বৈশাখে কুমার বিশ্বজিতের নতুন গান



বিনোদন ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘নতুন দিনের নতুন রঙে সবার মন দুলে যায়, চারিদিকে রঙের খেলা, গানে ছন্দ খুঁজে পায়’- সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া নতুন গানের কথা এমন। কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে আসন্ন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তৈরি হয়েছে এটি।

দেশীয় ঐতিহ্যের ফ্যাশন হাউজ বিশ্বরঙ-এর থিমসং হিসেবে গানটির মিউজিক ভিডিও মুক্তি পাবে শিগগিরই। এতে কুমার বিশ্বজিৎ ছাড়াও মডেল হয়েছেন অভিনেত্রী নাবিলা, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, অভিনেতা মনোজ কুমার, নরেশ ভূঁইয়া, মডেল আসিফ খান, শাহেদ ফারহানসহ একঝাঁক র‌্যাম্প মডেল। গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন উজ্জ্বল সিনহা।
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/04/1551705280293.jpg

বৈশাখের এই গান লিখেছেন বিপ্লব সাহা। তিনিই এর প্রযোজক। তার কথায়, ‘গানটির কথায় বাংলার ‍সুর, নদী, ফুল-লতা-পাতা, প্রকৃতির পাশাপাশি বাংলার তাঁত-তাঁতি, রঙ, সুতা এসব শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা তাঁতের কথা, তাঁতির কথা, রঙ, সুতা, বুননের কথা আমাদের গানগুলোতে পাওয়া যায় না। এটি শুধু পহেলা বৈশাখ নয়, বাংলার যেকোনো উৎসবের সঙ্গে মানানসই।’

গানটি প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘মাসদেড়েক আগে গানটির রেকর্ডিং হয়েছে। দেশীয় ঐতিহ্য ও উৎসবের উপযোগী গান এটি। অনেক বর্ণিল এই গানের লিরিক। বাংলাদেশের ষড়ঋতুর কথা বলা হয়েছে এতে। সুর-সংগীতও আমার ভালো লেগেছে।’
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/04/1551705299567.jpg

বিশ্বরঙ জানিয়েছে, বর্ষবরণ ও বৈশাখী পোশাকের আগমনী উৎসবের অংশ হিসেবে তাদের প্রতিটি আউটলেটে ও ফ্যাশন শোতে ১৫ মার্চ থেকে বাজবে গানটি। আর মিউজিক ভিডিওটি ফ্যাশন হাউসটির ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে প্রকাশ হবে শিগগিরই।

এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সিলেটের টেকেরহাট অঞ্চলের বাউল সেকেন্ড শাহের একটি গান নতুন সংগীতায়োজনে গেয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। পাশাপাশি নিজের জনপ্রিয় বেশকিছু গানের রিমিক্স করছেন তিনি।

   

‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’ গানে তোরসা



বিনোদন ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শাহ আবদুল করিম ও হাসন রাজার ভাটির দেশ থেকে ইট-পাথরের ঢাকা, প্রেম-বিচ্ছেদের সুখ কিংবা বেদনা থেকে রাজপথের মিছিল—সবকিছুর মেলবন্ধন ঘটায় যে মানুষ, সেই মানুষের গান গাওয়ার সংকল্প তুহিন কান্তি দাসের। প্রথমবারের মতো এই সঙ্গীত শিল্পী নিয়ে এলেন একক অ্যালবাম। এর নাম রেখেছেন ‘সন্ধ্যা নামিলো শ্যাম’।

এতে রয়েছে মোট চারটি গান। এগুলো হলো ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’, ‘আসমানেরও চাঁদ’, ‘দরদিয়া’ ও ‘হারিয়ে টের পাই’। তার মধ্যে ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’ গানটি সম্প্রতি ভিডিও আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এতে মডেল হয়েছেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ-২০১৯’ মুকুট জয়ী রাফাহ নানজিবা তোরসা। তার সঙ্গে ছিলেন খালিদ মাহমুদ সাদ। ফরিদপুরের বিভিন্ন নানন্দিক লোকেশনে ভিডিও নির্মাণ করেছেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। এরই মধ্যে গান-ভিডিও শ্রোতামহলে সাড়া ফেলেছে।

এ প্রসঙ্গে মডেল তোরসা বলেন, মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার আগে বেশকিছু মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছিলাম। তারপর অনেক প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু করিনি। ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’ গানের নির্মাণ পরিকল্পনা, গান সবকিছু বেশ ভালো লাগে তাই আগ্রহ নিয়ে কাজটি করেছি। গানটি প্রকাশের পর সবাই বেশ প্রশংসা করছে। আশা করছি, সব শ্রেণির মানুষের গান-ভিডিওটি ভালো লাগবে।

;

শাকিবের ‘তুফান’-এ বিশেষ চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের শেষের দিকে বেশ ঘটা করে ঘোষণা দেয়া হয় বছরের অন্যতম আলোচিত সিনেমা ‘তুফান’র। অভিনেতা শাকিব খান ও নির্মাতা রায়হান রাফি জুটির এই সিনেমা আসন্ন ঈদে মুক্তি প্রস্তুতি চলছে। মাঝে ঘোষণা দেয়া হয় এ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে আছেন কলকাতার নায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের নাবিলা।

এবার তুফান’র আরেকটি তথ্য নিয়ে হচ্ছে আলোচনা। কেননা তুফান সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী।

এই সিনেমায় নিজের উপস্থিতি নিয়ে চঞ্চল বলেন, ‘তুফান সিনেমায় আমাকে বিশেষ একটা চরিত্রে দেখা যাবে। রায়হান রাফী এই সময়ের প্রতিভাবান একজন পরিচালক। সেই সাথে শাকিব-এর সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা একদম অন্যরকম। তাদের সাথে এক সঙ্গে কাজ করতে পারলে ভালো লাগবে। আর এতো বড় তিনটা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এক হয়েছে অবশ্যই ভালো কিছুই হবে।’

‘তুফান’ সিনেমাটি প্রযোজনা করছে এসভিএফ বাংলাদেশ, আলফা আই ও চরকি। এই তিন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘তুফান’ এর আগে আরেকটি বড় সিনেমার ঘোষণা দেয়। সিনেমাটির নাম ‘দম’। আর পরিচালনা করবেন রেদওয়ান রনি। ‘দম’ সিনেমার মূল ভূমিকায় দেখা যাবে চঞ্চল চৌধুরীকে।

পরিচালক রায়হান রাফীর এখন সময় যাচ্ছে সিনেমার শুটিং-এর শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে। রাফী বলেন, ‘চঞ্চল ভাই আমাদের দেশের শক্তিমান অভিনেতা। তুফান-এ শাকিব ভাইয়ের সাথে সাথে উনাকে পাওয়াটা আমার জন্য আনন্দের।’

এসভিএফ-এর ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে এর আগে ওটিটি কনটেন্টে কাজ হয়েছে। অনেকদিন ধরে তাকে নিয়ে বড় পর্দায় কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। আমি নিশ্চিত তিনি তুফান-কে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন।’

আলফা-আই স্টুডিওজ লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘তুফানে শাকিব খান অন্যরকম, সম্পূর্ণ ভিন্নরপে ধরা দিবে দর্শকদের সামনে। এমন একটি শক্তিশালী চরিত্রের বিপরীতে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে পারে এমন একজন শক্তিমান অভিনেতা দরকার ছিল আমাদের। আমি মনে করি, চঞ্চল ভাইয়ের কারণে চরিত্রটির প্রতি জাস্টিস হবে তাই তুফানে উনার সম্পৃক্ততা।’

চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি, ‘চঞ্চল ভাইকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তিনি আমাদের জন্য গর্ব। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাইরেও তার কাজের সুখ্যাতি রয়েছে। তার সঙ্গে আমার বেশ কিছু কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তুফান সিনেমায় তার এই উপস্থিতি অন্যরকম মাত্রা যোগ করবে বলে আমি মনে করি।’

;

'ডেডপুল বনাম উলভারিন' সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশ



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবিঃ সংগৃহীত

ছবিঃ সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রকাশ পেয়েছে রায়ান রেনল্ডস এবং হিউ জ্যাকম্যান অভিনীত ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমার প্রথম অফিশিয়াল ট্রেইলার। মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্ট এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে সোমবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টায় ট্রেইলারটি প্রকাশ করা হয়েছে। দুইটি ভিন্ন ইউনিভার্সের গল্প কিভাবে চলবে তা নিয়ে ভক্তদের দুশ্চিন্তা দূর করবে এই সিনেমা-তারই ঝলক মিললো ট্রেইলারে।

টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স বিক্রি হওয়ার মাধ্যমেই এক্সম্যানের সিনেমাগুলোর উপর তাদের রাইটের সমাপ্তি ঘটে। তবে সিনেমায় চলাকালীন গল্পে ফক্স ইউনিভার্সের চরিত্রগুলোকে কিভাবে মার্ভেলের চরিত্রের সাথে একবদ্ধ করে কাজ করানো হবে- তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন ভক্তরা। ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমার ট্রেইলারে এটা স্পষ্ট করা হয় যে, সিনেমার গল্পেও ফক্স ইউনিভার্স ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই বিধ্বংসের সকল দায়ভার চাপানো হয়েছে উলভারিন, তথা লোগান চরিত্রের উপর।

ট্রেইলারে ডেডপুলের চরিত্র উলভারিনের চরিত্রের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে যায়। উলভারিনের নিজের ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাই সে যেন ডেডপুলের ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করতে তাকে সাহায্য করে। মিস্টার প্যারাডক্স ডেডপুলকে জানান, উলভারিন নিজেই তার ইউনিভার্স ধ্বংসের কারণ৷ তবে এই উলভারিন কোন ইউনিভার্সের তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এছাড়াও প্রধান খল চরিত্র ক্যাসেন্ড্রা নোভার প্রথম ঝলকও দেখা যায় ট্রেইলারে। তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক্সম্যানের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র উলভারিনেরও নাজেহাল অবস্থা। কিভাবে নোভাকে পরাজিত করবে ডেডপুল এবং উলভারিন, জানা যাবে চলতি বছর ২৬ জুলাই। এর আগে এক্সম্যেন অরিজিনস:উলভারিন সিনেমায় একত্রে পর্দায় এসেছিলেন রায়ান এবং হিউ। তবে সেই সিনেমায় মুখোমুখি ছিল ডেডপুল এবং উলভারিন চরিত্র। আসন্ন সিনেমায় একত্র হয়ে লড়বেন দুই সুপারহিরো। ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমাটি ২০২৪ সালে মার্ভেল সিনেমেটিক ইউনিভার্সের প্রকাশ করা একমাত্র সিনেমা।

বহুল পরিচিত চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্সকে কয়েক বছর আগেই কিনে ফেলেছিল প্রযোজনা সংস্থা ডিজনি। মার্ভেল আগে থেকেই ডিজনির অধীনস্থ হওয়ায় মার্ভেল তাদের কমিকসের সব চরিত্রের অধিকার আবার ফিরে পায়। ফক্সের কাছে মার্ভেলের সকল মিউট্যান্ট চরিত্রের রাইট ছিল৷ ফক্সের তৈরি করা সকল এক্সম্যেন সিরিজের ইতি ঘটে এর মাধ্যমেই। ঘোষণা হয়, এসব চরিত্রে তারপর থেকে যত সিনেমা আসবে সবটাই ডিজনি এবং মার্ভেলের অধীনেই থাকবে। তবে ভক্তদের মধ্যে চিন্তার ঢেউ খেলে এই ভেবে যে, দুটো ভিন্ন ইউনিভার্সের কাহিনী কিভাবে একত্র করা হবে!

হিউ মাইকেল জ্যাকম্যান হলিউডের একজন অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত অভিনেতা এবং সঙ্গীতশিল্পী। অভিনয় জীবনে দ্য প্রেস্টিজ, অস্ট্রেলিয়া, দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান, প্রিজনার্সের মতো অনেক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি, পেয়েছেন একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মাননা। তবে ভক্তদের কাছে তিনি লোগান বা উলভারিন নামেই বেশি পরিচিত। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় প্রযোজনা সংস্থা টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্সের অধীনে মার্ভেলের জনপ্রিয় এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হিউ। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ভক্তদের পছন্দের এই চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এমনকি উলভারিন চরিত্রেই মাধ্যমেই বর্তমানে হলিউডে একই চরিত্রে দীর্ঘতম সময় অভিনয় করার রেকর্ড রয়েছে হিউ জ্যাকম্যানের নামেই।

;

এ কেমন প্রামাণ্যচিত্র উৎসব!



আশরাফুল ইসলাম পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘১২তম লিবারেশন ডক্ ফেস্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসবের শেষ দিন ছিল সোমবার। ঘোষিত অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী এ দিন নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরুর কথা ছিল বেলা ১১টায়। 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী দেখতে এই প্রতিবেদক সকাল পৌনে ১১টায় জাদুঘর প্রাঙ্গনে পৌছে দেখতে পান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া সেখানে কেউ নেই। তবে জাদুঘর ভবনের দেওয়ালে বেমানানভাবে পেচিয়ে থাকা এ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত কয়েকটি হ্যাংগিং ব্যানার উৎসবের দৈন্যতাকেই যেন জানান দিচ্ছিল।   

নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে উৎসব সম্পর্কিত কোন আপডেট না পেয়ে জাদুঘর সচিবালয়ে গিয়ে ফারহাত নামে দায়িত্বরত একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি উৎসব সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ফারহাত জানান, বেলা ১১টায় উৎসবের পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে।  

মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, ফাঁকা মিলনায়তনটিতে শুধুমাত্র একজন কর্মী প্রজেক্টরে প্রদর্শনের জন্য তথ্যচিত্র চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষার পর মৃন্ময় ব্যানার্জী নামে কলকাতা থেকে আসা একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা উপস্থিত হন সেখানে। তিনি জানালেন, তাঁর তথ্যচিত্র এই উৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে এবং ইমেইল ও ফোন করে তাকে উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বেলা ১১টার কিছু পরে কোন দর্শনার্থীর উপস্থিতি এবং ঘোষণা ছাড়াই মৃন্ময় ব্যানার্জীর ‘বিপ্লবের ধ্বজা হাতে যাঁরা এনে দিল স্বাধীনতা’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন শুরু করেন ওই জাদুঘর কর্মী।

৪০ মিনিট দীর্ঘের এই তথ্যচিত্র প্রদর্শন শেষ হলে ফাঁকা মিলনায়তনে এক শুভানুধ্যায়ী নিয়ে নিজের নির্মাণ করা তথ্যচিত্র দেখতে আসা মৃন্ময় হতাশা ব্যক্ত করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কোন দর্শনার্থী যদি এই এটি না-ই দেখলো তবে তা আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নাম দিয়ে এখানে প্রদর্শনের কি গুরুত্ব থাকতে পারে! এমন উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোরইবা কি প্রয়োজন ছিল?’

তরুণ এই নির্মাতা বলেন, ‘উৎসবে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ইমেইল করা হয়, তাতে আমার টিমের জন্য ২টি পাশ ইস্যু করার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞেস করলে কেউই এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি। আগ্রহীরা যদি দেখতেই না পারলো তবে এ এধরণের আয়োজনে অংশগ্রহণ অর্থহীন।’

তিনি বলেন, ‘হয়তোবা আয়োজকরা এই উৎসব সম্পর্কে আগ্রহীদের কাছে তথ্য পৌছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত অনুরাগীরা এই ধরণের আয়োজনে সব বাধা উপেক্ষা করেও ছুটে আসেন-অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তা দেখে এসেছি আমরা।’  

নির্মাতা মৃন্ময় ব্যানার্জীর তথ্যচিত্র দেখতে আসা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জাদুঘর মিলনায়তনটি প্রদর্শনীর জন্য উপযোগি ছিল না বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘মিলনায়তনে আধঘন্টার মতো বসে থেকে বুঝতে পারছি প্রদর্শনের আগে এটিতে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার কাজটিও করেননি জাদুঘর কর্মীরা। রীতিমতো দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করে একটি প্রেক্ষাগৃহকে যেভাবে প্রস্তুত করা হয়, এখানে তা করা হয়নি।’

এ রকম মিলনায়তনে এসে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এই বক্ষব্যাধি চিকিৎসক।  


মিলনায়তন থেকে বেরিয়েই জাদুঘর অভ্যন্তরে বিশ-পচিশজন স্বেচ্ছাসেবককে খোশগল্প করতে দেখা যায়। তাদের কেউই মিলনায়তনে কেন গেলেন না জানতে চাইলে-তারা কথা বলতে রাজি হননি। উৎসব সমন্বয়ে থাকা ফারহাতের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দাবদাহের কারণে দর্শনার্থী না থাকার দায় এড়ান। তবে উৎসব সংশ্লিষ্ট জাদুঘর কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কেন প্রদর্শনীতে থাকলেন না-এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি তিনিও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাদুঘরের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘১২তম লিবারেশন ডক ফেস্ট বাংলাদেশ’ এর উদ্বোধন ও সমাপনী আয়োজনে কিছু অতিথি ও দর্শনার্থী ছাড়া এবারের আয়োজনে উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। গত ১৮ এপ্রিল জাদুঘর মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।

২০০৬ সাল থেকে প্রামাণ্য চিত্র উৎসব শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এই উৎসবে বিশ্বের খ্যাতিমান নির্মাতাগণ তাদের তথ্যচিত্র নিয়ে অংশ নিয়ে এই উৎসবের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেরা তথ্যচিত্র নির্মাতাদের পুরষ্কৃতও করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এবার এই উৎসব আয়োজনে সেই ঐতিহ্যিক পরম্পরা বজায় রাখতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর- এমন অভিযোগ তথ্যচিত্র নির্মাতাদের।  

;