যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবা



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
একদিন যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

একদিন যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘুম থেকে উঠে আমাদের অধিকাংশের প্রথম কাজ ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলটা হাতে নেওয়া। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কল বা মেসেজ এলো কিনা চেক করা। আবার অনেকেই ঘুম ঘুম ভাব দূর করতে একটু ঢুঁ মারি ফেসবুকে। কী হবে যদি এমনই এক সকালে একদিন দেখি ইন্টারনেট আর কাজ করছে না! গুগল ম্যাপ ছাড়া কোনো অচেনা শহরে পথ খুঁজে নিতে হলে কী বেকায়দায়ই না পড়ে যাব তখন! যখন পছন্দের ওয়েবসাইটটি লোড নেবে না, ফেসবুকে বন্ধুবান্ধবদের মেসেজ করলেও তা আর ডেলিভার হবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই অধিকাংশ ইন্টারনেট অ্যাডিক্টরা ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে পড়ব।

ইন্টারনেট এখন আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের অংশ। একটা দিনও আমরা ইন্টারনেট ছাড়া কল্পনা করতে পারি না। বাসায় থাকলে যেভাবে একটু ক্ষিদা লাগলেই ফ্রিজ খুলে দেখি বারবার, তেমনিভাবে বারবার ইন্টারনেট চালু করে দেখতে হয় নতুন কিছু এলো বা হলো কিনা। এটুকু না হলে অস্থিরতার সীমা পরিসীমা নাই। ভেতরে অশান্তি কাজ করতে শুরু করে। কী হবে এই আমাদের, যদি হুট করে একদিন বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

প্রশ্নটা উঁকি মেরে গিয়েছিল স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জ্যাক হ্যানককের মাথায়। ২০০৮ সালে তিনি তার ছাত্রদের এসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে টানা ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে রাখতেন। ছাত্ররা বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। ইন্টারনেট ছাড়া তারা নিজেদেরকে নিপাট অসহায়রূপে আবিষ্কার করেছে। কারো সাথে যোগাযোগ করে ভালোমন্দ শেয়ার করতে না পেরে নিজেদেরকে কারাগারের বন্দী বলে মনে হয়েছে তাদের।

ইন্টারনেটের জনক ভিনটন জি কার্ফ


পৃথিবীতে ইন্টারনেট যাত্রা শুরু করে ১৯৬৯ সালে ভিনটন জি কার্ফ-এর হাত ধরে। এর প্রসার ঘটে ১৯৮০’র দশকের শেষভাগে এবং ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে। এই সময়ে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা (আইএসপির) আবির্ভাব হতে থাকে। মূলত ১৯৯৫ সালে ইন্টারনেটকে বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ইন্টারনেট ভিত্তিক নতুন এই জয়যাত্রা। ফলে যেখানে ১৯৯৫ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করত। গত ২২ বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ বিলিয়নে! যা পুরো পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। আর প্রতি সেকেন্ডে এই পরিসংখ্যানে নতুন যুক্ত হচ্ছেন আরো দশজন করে। এটা শুধু প্রত্যক্ষভাবে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের সংখ্যা। এর বাইরেও অনেকে পরোক্ষ উপায়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বা এর সুফল ভোগ করে থাকে। এমন সফলতার কথা হয়তো ইন্টারনেটের জনক ভিন জি কার্ফও ভাবতে পারেননি।

ইন্টারনেট আজ আমাদের জীবনে যেভাবে জড়িয়ে আছে, একইভাবে একদিন আবার নাইও হয়ে যেতে পারে। কী, বিশ্বাস হচ্ছে না? মনে করে দেখুন এই কিছুদিন আগেও দেশের রাজনৈতিক অবস্থা অস্থিতিশীল ছিল, তখনও কিছুদিনের জন্য আমরা ইন্টারনেট সেবার বাইরে ছিলাম। কোনো দেশ চাইলে কিল সুইচের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতে পারে। ২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় মিশর যেমনটা করেছিল। তুরস্ক এবং ইরানও হেঁটেছিল একই পথে। পাকিস্তানেও একটি মামলার রায়ের পর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট সেবা।

এবার আসুন জেনে নিই ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ওপর এর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

ইন্টারনেট বন্ধের পর প্রথম ধাক্কাটি হবে স্যোশাল মিডিয়ার বিলুপ্তি ◢


ইন্টারনেট বন্ধের পর সর্বপ্রথম যে ধাক্কাটি আমাদের সামলাতে হবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিলুপ্তি। জীবনের অংশ হয়ে যাওয়া একটি অভ্যাস হুট করে হারিয়ে গেলে আমাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইন্টারনেট মানুষের যোগাযোগ-দূরত্বকে এত কমিয়ে দিয়েছে যে এটি বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তির শিকার হবে। এখন চাইলেই একটা পোস্ট দিয়ে হাজার মানুষকে জানিয়ে দেওয়া যায় আপনি একটু পরে কী করতে যাচ্ছেন। তখন আর এমনটা সম্ভব হবে না। মোবাইল হাতে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখে নিতে পারছেন প্রিয়জন এবং প্রয়োজনের অনেক কিছু। কিন্তু ইন্টারনেট না থাকলে প্রতিটি জায়গায় যেতে হবে সশরীরে। গচ্চা যাবে সময়, অপচয় হবে অর্থের।

ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে যখন সবাই সবাইকে ফোন করতে শুরু করবে, তখন টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের ওপরে অবিশ্বাস্যরকম চাপ পড়বে। এর ফলে ব্যাড কানেকশন, দুর্বল নেটওয়ার্ক, কল ড্রপের ঘটনাগুলো আরো স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে। মোবাইল অপারেটররা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের নেটওয়ার্ক এতটা পাওয়ারফুল বা আপগ্রেড করতে পারবে না। এদিকে এত বেশি নেটওয়ার্ক প্রেশার সহ্য করতে না পেরে মোবাইল ফোন টাওয়ারগুলো টেম্পোরারিলি হ্যাং হয়ে যেতে পারে। মোবাইল অপারেটররা যতদিন এই এক্সট্রা প্রেশার সহ্য করার জন্য নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করছে, ততদিন পর্যন্ত এই সমস্যা চলতেই থাকবে।

টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের ওপরে অবিশ্বাস্যরকম চাপ পড়বে


এর পরের ধাক্কাটা আসবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। যেহেতু বাসা থেকে বের হলেই প্রয়োজন পড়বে টাকার। ইতোমধ্যেই পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইন্টারনেট নির্ভর। ইন্টারনেট ছাড়া আপনার ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড পরিণত হয়েছে অকেজো প্লাস্টিকের টুকরায়। কার্যত অচল হয়ে যাবে অর্থনৈতিক সিস্টেম। বন্ধ হয়ে যাবে সবধরনের ডিজিটাল পেমেন্ট ও মানি ট্রান্সফার সার্ভিস।

অবশ্য, ২০০৮ সালে পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায় কখনো যদি ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে প্রাথমিকভাবে ব্যাংকিংখাতে যে সমস্যা তৈরি হবে, পরবর্তী চারদিনেই তার থেকে উত্তরণ সম্ভব। গবেষণাটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস সাইবার কনসিকুয়েন্স ইউনিট।

ইন্টারনেটের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। অভ্যস্ত উপায়ে প্রিয়জনদের খোঁজ খবর নিতে না পেরে, হাল হকিকত জানতে না পেরে নতুন ধরনের ডিপ্রেশনে পড়ে যাবে মানুষ। এর নেতিবাদী ফল দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তৈরি করতে পারে অচলাবস্থার, নতুন কোনো কর্মোদ্দীপনায় মনোনিবেশের ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে ইন্টারনেটে অভ্যস্ত পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশিসংখ্যক মানুষ। অজানা এই মানসিক বিপর্যয় কিভাবে সামাল দেবে মানুষ? পুরোপুরি কল্পনা করাও সম্ভব নয় যেন।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;