“আজ সকালে বাবার সঙ্গে একটি ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। আমি জানতাম, অস্ত্রোপচারের দিনেও তিনি জিমে আসা বাদ দিবেন না। আমার জানা মতে, তিনি সবচেয়ে শক্তিশালী একজন মানুষ। তার গলার ক্যান্সারের প্রথম ধাপ ধরা পড়েছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে, কিন্তু আজই তিনি একদম স্বতঃস্ফূর্ত ক্যান্সারের বিপক্ষে যুদ্ধ করার জন্য। তার পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা সবাই অনেক বেশি সৌভাগ্যবান তার মতো একজন লিডার পেয়ে। ভালোবাসি বাবা।”মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এমনই এক স্ট্যাটাস দিয়ে বাবা রাকেশ রোশনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হৃত্বিক রোশন।
বলিউডের জনপ্রিয় এই নির্মাতার অসুস্থতার খবরে চমকে গেছে ইন্ডাস্ট্রির সকলেই। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে শুভকামনা জানিয়েছেন অনেকে।
Dear Hrithik, praying for the good health of Shri Rakesh Roshan Ji. He is a fighter and I am sure he will face this challenge with utmost courage. @RakeshRoshan_Nhttps://t.co/Z0IaYSS4A4
এদিকে, রাকেশ রোশনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে লিখেছেন- “প্রিয় হৃত্বিক, শ্রী রাকেশ রোশনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। তিনি একজন যোদ্ধা। আমি নিশ্চিত তিনি এই চ্যালেঞ্জ সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করবেন।”
জনপ্রিয় তারকা তাহসান খান আর রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ছিলেন এ দেশের দর্শকের কাছে আদর্শ জুটি। তাদের দীর্ঘ বছরের সংসার যখন ভেঙে যায়, তখন সেই খবর মেনেই নিতে পারছিল না ভক্তরা। এই জুটির সম্পর্ক যাতে ঠিক হয়ে যায় এ নিয়ে সে সময় দাবী পর্যন্ত জানানো হয়।
কিন্তু দুজনের ভেতরে যে ঘুনপোকা ধরেছিল সে কথা তো আর বাইরের কেউ জানতো না। ফলে তাদের বিচ্ছেদটা হয়েই যায়। এরপর থেকেই দর্শকের ভীষণ প্রিয় মিথিলা বার বার কটাক্ষের শিকার হতে থাকেন।
তবে কেন বিচ্ছেদ হয়েছে এ নিয়ে এই দুই তারকা কখনোই মুখ খোলেননি। এমনকি অন্য তারকারা যখন বিয়ে ভেঙে গেলে পার্টনারের দোষ বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন, তখন তাহসান-মিথিলা ছিলেন একেবারেই ভিন্ন। তারা কখনোই একে অপরের নামে কোন কটু কথা বলেননি। বরং এই দম্পতির একমাত্র কন্যা আইরা যাতে সুন্দর একটি পরিবেশে বড় হয় সেজন্য বিচ্ছেদের পরও তারা ফোনে কথা বলা কিংবা কখনো দেখাও করেছেন হাসিমুখে।
বিচ্ছেদের প্রায় ৭ বছর হতে চলেছে। কিন্তু ক্যামেরার সামনে তাদের একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। মাঝে শুধু একবার একটি ই-কমার্স সাইটের লাইভ সেশনে এসেছিলেন দুজন। তবে এবার ভক্তদের জন্য সুখবর নিয়ে হাজির হয়েছেন তাহসান-মিথিলা।
নতুন একটি ওয়েব সিরিজে তাদের একসাথে দেখা যাবে। জানা গেছে, ৭ পর্বের সিরিজটির নাম ‘বাজি’। নির্মাণ করছেন ‘মাটির প্রজার দেশ’ খ্যাত নির্মাতা আরিফুর রহমান। একটি হোটেলে মাস দুয়েক আগে ওয়েব সিরিজটির একটা ধাপের শুটিং হয়েছে। যদিও এ বিষয় নিয়ে নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী কেউই মুখ খোলেননি।
‘বাজি’ সিরিজ সম্পর্কে আরও জানা গেছে, এতে তাহসান একজন ক্রিকেটরের চরিত্রে অভিনয় করছেন। বিপরীতে মিথিলাকে দেখা যাবে সাংবাদিকের চরিত্রে। ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে দেশিয় একটি ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য। এ বছরই মুক্তি পেতে পারে সিরিজটি।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০০৭ সালের ৩ আগস্ট প্রেম করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তাহসান ও মিথিলা। সাবেক এই দম্পতির সংসারে আইরা তেহরীম খান নামের এক মেয়ে রয়েছে। তারা জুটি বেধে ‘আমার গল্পে তুমি’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’, ‘ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম’, ‘মধুরেন সমাপয়েত’সহ দারুণসব নাটকে অভিনয় করেছেন। এ জুটি একসঙ্গে গানও গেয়েছেন। তবে ২০১৭ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পরে ভক্তদের মন ভেঙে যায়।
এরপর মিথিলা ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখার্জিকে বিয়ে করেন। তবে তাহসানের আর কোন বিয়ের খবর পাওয়া যায়নি এতোদিনে।
‘বাস্তব চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলতে কবরী ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী’
বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
ঢালিউডের মিষ্টি মেয়ে’খ্যাত নায়িকা কবরী। রোমান্টিক থেকে সামাজিক, বানিজ্যিক থেকে জীবনঘনিষ্ট সব ধরনের সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে কিংবদন্তীর কাতারে সামিল করেছিলেন।
‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে একটি ছবির কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি এই ছবির পরিচালক এবং প্রযোজকও তিনি। এই ছবিকে ঘিরে ছিল তার অনেক স্বপ্ন। ছবির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মারা যান বাংলার অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ দিনের মাথায় ৭১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। আজ তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
চট্টগ্রামের মীনা পাল চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়ে কবরী হয়ে ওঠেন। মিষ্টি হাসি ও অনবদ্য অভিনয় প্রতিভা দিয়ে জায়গা করে নেন দেশের কোটি মানুষের অন্তরে। এ দেশের সিনেমাকে যারা সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের মধ্য তিনি অন্যতম।
কবরীর পুরো পরিবারই ছিল ভীষণ সংস্কৃতিমনা। বড় বোনদের মধ্যে দুই বোন নাচতেন। ছোট ভাই তবলা বাজাতেন। কবরী নাচ-গান একসঙ্গে করতেন। ৭০ বছরের জীবনে তিনি ৫৬ বছর কাটিয়ে দেন চলচ্চিত্রে। ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্মগ্রহণ করা কবরী এক সময় নিজেকেই নিজের তুলনা করে তোলেন। এমন কথা শোনা যায়, তার সমসাময়িক এবং অগ্রজ অভিনয়শিল্পীদের কণ্ঠে।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক সারাহ বেগম কবরীর। পরের বছর তিনি অভিনয় করেন ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’য়। ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরী’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ ছবিগুলো। কবরী অভিনীত ‘ময়নামতি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সারেং বৌ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘সুজন সখী’র মতো ছবির মাধ্যমে দর্শক অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন কবরীর অসামান্য এক অভিনেত্রী হয়ে ওঠা। অভিনয়ে, প্রযোজনায়, পরিচালনায় সাত দশকের জীবনটা এক আশ্চর্য সফলতার গল্প।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সব শেষে সিনেমায়। শুরুর জীবনে কবরী বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্কচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তার সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী ছিলেন পাঁচ সন্তানের মা।
কবরীকে নিয়ে বলতে গিয়ে চলচ্চিত্রের গুণী শিল্পী উজ্জ্বল বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের একজন বাঙালি নায়িকা কেমন হবে, কবরী ছিলেন তার সংজ্ঞা। চেহারা, চলন, কথাবার্তা, ব্যক্তিত্ব-সব দিক থেকে কবরী ছিলেন আদর্শ। কবরী ছিলেন একেবারে স্বচ্ছন্দ, স্বাভাবিক। আমরা তাকে দেখে মুগ্ধ ছিলাম। আমি যখন কাজ শুরু করি, কবরী তখন দেশের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা। তখনকার নারীর যে ইমেজ ছিল—যেমন লজ্জাবতী, আকর্ষণীয়, প্রেমিকা, সব দিক দিয়ে কবরী ছিলেন সেরা।’
বরেণ্য অভিনয়শিল্পী সুজাতা একবার গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে কবরী ছিলেন একজন পাওয়ারফুল অভিনেত্রী। আর ব্যক্তিগতভাবে তিনি স্পষ্টবাদী ছিলেন। যে কারণে হয়তো অনেকেই তাকে ভুল বুঝতেন। ভালো-খারাপ দুটিই তিনি সরাসরি বলে দিতেন। এটা আমার খুব ভালো লাগত। বাস্তব চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলতে অভিনেত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি সহজেই যেকোনো চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে যেতেন। যে কারণে তিনি ছিলেন সফল অভিনেত্রীর নাম।’
অভিনয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া কবরী নিজেকে শুধু অভিনয়ে আবদ্ধ রাখেননি। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান তিনি। সেখান থেকে পাড়ি জমান ভারতে। কলকাতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন কবরী। শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। নায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে ‘রংবাজ’ পায় বেশ জনপ্রিয়তা। ৫০ বছরের বেশি সময় চলচ্চিত্রে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ঢাকার চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী।
তার সমসাময়িক এমন কেউ নেই, যার সঙ্গে চলচ্চিত্রে তিনি পর্দা ভাগাভাগি করেননি। কিন্তু মনে মনে একজনের সঙ্গে অভিনয়ের স্বপ্নটা দেখতেন, যা পূরণ হয়নি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার খুব আগ্রহ ছিল তার। বিগবির অভিনয় ও কথাবার্তা মুগ্ধ করত কবরীকে।
২০০৫ সালে এসে ‘আয়না’ নামের একটি ছবি নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন কবরী। এরপর রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে।
কবরীর বর্ণাঢ্য জীবনকে কাছ থেকে দেখেছেন গুণী অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক এবং পরিচালক সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘‘কবরীকে ‘মিষ্টি মেয়ে’ নামটা এ দেশের সাধারণ মানুষেরাই দিয়েছেন। সাধারণ লোকের দেওয়া নামটাই বোধ হয় একজন শিল্পীর বড় প্রাপ্য। একজন শিল্পী হিসেবে তার বড় সার্থকতা। এরপর শিল্পী হিসেবে তাকে নিয়ে আর দ্বিতীয় কথা বলার নেই। সি ওয়াজ জাস্ট আন প্যারালাল। ওই মিষ্টি মুখ বা ওই মিষ্টি হাসি বা ওই মিষ্টি অভিনয়—বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আসেনি এর আগে এক কবরী ছাড়া। আগামী ৫০ বছরে আসবে বলেও আমার ধারণা নেই। আমি বিশ্বাস করি, শত বছরে কবরী একটাই জন্মায়।’
বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমী অনেকের প্রিয় কবরী। আর তার প্রিয় তালিকায় ছিলেন সোফিয়া লরেন, এলিজাবেথ টেলর, অড্রে হেপবার্ন, গ্রেগরি পেক, উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায় ও ছবি বিশ্বাস। তার সবচেয়ে প্রিয় সংগীতশিল্পীর তালিকায় দেশের বাইরে মান্না দে, হেমন্ত ও শ্রীকান্ত আচার্য। দেশের মধ্যে সুবীর নন্দী ও সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠ তার খুব প্রিয়।
সালমান খানের বাড়িতে ১০ রাউন্ড গুলি চালানোর নির্দেশ!
বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
গত রোববার ভোরে বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে দুজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি গুলিবর্ষণ করে। তারা মোটরসাইকেলে করে এসে এই হামলা করেছিল। এই ঘটনায় মুম্বাই পুলিশের রাতের ঘুম চলে গেছে। তারা উঠেপড়ে লেগেছে এ মামলার তদন্তের কিনারা করতে। প্রতিদিন এ নিয়ে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে আরও অনেক তথ্য এসেছে।
গত সোমবার মাঝরাতে পুলিশের জালে ধরা পড়েন দুই অভিযুক্ত বিক্কি এবং সাগর। মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ শাখা তাদের গুজরাটের কচ্চের ভূজের এক প্রসিদ্ধ মন্দির থেকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সাতসকালে তাদের মুম্বাইতে আনার পর আদালতে পেশ করা হয়। আদালত বিক্কি আর সাগরকে ১০ দিন রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এখন ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ক্রমাগত জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে দুই অভিযুক্তকে। পুলিশি জেরায় অনেক চমকপ্রদ তথ্য মিলছে। বিক্কি আর সাগর জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানিয়েছেন, চার নয়, তাদের ১০ রাউন্ড গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর এই কাজে তারা সফলতা পেলে ভালো পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আর বলা হয়েছিল, তারা রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠবেন। এ হামলার জন্য বিক্কি আর সাগরকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়। অগ্রিম হিসেবে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। হামলার পর তাদের আরও চার লাখ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। গুলিবর্ষণের এ ঘটনার সাক্ষী হিসেবে খুব শিগগির পুলিশ সালমানের বয়ান নেবে বলে জানা গেছে।
বিক্কি আর সাগর পুলিশকে জানিয়েছেন, জেলবন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই তাদের এ কাজের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। আনমোল চেয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে যোধপুরের কাছে মথানিয়ার বাবড়ে কৃষ্ণকায় হরিণ শিকারের জন্য সালমানকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে। দুই অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, সালমানকে শুধু ভয় দেখানোর কথা তাদের বলা হয়েছিল। এই অভিনেতাকে হত্যার নির্দেশ তাদের দেওয়া হয়নি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিক্কি দশম এবং সাগর চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ। এই দুই হামলাকারী পুলিশকে জানিয়েছেন ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা মুম্বাইতে আস্তানা গাড়েন। তারা সালমানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়া পানভেলের ফার্ম হাউসও রেকি করেছিলেন। পানভেলে একটি কক্ষ তারা ভাড়া নিয়েছিলেন। বিক্কি আর সাগর হোলি খেলতে নিজেদের গ্রামে গিয়েছিলেন। আবার ১ এপ্রিল তারা পানভেলে ফিরে এসেছিলেন।
সালমানের বাসার বাইরে গুলিবর্ষণের ঘটনার মামলায় পুলিশ আরও এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। গতকাল বুধবার এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তারা। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, এই সন্দেহভাজন ব্যক্তি হামলার আগে এবং পরে দুই অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। পুলিশ এই ব্যক্তির সঙ্গে আনমোল বিষ্ণোইয়ের যোগসূত্র পেয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন। তবে বিগত কয়েকটি নির্বাচনের মতো এবারের নির্বাচন শেষ মুহূর্তে এসেও জমে ওঠেনি।
২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ৬ জন স্বতন্ত্রসহ ২টি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্যানেল দুটি হলো মিশা-ডিপজল ও মাহমুদ কলি-নিপুণ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। মধ্যাহ্নবিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। গণনা শেষে ওই দিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
এবারের নির্বাচনটা অনেকটাই নিরুত্তাপ। রাত পোহালেই নির্বাচন, কিন্তু এখনো প্রার্থী, ভোটারদের মধ্যে তেমন প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে আগের নির্বাচনগুলোতে ভোটার, শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালকসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পদভারে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গমগম করত এফডিসি। শুধু তাই নয়, নির্বাচন ঘিরে এফডিসিতে একধরনের উত্তেজনাও ছড়িয়েছে বিগত সময়ে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও সারা দেশে শিল্পীদের ভক্ত, সমর্থক ও উৎসুক সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখা গেছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন। সাধারণ মানুষের খুব একটা আগ্রহ নেই এবার। তবে এফডিসির মূল ফটক থেকে শুরু করে পুরো আঙিনা প্রার্থীদের রঙিন পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
একটি প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্ত বলেন, ‘কিছু কিছু সাধারণ ভোটার একটি প্যানেল থেকে টাকা পয়সা পাচ্ছেন। তবে টাকা ছিটিয়ে লাভ হবে না। তারা টাকা খাবেন কিন্তু ভোটটা ঠিক জায়গায়ই দেবেন।’
টাকা ছড়ানোর ব্যাপারটি নিয়ে নিপুণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা এসব করি না। অন্য প্যানেলের কেউ কেউ করতে পারেন। যদিও হাতেনাতে কোনো প্রমাণ নেই, তবে আমরাও মাঝেমধ্যে এসব শুনি।’
টাকা ছড়ানোর বিষয়টি প্রার্থীদেরই একজন স্বীকার করার কথা মিশাকে বলা হলে তিনি বলেন, ‘কেউ করলে করতে পারে। আমি জানি না। হতে পারে, কোনো প্রার্থী যেকোনো মূল্যে জিতে এসে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য এটি করছে।’
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ৫৭১ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৫০ জন। জায়েদ-মিশা প্যানেল ক্ষমতায় থাকাকালে অনেকের ভোটাধিকার বাতিল হয়েছিল। এরপর কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল বিজয়ী হয়ে এসে উচ্চ আদালত থেকে ১০৩ জন ভোটাধিকার ফিরে পান। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ও ফিরে পাওয়া মিলে মোট ১৫৩ জনের ভোট এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। একটি প্যানেলের জিতে আসার ক্ষেত্রে সুবিধাও দিতে পারেন এসব ভোটার।