এক নজরে আলোচিত-প্রশংসিত



বৃষ্টি শেখ খাদিজা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বিদ্যা বালান, ভিকি কৌশল, হৃতিক রোশন ও ‘টোটাল ধামাল’ ছবির কলাকুশলীরা

বিদ্যা বালান, ভিকি কৌশল, হৃতিক রোশন ও ‘টোটাল ধামাল’ ছবির কলাকুশলীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের সকল সফলতা ও ব্যার্থতা নিয়ে কয়েক ঘণ্টা পরই ২০২০ সালকে স্বাগত জানাবে সারা বিশ্ব। এরই মধ্যে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সারা বিশ্ব। পিছিয়ে নেই নেই সিনেমার দুনিয়ার অন্যতম বড় বাজার বলিউড ও বলিউড তারকারা। ২০১৯ কেমন কেটেছে বলিউডের। সিনেমা থেকে শুরু করে সেখানকার তারকাদের চলতি বছরের হালচালের এক নজরে খবর নিয়েছে বার্তা২৪.কম।

সফল যারা

হিন্দি ছবির জন্য ২০১৯ ছিল রেকর্ড গড়ার বছর। এবার মোট ১৬টি ছবি বক্স অফিসে ১০০ কোটি রুপি আয় করেছে। ‘গুড নিউজ’-এর এই তালিকায় যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকতে পারে ‘পতি পত্নি অউর ও’। কমেডি থেকে শুরু করে অ্যাকশন ও সামাজিক বক্তব্যধর্মীসহ বিভিন্ন ধাঁচের ছবি দর্শকদের মন জয় করেছে।

১৬টি ছবির মধ্যে ১৫০ কোটি রুপির ঘর পেরিয়েছে ‘ছিচ্চোরে’, ‘কেসারি’ ও ‘টোটাল ধামাল’। ২০০ কোটি রুপির অভিজাত ক্লাবে নাম লিখিয়েছে ‘মিশন মঙ্গল’, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ও ‘ভারত’। ২৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে ‘কবির সিং’। আর ৩০০ কোটি রুপির বনেদি ক্লাবে যুক্ত হয়েছে ‘ওয়ার’।

‘কেসারি’ ছবির দৃশ্যে অক্ষয় কুমার

ফক্স স্টার স্টুডিওসের চারটি ছবি (টোটাল ধামাল, মিশন মঙ্গল, ছিচ্চোরে, হাউসফুল ফোর) ও টি-সিরিজের চারটি ছবি (ভারত, কবির সিং, দে দে পেয়ার দে, সাহো) আছে ১০০ কোটির ক্লাবে। ‘পতি পত্নি অউর ও’ যদি এই ঘরে ঢুকতে পারে তাহলে টি-সিরিজের সংখ্যা বাড়বে।

প্রযোজকদের মধ্যে সাজিদ নাদিয়াড়ওয়ালার তিনটি ছবি (সুপার থার্টি, ছিচ্চোরে, হাউসফুল ফোর), অক্ষয় কুমারের প্রতিষ্ঠান কেপ অব গুড ফিল্মসের তিনটি ছবি (কেসারি, মিশন মঙ্গল, গুড নিউজ), জি স্টুডিওসের দুটি ছবি (কেসারি, ড্রিমগার্ল), করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশন্সের দুটি ছবি (কেসারি, গুড নিউজ) ও সালমান খান ফিল্মসের দুটি ছবি (ভারত, দাবাং থ্রি)।

‘গুড নিউজ’ ছবির পোস্টার

অভিনেতাদের মধ্যে বছরটা সবচেয়ে সফল ছিল আয়ুষ্মান খুরানা ও ভিকি কৌশলের। দু’জনের ছবি অভাবনীয় ব্যবসা করেছে, এছাড়া উভয়ে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

অক্ষয় কুমার এবার সর্বাধিক চারটি ১০০ কোটি রুপির ছবি (কেসারি, মিশন মঙ্গল, গুড নিউজ, হাউসফুল ফোর) উপহার দিয়েছেন। এছাড়া অজয় দেবগণ (দে দে পেয়ার দে, টোটাল ধামাল), আয়ুষ্মান খুরানা (ড্রিম গার্ল, বালা), সালমান খান (ভারত, দাবাং থ্রি), হৃতিক রোশন (ওয়ার, সুপার থার্টি), চাঙ্কি পান্ড (হাউসফুল ফোর, সাহো) ও জ্যাকি শ্রফের (ভারত, সাহো) দুটি করে ছবি আছে ১০০ কোটি রুপির ক্লাবে। তাদের মধ্যে ‘টোটাল ধামাল’ ছবিতে ভয়েস দিয়েছেন জ্যাকি। এছাড়া ‘গালি বয়’ তারকা রণবীর সিংয়ের ‘সিম্বা’ এ বছরও আয় করেছে, কারণ এটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর।

‘পতি পত্নি অউর ও’ ছবির পোস্টার

অভিনেত্রীদের মধ্যে দুটি করে ১০০ কোটি রুপির ছবি উপহার দিয়েছেন ইয়ামি গৌতম (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বালা), শ্রদ্ধা কাপুর (সাহো, ছিচ্চোরে), কিয়ারা আদভানি (কবির সিং, গুড নিউজ), কীর্তি কুলহারি (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, মিশন মঙ্গল), টাবু (দে দে পেয়ার দে, ভারত), সোনাক্ষী সিনহা (মিশন মঙ্গল, দাবাং থ্রি)। সোনাক্ষী অবশ্য ‘টোটাল ধামাল’ ছবির একটি আইটেম গানে নেচেছেন। ‘পতি পত্নি অউর ও’ যদি এই ক্লাবে পৌঁছায় তাহলে ভূমি পেডনেকর যোগ দেবেন তাদের সঙ্গে। তার অভিনীত ‘বালা’ আছে এই তালিকায়।

শুক্রবারের রাজা

২০১৯ সালে বক্স অফিসের আলো কেড়েছেন বেশ কয়েকজন তারকা। তবে মুক্তির প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি আয়ে এগিয়ে আছেন হাতেগোনা কয়েকজন। হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার’ (৫০ কোটি ৬১ লাখ রুপি), সালমান খানের ‘ভারত’ (৪১ কোটি ৬২ লাখ রুপি) ও ‘দাবাং থ্রি’ (২৪ কোটি ৫০ লাখ রুপি), অক্ষয় কুমারের ‘মিশন মঙ্গল’ (২৮ কোটি ৪৫ লাখ রুপি) ও ‘কেসারি’ (২০ কোটি ৪০ লাখ রুপি), প্রভাসের ‘সাহো’ (২৫ কোটি ৮২ লাখ রুপি), শহিদ কাপুরের ‘কবির সিং’ (২০ কোটি ২২ লাখ রুপি)।

আলোচিত অভিনেতা

আয়ুষ্মান খুরানা (আর্টিক্যাল ফিফটিন, ড্রিম গার্ল, বালা), রণবীর সিং (গালি বয়), অক্ষয় কুমার (কেসারি, মিশন মঙ্গল, হাউসফুল ফোর, গুড নিউজ), সাইফ আলি খান (লাল কাপ্তান), শহিদ কাপুর (কবির সিং)।

আলোচিত অভিনেত্রী

কঙ্গনা রনৌত (জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া), আলিয়া ভাট (গালি বয়), ভূমি পেড়নেকর ও তাপসী পান্নু (সান্ড কি আঁখ), বিদ্যা বালান (মিশন মঙ্গল), ইয়ামি গৌতম (বালা)।

ব্যবসাসফল ৫

ওয়ার (২৯২ কোটি ৭১ লাখ রুপি), কবির সিং (২৭৬ কোটি ৩৪ লাখ রুপি), উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (২৪৪ কোটি রুপি), হাউসফুল ফোর (২০৫ কোটি ৪৯ লাখ রুপি), ভারত (১৯৭ কোটি ৩৪ লাখ রুপি), সাহো, গালি বয়, ছিচ্চোরে, সুপার থার্টি, মিশন মঙ্গল, কেসারি

আলোচিত ছবি

উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (ভিকি কৌশল ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: আদিত্য ধর), গালি বয় (রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট, পরিচালক: জোয়া আখতার), বালা (আয়ুষ্মান খুরানা, ভূমি পেডনেকর ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: অমর কৌশিক), আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), সান্ড কি আঁখ (ভূমি পেডনেকর ও তাপসী পান্নু, পরিচালক: তুষার হিরানন্দানি)।

প্রশংসিত ছবি

ফটোগ্রাফ (নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি ও সানিয়া মালহোত্রা, পরিচালক: রিতেশ বাত্রা), গালি বয় (রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট, পরিচালক: জোয়া আখতার), আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), ছিচ্চোরে (সুশান্ত সিং রাজপুত ও শ্রদ্ধা কাপুর, পরিচালক: নিতেশ তিওয়ারি), সঞ্চিরিয়া (সুশান্ত সিং রাজপুত ও ভূমি পেডনেকর, পরিচালক: অভিষেক চৌবে)

প্রশংসিত অভিনেতা-অভিনেত্রী

সোনম কাপুর ও দুলকার সালমান (দ্য জয়া ফ্যাক্টর), প্রতীক বাব্বর ও তাহির রাজ ভাসিন (ছিচ্চোরে), অক্ষয় খান্না (সেকশন ৩৭৫), সানিয়া মালহোত্রা (ফটোগ্রাফ), গুলশান দেবিয়াহ (মর্দ কো দর্দ নাহি হোতা), শ্বেতা ত্রিপাঠি (গন কেশ), শ্বেতা বসু প্রসাদ (দ্য তাশখন্দ ফাইলস), মোহিত রানা ও মানসী পারেখ গোহিল (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক), অন্নু কাপুর (ড্রিম গার্ল, দ্য ফকির অব ভেনিস), টনি লুক (বদলা), রাসিকা দুগ্গাল ও সুমিত কৌল (হামিদ), সোহম মজুমদার (কবির সিং), মনোজ পাহওয়া ও কুমুদ মিশ্র (আর্টিক্যাল ফিফটিন), সুরজ পাঞ্চোলি (স্যাটেলাইট শঙ্কর), আথিয়া শেঠি (মতিচোর চাকনাচোর), বিশাল জেথোয়া (মারদানি টু)।

সত্যি ঘটনা অবলম্বনে

১. গণিতবিদ আনন্দ কুমারের বায়োপিক ‘সুপার থার্টি’ (হৃতিক রোশন ও ম্রুনাল ঠাকুর, পরিচালক: বিকাশ বেহেল)।

২. ২০১৬ সালে পাকিস্তানসংলগ্ন কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ে ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ (ভিকি কৌশল ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: আদিত্য ধর)।

৩. ভারতের ১৩তম প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বায়োপিক ‘দি অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ (অনুপম খের ও অক্ষয় খান্না, পরিচালক: বিজয় রত্নাকর গুট্টে)।

৪. ‘থাকরে’ (নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি ও অমৃতা রাও, পরিচালক: অভিজিৎ পানসে)।

৫. ১৮৯৭ সালে সারাগারহি যুদ্ধে দশ হাজার আফগান সৈন্যের বিরুদ্ধে ২১ জন শিখ সৈন্যের যুদ্ধকে ঘিরে ‘কেসারি’ (অক্ষয় কুমার ও পরিণীতি চোপড়া, পরিচালক: অনুরাগ সিং)।

৬. ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের জীবন অবলম্বনে ‘মিশন মঙ্গল’ (অক্ষয় কুমার, বিদ্যা বালান, সোনাক্ষী সিনহা, তাপসী পান্নু)।

৭. শার্পশুটার চান্দ্রো ও প্রকাশি তোমরের বায়োপিক ‘সান্ড কি আঁখ’ (ভূমি পেডনেকর ও তাপসী পান্নু, পরিচালক: তুষার হিরানন্দানি)।

৮. ১৮ বছরের কিশোরী আয়শা চৌধুরীর বায়োপিক ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’ (ফারহান আখতার, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও জায়রা ওয়াসিম, পরিচালক: সোনালি বোস)।

৯. ২০০৮ সালে দিল্লির জামিয়া নগরের বাটলা হাউসে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধকে ঘিরে ‘বাটলা হাউস’ (জন আব্রাহাম ও ম্রুনাল ঠাকুর, পরিচালক: নিখিল আদভানি)।

১০. ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে ‘পানিপথ’ (অর্জুন কাপুর ও কৃতি স্যানন, পরিচালক: আশুতোষ গোয়াড়িকর)।

১১. ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু অবলম্বনে ‘দি তাশখন্দ ফাইলস’ (মিঠুন চক্রবর্তী, নাসিরুদ্দিন শাহ ও শ্বেতা বসু প্রসাদ, পরিচালক: বিবেক অগ্নিহোত্রী)।

১২. ভারতীয় মুজাহিদীনের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসিন ভাটকালকে গ্রেফতারের কাহিনি ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড’ (অর্জুন কাপুর, পরিচালক: রাজকুমার গুপ্ত)।

প্রথাবিরোধী ছবি

আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া (কঙ্গনা রনৌত ও আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক: প্রকাশ কোভেলামুড়ি), বালা (আয়ুষ্মান খুরানা, ভূমি পেডনেকর ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: অমর কৌশিক), উজড়া চামান (সানি সিং, পরিচালক: অভিষেক পাঠক), এক লাড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লাগা (সোনম কাপুর, রাজকুমার রাও, অনিল কাপুর ও জুহি চাওলা, পরিচালক: শেলি চোপড়া ধর), খান্দানি শাফাখানা (সোনাক্ষী সিনহা, পরিচালক: শিল্পী দাশগুপ্ত), সেকশন ৩৭৫ (অক্ষয় খান্না ও রিচা চাড্ডা, পরিচালক: অজয় বেহেল), মারদানি টু (রানি মুখার্জি, পরিচালক: গোপি পুত্রান), গন কেশ (শ্বেতা ত্রিপাঠি, পরিচালক: কাসিম খালো)।

বড় পর্দায় অনুপস্থিত

এ বছর বলিউডের কয়েকজন সুপারস্টার ও নতুন প্রজন্মের তারকার শূন্যতা ছিল চোখে পড়ার মতো, যাদের একটি ছবিও মুক্তি পায়নি বড় পর্দায়। এ তালিকায় আছেন শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর কাপুর, আনুশকা শর্মা, সারা আলি খান ও জানভি কাপুর।

জনপ্রিয় গান

আপনা টাইম আয়েগা (গালি বয়), পস্তাওগে (অরিজিৎ সিং), ও দিন (ছিচ্চোরে), বেখেয়ালি (কবির সিং), তেরি মিট্টি (কেসারি), তুঝে কিতনা চাহনে লাগে (কবির সিং), চাষনি (ভারত), ঘুঙরু (ওয়ার), কলঙ্ক (কলঙ্ক), ফকিরা ঘর আ জা (জংলী),ও সাকি সাকি (বাটলা হাউস), বাস্তে (ধানি ভানুশালি), দুনিয়া (লুকা চুপি), কোকা কোলা (লুকা চুপি), তেরা বান জাউঙ্গা (কবির সিং), সাইকো সাইয়া (সাহো)।

সেরা ৫ সংলাপ

আপনা টাইম আয়েগা (গালি বয়), হাউ’স দ্য জোশ (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক), আজ রাজা কা বেটা রাজা নাহি বানেগা, রাজা ওহি বানেগা জো হাকদার হোগা (সুপার থার্টি), উমিদ, হোপ দুনিয়া কে সাবসে বড়ি তাকাত হ্যায়… অর ইসি তাকাত নে হাম সাব কো জিন্দা রাখ হ্যায় (ভারত), তুমহারা রেজাল্ট ডিসাইড নাহি কারতা হ্যায় কি তুম লুজার তো কি নাহি…তুমহারি কোশিশ ডিসাইড কারতি হ্যায় (ছিচ্চোরে)।

প্রেম ও ছাড়াছাড়ি

এ বছর বলিউডে প্রেমের হাওয়ায় ভেসেছেন বেশকিছু তারকা। তারা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, কেউবা সম্পর্ক বদল করেছেন। একইভাবে ছাড়াছাড়ির ঘটনাও ছিল।

প্রেমে পড়েছেন রণবীর কাপুর-আলিয়া ভাট, মালাইকা অরোরা-অর্জুন কাপুর, ফারহান আখতার-শিবানি ডান্ডেকার, কার্তিক আরিয়ান-অনন্যা পাণ্ডে, সুশান্ত সিং রাজপুত-রিয়া চক্রবর্তী, আরবাজ খান-জর্জিয়া আন্দ্রিয়ানি, হুমা কুরেশি-পরিচালক মুদাসসার আজিজ, কৃতি খারবাদা-পুলকিত সম্রাট, অর্জুন রামপাল-গ্যাব্রিয়েলা ডিমিত্রিয়াডিস।

ছাড়াছাড়ি হয়েছে কার্তিক আরিয়া-সারা আলি খান, ইলিয়েনা ডি’ক্রুজ-অ্যান্ড্রু নিবোন, অর্জুন রামপাল-মেহের জেসিয়া, ইমরান খান-অবন্তিকা মালিক, দিয়া মির্জা-সাহিল সংঘ, ডিজাইনার মাসাবা গুপ্তা-প্রযোজক মধু মান্টেনা।

টুইটারে শীর্ষে

লাইক ও রিটুইট ভিত্তিতে অভিনেতাদের তালিকায় আছে যথাক্রমে অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, সালমান খান, শাহরুখ খান, তামিল তারকা বিজয়, এ. আর. রাহমান, রণবীর সিং, অজয় দেবগণ, মহেশ বাবু, অ্যাটলি। অভিনেত্রীদের মধ্যে শীর্ষে সোনাক্ষী সিনহা। এরপর আছেন যথাক্রমে আনুশকা শর্মা, লতা মঙ্গেশকর, প্রযোজক অর্চনা কল্পাতি, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, আলিয়া ভাট, কাজল আগারওয়াল, সানি লিওনি, মাধুরী দীক্ষিত, রাকুল সিং প্রীত।

সবচেয়ে টুইট হওয়া ছবি

গালি বয়, কবির সিং, মিশন মঙ্গল, কেসারি, হাউসফুল ফোর, উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, কলঙ্ক, সুপার থার্টি, দ্য তাশখন্দ ফাইলস, আর্টিক্যাল ফিফটিন।

গুগল সার্চে শীর্ষ ছবি

কবির সিং, সুপার থার্টি, মিশন মঙ্গল, গালি বয়, ওয়ার, হাউসফুল ফোর, উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক

আইএমডিবি’র দৃষ্টিতে সেরা ১০ ওয়েব সিরিজ

কোটা ফ্যাক্টরি, স্যাক্রেড গেমস টু, দ্য ফ্যামিলি ম্যান, দিল্লি ক্রাইম, হিউমারাসলি ইউরস, টিভিএফ ট্রিপলিং, মেড ইন হ্যাভেন, ফ্লেমস, ইনসাইড এজ, বার্ড অব ব্লাড।

   

ফিরে দেখা

১৫ মে: আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস



ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। পারিবারিক ঐহিত্য, মূল্যবোধ বন্ধনে তৈরি হয় একটি পরিবার। পরিবারের সে ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রবর্তন করা হয়, আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। পরিবার একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

মানুষ সামাজিক জীব। একা একা বেঁচে থাকা বা টিকে থাকা যায় না। সে কারণে দলবদ্ধভাবে বসবাস করতেই আদিম মানুষেরা গোষ্ঠীগতভাবে বাস করতো। সমাজ বিবর্তনের ধারায় পরে কৃষিকাজের উদ্ভব হলে পরিবারের ধারণা সৃষ্টি হয়। কৃষিকাজই ছিল তখন পরিবারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকা শক্তি। নারীর হাতেই প্রথম কৃষি বা চাষাবাদের উদ্ভব। সন্তান ধারণ এবং লালন-পালন থেকেই গোষ্ঠীগত ধারণা বিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি হয়, পরিবার প্রথার।

সমাজে আগে যৌথপরিবার ছিল। আত্মীয়-স্বজন, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, মাতামহ, পিতামহসহ সবাই মিলে গঠিত হতো একটি যৌথ পরিবার।

অষ্টাদশ শতকে শিল্পবিপ্লবের ফলে অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসে। কৃষিকাজের ধারার সঙ্গে যুক্ত হয়, কারখানার শ্রমদান। এর বিনিময়ে অর্থ উপার্জন শুরু হলে পরিবারের কাঠামোগত পরিবর্তন শুরু হয়।

কলকারখানাকে কেন্দ্র করে নগর উন্নয়নের ধারায় পরিবারের কাঠামোতে আঘাত এসে লাগে। পাশ্চাত্যে শুরু হয়, পরিবারের নতুন একটি ধারা।

সমাজে দুই ধারার পরিবারের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, যৌথ পরিবার, আরেকটি হচ্ছে- একক পরিবার। একক পরিবারের পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে মূল নগর উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে শিল্প-কারখানার বিস্তৃতি ও ধরন বদল।

গ্রাম ছেড়ে নগরে এসে কলকারখানায় কাজের সন্ধানে গিয়ে সেখানে থেকে যাওয়ার পর থেকে একক পরিবারের উৎপত্তি। গ্রামের পরিবার-পরিজন ছেড়ে এসে কাজ করতে এসে পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়। পরে ও পুঁজির শোষণের কারণে শ্রমের মূল্যের ঘাটতি থেকে একজনের পক্ষে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এখান থেকেই শুরু হয়, স্বামী ও স্ত্রীর একক সংসার। এরপরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় সন্তান ও স্বামী-স্ত্রীর একক পরিবার। এভাবেই মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যৌথ পরিবার থেকে। বিস্তৃতি ঘটে একক পরিবারের।

সমাজ বিজ্ঞানী সামনার ও কেলারের মতে- পরিবার হলো ক্ষুদ্র সামাজিক সংগঠন, যা কমপক্ষে দুই পুরুষকাল পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অন্যদিকে, নৃবিজ্ঞানী ম্যালিনোস্কির মতে, পরিবার হলো একটি গোষ্ঠী বা সংগঠন আর বিবাহ হলো সন্তান উৎপাদন ও পালনের একটি চুক্তি মাত্র।

সমাজবিজ্ঞানী ফলসমের মতে ‘একক’ পরিবারের অন্যতম তিনটি কারণ, যেমন স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজন ও চাহিদা সম্পর্কে সচেতনতা, অলাভজনক শিশুশ্রম এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার। এরই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর্থিক অনটন, ব্যক্তিত্বের সংঘাত এবং ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদের উন্মেষ।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং আমেরিকায় শিল্প বিপ্লব ঘটতে থাকে। শিল্প প্রসারের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর তরুণেরা আয়ের দিক ঝুঁকে পড়েন। এতে পরিবারের সঙ্গে তাদের বিচ্ছিন্নতা শুরু হয়। গড়ে ওঠে ছোট পরিবার। এভাবেই ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে যৌথ পরিবারের কাঠামো।

১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোতাবেক ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস হিসেবে ঘোষিত হয় আর ১৯৯৪ সালকে ‘আন্তর্জাতিক পরিবার বর্ষ’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।

এর আগে ১৯৯৫ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত ‘সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিশ্ব’- শীর্ষক সম্মেলনে সামাজিক বন্ধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বিশেষ করে পরিবারের ছোট বড় সব সদস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক অটুট এবং মূল্যবোধকে ধরে রাখা। বিশেষ করে শিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও বড়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব পোষণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এ বিষয়ে এক প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালে সামাজিক উন্নয়ন কমিশনের ১৯৮৩/২৩ নম্বর রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে পরিবারের গুরুত্বের ওপর সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এরপর অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের ১৯৮৫/২৯ নম্বর রেজ্যুলেশন ‘উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় পরিবার’ নামে সাধারণ অধিবেশনের ৪৪ নম্বর অধিবেশনে একটি সাময়িক আলোচনার প্রস্তাব আনা হয়। এতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি অনুরোধ করা হয় যেন বিষয়টি সরকার, আন্তঃসরকার, এনজিও এবং সর্বস্তরের জনগণের কাছে গুরুত্বসহকারে বিবেচিত হয়।

জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও অনুরোধের ধারাবাহিকতায় ১৯৮৯ সালের ৯ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের ৪৪/৮২ নম্বর রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে ১৯৯৪ সালকে আন্তর্জাতিক ‘পরিবার বর্ষ’ ঘোষণা করা হয়। প্রতি বছর ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালন করার উদ্দেশ্যে ১৯৯৩ সালের সাধারণ পরিষদে রেজ্যুলেশন এ/আরইএস/৪৭/২৩৭ গৃহীত হয়।

শহুরে সমাজে যৌথ পরিবারের গুরুত্ব কমে গেলেও দেশের গ্রামীণ সমাজে এখনো যৌথ পরিবারের অনেক গুরুত্ব রয়েছে।

;

ফিরে দেখা: ১৪ মে

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত পরিচালক মৃণাল সেনের জন্মদিন



ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক মৃণাল সেনের জন্ম ১৪ মে।

শৈশব ও শিক্ষা
১৯২৩ সালের ১৪ মে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুরের ঝিলটুলী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন মৃণাল সেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতায় চলে যান। সেখান থেকে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে পাস করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় ভর্তি হন।

মৃণাল সেনের বাবা দীনেশ সেন ছিলেন এক আইনজীবী। তিনি স্বদেশী, কংগ্রেসী ও বিপ্লবী বিপিনচন্দ্র পালের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু্ও ছিলেন। তার বাড়িতে স্বদেশী আন্দোলনের বিপ্লবীদের আনাগোনা ছিল। নেতাজী সুভাষ বসুও দুইবার তার বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন।

দীনেশ সেন নিজের গাঁটের টাকায় বিপ্লবীদের মামলা লড়তেন। কারাগার থেকে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করতেন। শুধু রাজনীতিবিদেরাই নন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম কবি উদদীনের মতো বিখ্যাত কবিরাও এসেছেন দীনেশ সেনের বাড়িতে।

৩০-এর দশকে মহাত্মা গান্ধীর আমরণ অনশনের সময় ফরিদপুরের আইনজীবীদের নিয়ে আদালত বর্জন করেছিলেন দীনেশ সেন। এজন্য জেলা প্রশাসক তার কাছে কৈফিয়ত চাইলে দীনেশ সেন সেই কৈফিয়তকে পাত্তাও দেননি। এজন্য তাকে ব্রিটিশ সরকারের শাস্তিও পেতে হয়েছিল।

বাম রাজনৈতিক চিন্তাধারায় যুক্ত হওয়া
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই মৃণাল সেন কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সঙ্গে যুক্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে মৃণাল সেন সাংবাদিকতা, ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ এবং পরে চলচ্চিত্রে শব্দ কলাকুশলী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ৪০ দশকে বামচিন্তার সংস্কৃতিক সংগঠন আইপিটিএর (ইন্ডিয়ান পিপ্‌লস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন) সঙ্গে যুক্ত হয়ে গণমানুষের কাছাকাছি আসেন তিনি।

ছবির শুটিংয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন পরিচালক মৃণাল সেন, ছবি- সংগৃহীত

সিনেমা পরিচালনা

মৃণাল সেনের সিনেমা পরিচালনা সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে বলা হয়, ১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি ‘রাত-ভোর’ মুক্তি পায়। এই ছবিটি তেমন একটা ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি। তবে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নিচে’ পরিচিতি এনে দেয়। আর তৃতীয় ছায়াছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ মুক্তি পেলে মৃণাল সেন দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পান।
১৯৬৯ সালে তাঁর পরিচালিত ছবি ‘ভুবন সোম’ মুক্তি পায়। এই ছবিতে বিখ্যাত অভিনেতা উৎপল দত্ত অভিনয় করেন। অনেকের মতে, মৃণাল সেনের এটিই শ্রেষ্ঠ ছবি।

তাঁর কলকাতা ট্রিলজি অর্থাৎ ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘কলকাতা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) ছবি তিনটির মাধ্যমে মৃণাল সেন তৎকালীন কলকাতার অস্থির রাজনৈতিক অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন।

মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন তাঁর খুবই প্রশংসিত দুটি ছবি ‘একদিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পায়। এরপর ১৯৮০ সালে তাঁর আরেকটি ছবি মুক্তি পায় ‘আকালের সন্ধানে’। এই ছবিতে দেখানো হয়, চলচ্চিত্রের এক দল কলাকুশলী এক গ্রামে গিয়ে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের ওপর প্রামাণ্য চিত্র তৈরি করতে যায়। কীভাবে ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষের কাল্পনিক কাহিনী মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সেই গ্রামের সাধারণ মানুষদের সঙ্গে, সেটাই ছিল এই চলচ্চিত্রের সারমর্ম। ‘আকালের সন্ধানে’ ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসেবে রূপার ভালুক জয় করে।

মৃণাল সেনের পরবর্তীকালের ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ‘মহাপৃথিবী’ (১৯৯২) এবং ‘অন্তরীণ’ (১৯৯৪)। মৃণাল সেন বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, উড়িয়া ও তেলুগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ১৯৬৬ সালে উড়িয়া ভাষায় নির্মাণ করেন ‘মাটির মনীষ’, যা কালীন্দিচরণ পাণিগ্রাহীর গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়। ১৯৬৯ সালে বনফুলের কাহিনী অবলম্বনে হিন্দি ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ভুবন সোম’।

১৯৭৭ সালে প্রেমচন্দের গল্প অবলম্বনে তেলুগু ভাষায় নির্মাণ করেন ‘ওকা উরি কথা’। ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করেন ‘জেনেসিস’, যা হিন্দি, ফরাসি ও ইংরেজি তিনটি ভাষায় তৈরি হয়।
পুরস্কার অর্জন
ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’, ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘দাদাসাহেব ফালকে’ অর্জন করেন মৃণাল সেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁকে ‘অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ’ সম্মানে ভূষিত করেন। শুধু তাই নয়, ফরাসি সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘কমান্ডার অব দ্য আর্টস অ্যান্ড লেটারস’-এ ভূষিত হন প্রখ্যাত এই চলচ্চিলকার মৃণাল সেন।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ফিল্মের প্রেসিডেন্ট পদেও দায়িত্ব পালনে সুযোগ ঘটে মৃণাল সেনের। তাঁর স্ত্রী গীতার মৃত্যুতে তার জীবনে ছন্দপতন ঘটে। আর এ কারণেই ২০১৭ সালে স্ত্রী গীতা সেনের মৃত্যুর এক বছর পরেই ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে মারা যান বাংলা চলচ্চিত্রের এই প্রখ্যাত পরিচালক মৃণাল সেন।

;

এই দিনে: ১৩ মে

নাট্যকার, সংগঠক, পরিচালক বাদল সরকারের মৃত্যু



প্রতাপ সি সাহা
ছবি: সংগৃহীত, নাট্যকার, নির্দেশক, পরিচালক বাদল সরকার

ছবি: সংগৃহীত, নাট্যকার, নির্দেশক, পরিচালক বাদল সরকার

  • Font increase
  • Font Decrease

সত্তরের দশকের উত্তাল সময়ের শুরু থেকে ‘থার্ড থিয়েটার’ নামক ভিন্ন এক নাট্যআঙ্গিক ও দর্শনের উদ্গাতা ছিলেন বাদল সরকার। বাংলা নাটকের জগতে ‘থার্ড থিয়েটার’ নামে নতুন এক আঙ্গিকের সূচনা করে অমর হয়ে আছেন তিনি।

১৯২৫ সালের ১৫ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বাদল সরকার। তাঁর প্রকৃত নাম- সুধীন্দ্র সরকার। স্কুল ও কলেজ জীবনে তাঁর এই নামই বহাল ছিল। পরবর্তীতে পরিচিত হয়েছিলেন বাদল সরকার নামে।

স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে ভর্তি হন বাদল সরকার। পেশাগত দিক থেকে তিনি ছিলেন টাউন প্ল্যানার। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার পর প্রথমে মাইথন, পরে কোলকাতায় চাকরি করেন।

তাঁর জীবন কাহিনি সম্পর্কে এক ব্লগে নূর মোহাম্মদ নুরু লেখেন- শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বাদল সরকারের অন্যতম সহপাঠী ছিলেন সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যাল। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর টাউন প্ল্যানার হিসেবে কাজ করেছেন ভারতে ও বিভিন্ন দেশে।

ইংল্যান্ড ও নাইজেরিয়াতে পেশার কাজে যান। আবার সাহিত্য-নাটকের প্রতি আগ্রহের জন্য বৃদ্ধ বয়সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ লিটারেচার ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন।

১৯৯২ সালে সেখান থেকে এ বিষয়ে এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৫৬ সালে বাদল সরকার প্রথম নাটক ‘সলিউশন এক্স’ লেখেন। তবে এটি মৌলিক ছিল না। নাটকটি লেখা হয়েছিল ‘মাঙ্কি বিজনেস’ সিনেমা অবলম্বনে।

থার্ড থিয়েটারে নিজে অভিনয় করছেন নাট্যকার, নির্দেশক, পরিচালক বাদল সরকার, ছবি- সংগৃহীত

সর্বভারতীয় খ্যাতি যে নাটকের মাধ্যমে

তার পরে বাদলবাবু আরো কয়েকটি মৌলিক নাটক লিখলেও তাঁকে সর্বভারতীয় খ্যাতি এনে দেয়, ষাটের দশকের মাঝামাঝি ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ নাটকটি। এই নাটকটি ‘বহুরূপী’ পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর তাঁর রচিত ‘বাকী ইতিহাস’ ‘প্রলাপ’, ‘পাগলা ঘোড়া’ ‘শেষ নাই’ সবকটিই শম্ভু মিত্রের নেতৃত্বাধীন বহুরূপী গোষ্ঠীর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয়। তবে নিজের নাট্যদল ‘শতাব্দী’ গঠনের পর তিনি একেবারে কলকাতার কার্জন পার্কে খোলা আকাশের নিচে নাটক করা শুরু করেন।

থার্ড থিয়েটারের আঙ্গিক, তার প্রয়োজনীয়তা, পাশ্চাত্যে প্রবর্তিত থার্ড থিয়েটারকে বাদল সরকার বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় করেছেন। আসলে বাদল সরকারের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় থার্ড থিয়েটারের উৎপত্তি সামন্ত সমাজের সেই গুটিকয়েক শিক্ষিতের দ্বারা, যারা ভূস্বামী বা কৃষক কোনো শ্রেণির মধ্যে পড়ে না।

অনেক সময় তাঁর নাটকে কোনো প্লট থাকে না। চরিত্রের সুনির্দিষ্ট কোনো চরিত্রায়ন নেই। ফলে বাধ্যবাধতকতা নেই সুনিদিষ্ট পোশাকেরও। অভিনেতা–অভিনেত্রীরা ইচ্ছেমতোন চরিত্র বাছাই করে নেন। নাটকের মাঝখানে চরিত্র বদলেরও স্বাধীনতা থাকে। প্রয়োজন বুঝলে দর্শকেরাও অভিনয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ঠিক অংশগ্রহণ সেভাবে আক্ষরিক অর্থে নয়, খুব জোরালোভাবে কিন্তু দর্শক ঢুকে পড়েন কিছু একটা করতে, যা অনেকটা সিনেমার ‘এক্সট্রা’দের মতো।

বাদল সরকারের থার্ড থিয়েটার আন্দোলন ছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধী তথা রাষ্ট্রবিরোধী। শহরাঞ্চলকে ভিত্তি করে তাঁর ‘ভোমা’ নাটকে পাওয়া যায় নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন সংগ্রামের প্রতিফলন। আবার ‘মিছিল’ নাটকে উঠে আসে ক্ষুব্ধ মানুষের প্রতিবাদ আর তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে রাষ্ট্রের ভূমিকা ৷

১৯৫৭-৫৯ লন্ডনে ও ৬৩-৬৪ সালে ফ্রান্সে থাকার সময় প্রচুর ইউরোপীয় থিয়েটার দেখার সুযোগ পান। এরপর নাইজেরিয়ায় কর্মসূত্রে থাকার সময় অনেকগুলো নাটক লেখেন। ১৯৬৭ সাল থেকে টাউন প্ল্যানিংয়ের চাকরি নিয়ে কলকাতায় স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন। বেশি বয়সে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করে এমএ ডিগ্রিও সম্পন্ন করেন।

সরস ও ব্যঙ্গাত্মক রচনার মধ্য দিয়ে তাঁর নাটক রচনার শুরু। ‘বড় পিসিমা’, ‘রাম শ্যাম যদু’, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ প্রভৃতি তাঁর কৌতুক নাটকগুলির মধ্যে অন্যতম। নাটকগুলি ‘রঙ্গনাট্য সংকলন’ নামক গ্রন্থে সংকলিত হয়। কৌতুক নাটক ছেড়ে তিনি সমসাময়িক পরিস্থিতি ও জীবনদর্শনের ওপর ভিত্তি করে নাটক রচনা শুরু করেন। নাটক লেখা, প্রযোজনার কাজ ছাড়াও দেশবিদেশ ঘুরে বেড়ানোতে অদম্য উৎসাহ ছিল তাঁর। বিশ্বভাষা ‘এস্পারেন্তো’ নিয়ে ছিল তাঁর বিশেষ আগ্রহ। এ নিয়ে কয়েকটি বইও লিখেছেন তিনি। শেষ কয়েক বছরে আত্মজীবনীমূলক রচনা ‘পুরানো কাসুন্দী’-তে বিস্তারিতভাবে নাটক দেখা, করা, নাটক নিয়ে নানা ভাবনা চিন্তার কথা সরসভাবে লিখে গেছেন বাদল সরকার।

এই নাট্যকারের জীবনের শ্রেষ্ঠ রচনা ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’ (১৯৬৩) এই ঘরানার নাটকের অন্তর্ভুক্ত। চিন-ভারত যুদ্ধ এবং কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এই নাটকের মৌলিক বিষয়। ‘সারারাত্তির’, ‘বাকি ইতিহাস’, ‘প্রলাপ’, পাগলা ঘোড়া’ প্রভৃতি নাটকের মধ্য দিয়ে তিনি সমকালীন চিত্রকে নিখুঁত দক্ষতায় প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন।

বাদল সরকারের নাটকের মধ্যে সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের রূপরেখাটিও বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের ঝড়, সত্তরের দশককে মুক্তির দশক করে তোলার স্বপ্ন, শ্রমিক-মালিক শ্রেণির অনিবার্য সংঘাত প্রভৃতি তাঁর নাটকের অন্তর্গত বিষয়।

তিনি নিজে মন্তব্য করেন, ‘হাসবার ক্ষমতা চলে যাচ্ছে আমার। আজগুবি সৃষ্টিছাড়া হয়ে উঠছে লেখা। আর সবচেয়ে মারাত্মক, এতো রূপক, এতো আড়াল সত্ত্বেও সত্যি মানুষগুলো বড় বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে’।

প্রথমদিকে, বদ্ধ ঘরের অঙ্গনেই ‘থার্ড থিয়েটার’-এর কাজ বাদলবাবুর নাট্যদল ‘শতাব্দী’ শুরু করলেও পরে খোলা মাঠে অভিনয় শুরু হয়। আশির দশকে গ্রাম পরিক্রমার মধ্য দিয়ে শহর মফস্বলে আটকে থাকা নাট্যচর্চার পরিধিকে প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলতে থাকে। সেট আলোর উপকরণগুলিকে ‘থার্ড থিয়েটার’ দর্শকের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগে অনাবশ্যক বলে মনে করে, অভিনয়ে শরীর, কণ্ঠকে নানাভাবে ব্যবহার করে তাকে জীবন্ত করার ভাবনায় এই নাট্যকলা উদ্বুদ্ধ।

ব্যয়বহুল উপকরণের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার ফলেই এই থিয়েটার করা সম্ভবপর হয়ে উঠেছে সস্তায়, কোনো টিকিট বিক্রি, বেসরকারি বা সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভর না করেই।

‘থার্ড থিয়েটার’ এই অর্থে হয়ে উঠতে পেরেছে ‘ফ্রি থিয়েটার’ও। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থেকেও মেহনতি সাধারণ মানুষের সংকট আর লড়াইয়ের কথাকে বারবার তুলে এনে এই থিয়েটার ‘থিয়েটারের এক নতুন রাজনৈতিক দর্শন’ তৈরি করতে পেরেছে।

থার্ড থিয়েটারের জন্যই লেখা হয়েছে, সত্তর দশক ও তার পরবর্তী বাদলবাবুর বিখ্যাত নাটকগুলো। সাগিনা মাহাতো, স্পার্টাকাস, মিছিল, ভোমা, সুখপাঠ্য ভারতের ইতিহাস, হট্টমালার ওপারে, গণ্ডী, একটি হত্যার নাট্যকথা, নদীতে- এরা কোথাও প্রচলিত রাজনৈতিক আধিপত্যের তীব্র সমালোচনাতে উচ্চকিত। কোথাও মানুষের দাঁতে দাঁত চাপা লড়াইয়ের সঙ্গী, কোথাও নতুন মানবিক সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার মরমি স্বপ্নে বিভোর!

থার্ড থিয়েটারের জন্যই লেখা তাঁর বিখ্যাত নাটকগুলি হচ্ছে- ‘সাগিনা মাহাত’, ‘স্পারটাকাস’, ‘মিছিল’, ‘হট্টমালার ওপারে’, ‘গণ্ডী’ কোথাও প্রচলিত রাজনৈতিক অধিপত্যের তীব্র সমালোচনায় উচ্চকিত, কোথাও মানুষের অদম্য লড়াইয়ের সঙ্গী, কোথাও আবার নতুন মানবিক সাম্য ও সমাজ প্রতিষ্ঠার মরমি স্বপ্নে বিভোর।

বাদল সরকারের জীবন কাহিনি নিয়ে লেখা ব্লগে নূর মোহাম্মদ নুরু বলেন, ৭২ বছর বয়সেও অভিনয় করেছেন বাদল সরকার। ‘ভোমা’ নাটকে এ বৃদ্ধ বয়সেও দাপটে অভিনয় করেছেন ঢাকায়।

১৯৬৮ সালে সঙ্গীত নাটক আকাডেমি এবং ১৯৭২ সালে ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব পান তিনি। ১৯৯৭ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশিপ থেকে ভারত সরকারের সর্ব্বোচ্চ পুরষ্কার ‘রত্ন সদস্য’ পদকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।

তাঁর নাটক সবসময়ই বহুল আলোচিত, অভিনীত হলেও তিনি শেষ দুই দশক প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন এই নাট্যকার। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালের ১৩ মে কলকাতাতে মৃত্যু হয় বাদল সরকারের।

প্রতাপ সি সাহা: শিক্ষক ও সাহিত্য লেখক

;

২০২৩ সাল: রংপুরের যত আলোচিত ঘটনা



বর্ণালী জামান,স্টাফ করেসপন্ডেট, রংপুর
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘটনাবহুল আরেকটি বছর শেষ করতে যাচ্ছে রংপুরবাসী। ২০২৩-এ নানান ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকছে এ অঞ্চলের মানুষ। এ বছরের কয়েকটি ঘটনা দেশবাসীকেও নাড়া দিয়েছে।

সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরের গণমহাসাবেশে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা। এ বছরেই রংপুরে গ্যাস এসেছে। ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রংপুরে সতর্কতা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আলোচিত এসব ঘটনার কয়েকটি তুলে ধরা হলো-

২২ মার্চ: জেলা প্রশাসক 'স্যার' ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি' হাতে লেখা এমন প্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে বসে বেগম রোকেয়া শ্বিবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন তিনি।

এপ্রিল: গ্রীষ্মের তাপদাহে পুড়ে রংপুর। এবাররই প্রথম গরমে অতিষ্ঠ মানুষদের মধ্যে পানির বোতল বিতরণ করা হয়েছে।

১ জুন: নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে এ দিন ৫ মিনিট স্তব্ধ থাকে রংপুর। এ কর্মসূচি পালনে সর্বস্তরের মানুষ সাড়া দেয়।

২ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে অংশ নেন। তিনি ২৭ টি প্রকল্পের উদ্ধোধন করেন। সেই সাথে তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তায়নের ঘোষণা দেন।

১৯ সেপ্টেম্বর: এ দিনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের এর বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়। একই দিনে রংপুর বিনোদন চিড়িয়াখানায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রোমিও-জুলিয়েটকে আনা হয়েছে।। বিকালে বিশেষ ব্যবস্থায় রোমিও-জুলিয়েটকে নিয়ে আসা হয়।

২৬ সেপ্টেম্বর: মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহিদ শংকু সমজদারের মা দীপালী সমজদার মারা যান। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ভোরে নগরীর কামাল কাছনায় নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

১ অক্টোবর: এদিনে নগরীতে ৩৫ টাকা কেজি দরে এ খোলাবাজারে আলু বিক্রি করা শুরু হয়। কাচারীবাজার এলাকায় খোলা ট্রাকে এই বিক্রি কার্যক্রম চলে।

৪ অক্টোবর: ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রংপুরে সতর্কতা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর পরের দিন টানা বর্ষণে বন্যায় প্লাবিত হয় জেলার বিভিন্ন এলাকা।

১৪ নভেম্বর: রংপুরের মানুষ বছরের পর বছর থেকে গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করে আসছিলেন। অবশেষে এ দিনে উন্নয়ের ডানা মিলে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আসে। এদিন সকালে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাস সঞ্চালন লাইনের উদ্বোধন করেন। তারপর পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জেলার পীরগঞ্জে গ্যাস স্টেশন প্রাঙ্গণে ফলক উন্মোচন করেন।

 

;