মা দিবস

ছেলে রাখে না সাথে, তবু মায়ের দোয়া ছেলের জন্যই



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
শাহেনা আক্তার, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ছবি: বার্তা২৪.কম

শাহেনা আক্তার, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনী পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী শাহেনা আক্তার। বয়স প্রায় ৫৫ বছর। অভাবের তাড়নায় গত ৩০ বছর ধরে তিনি সংসারে জন্য কাজ করছেন। এই বয়সেও প্রতিরাতে কাজ করে যান তিনি। স্বামী মারা যাওয়ার পরে একমাত্র সন্তানই অবলম্বন হওয়ার কথা থাকলেও ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকেন। পাশাপাশি দুই ঘরে বসবাস করলেও আলাদা রান্না করে খান মা-ছেলে। তবু ছেলের জন্য সব করছেন, এমনকি জায়গাও কিনে রেখেছেন। তার আশা একটাই, সন্তান যেন ভালো থাকে। বলছেন, আমি তাকে (ছেলেকে) বিরক্ত করি না। নিজের অদম্য ইচ্ছায় এখনও কাজ করে যাচ্ছেন এ সংগ্রামী 'মা'।

রোববার (১২ মে) আন্তর্জাতিক মা দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। মা দিবসে বার্তা২৪.কমের সাথে আলাপকালে নিজের জীবনের আক্ষেপসহ একাকী জীবনের পথচলার নানা কথা জানান শাহেনা আক্তার।

প্রতিদিন রাত ১১টা বাজলেই কাজ শুরু হয়ে যায় শাহেনা আক্তারের। শহরের ট্রাংক রোড দোয়েল চত্বর থেকে জেল রোড অবধি রাস্তার দুই পাশ পরিষ্কারের কাজ করেন তিনি। তার একমাত্র ছেলে পৌরসভায় চাকরি করে। তবে বিয়ের পর থেকে মায়ের সাথে থাকে না। মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্বও নেয়নি ছেলে। স্বামীহারা এ নারীর আশা এখনো মারা যাওয়ার পর এক ছেলেই তার কবরে মাটি দেবে।

মা দিবসে কথা হয় শাহেনা আক্তারের সাথে। তুলে ধরেন তিনি জীবন-সংগ্রামের নানা গল্প।

নিজের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে এ মা বলেন, আমার পরিবারে আমার ছেলে আর ছেলের বউ আছে এবং তাদের ৩ সন্তান রয়েছে। আমার স্বামী ৭ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ছেলের ভবিষ্যতের জন্য আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজন পৌরসভায় চাকুরি নিয়েছিলাম, আমি এখনও করছি। ছেলে বড় হওয়ার পর সেও কাজ করে। তবে এখন ছেলে আমাকে সাথে রাখে না। বিয়ের পর তার বউ রাখতে দেয় না। ছেলের বউয়ের ব্যবহার খারাপ, আমাকে সহ্য করে না। তাই আমি আলাদা থাকি। নিজে উপার্জন করে খাই।

নিজের জীবনে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পৌরসভা থেকে আমি প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা পাই। দুইটা রোড এ আমি ময়লা পরিষ্কার করি। কাজ শেষ করতে কোনদিন বেশি সময় লাগে, কোনদিন কম লাগে। জেল রোড থেকে ট্রাংক রোড দোয়েল চত্বরের দুইপাশ আমি পরিষ্কার করি। এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে। এরমধ্যে মেয়র সাহেব, দোকানদাররা আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করে। তা দিয়ে চলে যায়।


বৃদ্ধ বয়সে ছেলে পাশে না থাকার আক্ষেপ করে এ মা বলেন, আমার বাসা সহদেবপুর। আমার ঘরের পাশেই তার ঘর। মাঝেমধ্যে কথা হয়। নাতি-নাতনিরা কাছে আসে, আদর করি; ভালো লাগে। মনে আক্ষেপ থাকলেও তাদের জন্য দোয়া করি, তারা যাতে ভালো থাকে। আমার জন্য বিরক্ত যাতে না হয় সেটা আমি খেয়াল রাখি।

তিনি বলেন, খেয়ে সে বাঁচুক, আমি মারা গেলে মাটি দেবে, সে আশায় বসে আছি। বউ-ছেলে নিয়ে সে সুখে থাকুক এটাই আমার চাওয়া। আমি তার জন্য ৯ ডেসিমেল জায়গা নিয়ে রাখছি। আমি মারা গেলে সে এগুলো পাবে।

শাহেনা আক্তার বলেন, ছেলের বউয়ের কার্যকলাপে ছেলে অতিষ্ঠ হয়ে আমাকে আলাদা রাখছে। বউ আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। তার ৩ ছেলে আছে। তারা আসে আমার কাছে। তাদের নিয়ে সময় কেটে যায়। ছেলের খারাপ লাগে কিনা জানি না, তবে আমার খারাপ লাগলেও সেটা প্রকাশ করি না। গরিব ঘরের সন্তান হলেও আমার এখন সবকিছু আছে। কর্ম করে সব জোগাড় করেছি। শুধু ছেলে আমার পাশে নেই।

বৃদ্ধ বয়সে ছেলে পাশে নেই এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছেলে আমাকে দেখে না এটা খারাপ লাগে না যে তা না। সব মাই তো আশা করে সন্তান তার খেয়াল রাখবে। ভালোভাবে রাখবে। এখন আমার স্বামী নেই, একা মানুষ, আলাদা ঘরে থাকি। ছেলের সাথে থাকলে জীবনটা আরও সুন্দরভাবে যেতে পারত। এখন কী করব। কাজ করতে হয়। কাজ না করলে খাব কীভাবে। বুড়া বয়সে আমাকে খাওয়াবে কে?

তিনি বলেন, আমি কারও বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। আমি মারা গেলেও যাতে আমার ছেলে ভালো থাকে আমার দোয়া এটাই। আমাকে এখন ছেলে ফিরিয়ে নেবে, এ আশা আমি করি না। আমি নিজে কর্ম করে চলতে পারছি, এটাই আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া। আমি এখন কর্ম করতে পারছি, যখন আরও বয়স হয়ে যাবে তখন তো পারব না। এখন কিছু আয় উপার্জন করে রাখলে ভবিষ্যতে কাউকে বললেও অন্তত ভাত দুইটা আমাকে রান্না করে দেবে। তবে টাকা না থাকলে তো ভিক্ষা করে খেতে হবে। সেটা আমি চাই না।

সব ছেলের উদ্দেশে এই মা বলেন, আমার মতো এমন জীবন কারও না হোক। সকল মায়ের কাছে তার সন্তান থাকুক, এ দোয়া করি। সন্তানরা মায়ের খেয়াল রাখলে মায়ের আয় রোজগার করতেও শান্তি লাগে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়'র সভাপতি মঞ্জিলা আক্তার মিমি বলেন, অনেক মায়ের সন্ধান আমরা পাই যাদেরকে সন্তানরা দেখভাল করে না। বৃদ্ধবয়সে একজন মায়ের চাওয়া একটাই থাকে তার সন্তানরা তাকে ভালো রাখবে। হাসিখুশি ভাবে শেষ জীবনটা কাটাতে চায়। কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বহু মা সংগ্রামের জীবন পার করছেন, কেউ অভাবে কেউবা বাধ্য হয়ে। এসব মানুষগুলোর বিষয়ে সকল স্তরের মানুষদের চিন্তা করা উচিত, বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে কিংবা সমাজ ব্যবস্থায় মাকে রাখার বাধ্যতামূলক করে দেওয়া গেলে মায়েরা ভালো থাকবে।

শাহেনা আক্তারের মতো এমন জীবন সমাজে অনেক মায়ের রয়েছে। আন্তর্জাতিক মা দিবসে পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। সন্তানরা মায়ের যত্ন নিক, আদরে গড়ে তোলা সন্তান বিপথে না গিয়ে মায়ের সেবা যত্ন করুক, মাকে ভালোবেসে সম্মানে নিজের পাশেই রাখুক, এমনটাই প্রত্যাশা সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের।

   

রাস্তায় ওঠা বন্যার পানিতেই জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা



মশাহিদ আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা / ছবি: বার্তা২৪

জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিকে বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বাসা-বাড়ি। প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে একাকার। কারো ঘরে ভেতরে হাঁটু পানি আর কারো বাসার সামনে পানি। ডুবছে খেলার মাঠ। ঘর থেকে বের হলেই থৈ-থৈ পানি। যাতায়াতে অসুবিধার শেষ নেই। সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কর্তা-গিন্নি।
তবে এতসবের মধ্যেও হৈ-হুল্লার নেশায় মগ্ন একদল কিশোর। বাস্তবতার কঠিন মারপ্যাচ বোঝার সময় কি আর তাদের আছে! দুরন্তপনার বয়সে তাই অপার সরলতার কারণে সংকটেও আনন্দে উল্লাসিত তারা। আগে তাও পুকুর অবধি গিয়ে তারপর দলবেঁধে হতো ঝাপাঝাপি। এখন তো ঘরের দোরগোড়ায় পানি। আর ঠেকায় কে? তাই পাড়ার বন্ধুদের সাথে রাস্তায় জলখেলিতে ব্যস্ত তারা।

বাবা মায়ের মাথায় যখন হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন ছোট শিশুরা বন্যার পানিতে যে যার মতো করে খেলে আনন্দে মাতোয়ারা। তাদের মুখে নেই কোনো চিন্তা ছাপ। নেই কোনো তাড়াও। পানির কারণে স্কুল যেতেও তো মানা। তাই নিজেদের বেশ স্বাধীন স্বাধীন লাগছে। বন্যার পানিতে লাফ ঝাঁপ, রিকশা-অটোরিকশা কিংবা ভ্যান গাড়ি রাস্তা দিয়ে গেলেই লাফিয়ে ধরে যাচ্ছে বহুদূর। পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটতে না পারলেও অভিজাত এলাকার রাস্তাটাই যেন এখন তাদের সব।

উপশহর সি-ব্লকে শিশুরা খেলছে / ছবি: বার্তা২৪

এমন দূরন্ত শিশুদের দেখা যায়, সিলেট নগরীর উপশহর সি-ব্লক এলাকায়। আশেপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা যুক্ত নোংরা পানিতে ২০-২৫ জন শিশু করছে খেলাধুলা। কেউবা নাচছে পানিতে, আর কেউ জলকেলিতে মগ্ন। এমন দৃশ্যটি দেখতে খুবই নয়নাভিরাম। দেখলে যেকোনো কারোরই ছেলেবেলার স্মৃতি ভেসে উঠতে পারে। স্মৃতি ভেসে উঠার কথাও বটে!

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সবাই উপশহরের বিভিন্ন কলোনিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। কেউ স্কুলে পড়ালেখা করে। আর কেউ কেউ অভাবের সংসারে সাহায্য করতে কাজ খুঁজছে এবং দোকানাপাটে সহকারীর কাজ করছে।

শাহীন নামে ১১ বছরের একজনের সঙ্গে কথা হয়। সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সি-ব্লক এলাকায় থাকে। তাদের ঘরে পানি উঠেছে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে সকাল থেকে এখানে খেলাধুলা করছে।

সাড়ে ৯ বছরের রাজীব। উপশহর জে-ব্লক কলোনিতে তাদের বাসা। বাসায় পানি উঠলেও, ভয়ে সেখানে না সাঁতরে সি ব্লকে আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সাঁতার কাটছে। এই পানিতে গোসল করে তার বেশ ভালো লাগছে বলে জানায়।

জানা যায়, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের ৭টি উপজেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলাগুলোর পাশাপাশি এবার সুরমা নদীর পানি সিলেট সিটি করপোরেশনের নিম্নাঞ্চল এলাকায় ঢুকে পড়ায় বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বাসা-বাড়িতে ও রাস্তায় চলে উঠায় উপশহর, সুবহানিঘাট, যতরপুর, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার, মাছিমপুর, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
শনিবার (১ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, বিকাল ৩ টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার এবং জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে অমলসিদ পয়েন্টে ১৮৯ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সিলেট নগরীতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ইতিমধ্যে ৪ হাজার পরিবার। তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।

;

'রিমাল'-এর ধ্বংসযজ্ঞ সয়ে কেমন আছে সুন্দরবন!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘণ্টাপ্রতি ৮০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি বেগে ধেয়ে আসছিল ঘূর্ণিঝড় রিমাল। সাগরে ঢেউয়ের উত্তাল রূপ এবং প্রচণ্ড শক্তিশালী বাতাসের ধাক্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েই উপকূলীয় এলাকার মানুষজন। শনিবার (২৫ মে) থেকেই পাওয়া পূর্বাভাসে মানুষ বেশ বুঝতে পারছিল, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনবে 'রিমাল'।

সৌভাগ্যবশত, বাংলাদেশকে বেষ্টিত করেছে আমাদের সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় নোনাপানি উপকূলের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন অতিক্রম করে যাওয়ার সময় রিমালের বেগ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপের দণ্ড নিজ মাথায় পেতে নিয়েছে সুন্দরবন। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বনের অভ্যন্তরীণ চিত্র। পানিরে আধিক্যে ছেয়ে রয়েছে পুরো বন। ভাঙা-আধভাঙা গাছ লুটিয়ে পড়ে আছে। মিঠাপানির পুকুরে সমুদ্রের নোনাজল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন অফিসের অধিকাংশ টহল ফাঁড়ি ও বোট এবং সেইসঙ্গে যাতায়োতের পোল। ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে চালাঘরের টিন, দরজা, জানালা, সোলার প্যানেলসহ অবকাঠামোর বিভিন্ন অংশ।

এমনকী রিমালের ক্ষতির মূল্য দিতে হয়েছে বনে বসবাসকারী প্রাণীদেরও। ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে কেবল মানুষ নয়, প্রাণ হারিয়েছে অনেক অবলা প্রাণী।সর্বশেষে তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে ২৮টি মৃত হরিণ এবং ১ টি বন্য শুকরের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

রবি-সোমবার (২৬ ও ২৭মে) রিমাল-এর তাণ্ডব চলে টানা ২০ ঘণ্টা। ঝড় শান্ত হওয়ার পর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ পশুদের আহত এবং নিহতের এই সর্বশেষ খবর মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে। বনে বসবাসকারী অন্যান্য বহু পশু-পাখিরও মৃত্যু হয়েছে এই দুর্যোগে। এখনো অনেক আহত প্রাণী উদ্ধার কার্যে ব্যস্ত রয়েছেন বনরক্ষা কর্মীরা। এ পর্যন্ত ১৭ টি আহত হরিণ উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে বনরক্ষীরা। এরপর তাদের নিরাপদে বনে ফেরত পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও পশু আহত হয়েছে কিনা খোঁজ করা অব্যাহত রয়েছে। 

ঝড়ে অনবরত ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় সুন্দরবনের ভূমি। তাছাড়া, ঝড়ো হাওয়ার দাপটে উপড়ে গেছে বহু গাছ। প্রকৃতির এরকম পরিবেশের কারণেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অবলা প্রাণীগুলো!

;

উপকূলে ঝড়ের বিপদ সংকেত, ঢাকায় চিত্রকরের নীল মেঘ!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূলে চলছে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত। দমকা বাতাসের তোড়ে সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ। আকাশে হৈ হৈ রব তুলে দখল করেছে কালো মেঘ। ছড়িয়ে দিচ্ছে গুড়ুম গুড়ুম ডাক! কয়েক ঘণ্টা বাদেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আসার সম্ভাবনা। তবে কথায় বলে, বাজ পড়ার আগে আকাশ শান্ত হয়ে যায়!

ঠিক যেন প্রকৃতি তার সেই রূপটিই মেলে ধরলো। উপকূল অঞ্চলগুলোতে মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ অথচ রাজধানীর আকাশ স্নিগ্ধ-কোমল!

শুধু কী তাই! ছবি আঁকার পর শিল্পী তার রঙ মাখা তুলিগুলো এলোমেলো করে ফেলে রাখে যেমন, সেই ছবি যেন আকাশে সেঁটে দিয়েছে কেউ। লাল, গোলাপি, কমলা, নীল, বেগুনি রঙের মিশ্রণে অপূর্ব সুন্দর এক এলোমেলো চিত্র উঁকি দিচ্ছে আকাশে। তার মাঝে ধূসর মেঘ ঘোলা জলে মাছের মতো দুরন্তপনায় ছুটে যাচ্ছে বহুদূর।

শনিবার (২৫ মে) গোধুলি লগ্নে ঢাকার আকাশ ঠিক এভাবেই রঙিন হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রংধনুর ছোঁয়া ছাড়াই রঙিন পটচিত্রের রূপ মেলে ধরে গগন, যেন আকাশ নয়, কোনো চঞ্চলা কিশোরীর উৎফুল্ল মন! প্রকৃতি এখন স্তব্ধ হয়ে আছে। গাছের একটি পাতাও যেন নড়ছে না। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরের অথৈ উম্মাদনা। স্থানীয়দের ভয়, জলোচ্ছ্বাসে যেন তাদের জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এমনি করেই প্রকৃতির বহুরূপী লীলাখেলা চলতে থাকে অবলীলায়।

;

বিখ্যাত মিমের ভাইরাল কুকুর কাবোসু আর বেঁচে নেই



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন মানুষ জুড়তে শুরু করলো ইন্টারনেটে নতুন অনেক নতুন উদ্ভাবনার দেখা মিললো। এমন এক ব্যাপার হলো মিম। বর্তমান সময়ে সেন্স অব হিউমারের (রসবোধ) এক অন্যতম মাধ্যম এই মিম। বিশেষত কোনো ছবি ব্যবহার করে তাতে হাস্যরসাত্মক কিছু জুড়ে দিয়ে এইসব মিমগুলো বানানো হয়।

২০১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরবর্তী সময়ে যা একটি বিখ্যাত ‘মিম ম্যাটেরিয়াল’-এ পরিণত হয়। কমলা-সোনালী এবং সাদা রঙের সম্বনয়ে বাহারি লোমের এই কুকুরটির নাম কাবোসু। কাবোসুর বয়স ১৯ বছর।

দুর্ভাগ্যবশত কুকুরটি আর বেঁচে নেই। ২৪ মে (শুক্রবার) দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত থাকার পর অবশেষে দেহ ত্যাগ করে কুকুরটি। কুকুরটির মালিক আতসুকো সাতো (৬২) জাপানের চিবা প্রিফেকচারের সাকুরা শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক।শুক্রবার তার প্রকাশিত ব্লগে একটি দুঃখের কবিতা আবৃত্তির পর তিনি এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

১৯ বছর বয়সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ২৬ মে রবিবার কাবোসুর স্মরণে একটি স্মরণ সভার আয়োজনও করা হবে। কুকুরটির মারা যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলে দুঃখ প্রকাশ করছে।

২০২২ সালে ক্রোানক লিম্ফোমা লিউকুমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। সেই থেকেই কাবোসুর চিকিৎসা চলছিল। তবে দুঃখের বিষয়, সে আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলো না।

কাবোসুর ত্যাড়া চোখে দৃষ্টির একটি ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এটি ইন্টারনেটে সবচেয়ে আইকনিক এবং স্বীকৃত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি ক্রিপ্টো কারেন্সির দুনিয়াতেও তার নাম ছিল।

;