বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে বিদেশিদের সম্মান প্রদর্শনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটি একপলক দেখার জন্য আসেন

প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটি একপলক দেখার জন্য আসেন

  • Font increase
  • Font Decrease

ঐতিহাসিক ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কে (বর্তমান ১০ নম্বর বাড়ি ও ১১ নম্বর সড়ক) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১১টায় উদ্বোধন করা হবে ‘শ্রদ্ধা’ শিরোনামে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। সাত দিনব্যাপি আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

সিডনি স্ট্রিট, পূর্ব লন্ডন শহরের টাওয়ার হ্যামলেটে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নান্দনিক আবক্ষ ভাস্কর্যটি ঘিরে বিদেশি বন্ধুদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মেলবন্ধনের ছবিগুলো নিয়ে ‘শ্রদ্ধা’ শিরোনামে উল্লেখিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন আলোকচিত্র শিল্পী ফোজিত শেখ বাবু।

১৭ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। কেননা এ দিনে জন্মেছিলেন রাজনীতির মহাকবি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার জীবনের মূল্যবান দীর্ঘ সময় অক্লান্ত সংগ্রাম, ত্যাগ ও সেই সাথে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাঙালি জাতির বহু বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ নামক এক নতুন জাতিরাষ্ট্রের।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে বিদেশিদের সম্মান প্রদর্শন

লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য ঘিরে গড়ে উঠেছে বিদেশি বন্ধুদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মেলবন্ধন। সিডনি স্ট্রিট, পূর্ব লন্ডন শহরের টাওয়ার হ্যামলেটে স্থাপিত হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই নান্দনিক আবক্ষ ভাস্কর্যটি। ভারতীয় দু’জন শিল্পীর তৈরি পিতলের এই আবক্ষ ভাস্কর্যটি স্থাপনের জন্য আবেদনের পর ২০১৪ সালের জুলাই মাসে লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটের কাউন্সিলের অনুমোদন পান প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আফসার খান সাদিক। বঙ্গবন্ধুর এই আবক্ষ ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয় সিডনি স্ট্রিটের আফসার খান সাদিকের বাসভবনের বাগানে। পরবর্তিতে-এর দুই বছর পর ১৭ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন। উদ্বোধনের সময় বিপুল সংখ্যক বিদেশি বন্ধু ও প্রবাসী বাঙালি উপস্থিত ছিলেন। পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় আফসার খান সাদিকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও নিজস্ব অর্থায়নে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়। ব্রিটেনের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন এটিই প্রথম। যার জন্য আফসার খান সাদিক বাঙালি জাতি ও বিদেশি বন্ধুদের কাছে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। পূর্ব লন্ডনের সিডনি স্ট্রিট বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা হলেও প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক লন্ডনের স্থানীয় বিদেশি বন্ধুরাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা আসছেন বঙ্গবন্ধুর এই আবক্ষ ভাস্কর্যটি একপলক দেখার জন্য। সিডনি স্ট্রিটে এসে ভাস্কর্যটি দেখে উৎসব-আনন্দে মেতে উঠছেন বিদেশি বন্ধুরা। ভাস্কর্যটির সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি অনুসারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ ও ভালোবাসা প্রকাশ করছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বিদেশি বন্ধুদের উপস্থিতিতে আফসার খান সাদিকের বাগান বাড়িটি এখন মিনি জাদুঘরে পরিণত হয়েছে।

২০১৮ সালে আলোকচিত্র শিল্পী ফোজিত শেখ বাবু বিশ্বের সবচেয়ে অবহেলিত জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী করতে বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে যান। এসময় প্রদর্শনী চলাকালীন অবস্থায় কয়েকদিন আলোকচিত্র শিল্পী ফোজিত শেখ বাবু সিডনি স্ট্রিটের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির সামনে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। এসময় আবক্ষ ভাস্কর্যটি ঘিরে বিদেশি বন্ধুদের ‘শ্রদ্ধা’ আর ভালোবাসা প্রকাশের ছবি তুলেন। দিনভর ভাস্কর্যটির সামনে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে উৎসব-আনন্দে সময় কাটান তিনি।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন এক বিদেশি নাগরিক

আলোকচিত্র শিল্পী ফোজিত শেখ বাবু নিজেই ব্রিটেনের মাটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাস্কর্যটি দেখে মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে যান। এবং তিনি সকলের প্রতি জোর দাবি করেন রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে লন্ডনের মতো বিশ্বের সকল দেশে এই ধরনের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হোক। এর ফলে দেশের মান মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরো পৃথিবীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘শ্রদ্ধা’ আর ভালোবাসার মানুষ হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন।

বাবু’র আলোকচিত্র প্রদর্শনী এটাই প্রথম নয়। দেশে ও দেশের বাইরে তিনি মোট ১৮টি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। ২০১৭ সালে ফ্রান্সের রাজধানীর প্যারিসে, বাংলাদেশে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই দেওয়ার ছবি নিয়ে শিক্ষায় সফলতামূলক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘দুরন্ত শৈশবে বই আনন্দ’। ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের এজ হিল বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডন শিল্পকলা একাডেমিতে, ২০১৯ সালে কানাডার বারলিংটোন ওন্টারিও হলিডে ইন হোটেল, স্ট্রিট টরন্টোর মেট্রো হল, টরেন্টো ডেনটোনিয়া পার্কে এবং সাডবারির এক বাগান বাড়িতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘হু আর দা বোর্ড পিপল’-এর আয়োজন করেন। ২০১৪ সালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘স্টপ দা ক্লাইমেট চেঞ্জ’। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের, রূপগঞ্জ মুজাম্মেল হক কলেজে ও নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শীতলক্ষ্যা নদী দূষণ-দখলের প্রতিবাদে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘বাঁচাও নদী শীতলক্ষ্যা’। ২০১৬ সালে ধানমন্ডি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীকে দখল-দূষণ মুক্ত করার দাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘বাঁচাও নদী বুড়িগঙ্গা’। ২০১৬ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শীতলক্ষ্যাকে দখলমুক্ত করার দাবিতে আলোকচিত্র মানববন্ধন ‘বাচাঁও নদী শীতলক্ষ্যা’। ২০১৭ সালে ধানমন্ডিতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায়, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের সৌন্দর্য তুলে ধরে স্লাইড শো ‘প্যারিস কেন সুন্দর’। ২০১৮ সালে রাজধানীর পান্থপথের প্ল্যানার্স টাওয়ারে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র নিয়ে স্লাইড শো ও আলোচনা সভা। ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ স্কুল অব বিজনেস বিভাগে রোহিঙ্গাদের দুঃখ দুর্দশার চিত্র নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সেমিনার।

 ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন বিদেশিরা

২০২০ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইটভাটা শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষার দাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘শিক্ষা চাই’। ২০২১ সালে শাহাবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধু ও বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্যের ছবি নিয়ে আলোকচিত্র মানববন্ধন ভাস্কর্য ও ১৯৭৭ সালে বিমানবাহিনীর সদস্যদের গুম হত্যার প্রতিবাদে আলোকচিত্র মানববন্ধন। ২০২১ সালে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিষাক্ত বর্জ্য নিঃসরণকারী কলকারখানায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানোর দাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘সেভ দ্যা আর্থ’। ২০২২ ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে বাংলাদেশে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই দেওয়ার ছবি নিয়ে শিক্ষায় সফলতামূলক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘দূরন্ত শৈশবে বই আনন্দ’।

   

রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ কবি-সাহিত্যিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার’ ২০২২ ও ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন কবি ও সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের জ্যৈষ্ঠ সদস্য কবি আসাদ মান্নান।

তিনি জানান, ২০২২ সালে কবিতায় পুরস্কার পেয়েছেন- শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক ও রিশাদ হুদা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে মালিক মো. রাজ্জাক। এছাড়া প্রবন্ধে বিলু কবীর, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, অনুবাদে ইউসুফ রেজা এবং কথাসাহিত্য জুলফিয়া ইসলাম।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, কবি খুরশীদ আনোয়ারকে।

কবি আসাদ মান্নান জানান, ২০২৩ সালে কবিতায় মিনার মনসুর ও মারুফুল ইসলাম পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রবন্ধে আসাদুল্লাহ, কথাসাহিত্যে জয়শ্রী দাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে নাজমা বেগম নাজু, শিশুসাহিত্য আমীরুল ইসলাম এবং অনুবাদে মেক্সিকো প্রবাসী আনিসুজ্জামান।

আগামী ১৯ মে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। পুরস্কার ঘোষণা কমিটির প্রধান ছিলেন কবি শ্যামসুন্দর শিকদার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।

;

ঢাকার মিলনায়তনেই আটকে ফেলা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে! 



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে তাদের জন্মজয়ন্তীর জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রথা কি তবে লুপ্ত হতে চলেছে? দীর্ঘসময় ধরে মহাসমারোহে কয়েকদিন ধরে এসব জন্মজয়ন্তী আয়োজনের রেওয়াজ থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণ দেখিয়ে সেই মাত্রায় আর হচ্ছে না রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর মহাআয়োজন। ঢাকার বাইরে উন্মূক্ত স্থানের বদলে রাজধানীতেই সীমিত পরিসরে মিলনায়তনে আটকে ফেলা হচ্ছে এসব আয়োজনের পরিধিকে। 

বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই দুই পুরোধা পুরুষের জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘিরে বিশাল আয়োজনে তাদের পরিধিবহুল সৃষ্টিকর্ম ও যাপিত জীবনের আখ্যান তুলে ধরা হতো। রাজধানীর বাইরে জেলা পর্যায়ে কবিদের স্মৃতিধন্য স্থানসমূহে এই আয়োজনকে ঘিরে দীর্ঘসময় ধরে চলতো সাজ সাজ রব। যোগ দিতেন সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু নানা অজুহাতে পর্যায়ক্রমে রাজধানী ঢাকাতেই যেমন আটকে যাচ্ছে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় আয়োজন, তেমনি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণও কমে এসেছে। 

জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এবারও কোন ভিন্নতা থাকছে না জানিয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় পর্যায়ের আয়োজনগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পালিত হয়। আর মৃত্যুবার্ষিকীগুলো নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। যেমন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট যেহেতু কবির নামে প্রতিষ্ঠিত, তাই নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ইনস্টিটিউটই আয়োজন করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর যেভাবে উদযাপিত হয় এবারও সেভাবেই আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২৫ মে (২০২৪) বেলা ৪টায় জাতীয় জাদুঘরে শুরু হবে। রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানগুলো কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে অনুষ্ঠিত হত। এই বারও হবে, তবে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানগুলো ঢাকার বাইরে হবে না।’

‘ঢাকার বাইরে যেসব জেলাগুলো নজরুলের স্মৃতিসংশ্লিষ্ট; যেমন-ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা-এসব জেলাগুলোতে নজরুল গিয়েছেন, থেকেছেন আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের সূত্রে। এবার জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও ঢাকায় হয়েছে, নজরুলের জন্মজয়ন্তীও ঢাকায় হবে। ঢাকার বাইরে এবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান না হওয়ার পেছনে সরকারের কাছে যে যুক্তি তা হচ্ছে-এই সময়ে দেশের উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষত জেলা প্রশাসন এইগুলো আয়োজনে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করে থাকে। জেলা প্রশাসনগুলো নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকবে। নজরুল জয়ন্তী আয়োজনে মনযোগ হয়ত কম দেবে। যে উদ্দেশ্যে জনমানুষের কাছে পৌছানোর জন্য এই অনুষ্ঠান, তা পরিপূর্ণ সফল হবে না বিধায় এবার এই আয়োজনগুলো ঢাকায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে’-বলেন সরকারের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আছে। এতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। গত ২ এপ্রিল (২০২৪) কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে শিল্পকলা একাডেমিতে এবং নজরুল জয়ন্তী হবে বাংলা একাডেমিতে।

জানা গেছে, বাংলা একাডেমিতে কিছু রেনুভশন ওয়ার্ক চলমান থাকায় বিদ্যুতের সমস্যা হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মুক্তমঞ্চেও এই আয়োজন না করে জাতীয় জাদুঘরে প্রধান মিলনায়তনে নজরুল জয়ন্তীর তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২৫ মে বেলা ৪টায় উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্মারক বক্তা থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান, এমপি। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা।

২৬মে আয়োজনের দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান, এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। ২৭ মে তৃতীয় দিনের আয়োজনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক। শেষ দিনের স্মারক বক্তা কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপনে জাতীয় কমিটির একজন সদস্যের কাছে জয়ন্তী আয়োজনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঐতিহ্যিক ধারা বজায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে রবীন্দ্র ও নজরুল অনুরাগীরা বলেছেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্য-জীবনদর্শন আমাদের পাথেয়। তাদের জন্ম ও মৃত্যুদিনে মহাসমারোহে ঢাকার বাইরে কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে আয়োজনের যে ধারাবাহিকতা ছিল তা দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক চর্চাকে বেগবান করতো। কিন্তু এই আয়োজনকে সীমিত করে রাজধানীর মিলনায়তনে আটকে ফেলা নিশ্চিতভাবেই আমাদের সংস্কৃতির বিকাশকে রূদ্ধ করারই অংশ। এর পেছনে সুক্ষ্ণভাবে কারা কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।

;

হাসান হাফিজের একগুচ্ছ কবিতা



অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পিপাসার্ত ঘোরে

প্রান্তরের মাঝে আছে নিঃস্বতার ডাক
আত্ম অনুসন্ধানের
ফিরতি ঢেউ
আছড়ে পড়ে
আশ্লেষের বালুকাবেলায়
মুমূর্ষু যেমন তীব্র পিপাসায়
জীবনের আলিঙ্গন চায়-
আর্ত রাত্রি হিমেল কামের ঘোর
নীরবে দংশায়
ঘর পোড়ে, আকাক্ষার
বাতি নিভে যায়
কোথায় প্রান্তর, শূন্যতা কোথায়
আছে সে নিকটে জানি
সুদূরের এলানো চিন্তায়
যেখানে গোধূলিদগ্ধ
সন্ধ্যা কী মায়ায়
গুটায় স্বপ্নের ডানা
দেবদারু বনে বীথিকায়
তার দিকে সতৃষ্ণ সমুদ্রঘোর
ছটফট করছি পিপাসায়।

না, পারে না

লখিন্দর জেগে উঠবে একদিন
বেহুলার স্বপ্ন ও সাধনা
বৃথা যেতে পারে না, পারে না।

কলার মান্দাস, নদীস্রোত
সূর্যকিরণের মতো সত্য ও উত্থিত
সুপ্ত লখিন্দর শুয়ে, রোমকূপে তার
জাগৃতির বাসনা অপার
এই প্রেম ব্যর্থ হতে পারে না পারে না

মনসার হিংসা একদিন
পুড়ে টুড়ে ছাই হবে
এমন প্রতীতি নিয়ে স্বপ্নকুঁড়ি নিয়ে
প্রতীক্ষা-পিদিম জ্বেলে টিকে থাকা
এমন গভীর সৌম্য অপেক্ষা কখনো
ম্লান হয়ে নিভে যেতে পারে না পারে না

রেণু রেণু সংবেদবর্ণালি-৮

ক.
আমার না পাওয়াগুলি অবরুদ্ধ দীর্ঘশ্বাসগুলি
মুক্তি চায়, বেরোতে পারে না
কার্বনের নিঃসরণ
নতুন মাত্রিক আর বিপজ্জনক
সেও তো দূষণ বটে
বলতে পারো প্রণয়দূষণ!

খ.
আদিপ্রাণ বৃক্ষতলে
ছায়াশান্তি মাঙনের সুপ্তি বর্তমান
এসো লই বৃক্ষের শরণ
পরিবেশ প্রশান্তির সেও এক
স্বস্তিমন্ত্র, অনিন্দ্য ধরন।

গ.
নদীকে বইতে দাও নিজস্ব নিয়মে
গলা টিপে ধোরো না ধোরো না,
নদী হচ্ছে মাতৃরূপ বাৎসল্যদায়িনী
দখলে দূষণে তাকে লাঞ্ছিত পীড়িত
হে মানুষ এই ভুল কোরো না কোরো না

ঘ.
উচ্চকিত শব্দ নয় বধিরতা নয়
মৃদু শব্দ প্রকৃতির সঙ্গে কথা কও
শব্দ যদি কুঠারের ঘাতকপ্রতিম
তবে হে মানুষ তোমরা অমৃতের পুত্রকন্যা নও

ঙ.
মৃত্তিকার কাছ থেকে সহনশীলতা শিখি
মৃত্তিকাই আদি অন্ত
জীবনের অন্তিম ঠিকানা
মৃত্তিকাই দেয় শান্তি সুনিবিড়
ক্ষমা সে পরমা
শরীর মূলত মাটি
গন্তব্য যে সরল বিছানা।

ছিন্ন কথন

আমি ভুখা পিপীলিকা
চেয়েছি আলোর দেখা।
পুড়ে যদি মরি তাও
ওগো অগ্নি শান্তি দাও।
অঙ্গার হওয়ার সাধ
এসো মৃত্যু পরমাদ।
চলো ডুবি মনোযমুনায়
এসো এসো বেলা নিভে যায়!

ধ্রুব সত্য

না-পাওয়াই সত্য হয়ে ফুটে থাকে।
পুষ্পিত সে প্রতারণা, চেনা মুশকিল।
বৃতি কুঁড়ি পাপড়িতে মায়াভ্রম লেপটানো
দেখলেই ছুঁতে ইচ্ছা হয়। ছুঁলেই বিপদ।
সেই ফুলে সম্মোহন জড়িয়েমড়িয়ে আছে
কোমলতা লাবণ্যও পুঁজি তার, এমত বিভ্রমে
লোভী ভ্রমরের মতো প্রেমিকারা ছোটে তার কাছে
গিয়ে মোক্ষ পাওয়া দূর, অনুতাপে আহত পাথর
মাথা কুটে মরলেও স্রোতধারা জন্ম নেয় না
যা কিছু হয়েছে পাওয়া, তাও এক দম্ভ সবিশেষ
মর্মে অভ্যন্তরে পশে গতস্য শোচনা নাস্তি
এই বিষ গলাধঃকরণ করে কী যে পাওয়া হলো
হিসাবে নিকাশে মন থিতু নয় সম্মতও নয়
না-পাওয়াই ধ্রুব সত্য চিরন্তন মানুষ-জীবনে!

;

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল। তার বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মা সারদা সুন্দরী দেবী। তার পূর্বপুরুষেরা খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।

তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে কবিগুরু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন তিনি। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ (৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।

 

 

;