শোকের শহরে বীরের প্রত্যাবর্তন



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
আইয়ুব বাচ্চু, ছবি: সংগৃহীত

আইয়ুব বাচ্চু, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম থেকে: শনিবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের অন্য নাম ‘শোকের শহর’। শেষ বারের মতো প্রিয় শহরে ফিরে আসেন এই সবুজ শহরের প্রিয়তম সন্তান। বীরের শোকাবহ প্রত্যাবর্তনের অভিঘাতে অতলান্ত বেদনা-মথিত শহরের প্রতিটি নাগরিক। শোকে মূহ্যমান প্রকৃতি ও পরিবেশ।

২০ অক্টোবর দিনটি সত্যিই তীব্র বেদনার। হাজার বছরের ঐতিহ্যময় জনপদ চট্টগ্রামের ইতিহাসে অমোচনীয় ব্যাথার কালো কালিতে লিপিবদ্ধ দিনটি। শোকের চাদর হয়ে শহর চট্টগ্রামে এমন দিন অনেকদিন আর আসেনি। বিশ্বজয়ী বীরের শোক জাগানিয়া এমন প্রত্যাবর্তনের কথা কেউ কল্পনা করেনি কখনোই। ব্যথিত জনসমুদ্রে শোক-উত্তাল দিনটি প্রিয়জন হারানোর বিচ্ছেদের ইতিকাহিনীর মতো এক ট্র্যাজিক উপাখ্যান যেন।

নগরের পথে পথে পুঞ্জিভূত মানুষের বুকভরা হাহাকার মাখানো এই দিনে দক্ষিণের সমুদ্রস্পর্শী-পতেঙ্গা থেকে ভেসে আসে দুখী মেঘের দল। সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আকাশ মনভার-করা ব্যাথায় কাতর। ঝরঝরে হেমন্তের রোদমাখা দিনটিও ম্লান আর বিদীর্ণ হলো কফিনবাহী বিমানের আগমনে। তিনি এলেন তার প্রিয়তম শহরে শেষশয্যা গ্রহণের চির-অবকাশে। শোকস্তব্ধ পুরো শহর ভেঙে পড়লো বীর নায়কের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায়। শোকমগ্ন বরণের ঢালি নিয়ে অপেক্ষমাণ জনতার রোদন যেন বাতাসকে ভারি করেছে অনেকটাই।

আদি চট্টগ্রামের হৃৎপিণ্ডর কাছে অবস্থিত পুরনো মহল্লা এনায়েত বাজারের রবিন নামের ছেলেটি সুর আর সঙ্গীতের ইন্দ্রজালে ভুবন বিজয় করে ফিরে আসছেন। তিনি আসছেন আর কখনোই না ফিরে যাবার প্রত্যয়ে। রবিন থেকে বাংলাদেশের আধুনিক রক গানের আইকনে পরিণত আইয়ুব বাচ্চু জন্ম নিয়েছেন এই শহরে; বার বার ফিরেও এসেছেন। আজ তিনি এলেন না ফেরার গান হয়ে।

তিনি এলেন তার প্রিয় শহরে; শহরের বনানী ও পাহাড়ের আচ্ছাদনে ঘেরা শ্যামলিম ভূগোলে। নদী কর্ণফূলী আর বঙ্গোপসাগরের ক্লান্তিবিহীন ঢেউয়ের কাছে। বাইশ মহল্লার কবরগাহের সারি সারি নিদ্রামগ্ন মানুষের মিছিলের ঠিকানায়; মায়ের শেষশয্যা পাশে।

কালো ব্যাজ আর পুষ্পিত স্তবক হাতে অগণিত ভক্তের গন্তব্য প্রিয় শিল্পীর সাণ্নিধ্যে এগিয়ে চলে দিনময়। এনায়েত বাজার, নানাবাড়ি, জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের দিকে তাদের গন্তব্য। জীবিত আইয়ুব বাচ্চুর মতোই প্রাণহীন আইযুব বাচ্চুকে অনুসরণ করছে মানবস্রোত। জীবনে বা মরণে মানুষের হৃদয়েই যেন চির ঠিকানা এই চিরায়ত শিল্পীর। সজিব আর প্রাণবন্ত তিনি জনরবের শিহরণে। জীবনে আর মরণেও সমান লোকপ্রিয়।

শহর ছাড়িয়ে উপশহর আর শহরতলী থেকেও দলে দলে আসছে তরুণ-তরুণী, ভক্ত-শ্রোতার দল। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো থেকে দলবদ্ধ হয়ে এসেছে বহুজন। ষোলশহর, নাসিরাবাদ, জিইসি মোড় পেরিয়ে দামপাড়া ওয়াশার মোড় থেকে জামিয়াতুল ফালাহ ময়দানে দেখা যাচ্ছে উপচানো ভিড়। পুরো চট্টগ্রাম শহরের এক ও অভিন্ন গন্তব্যের নাম আজ আইয়ুব বাচ্চু।

কেন এতোটা গভীরভাবে মানুষকে টেনে নিতে পারলেন তিনি? কি ছিল তার জাদু? দৃশ্যত উচ্চকণ্ঠ ও সুতীব্র যন্ত্রের আড়ালে রক অ্যান্ড রোল গানের মধুময়তা সচরাচর ধরা পরে না। মনে হয় প্রচণ্ড শব্দ নিনাদে হারিয়েছে সুর ও সঙ্গীতের সুষমা। আসলেই কি তাই? মোটেও নয়। তিনি তার গানে স্পর্শ করেছিলেন শাশ্বত মানব হৃদয়। পৌঁছে গিয়েছিলেন আনন্দ-বেদনা-আধ্যাত্মিকতার বাহন হয়ে মানবাত্মার চৌকাঠে।

‘আমার বহু বহু বিষণ্ন দিন আর রাত্রিগুলো কেটেছে তার গানের সঙ্গে। যখন মন ভালো না লাগে, বিষণ্নতার অন্ধ-অন্ধকার চেপে ধরে, তখন তার গান আলো ও হাওয়ার সন্ধান দেয়। প্রাণের ঊষর ভূমিতে জীবনের পরশ দিয়ে যায়’, লালখান বাজার মোড়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললেন সাবিহা সানজিদা। তার ছলছল চোখ তাকিয়ে আছে অদূরের ঈদগাহ ময়দানে। জনস্রোত যেখানে শেষ আলিঙ্গন করছে প্রিয় শিল্পীকে।

সাবিহার সঙ্গে এসেছে অপূর্ব শামস। বাহুতে কালো কাপড়ের শোকচিহ্ন। হাতে তার একগুচ্ছ পুষ্পাঞ্জলী। ‘বাইরে থেকে আইয়ুব বাচ্চুর গান পুরোটা বোঝা যাবে না। তার গানের অনেক ভেতরে গেলে শুনতে পাই আমারই কথা। আমরা রাগ-ক্ষোভ-হতাশা-পাওয়া-না-পাওয়ার কথাগুলোই তিনি ব্যক্ত করেছেন। আমি আমার চেতনা ও আবেগের অব্যক্ত কথাগুলো বলার ভাষা পাই তার গানে’, জানালেন এই তরুণ।

সাবিহা বা শামসের মতো শত সহস্র তরুণের দখলে আজ চট্টগ্রামের পথগুলো। এভিনিউগুলো ভেসে যাচ্ছে তারুণ্যের পদভাবে। খানিক এগিয়ে ইস্পাহিন মোড়ে দেখা মেলে অভিন্ন জনস্রোত। একজন কফিনবন্দি মানুষ তার শারীরিক উপস্থিতির মতোই টেনে নিচ্ছেন জন মানুষের আগ্রহ ও হৃদয়ের অনেকটুকু। এমন মানবজনম অনেকেরই হয় না। আইয়ুব বাচ্চুর হয়েছে। ভালোবাসার আস্ত একটি সমুদ্র মানুষের মধ্যে ঢেলে দিয়ে মানুষের কাছ থেকে তিনি প্রতিদানে ফেরত পেয়েছেন ভালোবাসার অখণ্ড এক মহাসমুদ্র।

জানাজা শেষে চিরঘুমে তিনি চলে যাবেন মাটির সুগভীর বুকে। তার গান থেকে যাবে জাগ্রত বাংলাদেশে। বাংলা ও বাঙালির চিরকালীন সুরের আকাশে ধ্রুবতারা হয়ে তিনি রইবেন। ঢাকায়, চট্টগ্রামে, ফরেস্টহিলে, সমুদ্র উপকূলে, ক্যাম্পাসে ক্যম্পাসে একটি অদেখা পাখির গানে ও সুরে কল্লোলিত হবেন আইয়ুব বাচ্চু। মৃত্যু নামের বিদায় ও বিচ্ছেদকে অতিক্রম করে ছন্দ ও তানের ঝঙ্কারে তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদেরই মাঝে।

প্রিয় আইয়ুব বাচ্চু, বাংলাদেশের এবি, আমাদের চট্টগ্রামের রবিন, সবাইকে কাঁদিয়ে ঠিকই উড়াল দিলেন আকাশে, সুরের চিরন্তন পাখি হয়ে।

   

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সম্পাদক ডিপজল



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে (২০২৪-২৬) সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুন আক্তার পেয়েছেন ২০৯ ভোট।

মিশা-ডিপজল ছাড়াও সহ-সভাপতি পদে ২৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব ২৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আলেকজান্ডার বো, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কলি-নিপুণ প্যানেলের মামনুন ইমন এবং কোষাধ্যক্ষ পদে কমল বিজয়ী হয়েছেন।

এছাড়া কার্যনির্বাহী পরিষদের ১১ জন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন- সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমীন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু এবং কলি-নিপুণ প্যানেলের পলি ও সনি রহমান।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ৪৭৫ জন শিল্পী। 

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মধ্যে একটি জোটে ছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে দুই অভিনেতা মিশা ও ডিপজল। আরেক প্যানেল থেকে লড়েন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি ও নায়িকা নিপুণ আক্তার।

এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন- খোরশেদ আলম খসরু এবং সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বিএইচ নিশান। শনিবার সকাল ৭টায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

;

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে চলছে ভোট গণনা, আসেননি অনেক তারকা



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে বিএফডিসি প্রাঙ্গণে চলছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক (২০২৪-২৬) নির্বাচন। সকাল সাড়ে ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল, ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল সাড়ে ৫টায়। এখন চলছে ভোট গণনা। 

ভোট দিতে সকালে তেমন কোন ভোটার উপস্থিত না থাকলেও জুমার নামাযের পর কিছু তারকা এফডিসি প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। ভোট গ্রহণের সময় শেষ দিকে চলে এলেও দেখা যায়নি চলচ্চিত্রের অনেক জনপ্রিয় তারকাদের। জানা গেছে, তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যার কারণে ভোট দিতে পারছেন না।

এরমধ্যে রয়েছেন ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। তিনি বর্তমান নতুন সিনেমার শুটিংয়ে ভারতের হায়দরাবাদে অবস্থান করছেন।

গত নির্বাচনে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হলেও এবার ভোটের মাঠ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন অরুণা বিশ্বাস। দেশে না থাকার কারণে এবার ভোট দিতে আসতে পারছেন না।

৮ বছর পর এফডিসিতে ভোট দিতে এলেন কাজী মারুফ

এছাড়াও এদিন ভোট দিতে পারছেন না এমন তালিকায় রয়েছেন সুপারস্টার শাবনূও, চিত্রনায়ক ও সাংসদ ফেরদৌস আহমেদ, প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা, শাহরিয়ার নাজিম জয়, আজিজুল হাকিম, আনিসুর রহমান মিলন, রেসি, বিপাশা কবির, সোহানা সাবাসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী।

২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুইটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি মিশা-ডিপজল পরিষদ, অন্যটি কলি-নিপুণ পরিষদ।

এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়ছেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও দাপুটে খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে গেল আসরের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৭০ জন। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন খোরশেদ আলম খসরু।

;

নতজানু হয়েও কোন পক্ষের সমর্থন পেলেন না জোভান



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

  • Font increase
  • Font Decrease

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান পড়েছেন দারুণ ঝামেলায়। তার একটি নাটককে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একপক্ষের সমালোচনায় অবশেষে নতজানু হয়ে ভিডিও বার্তা দিলেন তিনি। তাতেও সেই পক্ষের মন গলাতে পারলেন না। উল্টো তারা জোভানের বাকী নাটকগুলোকেও বয়কটের সুর তুলছে!

ঝামেলা এখানেই শেষ নয়। জোভান নতজানু হয়ে দুঃখ প্রকাশ করায় আরেকপক্ষ তাকে দারুণভাবে করছেন সমালোচনা। এই পক্ষে আবার রয়েছেন তারই সহকর্মীরা। তারা জোভানের সাহস ও শিনদাঁড়ার শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত গেল ঈদুল ফিতরে প্রচারিত জোভানের নাটক ‘রূপান্তর’ নিয়ে। রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত এই নাটক প্রচারের পরই এটি নিয়ে অন্তর্জালে ফুঁসে ওঠে একাংশ দর্শক। নিরুপায় হয়ে নাটকটি ইউটিউব থেকেও নামিয়ে ফেলা হয়।

 ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্যে সামিরা খান মাহি ও জোভান

কিন্তু রেহাই মেলেনি তাতেও। অগত্যা অভিনেতা জোভান নিজেই গা ঢাকা দেন, বন্ধ করে রাখেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল। অবশেষে আজ ১৯ এপ্রিল ভোর রাতে দেখা দিয়েছেন তিনি। একটি ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হলেন। যেখানে আকুতিভরা কণ্ঠে ক্ষমা চেয়েছেন দর্শকের কাছে।

আতঙ্ক আর অসহায়ত্বে ভরা চাহনিতে জোভান বলেন, ‘এই ঈদে আমার বেশ কিছু নাটক এসেছে। প্রথম দিন থেকেই ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। এই ঈদটা আমার খুব সুন্দর ঈদ হতে পারতো আপনাদের ভালোবাসায়, সাপোর্টে। কিন্তু সেটা হয়নি। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে আপনারা যেমন কষ্ট পেয়েছেন, আমিও কষ্ট পাচ্ছি। আমি কিন্তু একদমই ভালো নেই।’

‘রূপান্তর’ নাটকের প্রসঙ্গে জোভানের জবাবদিহি এরকম, “রূপান্তর’ নাটককে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা একদমই অপ্রত্যাশিত। এই নাটকের মাধ্যমে কারও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। আমি নিজেও একটা মুসলিম পরিবারের ছেলে। আমি জানি, ধর্মকে কতটা বিশ্বাস করি, আল্লাহকে শ্রদ্ধা করি। এই নাটকের মাধ্যমে আমরা কোনও কিছুকে নরমালাইজ করা বা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করিনি। কেবল একটি চরিত্র উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটার মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়েছি, এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সবার কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”

ফারহান আহমেদ জোভান

সবশেষে অনুরোধের সুরে জোভান বলেছেন, ‘দীর্ঘ এগারো বছর যাবত নাটক করছি। আজকে আমার যে অবস্থান, এর পেছনে আমার একার নয়, অবশ্যই দর্শকের ভালোবাসা ও সাপোর্ট ছিল। আমার কাজ করার মূল উদ্দেশ্য হলো দর্শককে একটু বিনোদন দেওয়া, সেজন্যই এত কষ্ট। এরপর থেকে আরেকটু বেশি সচেতন থাকবো চরিত্র বাছাই করতে। যাতে তাদের মনঃক্ষুণ্ণ না হয়, কষ্ট না পায়। আমার যে কাজগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে, তার চেয়েও ভালো কাজ উপহার দেবো। শুধু একটাই অনুরোধ, আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না। আমার জন্য দোয়া করবেন।’

যদিও জোভানের ভিডিও বার্তার কমেন্ট বক্স দেখলে আঁচ করা যায়, তার এই আর্তনাদ গলাতে পারছে না নেটিজেনদের মন। গণহারে তার নাটক বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে তারা। বিপরীতে অনেকেই জোভানের এই পরাজিত কণ্ঠ ও মুখ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বলছেন, প্রকৃত শিল্পী কখনোই এতোটা নতজানু হয় না।

উল্লেখ্য, নীহার আহমেদের চিত্রনাট্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটি নির্মিত হয়েছে। এর গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। যার ফলে তিনি জানতেই পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে। বড় হয়ে হয়েছেন চিত্রকর। পেয়েছেন খ্যাতিও। এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালী তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় চিত্রকরকে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এরপর তার চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোন জনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন। তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।

ফারহান আহমেদ জোভান

গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউবে। রাতে বেশ কিছু দর্শকের পক্ষ থেকে আপত্তি পেয়ে সেটি ১৬ এপ্রিল সকালে তুলেও নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। একই নাটক ডাউনলোড করে অসংখ্য ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করছে সমালোচনাকারীদের একটা বড় অংশ। তারাই আবার এমন নাটক নির্মাণ ও প্রচারণার প্রতিবাদ করছেন! এমনকি নির্মাতা-শিল্পীদের হুমকিও দিচ্ছে অনেকে। যা নিয়ে আতঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

;

আগামী মাসেই সোহেল-নীলা জুটির ‘শ্যামাকাব্য’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

গুণী নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘শ্যামাকাব্য’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ রয়েছে। এই ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন সদ্য ভারতের ফিল্মফেয়ার পুরস্কারজয়ী অভিনেতা সোহেল মণ্ডল ও জনপ্রিয় লাক্স তারকা নীলাঞ্জনা নীলা। তারা ছাড়াও এক ঝাক তারকা শিল্পীকে নিয়ে নির্মিত সরকারি অনুদানের এই সিনেমাটি গত ২৪ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা ছিল।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

কিন্তু সে সময় ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। তখন নির্মাতা সৌদ জানিয়েছিলেন, ‘‘দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যই এই সিদ্ধান্ত। চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম, এমন পরিস্থিতিতে দর্শক সিনেমা হলে এসে ছবি দেখতে চাইবেন না। দর্শকের জন্যই তো আমাদের সিনেমা। তাদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা জরুরী। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘শ্যামাকাব্য’ জাতীয় নির্বাচনের পরেই মুক্তি দেব।’’

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

অবশেষে ছবিটি মুক্তির নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ছবিটির নায়ক সোহেল মণ্ডল জানান, ‘‘আসছে ৩ মে আপনার নিকটস্ত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘শ্যামাকাব্য’।’’

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ধাচের ছবিটিতে প্রেমের বিষয়টিও বেশ স্পষ্ট। এতে নীলাকে দেখা যাবে শ্যামা’র চরিত্রে। আর সোহেল মণ্ডল রয়েছেন আজাদ নামের একটি চরিত্রটি।

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

নায়ক-নায়িকা দুজনই বললেন, তাদের চরিত্র দুটি একেবারেই নতুন। তাদের রসায়নও দর্শকের মন ছুঁয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদী। নীলার ভাষায়, শ্যামা মেয়েটি খুব শান্ত। দেখলে চোখে আরাম দেবে। আর সোহেল এখনই তার চরিত্রের কোন গোমর ফাঁস করতে চান না।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

ছবিতে একটি মাত্র গান রয়েছে। নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদের লেখা ‘পাখি যাও যাও’ শিরোনামের সেই গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ইমন সাহা। চমকপ্রদ বিষয় হলো সেই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত দুজন শিল্পী। একজন হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের কিংবদন্তি পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, অন্যজন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী।

;