মেঘনাদ সাহা : বিশ্বমানের বাঙালি বিজ্ঞানী



যাকওয়ান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
মেঘনাদ সাহা [অক্টোবর ৬, ১৮৯৩ - ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৫৬]

মেঘনাদ সাহা [অক্টোবর ৬, ১৮৯৩ - ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৫৬]

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবীবিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি আমাদের কাছে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার নামটাও খুব পরিচিত। এর কারণটি হলো, তিনি শুধুমাত্র একজন বিজ্ঞানীই নন, বরং তিনি একজন বাঙালি বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান বিষয়ে বিশ্বের দরবারে আমাদের যেই বিশেষ-বিশেষ কিছু গর্বের জায়গা রয়েছে, সেখানে মেঘনাদ সাহার নামটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই ফিচারটি মেঘনাদ সাহাকে নিয়ে। পাঠের সুবিধার্থে ফিচারটিকে কয়েকটি ফুটনোটের মধ্যদিয়ে উপস্থাপন করা হলো।

১.
শুরুতেই মেঘনাদ সাহার বিজ্ঞানবিশ্বে এত বৃহৎভাবে সমাদৃত হবার কারণটি উল্লেখ করা যাক। অর্থাৎ, যে থিওরিটির কারণে তিনি বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ছিলেন, সেটিকে ব্যাখ্যা করা যাক। তার এই থিওরিটির নাম ছিল, ‘ল অব থার্মার আইওয়ানাইজেশন’। মূলত, জ্যোতি-পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই তত্ত্বটি ছিল এক নতুন সংযোজন।

‘ল অব থার্মার আইওয়ানাইজেশন’-এর সরল ব্যাখ্যাটা হলো, সূর্য এবং গ্যালাক্সিতে যেসব নক্ষত্র রয়েছে, এদের সবার চারপাশেই ঘিরে আছে একটি গ্যাসীয় পদার্থ। এই গ্যাসীয় পদার্থকে ভাগ-ভাগ করলে দেখা যাবে, আবার এর মধ্যেই রয়েছে কয়েকটি বিশেষ ধরনের মৌলিক পদার্থ। যেমন বিদ্যুৎনিরপেক্ষ পরমাণু, যাকে বলা হয় নিউট্রাল অ্যাটম। অথবা যেমন আছে, আয়ন। মেঘনাদ সাহার সূত্রটি হলো, সূর্য ও নক্ষত্রের পার্শ্ববর্তী ওই গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে কতভাগ নিউট্রাল অ্যাটম রয়েছে, বা কতভাগ আয়ন রয়েছে, সেটার পরিমাণ নিশ্চিত করা। নক্ষত্রের বর্ণালি বিশ্লেষণে মেঘনাদের এই আবিষ্কারটি ছিল সবচাইতে প্রথম।

২.
মেঘনাদ সাহার জন্ম বাংলাদেশে, ১৮৯৩ সালের ৬ অক্টোবর, তৎকালীন ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে। গ্রামের নাম, শ্যাওরাতলী। তার পিতার নাম ছিল জগন্নাথ সাহা, আর মায়ের নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। পেশায় তার পিতা ছিলেন একজন নিম্নআয়ের মুদি দোকানদার। ফলত, মেঘনাদ সাহার পড়াশোনার আর্থিক ভার গ্রহণ করা তার পক্ষে কঠিন ছিল।

তারা যে গ্রামে থাকতেন, সেটি ছিল আদতেই অজপাড়াগাঁ। সেখানে একটা হাইস্কুল পর্যন্ত ছিল না। তাই মেঘনাদ সাহাকে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হতে হয়েছিল তার গ্রাম থেকে এগারো কিলোমিটার দূরের আরেকটি গ্রামে, শিমুলিয়ায়। যেহেতু বইপত্র বা পড়াশোনার খরচ আয়ত্তে নেওয়ার সাধ্য তার বাবার ছিল না, তাই তাকে পড়তে হয়েছিল অন্য একজন ব্যক্তির দয়ায়। অনন্তকুমার দাস নামক একজন চিকিৎসক তার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১৯০৫ সালে মেঘনাদ শিমুলিয়া গ্রামের স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকায় এসে কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হলেন।

বলতে গেলে, সবকিছু ভালোই চলছিল, কিন্তু সেই একই সময়ে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন আরম্ভ হলো। সেই আন্দোলন স্বাভাবিকভাবে প্রসারিত হলো কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রদের মধ্যেও। ছাত্রদের এই আন্দোলনে জড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো ব্রিটিশ সরকার জানতে পেরেছিল। সেইসময় ঘটনাচক্রে বাংলার লাটসাহেব কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শন করতে আসলেন। অন্যদিকে লাটসাহেবের আসাকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা স্কুল বয়কট করল। এই বয়কটকারীদের মধ্যে মেঘনাদ সাহাও ছিলেন। ফলত, বাকিদের সঙ্গে তাকেও স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলো।

৩.
ঘটনার প্রেক্ষিতে, মেঘনাদ সাহাকে অন্য আরেকটি স্কুলে ভর্তি হতে হলো। সেটি ছিল ঢাকার কিশোরীলাল জুবিলি স্কুল। এই স্কুল থেকেই তিনি প্রবেশিকা অর্থাৎ ম্যাট্রিক পাশ করলেন, ১৯০৯ সালে। মেঘনাদ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র। সেবছর পূর্ববাংলার প্রবেশিকা-পরীক্ষার্থী সকল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।

এরপর, ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট সম্পন্ন করে মেঘনাদ চলে গেলেন কলকাতায়। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেন। মূলত, জীবনের এই পর্বে এসেই তিনি অবারিতভাবে বিজ্ঞানের জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেলেন। এখানেই তিনি সহপাঠী হিসেবে পেলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে। আর তার শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জগদীশ চন্দ্রবসু, এবং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ।

সামনের সারিতে মাঝখানে জগদীশ চন্দ্র বসু, তার ডান পাশে মেঘনাদ সাহা


৪.

উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত হলে যখন চাকরির ব্যাপার আসলো, তখন মেঘনাদ সাহা চাইলেন একটি সরকারি চাকরি যোগাড় করতে। তার মেধা, এবং যেই সাফল্যের সঙ্গে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, তাতে করে সরকারি কোনো পোস্টে তার চাকরি হলে বরং সরকারেরই উপকার হতো। কিন্তু বিপত্তি হলো যে, পুলিশ কিভাবে যেন জানতে পারল কলেজে পড়ার সময়ে তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। কার্যত সরকারি কোনো জায়গায় তার চাকরি আর হলো না। এমনিতে তিনি সত্যিকার অর্থেই তৎকালীন বিপ্লবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। বিপ্লবী বাঘা যতীনের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল।

তবে এই কথা বলতেই হয় যে, মেঘনাদ সাহার পক্ষে যেহেতু কোনো সরকারি কর্মক্ষেত্রে চাকরি করার সুযোগ হলো না, এই না-হওয়াটাই তাকে বিশ্বের দরবারে সমাদৃত করেছিল। নহেতু, সর্বোচ্চ তিনি একজন বড়মাপের সরকারি আমলা হতেন, কিন্তু জগৎময় খ্যাতিসম্পন্ন একজন বিজ্ঞানী হওয়া তার পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না।

৫.
সেই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় নিজ উদ্যোগে ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠিত করলেন। তিনিই মেঘনাদ সাহাকে ডেকে নিয়ে সেখানে গণিতের প্রভাষক পদে চাকরি দিলেন। একই সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন্দ্রনাথ বসুও গণিত বিভাগে চাকরি পেয়েছিলেন।

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সঙ্গে সহশিক্ষক হয়ে তার এই যে কাজ আরম্ভ করার সময়টা, এই সময়টাকে সবচাইতে ভালোভাবে বর্ণনা করেছেন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আচার্য দেবেন্দ্রমোহন বসু। এই পর্বে বরং, আচার্য দেবেন্দ্রমোহনের ভাষ্যেই মেঘনাদ সাহাকে জানা যাক—

“১৯১৯ সালে বার্লিন থেকে ফিরে এসে যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দিলাম, সেখানে সতীর্থ হিসেবে পেলাম দুই তরুণকে। বললাম, বিজ্ঞানে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে চলেছে। বললাম বার্লিনে আমার অভিজ্ঞতার কথা। বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় তখন আলোকিত করে রেখেছেন এক একজন দিকপাল বিজ্ঞানী। যাদের মধ্যে আছেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, আলবার্ট আইনস্টাইন, ভারবুর্গ, মার্ক্স বর্ন, ওয়াল্টার লার্নাস্ট। কোয়ান্টাম তত্ত্ব এবং আপেক্ষিকবাদ নিয়ে চলছে নানান গবেষণা। লক্ষ করলাম মেঘনাদ এবং সত্যেন্দ্রনাথ আমার কথাগুলো যেন গিলছেন। বার্লিন থেকে দুটো বই এনেছিলাম। প্ল্যাঙ্কের লেখা Thermodynamik এবং Warmesstrahlung—বই দুটির মধ্যে ডুবে গেলেন সত্যেন্দ্রনাথ। কিন্তু মেঘনাদ মুখর হয়ে উঠলেন। বিদেশে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা এবং তাপ বলবিদ্যার ওপর সাম্প্রতিক খবরাখবর জানার নিয়মিত আলোচনা করতে লাগলেন তিনি। বিশেষ করে ‘থার্মাল আইওনাইজেশন’ এবং কিভাবে তার সাহায্যে নক্ষত্রের আলোক বর্ণালির চরিতাবলি ব্যাখ্যা করা যায় তার ওপর। আমার তখনই মনে হয়েছিল, শুধু তত্ত্ব নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই মেঘনাদ ক্ষান্ত হতে চান না, তত্ত্বের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল এবং তার প্রয়োগের দিকেই তার আগ্রহ বেশি।”

৬.
এই সময়ে মেঘনাদ সাহা বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে প্রচুর পরিমাণে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। এইসব প্রবন্ধগুলোকে একইভাবে মেঘনাদের গবেষণাসম্ভারও বলা যায়। তিনি সেইসময়ে যেসব পত্র-পত্রিকাতে লেখালেখি করতেন সেগুলো হলো, অ্যাস্ট্রনমিকাল জার্নাল, ফিজিক্যাল রিভিউ, জার্নাল অব দি এশিয়াটিক সোসাইট অব বেঙ্গল, জার্নাল অব দি ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স, ইত্যাদি।

৭.
১৯১৯ সালে মেঘনাদ সাহা স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডনে চলে যান। সেখানে গিয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক ফাউলারের অধীনে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। যা মেঘনাদের জীবনে অন্যতম একটা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে। এই সময়ে তিনি কেমব্রিজের পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জে. জে. থমসনের সান্নিধ্যও লাভ করেছিলেন।

এই লন্ডনে থাকাকালীনই তার ‘ইকুয়েশন অব থার্মাল আইওনাইজেশন’ নামক বিখ্যাত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়, ‘ফিলসফিক্যাল’ ম্যাগাজিনে। এই গবেষণাটিই তাকে বিজ্ঞানবিশ্বে খ্যাতিবান করে তুলেছিল। এবং এর কারণেই পরবর্তীতে রয়াল সোসাইটি তাকে ফেলো নির্বাচিত করেছিল।

৮.
পরের বছর, ১৯২০ সালে তিনি বার্লিন গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালেই আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাকে জানান যে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এই খবরটি তার জন্য খুব তৃপ্তির ছিল। পক্ষান্তরে এটাই ঘটল যে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করবার কিছুদিন পরেই বুঝতে পারলেন এখানে কাজ করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। কেননা, ব্রিটিশ সরকার কখনোই কাউকে ইচ্ছাস্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিত না।

এই কারণেই তিনি বেশিদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারেননি। লাহোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার জন্য আমন্ত্রণপত্র এলো, তখন তিনি সেখানে চলে গেলেন। সেখানেই তিনি ১৯২৩ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১৯২১ সালে বার্লিনে মেঘনাদ সাহা


তবে হ্যাঁ, এর মধ্যেও তিনি নানা জায়গায় নানান সংযুক্তির মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানের প্রসারে কাজ করে গেছেন। ১৯৩৩ সালে পুনরায় কিছুদিনের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে একটি পারমাণবিক গবেষণাগার গড়ে তুলেছিলেন তিনি। যার নাম দিয়েছিলেন ‘ইন্সটিটিউ অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাহা ইন্সটিটিউ অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’।

এছাড়া, ১৯৩১ সালে তিনি উত্তর প্রদেশে বিজ্ঞান একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর ১৯৩৫ সালে, তারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘ইন্ডিয়ান সায়েন্স নিউজ এসোসিয়েশন’। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি, আর মেঘনাদ সাহা ছিলেন এটির সাধারণ সম্পাদক।

৯.
১৯৪৩ সালে দামোদরে বিরাট একটি বন্যার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের বন্যা-নিরসন প্রক্রিয়া নিয়ে মেঘনাদ ভাবতে আরম্ভ করেন। দামোদর নদীতে বাঁধ দেবার প্রকল্প হাতে নেন। ওই সময়েই তিনি বুঝেছিলেন যে, বন্যার সংকট নিরসনে বিদ্যুৎ-উৎপাদনের বিকল্প নেই। কেননা, একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে হলে চাই প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তিনি এলাহাবাদে একটি সভার অঅয়োজন করেন। যার সভাপতি হয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু।

মেঘনাদ সাহাই সেই সভাতে বিদ্যুৎ-উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একটি পরিকল্পনা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই কমিটি গঠিত হলে সেটারও সভাপতি হয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু।

১০.
শেষজীবনে মেঘনাদ সাহা রাজনীতির সঙ্গেও জড়িয়েছিলেন। তার এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে নানা মহলেই সমালাচনার সূত্রপাত হয়েছিল, বা সকলে এই বিষয়টি ভালোভাবে দেখেননি। অনেকেই মনে করেছেন, মেঘনাদ সাহার এটির প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু মেঘনাদের তরফে এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যাবার পেছনে যুক্তি ছিল। তিনি মনে করতেন, স্বাভাবিকভাবেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেবে বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেই সাহায্য প্রয়োজন, সেটা কিভাবে আনা সম্ভব? যদি না প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগানো যায়। আর, সেই অর্থেই, প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর জন্যই রাজনীতি করবার প্রয়োজন রয়েছে।

   

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

  • Font increase
  • Font Decrease

উদাল, সোনালি হলুদ সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো মাঝারি সাইজের বৃক্ষ। পত্রঝরা উদাম শরীরে পুরো গাছজুড়ে শুধুই সোনালি হলদে রঙের ফুল। বসন্তে হলদে পাপড়ি ঝরে রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা। প্রকৃতির এক অপর সৌন্দর্য উদাল বৃক্ষ ও তার ফুল।

উদাল আমাদের দেশীয় উদ্ভিদ। এদের প্রিয় আবাস পাহাড়ি এলাকা হলেও আগে সারাদেশেই কমবেশি দেখা যেত। নির্বিচারে গাছ উজাড় হতে থাকায় অন্য গাছের সাথে এ দেশী গাছটিও বিপন্ন। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলা একাডেমি, ঢাকার রমনা পার্ক, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কসহ সমতলের অনেক স্থানে উদাল দেখা যায়। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বন এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পাতাঝরা শালবনের স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে উদাল গাছ দেখা যায়।


উদালের বৈজ্ঞানিক নাম স্টারকুলিয়া ভেলোসা। ইংরেজিতে এটিতে হেয়ারি স্টারকুলিয়া বা এলিফ্যান্ট রোপ ট্রি নামে ডাকা হয়। এ গাছের বাকল থেকে এক প্রকার উন্নতমানের তন্তু পাওয়া যায়। এ তন্তু দিয়ে হাতি বেঁধে রাখার দড়ি বানানো হতো বলেও ইংরেজিতে এমন নামকরণ। আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে এটি চান্দুল নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ মগ ও মারমাদের কাছে ফিউ বান, গারোদের কাছে উমাক এবং ম্রোদের কাছে নাম সিং নামে পরিচিত।

উদাল ২০ মিটার বা ততোধিক লম্বা হয়। এদের বাকল সাদাটে রঙের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগায় পাতা ঘনবদ্ধ। ফুলগুলি সোনালি হলুদ রঙের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এর ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে গাঢ় লাল রঙের হয়। বীজের রং কালো। বীজ স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাবার। তবে মানুষও এর ফল খেয়ে থাকে। বাকল থেকে আঁশ পাওয়া যায়। এ আঁশ দিয়ে দড়ি তৈরি হয়। কাঠ বাদামি রঙের, সাধারণত নরম ও হালকা হয়। এই গাছের কাঠ দিয়ে চায়ের বাক্স বানানো হয়।

উদাল ফল খাচ্ছে ইরাবতী কাঠবিড়ালি। ছবি: তবিবুর রহমান

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, এ গাছ দেশের বন-জঙ্গলে প্রচুর হতো। এ গাছের পাতার বোঁটা দিয়ে শরবত বানানো হয়। উঁচু গাছ থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর এর গোড়া থেকে অনেক নতুন নতুন ডালপালা গজালে সেখান থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও উদাল গাছ থেকে স্বচ্ছ আঠা পাওয়া যায়। যা দিয়ে কনফেকশনারিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্ভিদ বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ তিনশ উদাল গাছের চারা বিভিন্ন স্কুল কলেজে বিতরণ করেছে। এবারও প্রায় পাঁচশ চারা বিতরণ করা হবে।


ড. জসীম বলেন, উদলের বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে জলের সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। তবে খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রাঙ্গামাটি বনবিভাগের এসিএফ তবিবুর রহমান জানান, উদালের বীজের স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালির খুব প্রিয়। তবে এ বীজ মানুষও খেয়ে থাকে।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

;

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;