'করুণা ধারায় এসো'

  ‘এসো হে বৈশাখ’


ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চৈত্রের দাবদাহ পেরিয়ে বৈশাখে, নববর্ষের আবাহনে, শোনা যায় চির নূতনের ডাক এবং আশার প্রাণোচ্ছল ধ্বনি: "জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণা ধারায় এসো/সকল মাধুরী লুকায়ে যায়, গীতসুধারসে এসো।" আর এভাবেই ধর্ম, বর্ণ, অঞ্চলে বিন্যস্ত বাঙালি যুক্তসাধনার মুক্ত প্রতীতিতে পুনরুজ্জীবন লাভ করে বাঙলা নববর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে।

বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখ বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসব। বাংলা নববর্ষ বাঙালি সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। ইংরেজি নতুন বছরের দিন শুরু হয় মধ্যরাতে। আর বাংলা সাল শুরু হয় ভোরে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে।

১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল বাংলা সনের প্রবর্তন। মোগল সম্রাট আকবরের আদেশে তাঁর রাজস্ব কর্মকর্তা ফতেহ উল্লাহ সিরাজি ‘সৌর সন’ এবং আরবি ‘হিজরি’ সালের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সন তৈরি করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা থেকে মদিনা যাত্রা বা 'হিজরত'- এর সময়টিকে (৬২২ খ্রিস্টাব্দে) সূচনা বিন্দু ধরে অব্দের গণনা শুরু হয়। প্রথমে এই সালের নাম ছিল ‘ফসলি সন,’ পরে তা ‘বঙ্গাব্দ’ বা ‘বাংলা নববর্ষ’ নামে পরিচিত হয়। অনেকে মনে করেন, বঙ্গাব্দের গণনায় আকবরের রাজ্যাভিষেককেই সূচনা বলে ধরে নেওয়া হয়।

সম্রাট আকবরের বাংলা সন প্রবর্তনের সঙ্গে শুরু হয় ‘হালখাতার প্রথা’। হালনাগাদের খাতাটি হল বিগত বছরের যাবতীয় হিসাব বিবরণীর নথি। আজও ব্যবসায়ীরা লাল রঙের শালু কাপড়ের মলাটে মোড়ানো খাতাটি ব্যবহার করেন। নববর্ষের প্রথম দিন ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের হিসাবের হালখাতা অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ করেন। থাকে মিষ্টিমুখের আয়োজন।

পহেলা বৈশাখ শুধু একটি তারিখমাত্র নয়, বাঙালির উৎসবের দিন। আহারে-বিহারে সাজগোজে নিজস্বতার ছোঁয়া থাকে এই দিনটিতে। বাঙালির অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে নিজস্ব সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। চর্চা করতে হবে। মনে-প্রাণে তাকে লালন করতে হবে। এটাই জীবন্ত সংস্কৃতির জাগ্রত মানুষের জীবনাবেগ। কারণ, যে জাতি যত সংস্কৃতিমান, সেই জাতি তত উন্নত এবং সমৃদ্ধ।

নববর্ষ মানে বিগত বছরের সমস্ত জীর্ণতা ও মলিনতাকে মুছে দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোরও দিন। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, আমাদের ইতিহাসবোধ, সমকালবোধও, আজ আন্তর্জাতিক খ্রিস্টীয় কালপঞ্জির দ্বারা এতটাই নিয়ন্ত্রিত যে, বাংলা সন-তারিখ দেখলে একটু বিহ্বল বোধ করেন অনেকেই। কোথাও তারিখ হিসাবে বাংলা সন উল্লিখিত হলে সমস্যায় পড়তে 'শিক্ষিত' মানুষদেরও।

তাদের দ্বিধার কারণ হলো, কোন মাস ঠিকঠাক কী ভাবে বুঝব? কেননা, ইংরেজি বছরে ঢুকে থাকে দুইটি বাংলা সাল। ও দিকে ঐতিহাসিক পারম্পর্যের কাহিনিবিন্যাসটি খ্রিস্টাব্দের পরিপ্রেক্ষিতেই সাধারণ মানুষের মনোলোকে সাজানো আছে। আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত কালপঞ্জির প্রতি এত আগ্রহ কখনও আত্মপরিচিতির অজ্ঞতার কারণ হলে বিপদ। এই বিপদকে সঙ্গে করেই চলছে একবিংশ শতকের উত্তরাধুনিক বাঙালি জনগোষ্ঠী। পরিস্থিতি এমনই শোচনীয় হয়েছে যে, পহেলা বৈশাখ শেষ হলেই বাংলা মাসের নাম ও বাঙালিয়ানা গানে ও কবিতায় আশ্রয় নেয় আত্মরক্ষার্থে।

টি এস এলিয়ট লিখেছিলেন, ‘এপ্রিল ইজ় দ্য ক্রুয়েলেস্ট মান্থ'/‘এপ্রিল নিষ্ঠুর মাস। বিপরীতে ইংরেজি সাহিত্যের ডাকসাইটে ছাত্র সমর সেন লিখেছিলেন: ‘উজ্জ্বল, ক্ষুধিত জাগুয়ার যেন,/ এপ্রিলের বসন্ত আজ’। দৃষ্টান্তস্বরূপ, ‘চৈত্রে রচিত কবিতা’, ‘হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান’, ‘শরৎমেঘ ও কাশফুলের বন্ধু’, ‘কার্তিকের মাঠে’, শিরোনামগুলোয় গভীর হয়ে আছে নিজস্ব চিহ্ন। এমন পঙ্‌ক্তিতেও আছে শিহরণ: ‘আগত শরৎ অগোচর প্রতিবেশে;/ হানে মৃদঙ্গ বাতাসে প্রতিধ্বনি,/ মূক প্রতীক্ষা সমাপ্ত অবশেষে/ মাঠে, ঘাটে, বাটে আরব্ধ আগমনী।’ কিংবা ‘স্বপ্ন, একুশে ভাদ্র’ অথবা ‘আমাকে আমি ভুলেছি এই একুশে আশ্বিনে’। তাৎপর্য খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, দু’টিই যথাক্রমে কবিদ্বয়ের জন্মতারিখ। হায়! আমরা কয়জন জন্মদিনের, জন্ম তারিখের, বাংলা ভার্সান মনে রেখেছি?

মনে রাখে নি অধিকাংশই। বরং ‘পহেলা বৈশাখ’ এলেই হঠাৎ চারিদিকে উন্মত্ততা চাপিয়েছে। একদিনের বাঙালিয়ানার মচ্ছব চলছে। বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার নামে হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে। সুপ্ত অপসংস্কৃতির তাণ্ডব কখনও দৃশ্যমান হচ্ছে। কেউ একজন একবার বলেছিলেন, "আমরা আসলে বেশি উদ্‌যাপন করেছি ক্ষণোন্মাদনার তীব্রতা, ধারণ করেছি কম। উদ্‌যাপন বাহ্যিক, ধারণ অভ্যন্তরীণ। প্রমিত তথা ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজ়ড’ আন্তর্জাতিক হওয়ার অতি-আগ্রহে ভুলতে চেয়েছি আত্মপরিচয়ের প্রাতিস্বিক চিহ্ন।'

এসবই ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসন’। ‘হেজিমনি'। ‘গোলকায়নের ভবিতব্য'। সর্ববাঙালির সামনে আরেক বিপদ 'ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের কর্ণবিদারী ঢক্কানিনাদ'। যদিও বাঙালির সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয় নির্মাণ সীমান্তহীন, ধর্মনির্দিষ্টতাহীন, বহুস্বরিক, তার বহু শরিকও, তথাপি, আগ্রাসন একটা আছে। খুব বলশালী, ধূর্ত আর কৌশলী সেই আগ্রাসন।

আগ্রাসীরা বাঙালিকে একমাত্রিক একঢালা বানাতে চায়। বাঙালির বহুস্তরিক বর্ণালি ভাঙতে চায়। বহুস্বরিক কলকণ্ঠ স্তব্ধ করতে চায়। গণতান্ত্রিক সহাবস্থানের আবহ মুছে দিতে চায়। ‘সংখ্যাগুরু’ ও ‘সংখ্যালঘু’ এবং ‘প্রতাপান্বিত’ ও ‘দুর্বল’-এর সম্মানজনক ভারসাম্যের বুনিয়াদ উপড়ে ফেলতে চায়।

নববর্ষে একদিনের বাঙালিয়ানায় এইসব আগ্রাসন রোধ করা অসম্ভব। চিরায়ত বাংলা ও সর্বজনীন বাঙালিত্বে শাশ্বত করুণা ধারায় হটানো সম্ভব ইত্যাকার যাবতীয় আগ্রাসন, আবিলতা, ক্লেদ, ক্লেশ, গ্লানি, হীনমন্যতা ও অবদমন।

   

১৬ দেশ নিয়ে সিপিডির পর্যালোচনা

সর্বনিম্ন আয়ের বিপরীতে খাবারে সর্বোচ্চ ব্যয় বাংলাদেশে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সংবাদ ব্রিফিং

সংবাদ ব্রিফিং

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রীলঙ্কায় মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের চেয়ে ৬৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি হলেও দেশটির খাবার বাবদ মাথাপিছু ব্যয় বাংলাদেশের মাত্র ৬৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মাথাপিছু প্রায় ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ আয় করা ভারতের মানুষের খাবার বাবদ গড় ব্যয় বাংলাদেশের মাত্র ৫৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা, বাজারে প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতি, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফালোভী প্রবণতার কারণে তুলনামূলক কম আয় সত্ত্বেও বাংলাদেশে খাদ্য বাবদ অস্বাভাবিক বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে বলে মনে করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডাযালগ (সিপিডি)।

রোববার (২ জুন) সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, বিশ্ববাজারে ১০৫ টাকা লিটারের সয়াবিন তেল দেশে ১৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইউরোপের বাজারে ৩৯ টাকা কেজি দরের চিনি দেশে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। গরুর মাংসসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম দেশের বাজারে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি বলে তিনি মনে করেন।

দেশের অর্থনীতির হালনাগাদ চালচিত্র তুলে ধরতে ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সিপিডি। সংস্থাটির নিজস্ব অফিসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণা পরিচালক ছাড়াও গবেষণা ফেলো মুনতাসির কামালসহ অন্য গবেষকরা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অনেক কম আয় করেও বাংলাদেশের জনগণকে বেশি দামে নিত্যপণ্য কিনে জীবন ধারণ করতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির প্রবণতার কারণে দৈনন্দিন ব্যবহার্য ‍অনেক নিত্যপণ্য এক ধরনের বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের যথেষ্ট উদ্যোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে সমস্ত উদ্যোগের কথা বিভিন্ন সময়ে ঘোষণা দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলোও বাস্তবায়ন হয় না।

তিনি বলেন, এখানে বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। কম্পিটিশন কমিশনের দুর্বলতা আছে। কম্পিটিশন এক্টেরও কিছু ধারা পরিবর্তন করতে হবে।মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে দরিদ্র মানুষদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে নিত্যপণ্যের ট্যারিফ কমানোর পরামর্শ দেন মোয়াজ্জেম।

তিনি বলেন, অনেক সময় কিছু পণ্যের ট্যারিফ কমানো হলেও এর সুবিধা ভোক্তারা পায় না। আমদানিকারকদের সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় পণ্যের দাম কমানোর বিষয়টি তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করে।

তিনি আরও বলেন, এক সময় ৫-৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির একটা কাঠামো থাকলেও দেশ এখন ৯-১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির কাঠামোতে চলে গেছে।

এত দিন পর্যন্ত যে দেশগুলোর দিকে আঙুল তুলে দেখাতাম, সেই শ্রীলঙ্কার চেয়েও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেশি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা সরকারের একটা বড় ব্যর্থতা।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ১৬টি দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় খাদ্য বাবদ এক বছরে জনপ্রতি ব্যয়ের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন মোয়াজ্জেম।

তালিকায় দেখা গেছে, জর্ডান, মরক্কো, বলিভিয়া, উজবেকিস্তান, লাওস, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, তিউনিশিয়া, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কাসহ ১৬টি দেশের মধ্যে মাথাপিছু আয় বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। তবে এক বছরে ব্যয় বাবদ একজন নাগরিককে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হয়।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

নারী সাংবাদিকতার বিকাশে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে: স্পিকার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান সরকারের সময়ে সংবাদপত্রের পথচলা সহজ হয়েছে। এই সরকার প্রচুর সংখ্যক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে। সরকার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একই সাথে নারী সাংবাদিকতার বিকাশে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রোববার (২ জুন) দুপুরে রাজধানী সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র কর্তৃক আয়োজিত '৪র্থ জাতীয় সম্মেলন' এ নারী পুরুষের সমতা অর্জনে কলম হোক হাতিয়ার প্রতিপাদ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্ষমতায়নের রোল মডেল। তিনি নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য নিরসন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে নারীদের সহযোগিতা দান, ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রেরণের মাধ্যমে নারীর সার্বিক অবস্থা উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। বিশ্বায়নের যুগে তথ্য প্রবাহ ও তথ্য প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়াতে নারী সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিত করা সময়ের দাবি। তিনি বলেন, সাংবাদিকতার মত চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীরা প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের দীর্ঘ ২৪ বছরের পথচলা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এক অনন্য অর্জন। তিনি বলেন, নারী সাংবাদিকদের পেশাগত ঝুঁকি নিরসনে সংগঠনটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করা, ফেক নিউজ চিহ্নিত করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র সহযোগিতা করতে পারে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এর সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা। নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের প্রতিনিধিবৃন্দ, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলী, দেশবরেণ্য সাংবাদিকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি ১৬ হাজার ৯৭০ কর্মী, তদন্তে কমিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্রসহ দরকারি সব কাগজপত্র পেয়েও ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

রোববার (২ জুন) বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জনকে মন্ত্রণালয় (প্রবাসী কল্যাণ) অনুমোদন দিয়েছে। বিএমইটির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। আর ৩১ মে পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন গেছেন মালয়েশিয়ায়। সে হিসেবে কমবেশি ১৬ হাজার ৯৭০ জন যেতে পারেননি। সংখ্যাটা কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যেতে না পারার কারণ খুঁজতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটির কাছে ভুক্তভোগীদের যে কেউ অভিযোগ করতে পারে, বলেন তিনি।

বিপুল সংখ্যক এই কর্মী না যাওয়ার পেছনে সিন্ডিকেটভুক্ত ১০০টি এজেন্সি দায়ী, যার মধ্যে ৪ জন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে– এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যিনি বা যারা দায়ী থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমপি চিনি না। তাদের সাথে কোন ডিল নাই। আমরা শুধু এজেন্সিকে কাজ দিব।

ভবিষ্যতে আবার সিন্ডিকেট হবে কিনা এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। যে দেশ কর্মী নেবে তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন এজেন্সি কর্মী পাঠায়। আমরা চাই আমাদের নিবন্ধনকৃত আড়াই হাজার এজেন্সির সবাই যেন কর্মী পাঠাতে পারে।

এ সময় প্রবাসী কল্যাণ সচিব রুহুল আমিন বলেন, মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবে। তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

আদাবরে চাঁদা না পেয়ে চা-দোকানির ওপর হামলা যুবলীগ নেতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর আদাবর থানার ১৬ রোড এলাকায় চাঁদা না পেয়ে এক চা-দোকানির ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে যুবলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।

অনুসারীদের দিয়ে চা-দোকানির ওপর হামলা করিয়েছেন যুবলীগের ওই নেতা। এ সময় চা-দোকনি ও তার স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হামলা নির্দেশদাতা যুবলীগ নেতার নাম- আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আদাবর থানার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। শুক্রবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় আদাবর ১৬ নম্বর কাঁচা বাজারের সামনে চা দোকানদারকে মারধরের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী চা-দোকানি সেদিন বিকেলে আদাবর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রোববার (২ জুন) এ তথ্য প্রকাশ পায়।

মারধরের শিকার ভুক্তভোগী চা-দোকানি তোফাজ্জল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি আদাবর ১৬ নম্বর ব্রিজের ওপর চা দোকান বিক্রি করি। পাশাপাশি আমার কয়েকটা রিকশা আছে। সেগুলো দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাই।

কয়েকদিন আগে আমার দোকানে যুবলীগ নেতা রাজ্জাক ও তার সহযোগী সোহাগসহ কয়েক জন এসে আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চান।

দোকান চালাতে হলে এককালীন ২০ হাজার টাকাসহ প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বলেন।

এরপর শুক্রবার দুপুরের নামাজের আগে রাজ্জাকের অনুসারী সোহাগ, শাকিল, শাকিলের বোনের স্বামী ‘অটো জামাল’সহ প্রায় ৭০-৮০ জনের একটি বিশাল দল আমার এক রিকশাচালককে রিকশাসহ আটক করে মারধর করেন। আমি রিকশাচালককে বাঁচাতে গেলে আমাকেও আটকে মারধর করা হয়।

এ সময় আমার চিৎকার শুনে স্ত্রী রাশিদা বেগম, ছেলে রাসেলসহ স্বজনরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। পাশেই কাঁচা বাজারের তিন চারজন দোকানদার আমাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও মারধর করে।

যারা আমার ওপর হামলা করেছেন, তারা সবাই ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সহযোগী ও কিশোর গ্যাং সদস্য।

এ ঘটনায় আমি থানায় শুক্রবার বেলা আড়াইটায় হাসপাতালের কাগজপত্রসহ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশের কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি।

এমন নৃশংস হামলার পরও পুলিশ নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। হামলার পর শুক্রবার রাতে রাজ্জাক আমার দোকানে এসে আবারও আমাকে হুমকি দিয়ে যায়।

ওই সময় বলে যায়, ‘আজকে মাল (ধারালো অস্ত্র) ছাড়া পোলাপাইন হালকার ওপর দিয়ে গেছে। এরপর আবার আসতে হলে হাত-পা, মাথা আলাদা করে দিয়ে যাবে। তার আগেই টাকা রেডি রাখ’।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আব্দুল রাজ্জাক বলেন, অন্য একটি ঘটনা সমাধান করতে আমাকে আদাবর থানার এক এসআই ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে তোফাজ্জল হোসেনের কোনো বিরোধ নেই।

চাঁদা দাবির বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো চাঁদা চাইনি। এমন কী কোনো ছেলেকে আমি তার কাছে পাঠাইনি। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে, আমি আরো ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেবো।

ঢাকা মহানগর উত্তর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, আব্দুর রাজ্জাক আমাদের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। মারামারির খবর আমরা পেয়েছি। তবে এ বিষয়টি সমাধান করার জন্য সন্ধ্যার পর আমরা দুই পক্ষকে নিয়ে বসবো।

এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল হক জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;