হাসি নেই ‘শখের হাঁড়ি’র কারিগরদের মুখে



হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
শখের হাঁড়িতে আলপনা করছেন দক্ষ ও ক্ষুদে কারিগর, ছবি, বার্তা২৪.কম

শখের হাঁড়িতে আলপনা করছেন দক্ষ ও ক্ষুদে কারিগর, ছবি, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র পাঁচ দিন পরই বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বৈশাখী অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে গ্রাম থেকে শহর, কোথাও বসবে না এবারের বৈশাখী মেলা। গগন কাঁপিয়ে বাজবে না ভেঁপু, নজর কাড়বে না রং-বেরঙের মাটির হাঁড়ি!

নিস্তব্ধ কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীদের কপালে কেবল-ই চিন্তার ভাঁজ! উৎসব ঘিরে রুটি-রুজির সব আয়োজন যে ভেস্তে গেছে তাদের! কেউ কেউ হাতে থাকা স্বল্প সঞ্চয় লগ্নিও করেছিলেন হাঁড়ি-পাতিল বানানোর কাজে।

হয়তো ইচ্ছে ছিল- লাভের মুখ দেখলে মেয়ের বিয়ে দিব। কেউ-বা তুলতে চেয়েছিলেন মাথা গোজার জন্য ছোট্ট ঘর। তবে এবারের লগ্নি জলেই যাচ্ছে অসহায় মৃৎশিল্পীদের। বেঁচে থাকার তাগিদে পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতি ফেলে ত্রাণের আশায় ছুটছেন মৃৎশিল্পীরা।

শখের হাঁড়ি তৈরি করছেন গুণী কারুশিল্পী সুশান্ত পাল, ফাইল ছবি

তবে এখনো আশা দেখছেন ‘ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ি’ তৈরির প্রধান কারিগর সুশান্ত কুমার পাল। রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগধানী বসন্তপুরে তার বাড়িতে চলছে পুরোদমে প্রস্তুতি। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, নাতি-নাতনি সকলে মিলে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িতে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলছেন কারুকাজ।

কিন্তু তাদের মুখে নেই বৈশাখের আগমনে সেই চিরায়ত হাসি। তবে হতাশায় কুচকে যাওয়া কপালের ভাঁজের নিচে দু’চোখে এখনো জ্বল-জ্বলে স্বপ্ন। এই বুঝি হয়ে যাবে- সব ঠিকঠাক! সব জীর্ণতা-গ্লানি ধুয়ে-মুছে বৈশাখে নতুন রূপে সাজবে সোনার বাংলা।

তাইতো শখের হাঁড়ির খ্যাতিমান কারুশিল্পী ৫৯ বছর বয়সী সুশান্ত পাল সাবলীলভাবে জানালেন, ‘১০-১১ তারিখে হাঁড়ি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।’

শখের হাঁড়ি

অথচ রাজশাহীতে চলছে অঘোষিত লকডাউন। খবরটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে কীভাবে যাবেন- জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে তো আর যাওয়া হবে না। যদি পরিস্থিতি ভালো হয়, তবে অবশ্যই ঢাকা যাবে আমার শখের হাঁড়ি।’

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) শখের হাঁড়ির কারিগর সুশান্ত পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনেই সুশান্ত পাল তৈরি করছেন ছোট ছোট হাঁড়ি। পাশেই কাজ করছেন তার ছেলে সঞ্জয় কুমার পাল। তাকে সাহায্য করছেন তার স্ত্রী ও বাড়ির আরও দুই জন সদস্য।

বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে হাঁড়িগুলোর গায়ে সুনিপুণভাবে আলপনার কাজ। পরম মমতায় রঙ-তুলির শেষ আঁচড়ে নকশা সাজাচ্ছেন সুশান্ত পালের স্ত্রী ও ছোট্ট নাতনি সঞ্জিতা রাণী পাল। কখনো দাদা-দাদির দেখানো আঁচড়ে, কখনো নিজের মনমতো এঁকে চলেছে শিশুটি।

সুশান্ত পালের ছেলে সঞ্জয় পাল বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এবার অধিকাংশ মৃৎশিল্পী কাজ আর করছেন না। তবে আমরা হাল ছাড়িনি। কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বিগত বছরগুলোর মতো না, এবার অনেক কম।’

শখের হাঁড়িতে রঙ করতে ব্যস্ত এক নারী, ফাইল ছবি

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে হাঁড়ি বানাচ্ছি না, বানানোগুলোতে রঙ করা হচ্ছে। কাজ যা হাতে নিয়েছি, তাও যদি বিক্রি করা যেত তবে আসল টাকাটা উঠতো। তবে সেই আশা আস্তে আস্তে কমে আসছে। মনে হচ্ছে না- এবার হাঁড়ি নিয়ে বাইরে যেতে পারব।’

এদিকে, রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়া, গণকপাড়া, ঘোড়ামারা, শেখেরচক ও কুমারপাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র। সেখানে অধিকাংশ মৃৎশিল্পীরা আর কাজ করছেন না। তারা পহেলা বৈশাখে বেচা-বিক্রির আশা ছেড়েই দিয়েছেন। জানালেন- বেঁচে থাকার তাগিদে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ত্রাণ সহায়তার জন্য ধরনা দিচ্ছেন তারা।

২৫ বছর ধরে মৃৎশিল্পী হিসেবে কাজ করেন কুমারপাড়ার সুধীর পাল। তিনি বলেন, ‘এক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। হাড়ি-পাতিল বানানো শেষ। এখন শুধু কিছু পোড়ানো এবং রঙ করার কাজ বাকি। কিন্তু বৈশাখ হবে না, তাই শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। কাজ পুরোপুরি বন্ধ।’

শখের হাঁড়িতে আলপনা করছে এক শিশু কারুশিল্পী

আরেক কারিগর গণেষ পাল বলেন, ‘বাবা-দাদাদের পেশায় আমি ২৭ বছর। দুর্গাপূজার পর বৈশাখে কিছুটা আয় রোজগার হয়। কিন্তু এবারই প্রথম পহেলা বৈশাখে কোথাও মেলা হচ্ছে না। মেলা না হলে, মানুষ না জমলে মাটির হাঁড়ি-পাতিলসহ তৈজসপত্র কিনবে কারা? বৈশাখ বাতিল শোনার পর থেকে সব কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

শ্রমিক অরবিন্দ বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে কাজ করছি। মালিক সপ্তাহে তিনদিন মজুরি দেয়। আর বাকিটা বৈশাখে বিক্রির পর দেওয়ার কথা। এখন কাজ বন্ধ, বকেয়া টাকাও দিতে পারছে না। তাদেরকে চাপই বা দেব কীভাবে? তারাও খুব লসের মধ্যে আছে।’

   

‘তিনটা বাচ্চার লাইগা থাকার ব্যবস্থা কইরা দেন’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম মোংলা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরের মেঝে। পড়ে আছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল তাণ্ডবে বেঁচে যাওয়া বাঁশ, কাঠ ও গোলপাতার তৈরি ঝুপড়ি ঘরের কিছু অংশ। সহায় সম্বল হারিয়ে অর্থ সংকটে নতুন করে ঘর তৈরি করতে না পারায় সে ঘরেই তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে আঁকড়ে ধরে বসে আছেন অসহায় বাবা বাবুল শেখ।

ঝড়ের পাঁচ দিন পর সরকার থেকে পাওয়া ১০ কেজি চাল থেকে কিছু চাল অস্থায়ী ইটের তৈরি চুলায় রান্নার জন্য বসিয়েছেন বাবুলের স্ত্রী। ঝড়ের পর এই প্রথম চুলায় আগুন জ্বললো তাদের। ঝড় শেষে এই পাঁচ দিনে মোট দুই বেলা কে বা কারা এসে একবার খিচুড়ি ও একবার বিরিয়ানি দিয়ে গিয়েছিল। নিজেরা না খেয়ে গত দুই দিন ছেলে মেয়ের মুখে সে খাবার তুলে দিয়েছেন বাবুল ও তার স্ত্রী। আজ অনেক দিন পর হয়তো পেটপুরে ভাত খাবেন তারা।

এমনই চিত্র শেলা নদীর তীরে অবস্থিত জয়মনি'র প্রায় সব জেলে পরিবারের। ঝড়ের তান্ডবে সেখানকার প্রায় সবগুলো ঘরই ভেঙে গেছে, কোমড় সমান পানিতে ঘরের মেঝের সঙ্গে আসবাবপত্রও তলিয়ে গেছে। নদীতে মাছ ধরে, বনে ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালানোর পাশাপাশি যে অর্থ সঞ্চয় করেছিলেন তার সবকিছুই ভেসে গেছে নোনা জলে।

সুন্দরবন ঘেষা মোংলার জয়মনি ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সর্বশেষ সহায় সম্বল রক্ষা করতে ঝড়ের সময় বেশিরভাগ লোকজনই নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু ঝড়ের সঙ্গে পানি বাড়তে থাকায় চোখের সামনে ঘরের সবকিছু ভেসে যেতে দেখেও জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিতে চলে যেতে হয় স্থানীয়দের।

বার্তা২৪.কমের কথা হয় জয়মনি’র শেলা নদী তীরের বাসিন্দা মো. বাবুল শেখের সঙ্গে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল তাণ্ডবের ভয়াবহতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, 'এর আগে বহুত বড় বড় ঝড় গেছে। কিন্তু, রিমালের মতো এমন তাণ্ডব আগে কহনো দেহি নাই। চোখের সামনে দেখলাম নদীর পানি বাড়তে বাড়তে ঘরে কোমর সমান পানি হইয়া গেল। ডরে ঘর থেইকা বাইরাইতেই দেহি ঘুমানোর খাটটা নদীতে ভাইসা যাইতাছে। সাঁতরাইয়া গিয়া খাটটা আনলাম। আর ঘরের বেড়াগুলা সব উইড়া গেল। টিকতে না পাইরা শেষ পর্যন্ত সাইক্লোন সেন্টারে চইলা গেলাম। পোলাপাইনসহ বউরে আগেই পাঠাইয়া দিছিলাম।'

'ঝড় থামনের পরে আইসা দেহি ঘরের চালঠা কোনওরহম আছে আর ঘরের বাহি বেবাক জিনিসপত্র চাইল, ডাইলসহ হাড়ি পাতিল, থালা-বাসন এমনকি গাত দেওনের জামা কাপড় সব নদীতে ভাইসা গেছে। নিজেগো তো কিছু নাই, মাইনষের তে চাইয়া চাইল, ডাইল আইনা যে বাইত্তে রাইন্ধা খামু তারও তো কোন উপায় নাই। সাইক্লোন সেন্টার থেইকা যে চিড়া মুড়ি দিয়েছিল হেডি-ই পোলাপাইনরে খাওয়াইছি। ছোট ছোট পোলাপাইনগুলারে তো আর না খাওয়াইয়া রাখতে পারুম না।'

ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ সহযোগিতা পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বাবুল বলেন, 'দুইদিন না খাইয়া ছিলাম। এরপর কেডা জানি একদিন খিচুড়ি আরেকদিন একবেলা বিরিয়ানি দিয়া গেছিলো। হেইগুলা পোলাপাইনে দুই দিন খাইছে। আমি আর পোলাপাইনের মায় কোনরকম খাইয়া না খাইয়া দিন কাটাইছি। আজকে মেম্বারসাব ডাইকা নিয়া ১০ কেজি চাইল দিসে। আজকে ৬ দিন পর চুলায় আগুল জ্বললো আমগো। এইডা খালি আমগো দুঃখের কথা না, এইহানের সবার একই অবস্থা।'

‘খাওন দাউন যেমন কথা, তিন পোলা-মাইয়া লইয়া নদীর উপরে বিছনা পাতি ছাড়া থাহনের এই কষ্ট কোনভাবেই আর সহ্য হইতাছে না। বাচ্চাগুলা রাইতে খুব ডরায়। পোলাপাইনগুলার দিকে চাইলে বুক ফাইটা কান্দন আহে। এই ঘরটা ঠিক করতে কম কইরা হইলেও ২০ হাজারের দরকার। আমার কাছে তো এক টাকাও নাই। এই পোলাপাইন তিনটারে লইয়া আমি কি করমু। আপনারা আমার পোলা মাইয়াগো থাকার একটু ব্যবস্থা কইরা দেন। সব ঠিক হইলে আমি কাম কইরা আপনাগো টাকা ফিরাইয়া দিমু। আল্লাহর দোহায় লাগে ছোট ছোট এই তিনটা বাচ্চারে আপনারা বাঁচান।’ চোখের পানি ঝড়িয়ে এভাবেই বাবুল শেখ তার আকুতির কথা বলছিলেন বার্তা২৪.কমের প্রতিনিধির কাছে।

নদী তীরের এই মানুষগুলো যে শুধু খাবারের কষ্ট করছে তা নয়, এখানকার মানুষ সবচাইতে বেশি কষ্ট করছেন সুপেয় পানির অভাবে। বৃষ্টির পানি এবং পুকুরের মিঠা পানি সংরক্ষণ করেই তাদের সুপেয় পানির অভাব পূরণ হয়। কিন্তু, ঝড়ে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করার পাত্র এবং মিঠা পানির পুকুর নোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কারণে, সুপেয় পানির অভাবে অনেকেই নদী এবং পুকুরের নোনা পানিই পান করছেন। এতে করে বাড়ছে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা।

আব্দুল গফফার শেখ নামের এক বাসিন্দা বলেন, 'ঘরবাড়ি সব নদীতে চইলা গেছে, আর নাই কিচ্ছু। সংসারে মালামাল কিছুই নেই, সব শেষ। আজকে মেম্বারের কাছ থেইকা ১০ কেজি চাইল পাইছি। এর আগে এক সন্ধ্যা খাইছি বা না খাইয়া রইছি। খাওন না খাইয়া থাকন যায়, কিন্তু পানি না খাইয়া আমরা কেমনে থাকি!। আমগো এইহানে পানির খুব অভাব। বৃষ্টির পানি জমাইয়া রাখছিলাম কিন্তু বন্যায় সব জমানো পানি ভাইসা গেছে। এই নোনা পানি খাইয়া-ই জীবন বাঁচাইতাছি। ঘরবাড়ি ঠিক করনের অর্থকরী নাই। ভাঙ্গা ঘরে বউ বাচ্চা লইয়া দিন কাটাইতাছি। এখন মনে হয় মইরা গেলেই বেশি ভালো হইত। এই কষ্ট আর সহ্য হয় না।’

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতার ব্যাপারে অত্র এলাকার জনপ্রতিনিধ ইউপি সদস্য নাজমুল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমার ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৬৮০ জন। সে অনুযায়ী ত্রান আসে খুব সীমিত। যে কারণে আমি সবাইকে একসঙ্গে ত্রাণ দিতে পারছি না। ইতিমধ্যে সাড়ে সাতশ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করছি। সরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বেসরকারি কোন সংস্থা এখনো পর্যন্ত আমার এই দুর্গম এলাকায় ত্রাণ বা অন্যান্য সহযোগিতা নিয়ে পৌঁছাতে পারেনি। আর ক্ষতিগ্রস্তদের বাসস্থানের ব্যাপারে ইতিমধ্যে আমার ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। অনেকেই এসে ঘুরে দেখে গেছেন। আশা করি খুব শীঘ্রই তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা হবে। আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

এদিকে মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জয়মনিসহ ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে একদিনের মধ্যেই ১০ কেজি করে চাল এবং অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছি। যা স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যদের দ্বারা বিতরণ করা হচ্ছে। কেউ যদি এখনো পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা না পেয়ে থাকে তা আমাদের জানালে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। ক্ষতিগ্রস্তদের বাসস্থানের ব্যাপারে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

;

খোঁজা হচ্ছে আনার হত্যার হাতিয়ার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যা এবং হাড় থেকে মাংস আলাদা করে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত হাতিয়ার খুনিরা কাদের কাছ থেকে কীভাবে পেয়েছিল, তার খোঁজে নেমেছে ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির কলকাতা ব্যুরো।

দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, আনারকে হত্যার সময় ব্যবহার করা সরঞ্জাম কলকাতা থেকেই সংগ্রহ করা হয় বলে জানতে পেরেছে সিআইডি।

এই হত্যা মামলার তদন্তে কাজ করা এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই বলেছে, দেহ টুকরা করার কাজে বিশেষ করে চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। খুনিরা এগুলো স্থানীয় (কলকাতা) দোকান থেকে কিনেছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্দেহভাজন খুনিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সেসব স্থান (দোকান) শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’

কলকাতার গোয়েন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা একজন কসাইকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি খুন করার পর আনারের দেহকে ৮০ টুকরা করে তাতে হলুদ মাখান। তারপর টুকরাগুলো নিউ টাউনের কাছে একটি খালে ও আরও কয়েকটি স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।

সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে পাওয়া আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

সম্প্রতি ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে কয়েক কেজি মাংসের টুকরা এবং ফ্ল্যাট থেকে কিছু চুল পাওয়া গেছে। সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।

উদ্ধার করা মাংসের টুকরার সঙ্গে এমপি আনারের সন্তানদের ডিএনএ মিলিয়ে দেখার প্রস্তুতি চলছে। এখন কলকাতায় যাওয়ার জন্য ভিসার অপেক্ষায় আছেন আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

আনার হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন ও তার অন্যান্য সহযোগীদের ধরতে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল কলকাতা থেকে ঘুরে আসার পর ডিবির আরেকটি দল নেপাল গেছে।

সেখানে সন্দেহভাজন আসামি সিয়াম হোসেন আটকের খবর মিলেছে। এরপর হারুনের নেতৃত্বে শনিবার (১ জুন) কাঠমান্ডু যায় গোয়েন্দা দলটি।

শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, আনার হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে ভারতের সিআইডি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে কাজ শুরু করেছে।

স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) নামে এ দল একজন আইজির নেতৃত্বে তিনজন ডিআইজি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ১০-১২ জন কর্মকর্তা নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্ত দলটি দ্রুততার সঙ্গে প্রযুক্তিগত তথ্যপ্রমাণ ও ফরেনসিক রিপোর্ট সংগ্রহের কাজটি নিশ্চিত করবে। প্রধান সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামান শাহীনকে ধরতে ঢাকার পুলিশ ও ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করবে তারা।

ঢাকা ও কলকাতার পুলিশের ভাষ্য, আনার খুন হওয়ার পর ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু, সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান শাহীন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, তদন্তের জন্য সে দেশের সিআইডির বিশেষ তদন্ত দলটি শিগগির নেপালেও যাবে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন।

২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন আনার।

এ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের দেওয়া তথ্যে বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

ওই তিনজন হলেন: আমানুল্লা সাঈদ ওরফে শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া ও সেলেস্টি রহমান।

যশোর থেকে সাইফুল আলম মোল্লা মেম্বার নামে আরেকজনকে আটক করে ডিবি। তিনি পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা খুলনার শিমুল ভুঁইয়ার সহযোগী বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ বলছে, আনার হত্যার হোতা তার বাল্যবন্ধু ও ঝিনাইদহের যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহীন। আর খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন চরমপন্থি নেতা আমানুল্লা ওরফে শিমুল।

আনার কলকাতায় যাওয়ার পরদিন বৈঠক করার জন্য নিউ টাউনে আখতারুজ্জামান শাহীনের ভাড়া বাসায় যান। সেখানেই আসামিরা তাকে হত্যা করে।

তদন্তের এক পর্যায়ে জিহাদ হাওলাদার নামের এক কসাইকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২৪ বছর বয়সি জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। আনারকে হত্যার প্রায় দুই মাস আগে সন্দেহভাজনরা তাকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে জিহাদ বলেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই তিনি সব কাজ করেছেন। আরও চার জন বাংলাদেশি এই কাজে সাহায্য করেছেন।

ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাংলাদেশে এসে ২৪ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যান। এরপর ২৫ মে কলকাতায় যান বাংলাদেশের ডিবির তিন কর্মকর্তা। তারাও জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তাকে নিয়ে সেই বাড়ি ঘুরে দেখেন।

সঞ্জিভা গার্ডেনস নামের বিলাসবহুল ওই অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের সেপটিক ট্যাংক থেকে গত মঙ্গলবার বেশ কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পরে তা ভারতের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়।

;

ফেনীতে কোরবানি ঈদের জন্য প্রস্তুত ৯০ হাজার পশু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ফেনী
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে পশু কেনা-বেচা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ফেনীর খামারি, ক্রেতা ও বেপারীরা। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ফেনীতে প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে।

এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৭ হাজার ২০০টি। তার মধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হচ্ছে ৯০ হাজার ২৫০টি গবাদি পশু।

এর মধ্যে ৬৮ হাজার ৮০৪টি গরু, ৫ হাজার ৭২৮টি মহিষ এবং ১৫ হাজার ৭১৮টি ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে। সে হিসেবে স্থানীয় খামারিদের পশুতেই জেলার কোরবানির জন্য চাহিদা মিটবে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

এদিকে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শেষ সময়ে পশু পরিচর্যা ও বাজার ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলার প্রায় ৫ শতাধিক খামারি। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি-পশু খাদ্যের দামের প্রভাব পড়বে কোরবানির বাজারে।

ফেনী সদরের খামারি হাসান মাহমুদ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রতি বস্তা খাদ্যে হাজারেরও বেশি টাকা বেড়ে গেছে। সেই হিসেবে দামও কিছুটা বেশি হবে। সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ না করলে লাভবান হওয়া যাবে।

ছাগলনাইয়ার খামারি ওবায়দুল হক বলেন, ‘কোরবানির জন্য ১৩টি গরু এবং ৮টি ছাগল প্রস্তুত করেছি। বাজার দর অনুকূলে থাকলে আশা করি কোরবানির পশুর হাটে ভালো দাম পাব।’

সাজ্জাদ রাকিব নামে এক তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, ‘কোরবানির শেষ সময়ে বাহির থেকে গরু আসার কারণে আমাদের প্রায়সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। এমন কিছু হলে নতুন উদ্যোক্তারা এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সীমান্তে আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’

কোরবানির পশু বিক্রিতে খামারি নিচ্ছেন ভিন্ন ভিন্ন কৌশল। মেজবাউল হক নামে এক খামারি বলেন, ইতোমধ্যে বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অনেকে আগে এসেই পশু কিনে রাখছে। যা কোরবানির আগেরদিন পর্যন্ত খামারে রাখতে পারবেন। এছাড়া ক্রেতা চাইলে খামারে এসে লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে গরুর ওজন মেপেও গরু কিনতে পারছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ফেনীতে এবার কোরবানির পশু সংকটের শঙ্কা নেই। জেলায় ৫ হাজার ২৪৬ জন তালিকাভুক্ত খামারির বাইরেও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে এক বা একাধিক পশু লালন-পালন করছেন। আসন্ন কোরবানি উপলক্ষ্যে জেলার প্রায় দুই শতাধিক পেশাদার ও মৌসুমি কসাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চামড়া সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে অবহিতকরণ সভা করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

পশুর যোগান বেশি থাকায় ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দেশের বাহির থেকে অবৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধ রাখতে হবে। এই বিষয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। গরু আমদানি বন্ধ করা গেলে খামারিরা লাভবান হবে।

এদিকে কোরবানি পশু লালন-পালনে নিয়মিত খামারিদের প্রাণি সম্পদ দপ্তর সহযোগিতা করছে বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন রোগের টিকা, খামারি প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহযোগিতা, কেমিক্যাল, হরমোন ও স্টোরয়েড সংক্রান্ত জনসচেতনতা তৈরি করতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া দপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠপর্যায়ে খোঁজখবর রাখছেন।

তিনি বলেন, কোরবানিতে গরু-ছাগলের পাশাপাশি ফেনীতে মহিষের চাহিদাও রয়েছে। কোরবানির জন্য জেলায় ৫ হাজার ৭২৮টি মহিষ প্রস্তুত রয়েছে। যার গতবছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

সোনাগাজী উপজেলার খামারি আতাউর রহমান বলেন, ‘এখানে অন্যান্য পশুর সঙ্গে মহিষ পালনের জন্য বেশি উপযোগী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চরাঞ্চলের সরকারি ও ফসলি জমি ভূমিদস্যুরা দখলে নেওয়ায় গরু-মহিষের চারণভূমি ছোট হয়ে আসছে। ফলে গোখাদ্য নিয়ে নতুন করে চিন্তায় করতে হচ্ছে। এবার কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য ১২টি মহিষ প্রস্তুত করেছি। প্রতিটি মহিষ গড়ে ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।’

;

চট্টগ্রামে মাদক মামলায় দুইজনকে ১০ বছর কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের পটিয়ায় ছয় বছর আগে ৭ হাজার ইয়াবার নিয়ে গ্রেফতারের মামলায় দুইজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে এই মামলার এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২ জুন) চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সরওয়ার আলমের আদালত এই রায় দেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. জিয়াউর রহমান। খালাস পান মো. সরোয়ার।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ক্রসিং এলাকায় একটি পিকআপ জব্দ করে তৎকালীন পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ের পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। পিকআপে থাকা মো. জিয়াউর রহমান থেকে ২ হাজার ও পিকআপ চালক মো. সাইফুল ইসলামের দেখানো মতে গাড়ি থেকে ৫ হাজার ইয়াবাসহ মোট ৭ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এবিএম মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে আদালত ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান, এই মামলায় মোট সাত জনের সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. জিয়াউর রহমানকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা মূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. সরোয়ার নামে এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।

;