে, তবে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানগুলো ঢাকার বাইরে হবে না।’

‘ঢাকার বাইরে যেসব জেলাগুলো নজরুলের স্মৃতিসংশ্লিষ্ট; যেমন-ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা-এসব জেলাগুলোতে নজরুল গিয়েছেন, থেকেছেন আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের সূত্রে। এবার জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও ঢাকায় হয়েছে, নজরুলের জন্মজয়ন্তীও ঢাকায় হবে। ঢাকার বাইরে এবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান না হওয়ার পেছনে সরকারের কাছে যে যুক্তি তা হচ্ছে-এই সময়ে দেশের উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষত জেলা প্রশাসন এইগুলো আয়োজনে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করে থাকে। জেলা প্রশাসনগুলো নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকবে। নজরুল জয়ন্তী আয়োজনে মনযোগ হয়ত কম দেবে। যে উদ্দেশ্যে জনমানুষের কাছে পৌছানোর জন্য এই অনুষ্ঠান, তা পরিপূর্ণ সফল হবে না বিধায় এবার এই আয়োজনগুলো ঢাকায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে’-বলেন সরকারের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আছে। এতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। গত ২ এপ্রিল (২০২৪) কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে শিল্পকলা একাডেমিতে এবং নজরুল জয়ন্তী হবে বাংলা একাডেমিতে।

জানা গেছে, বাংলা একাডেমিতে কিছু রেনুভশন ওয়ার্ক চলমান থাকায় বিদ্যুতের সমস্যা হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মুক্তমঞ্চেও এই আয়োজন না করে জাতীয় জাদুঘরে প্রধান মিলনায়তনে নজরুল জয়ন্তীর তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২৫ মে বেলা ৪টায় উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্মারক বক্তা থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান, এমপি। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা।

২৬মে আয়োজনের দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান, এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। ২৭ মে তৃতীয় দিনের আয়োজনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক। শেষ দিনের স্মারক বক্তা কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপনে জাতীয় কমিটির একজন সদস্যের কাছে জয়ন্তী আয়োজনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঐতিহ্যিক ধারা বজায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে রবীন্দ্র ও নজরুল অনুরাগীরা বলেছেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্য-জীবনদর্শন আমাদের পাথেয়। তাদের জন্ম ও মৃত্যুদিনে মহাসমারোহে ঢাকার বাইরে কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে আয়োজনের যে ধারাবাহিকতা ছিল তা দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক চর্চাকে বেগবান করতো। কিন্তু এই আয়োজনকে সীমিত করে রাজধানীর মিলনায়তনে আটকে ফেলা নিশ্চিতভাবেই আমাদের সংস্কৃতির বিকাশকে রূদ্ধ করারই অংশ। এর পেছনে সুক্ষ্ণভাবে কারা কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।

;

হাসান হাফিজের একগুচ্ছ কবিতা



অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পিপাসার্ত ঘোরে

প্রান্তরের মাঝে আছে নিঃস্বতার ডাক
আত্ম অনুসন্ধানের
ফিরতি ঢেউ
আছড়ে পড়ে
আশ্লেষের বালুকাবেলায়
মুমূর্ষু যেমন তীব্র পিপাসায়
জীবনের আলিঙ্গন চায়-
আর্ত রাত্রি হিমেল কামের ঘোর
নীরবে দংশায়
ঘর পোড়ে, আকাক্ষার
বাতি নিভে যায়
কোথায় প্রান্তর, শূন্যতা কোথায়
আছে সে নিকটে জানি
সুদূরের এলানো চিন্তায়
যেখানে গোধূলিদগ্ধ
সন্ধ্যা কী মায়ায়
গুটায় স্বপ্নের ডানা
দেবদারু বনে বীথিকায়
তার দিকে সতৃষ্ণ সমুদ্রঘোর
ছটফট করছি পিপাসায়।

না, পারে না

লখিন্দর জেগে উঠবে একদিন
বেহুলার স্বপ্ন ও সাধনা
বৃথা যেতে পারে না, পারে না।

কলার মান্দাস, নদীস্রোত
সূর্যকিরণের মতো সত্য ও উত্থিত
সুপ্ত লখিন্দর শুয়ে, রোমকূপে তার
জাগৃতির বাসনা অপার
এই প্রেম ব্যর্থ হতে পারে না পারে না

মনসার হিংসা একদিন
পুড়ে টুড়ে ছাই হবে
এমন প্রতীতি নিয়ে স্বপ্নকুঁড়ি নিয়ে
প্রতীক্ষা-পিদিম জ্বেলে টিকে থাকা
এমন গভীর সৌম্য অপেক্ষা কখনো
ম্লান হয়ে নিভে যেতে পারে না পারে না

রেণু রেণু সংবেদবর্ণালি-৮

ক.
আমার না পাওয়াগুলি অবরুদ্ধ দীর্ঘশ্বাসগুলি
মুক্তি চায়, বেরোতে পারে না
কার্বনের নিঃসরণ
নতুন মাত্রিক আর বিপজ্জনক
সেও তো দূষণ বটে
বলতে পারো প্রণয়দূষণ!

খ.
আদিপ্রাণ বৃক্ষতলে
ছায়াশান্তি মাঙনের সুপ্তি বর্তমান
এসো লই বৃক্ষের শরণ
পরিবেশ প্রশান্তির সেও এক
স্বস্তিমন্ত্র, অনিন্দ্য ধরন।

গ.
নদীকে বইতে দাও নিজস্ব নিয়মে
গলা টিপে ধোরো না ধোরো না,
নদী হচ্ছে মাতৃরূপ বাৎসল্যদায়িনী
দখলে দূষণে তাকে লাঞ্ছিত পীড়িত
হে মানুষ এই ভুল কোরো না কোরো না

ঘ.
উচ্চকিত শব্দ নয় বধিরতা নয়
মৃদু শব্দ প্রকৃতির সঙ্গে কথা কও
শব্দ যদি কুঠারের ঘাতকপ্রতিম
তবে হে মানুষ তোমরা অমৃতের পুত্রকন্যা নও

ঙ.
মৃত্তিকার কাছ থেকে সহনশীলতা শিখি
মৃত্তিকাই আদি অন্ত
জীবনের অন্তিম ঠিকানা
মৃত্তিকাই দেয় শান্তি সুনিবিড়
ক্ষমা সে পরমা
শরীর মূলত মাটি
গন্তব্য যে সরল বিছানা।

ছিন্ন কথন

আমি ভুখা পিপীলিকা
চেয়েছি আলোর দেখা।
পুড়ে যদি মরি তাও
ওগো অগ্নি শান্তি দাও।
অঙ্গার হওয়ার সাধ
এসো মৃত্যু পরমাদ।
চলো ডুবি মনোযমুনায়
এসো এসো বেলা নিভে যায়!

ধ্রুব সত্য

না-পাওয়াই সত্য হয়ে ফুটে থাকে।
পুষ্পিত সে প্রতারণা, চেনা মুশকিল।
বৃতি কুঁড়ি পাপড়িতে মায়াভ্রম লেপটানো
দেখলেই ছুঁতে ইচ্ছা হয়। ছুঁলেই বিপদ।
সেই ফুলে সম্মোহন জড়িয়েমড়িয়ে আছে
কোমলতা লাবণ্যও পুঁজি তার, এমত বিভ্রমে
লোভী ভ্রমরের মতো প্রেমিকারা ছোটে তার কাছে
গিয়ে মোক্ষ পাওয়া দূর, অনুতাপে আহত পাথর
মাথা কুটে মরলেও স্রোতধারা জন্ম নেয় না
যা কিছু হয়েছে পাওয়া, তাও এক দম্ভ সবিশেষ
মর্মে অভ্যন্তরে পশে গতস্য শোচনা নাস্তি
এই বিষ গলাধঃকরণ করে কী যে পাওয়া হলো
হিসাবে নিকাশে মন থিতু নয় সম্মতও নয়
না-পাওয়াই ধ্রুব সত্য চিরন্তন মানুষ-জীবনে!

;

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল। তার বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মা সারদা সুন্দরী দেবী। তার পূর্বপুরুষেরা খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।

তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে কবিগুরু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন তিনি। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ (৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।

 

 

;