‘সেই তো নথ খসালি, তবে কেন লোক হাসালি’



শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: বার্তা২৪

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংসদে না যাওয়ার কথাও বারবার বলে আসছিলেন জোটের নেতারা। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিএনপির চার নেতা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন।

এর মধ্য দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া জোটের সাতজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন এবং যথারীতি সংসদ অধিবেশনে যোগও দিয়েছেন। এমনকি সংসদে বক্তব্যও দিয়েছেন।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, একাদশ সংসদ নির্বাচন কলঙ্কিত, সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানায় দলটি। দাবি আদায় না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় তারা।

শুধু তাই নয়, পুনরায় নির্বাচন না দিলে বিএনপি আন্দোলনে যাবে বলেও হুমকি দেন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তবে গত চার মাসে দলটির সেই হুমকি শুধু প্রতিধ্বনি হয়েই ফিরে গেছে। কার্যত মাঠে কোনো আন্দোলনের লেশমাত্রও ছিল না। বেশিরভাগই ছিল শুধু খালেদা জিয়া ও কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি এবং তারেক রহমান বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, প্রতীকী অনশন ইত্যাদি।

নির্বাচনের পরই, বিএনপির নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, 'আমরা তো নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছি। নতুন নির্বাচনের দাবি করেছি। ফলে সংসদে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।'

জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে 'ভোট ডাকাতি' ও 'কারচুপি'র অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন বিএনপির শতাধিক প্রার্থী, যা এখনো চলমান। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ২২ ফেব্রুয়ারি দিনভর গণশুনানি করে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যার রায়ও এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।

গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর গত ৭ মার্চ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, 'সুলতান মোহাম্মদ মনসুর নিজেকে জনগণের সামনে অত্যন্ত ছোট করে ফেলেছেন, ক্ষুদ্র করে ফেলেছেন। জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া একটি পার্লামেন্টে গিয়ে তিনি জাতির সঙ্গে প্রতারণা ও খারাপ একটি কাজ করেছেন। গর্হিত কাজ করেছেন। এজন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এরপরই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে হাইকমান্ড।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/30/1556635963545.jpg

তার শপথের পরপরই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বলেন, 'দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) জেলে রেখে কেউ যদি সংসদ সদস্য হিসবে শপথ নেয় তাহলে তারা জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে থাকতে পারে না, তারা গণদুশমন। আমাদের দলের সিদ্ধান্ত আমরা পার্লামেন্টে যাব না, দলের সিদ্ধান্ত যে অমান্য করবে সে আমাদের দলের লোক হবেন না। এরপরও শপথ নিলে জনগণের থুতুতে তারা ভেসে যাবেন।’

২৭ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি একটা বড় বটগাছ, এখান থেকে দুএকটা পাতা ঝরে গেলে কিছু আসে যায় না। আমাদের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে দল। তাতে দলের কোনো ক্ষতি হবে না।'

নির্বাচন প্রত্যাখ্যান, 'ভোট ডাকাতি' ও 'কারচুপির' অভিযোগে গণশুনানি, কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে নালিশ জানানো, আন্দোলনের হুমকি দিয়ে মাঠে না নামা, দলের নেতাকে বহিষ্কার, রাজনৈতিক বক্তব্যের ফুলঝুরি সব কিছুকে ঢাকনাবন্দী করে শপথ নিল বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল জানালেন দলের হাইকমান্ড ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই সংসদে যাওয়া। তবে মির্জা ফখরুল নিজে শপথ নেবেন কি-না বা নিতে পারবেন কি-না, তা এখনো নিশ্চিত না।

গ্রাম্য শ্লোকের মতো এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, 'সেই তো নথ খসালি, তবে কেন লোক হাসালি'। অর্থাৎ বিএনপির দাবি করা সেই 'কলঙ্কিত-অগ্রহণযোগ্য' নির্বাচনে নিজেদের বিজয়ী ভেবে শেষ পর্যন্ত সংসদে গেল। 'বর্তমান সংসদের কেউ নির্বাচিত নয়', 'আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে', 'প্রধানমন্ত্রী অবৈধ' এসব কথার কি কোনো ভিত্তি থাকবে? যদি নাই থাকে তাহলে এতো কিছু করার কী দরকার ছিল? পর্দার আড়ালে যদি কোনো সমঝোতা হয়েই থাকে তাহলে সেটা অনেক আগেই কি করা সম্ভব ছিল না? ৯০ কর্মদিবসের শেষ দিন এসেই বা কেন আগের সিদ্ধান্ত থেকে সম্পূর্ণ 'ইউ টার্ন' নিয়ে সংসদে যোগ দিতে হলো। সাধারণ মানুষ ভাবতেই পারে যে, এর মাধ্যমে বিএনপি বর্তমান সংসদ ও সরকারকে বৈধতা দিয়ে দিল।

তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিনিময়েই বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেছেন। খুব দ্রুতই খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন, জামিনে সরকারের আইনজীবীরা বাধা দেবেন না। হতাশাগ্রস্ত নেতাকর্মীরা কিছুটা হলেও উজ্জীবিত হবেন সেই প্রত্যাশা নিয়েই তারেক রহমান এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কার নির্দেশে শপথ নিলেন না ফখরুল?

   

আমার স্ত্রী ভারতীয় শাড়ি দিয়ে কাঁথা সেলাই করেছে: রিজভী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি নেতারা শাল পোড়ান, কিন্তু বউদের শাড়ি পোড়ান না কেন?- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, আমার নানার বাড়ি ভারতে। বিয়ের পর ভারতে একবার গিয়েছিলাম, আমার ছোট মামা সেখানে থাকেন। আসার সময় আমার স্ত্রীকে একটি শাড়ি দিয়েছিল তারা। আমি কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম ওই শাড়িটা কই? আমার স্ত্রী বললেন ওটা দিয়ে তো অনেক আগেই কাঁথা সেলাই করা হয়েছে। আমাদের দেশে একটা রেওয়াজ আছে পুরাতন শাড়ি দিয়ে কাঁথা সেলাই করা। আমি মনে করি ডামি সরকারকে যে দেশ প্রকাশ্যে সমর্থন করে সেদেশের পণ্য বর্জন করা ন্যায়সঙ্গত।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে 'আমরা বিএনপি পরিবার' আয়োজিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে গুম, খুন ও পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা, আপনি দেশের স্বার্থ নিয়ে তামাশা করেন? আপনি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে গেলে যুদ্ধটা করলো কে? যুদ্ধ করেছে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবকেরা।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে পার্শ্ববর্তী দেশের কূটনীতিক এসে ভোটারবিহীন সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে গেলেন। ২০১৮ সালে রাতে ভোট হলো, সে নির্বাচনও তারা স্বীকৃতি দিলেন। এবার ২০২৪ সালে এত বড় একটা ডামি নির্বাচন হয়ে গেলো, তারপরও প্রকাশ্যে তারা বলছেন আমরা এই সরকারের পাশে আছি। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বলছে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে, আমরা কোনো দলের পক্ষে নই। যারা একটি ভোট ডাকাত সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে সে দেশের পণ্য বর্জন করা ন্যায়সঙ্গত। তাদের বিরুদ্ধে যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে আমরা সেই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করি।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, কেউ মারা গেলে তার আত্মার মাগফেরাত করার মধ্যেও একটা শান্তি আছে। গুম হওয়া একটি পরিবার তার আত্মার মাগফেরাতও কামনা করতে পারে না, তার কবরে গিয়ে মোনাজাতও করতে পারে না। সরকার এমন ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মন। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

দেশের প্রত্যেক মানুষ স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের প্রত্যেক মানুষ এখন স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছেন। অগণতান্ত্রিক ও উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপির ফ্যাসিবাদী দর্শনে জনগণ কখনো সাড়া দেয়নি, দেবেও না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্যকে নেতাদের মিথ্যা, বানোয়াট ও দুরভিসন্ধিমূলক আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হচ্ছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করেছেন। তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ না দিয়ে ঢালাওভাবে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপির নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। কোথাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন না।

তিনি বলেন, অথচ ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ঘর-বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডারবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছিল। সারাদেশে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধূলিসাৎ করে। সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজের অবৈধ ও অসাংবিধানিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করেন। তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রচলন করেন। তিনিই রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের বীজ বপন এবং উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। তখন থেকে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়। বিরোধীদল বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি সর্বদা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাকিস্তানি ভাবাদর্শকে পুঁজি করে রাজনীতি করা বিএনপির একান্ত কাম্যই হলো যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল, জনকল্যাণ নয়। তারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেরে আখের গুছিয়ে নিয়েছিল। বাংলার জনগণ তাদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছিল। সুতরাং জনগণ এই প্রতারক গোষ্ঠীকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

;

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

হাইকোর্ট থেকে নেয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার তা নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় ৩ নেতা-কর্মীর জামিন দেন তিনি।

এদিকে, একে একে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে হাজিরা দিতে আসা প্রায় ৫৩ জন নেতা-কর্মী আদালত থেকে পালিয়ে যান।

বিএনপি দলীয় আইনজীবী অ্যাড. শাহাজাহান মুকুল জানান, নাশকতা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আগামী রোববার (৩১ মার্চ) আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ১০৭ জন নেতা-কর্মী চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। এদের মধ্যে ৭ জনকে জামিন ও ৪৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার। এসময় আদালত থেকে ৫৩ জন নেতা-কর্মী হাজিরা না দিয়ে চলে যান। তিনি আরও জানান, তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার বিচার বিভাগ, পুলিশ-প্রশাসনসহ সবকিছু হাতের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে। মানুষের বিচার বিভাগের প্রতি যে আস্থা ছিল, সেটিও হারিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা প্রকৃত ন্যায়বিচার পাননি। আদালত ফরমায়েশিভাবে নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠিয়েছে।

;

মানুষকে দুঃখে-কষ্টে ফেলে ফায়দা লুটাই বিএনপির রাজনীতি: নাছিম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি-রফতানি একটি স্বাভাবিক কার্যক্রম। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ থেকে যেটা আমদানি করলে খরচ কম হবে সেটা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ঠগবাজি, স্ট্যান্ডবাজির রাজনীতির নামে বাংলাদেশের মানুষকে আরও দুঃখ, কষ্টের মাঝে নিমজ্জিত করে যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটা যায় সেটাই হলো বিএনপি-জামায়াতের নষ্ট রাজনীতির ভ্রষ্ট নীতি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আইডিইবি ভবনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিরোধীতার নামে, সরকারের বিরোধীতার নামে বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষের কষ্ট, বেদনাকে বাড়াবার জন্য বিএনপি-জামায়াতিরা যে অপরাজনীতি করছে, তার নতুন সংস্করণ হলো ভারত বিরোধীতার নামে ভারতী পণ্য বর্জন করে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধিতা করা।

নাছিম বলেন, ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। যতদিন বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, এ দিবসটি নতুন করে বঙ্গবন্ধু আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনুপ্রাণিত করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দু’লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা করার জন্য এখনো যুদ্ধ করে যেতে হচ্ছে। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে পাকিস্তানের দালাল হিসেবে আমাদের দেশের মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের উত্তরসূরিরা এখন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য তারা অপকর্ম দুষ্কর্মের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষকে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, মুনাফালোভী, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তাদের দমন করার জন্য অনেক ভাষণ দিয়েছেন। ৫৩ বছর পরও কতিপয় কালোবাজারি ব্যবসায়ী শুধু মানুষকে কষ্ট দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজনীতি কেও পৃষ্টপোষকতা করছে। জাতির পিতার রাজনীতিতে মানুষকে আকৃষ্ট করতে হবে। তাই সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের জায়গা গড়ে তুলতে হবে। দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা দেখি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা যদি মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে পারি, তাহলেই শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে। তাহলেই আমরা বাংলাদেশ বিরোধী নির্মূল করতে পারব।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ৭৫ -এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন, ইতিবাচক রাজনীতির কথা বলেছেন, তারা কেউ জেলখানার বাইরে ছিল না। যারা বাংলাদেশকে রক্তাক্ত কসাইখানা বানাতে চায়, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা আর রাজনৈতিক নির্যাতন এক হতে পারে না।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জীসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু।

;