মিউনিখ ট্র্যাজেডির ৪৭ বছর



শেহজাদ আমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ভয়াবহ সেই মিউনিখ ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো ১১ ইসরায়েলি অ্যাথলেট

ভয়াবহ সেই মিউনিখ ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো ১১ ইসরায়েলি অ্যাথলেট

  • Font increase
  • Font Decrease

‘খেলাধুলার সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই’—এমনটাই মনে করে থাকেন সাধারণ মানুষেরা। খেলাধুলার ব্যাপারটা রাজনৈতিক ও ভূখণ্ডের সীমারেখার বাইরের এক জিনিস। তাই তো দেখা যায় রাজনৈতিকভাবে বিরোধীভাবাপন্ন দেশের গুণী অ্যাথলেটদেরও ভক্ত বনে যান কোনো কোনো দেশের বিপুল সংখ্যক নাগরিক। কিন্তু কিছু হীন চরিত্রের, স্বার্থবাদী মানুষের কাছে খেলাধুলাও হয়তো হয়ে ওঠে রাজনৈতিক উপকরণ। খেলোয়াড়রাও তখন হয়ে ওঠে দাবার গুটি বা স্রেফ রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উপকরণ মাত্র। এরকম চিন্তাধারারই চরমপন্থার শিকার ১৯৭২-এর মিউনিখ অলিম্পিক গেমস। প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতাকামী এবং বিপথে যাওয়া কিছু লোকের কারণে গেমস চলাকালীনই ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারায় ইসরায়েলের ১১ জন অ্যাথলেট।

কী ঘটেছিল সেদিন

৩৬ বছরের বিরতি দিয়ে সেবার জার্মানিতে ফিরেছিল অলিম্পিক গেমস। এর আগে ১৯৩৬-এ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সবশেষ অলিম্পিক গেমসে অনেকটাই কালিমা লেপে দিয়েছিল সেসময়ে দেশটিতে ক্ষমতাসীন হিটলারের নাৎসি বাহিনীর আদব-কেতা ও কিছু কাজকর্ম। তাই স্বাভাবিকভাবে মিউনিখ অলিম্পিকে আয়োজকদের মধ্যে সেই কালো দাগ দূর করে সম্ভাব্য সকল উপায়ে সেরা এক অলিম্পিক আয়োজনের চেষ্টা ছিল। কিন্তু, মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। এবারের অলিম্পিকে পড়ল আরো বেশি কালো দাগ।

মিউনিখের অধ্যায়টা শুধু অলিম্পিক নয়, বরং পুরো মানবজাতির জন্যেই কালো ইতিহাস। প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতাকামী বিপ্লবী সংগঠন ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’-এর উগ্রবাদীরা গেমস ভিলেজে এসে এগারজন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে ফেলে। জার্মানির অভ্যন্তর থেকে তাদের সহায়তা দেয় নব্য নাৎসি দল ‘ফ্যাকশন রেড আর্মি’। ইসরায়েলিদের ছেড়ে দিতে শর্ত ছিল ইসরায়েলের কারাগারে আটক থাকা ২৩৪ ফিলিস্তিনি এবং জার্মান কারাগারে আটক থাকা দুই নব্য নাৎসি নেতার মুক্তি। জার্মান মধ্যস্থতাকারীরা অনেকটা রাজি হয়ে গিয়েছিল ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে। কিন্তু, ইসরায়েলি সরকার আপোষ করতে চায়নি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য ছিল, সন্ত্রাসীদের দাবির কাছে হার মেনে নিলে দুনিয়ার কোথাও ইসরায়েলি নাগরিকেরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারবে না। তাই শেষমেশ দাবি মেনে নিতে রাজি হয়নি দুই দেশের সরকারই। বদলে শুরু করে অন্য পরিকল্পনা।

গেমস ভিলেজের ছাদে চক্কররত জার্মান পুলিশের সদস্যরা


এই ভয়াবহ ঘটনার শুরু হয়েছিল ৫ সেপ্টেম্বর। ৫ সেপ্টেম্বর ভোর সাড়ে চারটায় শুরু হওয়া এই নাটকের পদে পদে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। হাই কমান্ড থেকে নির্দেশ পেয়ে জার্মান পুলিশ পরিকল্পনা করে অ্যামবুশের। জিম্মিকারীদের চাহিদা মতো হেলিকপ্টার জোগান দেওয়া হয়। এবং করা হয় হেলিকপ্টারে ওঠার সময় স্নাইপার দিয়ে আক্রমণের পরিকল্পনা।

গেমস ভিলেজের ছাদে ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের এক সদস্য


কিন্তু নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয় জার্মান পরিকল্পনা। হেলিকপ্টারে ওঠার পথে আক্রমণের শিকার হয়ে জিম্মিকারীরা ওখানেই চারজনকে মেরে ফেলে। পালানো অসম্ভব, বুঝতে পারে জিম্মিকারীরা। গ্রেনেড বিস্ফোরণে পুরো হেলিকপ্টারই উড়িয়ে দেয়। ইসরায়েলি কাউকেই তাই জীবিত উদ্ধার করা যায় না।

মিউনিখ পুলিশের তৎকালীন প্রধান ম্যানফ্রেড শাইবা জানিয়েছিলেন, এই ব্যাপারটা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি ছিল যথেষ্ট কম। কিন্তু তার দাবি সত্য নয় বলে অনেকের দাবি। কেননা, পুলিশ চাইলেই এই হামলা আগে থেকেই যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারত। বার্লিনের ইতিহাসবেত্তা ম্যাথিয়াস ডালকে জানান, এধরনের হামলা তখন ছিল বেশ নিয়মিত ঘটনা। আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও মধ্যপ্রাচ্যে বিচ্ছিন্নতাকামীদের উৎপাত ছিল ভালোরকম। নিয়মিত বিমান হাইজ্যাকের ঘটনা তো ছিলই। হামলা সম্পর্কে আগাম আশঙ্কাও করেছিল স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের মনস্তত্ত্ববিদ জর্জ সিবার সম্ভাব্য ২৬টি হামলার কথা উল্লেখ করেছিলেন, যার মধ্যে ১১ নম্বরটির সাথে মিল ছিল এই হামলার। কিন্তু, পুলিশ প্রধান শাইবারকে হামলার ব্যাপারে সতর্ক করা হলে তার অভিমত ছিল, এরকম হামলার হুমকি তো আমরা ভুরিভুরি পাই। সেগুলোকে আমলে নিলে তো অলিম্পিক বন্ধ রাখতে হবে ২০ বছরের জন্য।

সেই মুহূর্তে অলিম্পিকজ্বরে আক্রান্ত মিউনিখ সামাল দিতে পারছিল না আকস্মিক এই হামলার ব্যাপারটিকে। বিভ্রান্তিকর তথ্য ও সঠিক নির্দেশনার অভাবের কারণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কতজন ‘সন্ত্রাসী’ আছে, কতটুকু সক্ষমতা তাদের, এসব না জানার কারণে সক্রিয় হতে পারছিল না স্নাইপাররাও।

সেসময় জার্মানির অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেরাই ছিল নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্বে। রাজ্য ও ফেডারেল সরকারের মধ্যে কারা অপারেশন চালাবে, সে নিয়েও ছিল বিভ্রান্তি। এর ওপর সন্ত্রাসীদের দখলকৃত বিল্ডিংয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করায় বাইরের দুনিয়ার সব খবরাখবরও পেয়ে যাচ্ছিল তারা। প্রথম অবস্থায় ওই এলাকার আশপাশ থেকে সাংবাদিকদেরও সরাতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন। ফলে, স্নাইপারদের অবস্থান টের পেয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকতে পেরেছিল ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের সদস্যরা। এজন্য বাতিল করতে হয় জার্মান পুলিশের বেশ কয়েকটি অভিযান।

একটা সময় মনে হচ্ছিল, জার্মান প্রশাসন জিম্মিদেরসহ সন্ত্রাসীদের কায়রো পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি। জিম্মিকারী ও জিম্মিদের বহনকারী হেলিকপ্টার দুটো আক্রমণস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ফুস্টেনফ্রেডবুক বিমানঘাঁটিতে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে আগে থেকেই ঘাপটি মেরে ছিল পুলিশ। জার্মান সেনাবাহিনীর অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও শক্তি থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী বেসামরিক বাহিনীকে সাহায্য করতে পারত না তারা। সেখানে থাকা স্নাইপারদের হাতিয়ার ও দক্ষতায়ও ছিল বেশ ঘাটতি।

বিমান ঘাঁটিতে যে বিমানটি জিম্মি ও জিম্মিকারীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল, সেখানে বিমানের ক্রুদের ছদ্মবেশে আগে থেকে মওজুদ করে রাখা হয়েছিল ১৭ জন দক্ষ পুলিশ অপারেশন কর্মকর্তাকে। বলা হয়েছিল, জিম্মিকারীরা বিমানে ওঠামাত্রই হামলা করতে। কিন্তু সর্বসম্মতিক্রমে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায় পুলিশরা।

এদিকে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুজন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর সদস্য হেলিকপ্টার থেকে নেমে বিমান দুটো পরীক্ষা করে দেখতে যায়। সেখানে সবকিছু ফাঁকা দেখে সঙ্গীদের ব্যাপারটা জানায় তারা। ওই মুহূর্তেই অবশ্য পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালানো শুরু করে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে এই গুলি-পাল্টা গুলির বৃষ্টি। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় বেশিরভাগ ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর সদস্য, একজন পুলিশ ও কিছু অ্যাথলেট।

ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর সদস্যদের ছোঁড়া গ্রেনেডে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার


ইসরায়েলি অ্যাথলেটদের উদ্ধার করার জন্য যে গাড়িগুলোর সেখানে চলে আসার কথা ছিল, সেগুলো সেখানে আসতে পারেনি সময়মতো। আটকে গিয়েছিল যানজটে। যতক্ষণে ওই গাড়িগুলো এসে পৌঁছায়, ততক্ষণে সন্ত্রাসীরা জিম্মিদের রাখা হেলিকপ্টারটি লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে গ্রেনেড। এতে গুঁড়িয়ে যায় হেলিকপ্টার এবং মারা যায় সব অ্যাথলেট।

এই অপারেশনে বেঁচে যায় তিনজন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর সদস্য। পরে জার্মান বিমান লুফথানসা হাইজ্যাক করার ঘটনায় পণ হিসেবে তাদেরকে মুক্ত করে নেয় তাদেরই উগ্রবাদী সহযোগীরা।

কারা এই ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর?

প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিনভিত্তিক এক আধা-সামরিক সংগঠন এই ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর। ১৯৭০-এ উৎপত্তি হওয়া এই সংগঠনটি আরবিতে পরিচিত ‘মুয়াজ্জামাত আইয়ুল আল-আসওয়াদ’ নামে। তারা এখন নিষ্ক্রিয়। তবে, বিশ্বজুড়ে খ্যাতি বা কুখ্যাতি পেয়েছিল জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী ওয়াসফি তালকে হত্যা এবং ১৯৭২-এর মিউনিখ অলিম্পিকের এই হত্যাকাণ্ডের কারণে। তাদের এই ভয়ানক হামলার পরই নড়েচড়ে বসে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ; গঠন করতে থাকে বিশেষ ও স্থায়ী কাউন্টার-টেরোরিজম বাহিনী।

এই সংগঠনের নামটি নেওয়া হয়েছে ১৯৭০-এর সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষ থেকে। তখন ফেদায়েনদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য দেশে সামরিক আইন জারি করেন জর্ডানের রাজা হোসেন। এই কারণে জর্ডান থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে বহিষ্কার করা হয়। মৃত্যু হয় তাদের অনেকের। প্যালেস্টাইনি ফাতাহ আন্দোলনের ছোট একটি সেল হিসেবে যাত্রা শুরু করে ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর, যারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল বাদশাহ হোসেন ও জর্ডানের সামরিক বাহিনীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যাপারে।

ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের বেশিরভাগ সদস্য ছিল ফাতাহ আন্দোলনের কর্মী


প্রাথমিকভাবে এর বেশিরভাগ সদস্যই ছিল ফাতাহ আন্দোলনের কর্মী। মিউনিখ হামলার আগে ১৯৭২ সালের ৮ মে তারা হাইজ্যাক করেছিল একটি বেলজিয়ান বিমান। পরে, ১৯৭৩ সালে সুদানের খার্তুমে সৌদি দূতাবাসেও হামলা চালায় তারা। একই বছর নিউ ইয়র্কে বোমা হামলার পরিকল্পনাও করেছিল।

ইসরায়েলের পাল্টা আঘাত

এগারজন অ্যাথলেটের মৃত্যু ও তিনজন ‘সন্ত্রাসী’র মুফতে মুক্তি ক্ষুব্ধ করে তোলে ইসরায়েলের জনগণ ও সরকারকে। মিউনিখ হামলার দুদিন পরেই প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর দশটি ঘাঁটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় ইসরাইল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মিউনিখ ম্যাসাকারে জড়িতদের যারা সাহায্য করেছে বা তাদের সাথে সংযুক্ত আছে, তাদের সবাইকে এমন শিক্ষা দেওয়া, যাতে করে কেউই ইসরায়েলিদের হত্যা করার সাহস না পায় ভবিষ্যতে। এই উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় একটি কমিটি। সেই কমিটির কাজ ছিল গুপ্তহত্যার জন্য বেছে বেছে শিকারদের তালিকা তৈরি করা। ২০-২৫ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তালিকা তৈরির পর মোসাদ বাহিনীকে গুপ্তহত্যার মিশন শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। জন্ম নেয় ‘অপারেশন র‌্যাথ অব গড’ বা ‘অপারেশন ঈশ্বরের ক্রোধ’-এর।

এই অপারেশনের প্রথম গণহত্যাটি সংঘটিত হয় ১৯৭২ সালের ১৬ অক্টোবর। শিকার ফিলিস্তিনি ওয়ারিল রোমে। রাতের খাবার খেয়ে ফেরার পথে তাকে হত্যা করে চলে যায় আততায়ীরা। ওয়ারিল ছিল সেই সময়ে পিএলও’র একজন সক্রিয় কর্মী।

দ্বিতীয় শিকার ছিল মাহমুদ হামশারি নামে এক পিএলও কর্মী। হোটেল রুমে পেতে রাখা বিস্ফোরণে মারা যায় সে, যার পেছনে ছিল মোসাদের লোকেরাই।

এরপর এই ধারা চলতেই থাকে। ফিলিস্তিনি অনেক নেতা, পিএলও কর্মী ও ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর নেতাদের হত্যা করা হয় সত্তর ও আশির দশকজুড়ে।

বিশ্বনেতাদের ক্ষমতার লোভ আর কপটতার ফাঁদে পড়ে নিরীহ অ্যাথলেটদের খেলতে এসে জীবন দিয়ে দেওয়ার কাহিনী নিতান্তই মর্মান্তিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। মিউনিখ অলিম্পিকে হয়তো ঘটেছিল অনেক অবিস্মরণীয় ক্রীড়ানৈপূণ্য। মার্ক স্পিটজের রেকর্ড (২০০৮ অলিম্পিক পর্যন্ত) ৭টি সোনা জেতার মতো ঘটনাও রয়েছে। তবুও মিউনিখ অলিম্পিক মনে থাকবে ওই এগারজনের জন্যেই। গুগল সার্চে মিউনিখ লেখার সাথে সাথে আসা ‘ম্যাসাকার’ শব্দটি অলিম্পিকের ‘ভ্রাতৃত্ববোধ’ স্লোগানের ওপর আবহমান কাল ধরেই তাই চপেটাঘাত করতেই থাকবে।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;